ঢাকার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা নিয়ে ভুল তথ্য না ছড়াতে অনুরোধ জানিয়েছেন সেখানকার শিক্ষিকা পূর্ণিমা দাস।
বুধবার সকাল সাড়ে ৭টায় তিনি ফেইসবুকে লিখেছেন, “আমি মাইলস্টোনের হায়দার আলী ভবনের একজন শিক্ষিকা। আপনাদেরকে দুইহাত জোর করে বলছি, ভুল তথ্য ছড়াবেন না।
“আমিও আগুনের মধ্যে আটকা পড়েছিলাম আমার চেয়ে বেশি আপনারা ফেসবুকবাসী জানবেন না তাইনা?”
সোমবার দুপুরে বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান ঢাকার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বিধ্বস্ত হয়। এতে সার্ধশতাধিক হতাহতের ঘটনা ঘটে, যার বেশিরভাগই শিশু।
পূর্ণিমা লিখেছেন, “স্কুল ছুটি হয় দুপুর ১ টায়, আমি ঠিক তার এক থেকে দুই মিনিটে স্কাই সেকশনে ঢুকে দেখি ওখানে শুধু একটা বাচ্চা দাঁড়ানো।কেউ ছিলোনা সবাই চলে গেছিলো।
“আপনারা জানেন না ছুটির সময় হলে বাচ্চারা তিন চার মিনিট আগে থেকেই কিভাবে ব্যাগ কাঁধে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে বাসায় যাওয়ার জন্য এবং আমি চলে আসার পর অভিভাবক আসেনি বলে আবার স্কাই এ কিছু বাচ্চা ঢুকেছিলো তাদেরকেও আমাদের আরেকজন টিচার ক্লাস থেকে নিয়ে অন্য সেকশনে বসায়।
“এরপরেও আবার কয়েকজন(৫ -৬ জন) ঢুকেছিলো তাদেরকেই আমরা হারিয়ে ফেলেছি।বা যারা করিডোরে,দোলনায় খেলছিলো বা সিঁড়িঘরে ছোটাছুটি করছিলো।বা ওই মুহুর্তে ওই জায়গায় কাকতালীয় ভাবে ছিলো।(এদের সংখ্যা অনিশ্চিত)”
ঘটনার বর্ণনায় পূর্ণিমা বলতে থাকেন, “এরপর আসেন #cloud এ ওখানে বাচ্চার সংখ্যা (৮-১০) স্কাই এর চেয়ে বেশি ছিলো।আমার ধারনা মাহরীন মিস,মাসুকা মিস ও মাহ্ফুজা মিস ওখান থেকেই বাচ্চা বের করার চেষ্টা করছিলো।এবং তাদের বের করতে করতে নিজেরা ঝলসে যায়। যারমধ্যে মাহরীন মিস এবং মাসুকা মিস কে আমরা হারিয়ে ফেলেছি।মাহফুজা মিসের অবস্থা এখন গুরুতর উনি লাইফ সাপোর্টে আছেন।উনার জন্য আপনারা দোয়া করবেন।
“দ্বিতীয় তলার বাচ্চারদের ও ঘটনা একই।দুইটা ক্লাসরুম একটা টিচার্স রুম পুড়েছে। ওখানেও ১৫-২০ জন ছিলো।”
প্রাঙ্গণের বর্ণনায় তিনি বলেছেন, “হায়দার আলী ভবনের মুখে, দোলনায় এবং করিডোরের হাঁটাহাঁটি করা বাচ্চার সংখ্যা এভাবে বলতে পারা যায় না।অনুমান ও করা কঠিন।তারমধ্যে অনেকের শরীর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে যে লাশগুলো খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
“এরমধ্যে আছে ওখানকার আয়া রাও।এখান থেকেই বেশিরভাগ আহত।আহতের সংখ্যাও ঠিকভাবে বলা যায় না।
“তাই ভুল তথ্য ছড়াবেন না।আপনারা যত মৃতের সংখ্যা বলছেন সেটা একেবারে সম্ভব না।তারমধ্য আমরা যারা দুই কর্নারে ছিলাম তারা তো অক্ষত অবস্থায় ফিরে এসছি।”
পূর্ণিমা বলেন, “আপনাদের কোনো ধারণা নেই এই শিক্ষক শিক্ষিকাগুলো কিভাবে বাচ্চাদেরকে সারাদিন আগলে রাখে।ছুটি হওয়ার সময় মাহরীন মিস গেটের সামনে দাঁড়িয়ে থাকে প্রতদিন বাচ্চাদেরকে অভিভাবকদের হাতে বুঝিয়ে দেয়। যতক্ষণ একটা বাচ্চারও অভিভাবক থাকে উনি গেট থেকে নড়েন না।
“তাই হাত জোর করে বলছি।ভুল তথ্য ছড়াবেন না।মানুষের ইমোশন নিয়ে খেলবেন না।
প্রিন্ট