ঢাকা ১১:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩০ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo মঠবাড়িয়ায় বাবাকে হ’ত্যার অভিযোগে ছেলে গ্রে’ফ’তা’র Logo আশুলিয়ার বাইপাইলে যৌথ বাহিনীর অভিযানে গাঁজাসহ ক্রেতা বিক্রেতা ৪ জন আটক! Logo নাসিরনগরে খাবারে বিষ মিশিয়ে ৩৫০০ হাঁস মেরে ফেলার অভিযোগ Logo পিকেএসএফ ভবন-২ উদ্বোধন করলেন প্রধান উপদেষ্টা Logo লন্ডনে উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের ওপর হামলার চেষ্টা, সরকারের নিন্দা Logo প্রশাসনে সমন্বয়হীনতায় রাষ্ট্রীয় কার্যক্রমে স্থবিরতা রাজনৈতিক আনুগত্যের ছায়ায় প্রশাসনিক কার্যক্রম স্থবির, বঞ্চিত কর্মকর্তাদের মধ্যে অসন্তোষ-ক্ষোভ আওয়ামী-জামায়াত বিরোধীরা কোণঠাসা Logo আসুন আমরা হরিণ শিকারী এবং হরিণের মাংস ভক্ষক সকলকে একসাথে বয়কট করি Logo জাকসুর ভিপি জিতু, জিএস মাজহার Logo সাউথখালী ইউনিয়নের চালিতাবুনিয়া বাজারে সরকারি জায়গায় ইউঃ পরিষদের মাধ্যমে তৈরি করা পাকা টলসেট দখল করে দোকান ঘর বানাচ্ছে মর্মে স্থানীয় জনসাধারণ এর মাধ্যমে অভিযোগ Logo পিরোজপুর (৩) মঠবাড়ীয়া জামায়াতের মনোনীত প্রার্থী ঘোষণা করে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

গাজীপুর স্টাইলে’ ৫ সাংবাদিককে হত্যার পরিকল্পনা নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের, হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট ফাঁস

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ১১:৩০:১৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১০ অগাস্ট ২০২৫
  • ৪২ ১০.০০০ বার পড়া হয়েছে

গাজীপুরের মতো ফেনীতে পাঁচ সাংবাদিকের ওপর হামলার পরিকল্পনা করার অভিযোগ উঠেছে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে করা তাদের পরিকল্পনা গোয়েন্দা তৎপরতায় ফাঁস হয়েছে। জানা গেছে, ‘একতাই শক্তি’ নামে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে এ হামলার পরিকল্পনা করা হচ্ছিল।

শনিবার (৯ আগস্ট) রাতে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) ফেনী সংবাদদাতা ও দৈনিক ফেনীর সময় সম্পাদক মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন ফেনী মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। বিষয়টি থানার ওসি মোহাম্মদ সামছুজ্জামান নিশ্চিত করেছেন।

জানা গেছে, ওই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে ফেনীর পাঁচ সাংবাদিককে টার্গেট করা হয়। তারা হলেন—মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন, যমুনা টিভির স্টাফ রিপোর্টার আরিফুর রহমান, দৈনিক ফেনীর সময় এর প্রধান প্রতিবেদক আরিফ আজম, এখন টিভি প্রতিনিধি সোলায়মান হাজারী ডালিম এবং এনটিভি অনলাইন রিপোর্টার জাহিদুল আলম রাজন।

জিডিতে উল্লেখ করা হয়েছে, শুক্রবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে বিভিন্ন মাধ্যমে খবর পাওয়া যায় যে ‘একতাই শক্তি’ নামে গ্রুপে কয়েকজন ব্যক্তি এই সাংবাদিকদের ওপর ‘গাজীপুর স্টাইলে’ হামলার পরিকল্পনা করছে।

গ্রুপে সাইফ উদ্দিন লিখেছেন—

‘আমাদের উচিত গাজীপুরের মতো মিডিয়ার ট্রায়ালটার চান্স নেওয়া। এই চান্সে ফেনীর সময় এর শাহাদাত, আরিফ আজম, আরিফ, রাজন—এদের যে কারও বিরুদ্ধে অ্যাকশন নেওয়া দরকার। এখন বিএসএল নিয়ে আসবে না, সব বিএনপির ওপর যাবে।’

অন্য এক সদস্য সাহেদ অভি মন্তব্য করেন—

‘আরিফ আজম ও শাহাদাত হোসেনদের পা চাটতো আমাদের নেতারা। কিন্তু এই আরিফ আজম নোবেলদের মিছিলের ছবি প্রকাশ করেছে। সম্পাদক শাহাদাতেরও ছাড় নেই—১০ বছর পরে হলেও মাটির নিচ থেকে তুলে আনব। এনটিভির রাজন, যমুনা টিভির আরিফ—সবাইকে দেখব।’

