চট্টগ্রাম নগরীর ডিসি হিলে আলোচিত পিন্টু হত্যাকাণ্ডের মাত্র ১৬ ঘণ্টার মধ্যে প্রধান চার আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব–৭। শনিবার (৩০ আগস্ট) রাতের এ হত্যাকাণ্ডে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। র্যাব–৭ এর গোয়েন্দা নজরদারি ও ধারাবাহিক অভিযানের পর রবিবার (৩১ আগস্ট) বিকেলে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাব সূত্র জানায়, ৩০ আগস্ট রাত সাড়ে ৯টার দিকে বায়েজিদ বোস্তামী থানার হিলভিউ এলাকায় পূর্বশত্রুতার জেরে স্থানীয় কুখ্যাত সন্ত্রাসী দেলোয়ার হোসেন দেলুর নেতৃত্বে কয়েকজন সন্ত্রাসী আবদুল্লাহ আল মনির ওরফে পিন্টুকে (৩২) ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। পথচারীরা তাঁকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত পিন্টু মূলত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাসিন্দা। শ্বশুরবাড়ি বার্মা কলোনিতে তিনি বসবাস করতেন। জীবিকার তাগিদে পাঁচলাইশ থানার হামজারবাগ এলাকায় একটি থাই দোকানে মিস্ত্রির কাজ করতেন। স্থানীয় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে দেলু গ্যাংয়ের সঙ্গে তাঁর বিরোধ ছিল।
৩১ আগস্ট বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে র্যাব–৭ খেলবীও এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রধান আসামি দেলু (৩৬) ও সহযোগী কিরিচ হাসান (৩০)–কে গ্রেপ্তার করে। পরে তাঁদের দেওয়া তথ্যে বিকেল ৪টা ৫০ মিনিটে আলীনগর এলাকায় অভিযান চালিয়ে শাহিন (২৮) ও মোবারক হোসেন বাপ্পি (৩৬) নামের আরও দুজনকে আটক করা হয়।
এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে বায়েজিদ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় ৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৪–৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলা নম্বর ৬২, তারিখ ৩১ আগস্ট ২০২৫, ধারা ৩০২/৩৪ দণ্ডবিধি। গ্রেপ্তার চারজনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, দেলু গ্যাং দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিল। এ গ্যাংকে দমন না করলে ভবিষ্যতেও এ ধরনের হত্যাকাণ্ড ঘটতে থাকবে। তবে র্যাবের দ্রুত অভিযানে আপাতত এলাকায় স্বস্তি ফিরেছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দেলু গ্যাংয়ের মূল শেকড় উপড়ে ফেলতে আরও অভিযান চালানো হবে। ডিসি হিল এলাকায় শান্তি ফিরিয়ে আনতে এটাই এখন প্রধান লক্ষ্য।
প্রিন্ট