অভিযোগে বলা হয়, এই গ্রুপে আচমকা হামলা চালিয়ে সাংবাদিকদের কোপানোর বা তাদের বাড়িঘরে রাতের আঁধারে অগ্নিসংযোগের পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল।

এই গ্রুপে অ্যাডমিনরা হলেন—জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তোফায়েল আহাম্মদ তপু, সাধারণ সম্পাদক নুর করিম জাবেদ, সহসভাপতি সাহেদ আকবর অভি, আশিক হায়দার রাজন হাজারী, রনি চন্দ্র দাস, পৌর ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসনাত তুষার, ফেনী কলেজ ছাত্রলীগের সাইফ উদ্দিন মানিক।

এছাড়া গ্রুপে যুক্ত আছেন—শওকত কিরণ, জিমান শুভ, এ এইচ তুষার, জোবায়েদ আকাশ, তৌফিক চৌধুরী, হৃদয় ভূঁঞা, আকাশ আহাম্মেদ, মো. রাকিব, দিলারা সুলতানা মিলা, নিজাম পাটোয়ারী, নাছির উদ্দিন মিয়াজী, ইকবাল হোসেন বাবলু, লিও চৌধুরী, মো. রোমান, রবিউল হক ভূঁঞা রবিন, এখলাছ উদ্দিন খন্দকার, রাকিব অর্ণব, ইয়াছিন আরাফাত রাজু, রায়হান হাবিব খান শাকিল, রাকিব আহাম্মদ তাহান, মামুন আড্ডা, মো. রিয়াদ হোসেন রিয়াদসহ আরও অনেকে।

ফেনীর প্রবীণ সাংবাদিক এ কে এম আবদুর রহীম বলেন, ‘এ ঘটনায় সাংবাদিকদের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।’

সুজন (সুশাসনের জন্য নাগরিক) ফেনী জেলা কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোরশেদ হোসেন নিন্দা জানিয়ে বলেন, ‘ফেনীর গণহত্যায় জড়িতরা পলাতক থেকে নাশকতার পরিকল্পনা করছে। সাংবাদিকদের ওপর এ ধরনের ষড়যন্ত্র অগ্রহণযোগ্য।’

সাংবাদিক ইউনিয়ন ফেনীর সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বলেন, ‘সাংবাদিকদের টার্গেট করে হামলার হুমকি গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও পেশাদারিত্বের জন্য সরাসরি হুমকি। এক্ষেত্রে রাষ্ট্রের উচিত অপরাধী যেই হোক তার বর্ণ পরিচয় না জেনে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা। না হলে গণমাধ্যম হুমকির মুখে পতিত হবে, যা কারও জন্য সুফল বয়ে আনবে না।’

ওসি সামছুজ্জামান জানান, ‘বিষয়টি আমরা আগেই গোয়েন্দা নজরদারিতে পেয়েছি। সাংবাদিকদের নিরাপত্তায় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সাইবার সেলের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য যাচাই করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গ্রুপের প্রায় সবাই বিভিন্ন মামলার পলাতক আসামি।’


প্রিন্ট
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

মঠবাড়িয়ায় বাবাকে হ’ত্যার অভিযোগে ছেলে গ্রে’ফ’তা’র

গাজীপুর স্টাইলে’ ৫ সাংবাদিককে হত্যার পরিকল্পনা নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের, হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট ফাঁস

আপডেট সময় ১১:৩০:১৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১০ অগাস্ট ২০২৫

গাজীপুরের মতো ফেনীতে পাঁচ সাংবাদিকের ওপর হামলার পরিকল্পনা করার অভিযোগ উঠেছে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে করা তাদের পরিকল্পনা গোয়েন্দা তৎপরতায় ফাঁস হয়েছে। জানা গেছে, ‘একতাই শক্তি’ নামে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে এ হামলার পরিকল্পনা করা হচ্ছিল।

শনিবার (৯ আগস্ট) রাতে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) ফেনী সংবাদদাতা ও দৈনিক ফেনীর সময় সম্পাদক মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন ফেনী মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। বিষয়টি থানার ওসি মোহাম্মদ সামছুজ্জামান নিশ্চিত করেছেন।

জানা গেছে, ওই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে ফেনীর পাঁচ সাংবাদিককে টার্গেট করা হয়। তারা হলেন—মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন, যমুনা টিভির স্টাফ রিপোর্টার আরিফুর রহমান, দৈনিক ফেনীর সময় এর প্রধান প্রতিবেদক আরিফ আজম, এখন টিভি প্রতিনিধি সোলায়মান হাজারী ডালিম এবং এনটিভি অনলাইন রিপোর্টার জাহিদুল আলম রাজন।

জিডিতে উল্লেখ করা হয়েছে, শুক্রবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে বিভিন্ন মাধ্যমে খবর পাওয়া যায় যে ‘একতাই শক্তি’ নামে গ্রুপে কয়েকজন ব্যক্তি এই সাংবাদিকদের ওপর ‘গাজীপুর স্টাইলে’ হামলার পরিকল্পনা করছে।

গ্রুপে সাইফ উদ্দিন লিখেছেন—

‘আমাদের উচিত গাজীপুরের মতো মিডিয়ার ট্রায়ালটার চান্স নেওয়া। এই চান্সে ফেনীর সময় এর শাহাদাত, আরিফ আজম, আরিফ, রাজন—এদের যে কারও বিরুদ্ধে অ্যাকশন নেওয়া দরকার। এখন বিএসএল নিয়ে আসবে না, সব বিএনপির ওপর যাবে।’

অন্য এক সদস্য সাহেদ অভি মন্তব্য করেন—

‘আরিফ আজম ও শাহাদাত হোসেনদের পা চাটতো আমাদের নেতারা। কিন্তু এই আরিফ আজম নোবেলদের মিছিলের ছবি প্রকাশ করেছে। সম্পাদক শাহাদাতেরও ছাড় নেই—১০ বছর পরে হলেও মাটির নিচ থেকে তুলে আনব। এনটিভির রাজন, যমুনা টিভির আরিফ—সবাইকে দেখব।’

অভিযোগে বলা হয়, এই গ্রুপে আচমকা হামলা চালিয়ে সাংবাদিকদের কোপানোর বা তাদের বাড়িঘরে রাতের আঁধারে অগ্নিসংযোগের পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল।

এই গ্রুপে অ্যাডমিনরা হলেন—জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তোফায়েল আহাম্মদ তপু, সাধারণ সম্পাদক নুর করিম জাবেদ, সহসভাপতি সাহেদ আকবর অভি, আশিক হায়দার রাজন হাজারী, রনি চন্দ্র দাস, পৌর ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসনাত তুষার, ফেনী কলেজ ছাত্রলীগের সাইফ উদ্দিন মানিক।

এছাড়া গ্রুপে যুক্ত আছেন—শওকত কিরণ, জিমান শুভ, এ এইচ তুষার, জোবায়েদ আকাশ, তৌফিক চৌধুরী, হৃদয় ভূঁঞা, আকাশ আহাম্মেদ, মো. রাকিব, দিলারা সুলতানা মিলা, নিজাম পাটোয়ারী, নাছির উদ্দিন মিয়াজী, ইকবাল হোসেন বাবলু, লিও চৌধুরী, মো. রোমান, রবিউল হক ভূঁঞা রবিন, এখলাছ উদ্দিন খন্দকার, রাকিব অর্ণব, ইয়াছিন আরাফাত রাজু, রায়হান হাবিব খান শাকিল, রাকিব আহাম্মদ তাহান, মামুন আড্ডা, মো. রিয়াদ হোসেন রিয়াদসহ আরও অনেকে।

ফেনীর প্রবীণ সাংবাদিক এ কে এম আবদুর রহীম বলেন, ‘এ ঘটনায় সাংবাদিকদের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।’

সুজন (সুশাসনের জন্য নাগরিক) ফেনী জেলা কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোরশেদ হোসেন নিন্দা জানিয়ে বলেন, ‘ফেনীর গণহত্যায় জড়িতরা পলাতক থেকে নাশকতার পরিকল্পনা করছে। সাংবাদিকদের ওপর এ ধরনের ষড়যন্ত্র অগ্রহণযোগ্য।’

সাংবাদিক ইউনিয়ন ফেনীর সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বলেন, ‘সাংবাদিকদের টার্গেট করে হামলার হুমকি গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও পেশাদারিত্বের জন্য সরাসরি হুমকি। এক্ষেত্রে রাষ্ট্রের উচিত অপরাধী যেই হোক তার বর্ণ পরিচয় না জেনে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা। না হলে গণমাধ্যম হুমকির মুখে পতিত হবে, যা কারও জন্য সুফল বয়ে আনবে না।’

ওসি সামছুজ্জামান জানান, ‘বিষয়টি আমরা আগেই গোয়েন্দা নজরদারিতে পেয়েছি। সাংবাদিকদের নিরাপত্তায় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সাইবার সেলের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য যাচাই করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গ্রুপের প্রায় সবাই বিভিন্ন মামলার পলাতক আসামি।’


প্রিন্ট