ঢাকা ০৯:৪৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম ::
রায়পুরে দেশীয় শিল্প ও পণ্য মেলায় ভ্রাম্যমান আদালত, নগদ অর্থদণ্ড কালিয়াকৈরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের উঠান বৈঠক ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত  মোংলায় জলবায়ু ন্যায্যতার গণসংলাপে বক্তারা : সুন্দরবন উপকূলীয় অঞ্চলের বাস্তুতন্ত্রের সুরক্ষা দিন অভিনব কায়দায় কুমড়া শাকের আড়ালে গাঁজা পাচারকালে ডিএনসি- কুমিল্লার হাতে ১৩ কেজি গাঁজাসহ আটক ০২ নারী মঠবাড়ীয়া সাফলেজা কচুবাড়ীয়া বসত ঘর ভাঙচুর লুটপাট ও যখম এর অভিযোগ আঃ খালেক হাওলাদার গংদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির আখড়া বরগুনার পাসপোর্ট অফিস, দালাল ছাড়া মিলছে না পাসপোর্ট কাশেমপুর থানায় অভিযোগ করতে গিয়ে বিট্টিমরাই স্কুল ছাত্র মোঃ রাব্বি নিজ খালাকে আটকিয়ে ? ওসি সাইফুল ইসলাম মোটা অংকের টাকার বিনিময় তাদের আসামি করে গ্রেফতার দেখান আনন্দবাজারকে ডা. শফিকুর রহমান কোনও রাজনৈতিক দলকে খারিজ বা সরিয়ে দেয়ার ইচ্ছা জামায়াতের নেই রাজনৈতিক দলগুলো যদি বলে যে তারা সংস্কার চায় না, তাহলে এখনই নির্বাচন দিয়ে দেবো: ড. ইউনূস দেশবাসীকে ফের কাঁদালেন শহিদ নাফিজের মা

পবিত্র মিরাজ শরীফ উপলক্ষ্যে সারাদেশে সাধারণ ছুটি মানববন্ধনপালিত

সময়ের কন্ঠ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : ০৭:৫৬:২৩ পূর্বাহ্ণ, মঙ্গলবার, ৯ মার্চ ২০২১
  • / ৩৩৯ ৫০০০.০ বার পাঠক

সময়ের কন্ঠ রিপোর্টার।।
আজ  ৯ মার্চ, সময়: সকাল ১০ ঘটিকা
পবিত্র মিরাজ শরীফ উপলক্ষ্যে সারাদেশে সাধারণ ছুটি দাবি এবং ইসলামবিদ্বেষী নাস্তিক ব্লগারদের ইসলামবিরোধী লেখা ও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতজনিত লেখা পুন:চালু না হওয়ার লক্ষ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন অক্ষুন্ন রাখার পক্ষে এবং পবিত্র রমাদ্বান মাসের ভাবমর্যাদা বজায় রাখার জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার দাবিতে-
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আজ সকাল ১০ টায় এক বিশাল মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগসহ সরকারের পক্ষে ১৩টি সমমনা ইসলামি দল।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, পবিত্র সাইয়্যিদুল আইয়াদ শরীফ (পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উপলক্ষ্যে সরকার যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতীয় পতাকা উত্তোলনের যে নির্দেশ দিয়েছে তাতে ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলমান গভীরভাবে আবেগে আপ্লুত হয়েছে এবং সরকারকে অন্তরের অন্তস্থল থেকে অনবদ্য অভিনন্দন ও দোয়া জানাচ্ছে।সমাবেশে বক্তারা বলেন, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংবিধানের ২(ক) ধারায় বর্ণিত হয়েছে, রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম। আর দ্বীন ইসলামের মূল ভিত্তি নামাজ। নামাজ মুসলমান আর অমুসলমানদের মধ্যে পার্থক্যকারী আমল। নামাজ বেহেশতের চাবী। আর মুসলমান পবিত্র নামাজের হাদিয়া লাভ করেছেন পবিত্র শবে মিরাজের উছীলায়। তাই পবিত্র শবে মিরাজ মুসলমানদের কাছে অশেষ ফযীলতপূর্ণ ও ব্যাপক তাৎপর্যপূর্ণ। কাজেই রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের এদেশে শবে মিরাজকে অবশ্যই মহা গুরুত্ব দেয়া উচিত এবং যথাযোগ্য রাষ্ট্রীয় ভাবমর্যাদায় পালনসহ এদিনে সাধারণ সরকারি ছুটি ঘোষণা করা উচিত। যা এদেশের ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠী গভীরভাবে প্রত্যাশা করে। এ দাবি পুরণ করলে ধর্মপ্রাণ মুসলমান সরকারকে আরো ইসলামবান্ধব বলে মনে করবে।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, যারা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের পরিবর্তন চায় তারা ইসলাম, মুসলমান ও দেশবান্ধব নয়। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রেক্ষাপট ছিলো নাস্তিক ব্লগারদের মুক্তমনা, বিজ্ঞানমনস্ক লেখক নামে ইসলামবিদ্বেষী লেখা এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতকারী লেখা বন্ধ করা। ইসলামবিদ্বেষী ও ইসলামের উপর মিথ্যারোপকারী নাস্তিকদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া। কিন্তু এখন আবার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন তুলে দিলে নাস্তিক ব্লগাররা মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে। যা এদেশের ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠী ধর্মপ্রাণ মুসলমান বরদাশত করবেনা। তাই ধর্মপ্রাণ দেশবাসী মুসলমান ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন রক্ষার পক্ষে। যা সরকারকে একান্তভাবে মনে রাখতে হবে।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, জামাত শিবির ও তাদের সহযোগী ইসলামের নাম ফেরীকারী ধর্মব্যবসায়ী রাজনীতিকরা চাচ্ছে যাতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন উঠে যায়। আর এ সুযোগে ইসলামবিদ্বেষী লেখা পুন:ব্যাপক প্রচারণা পায়। আর তাতে ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠী ধর্মপ্রাণ মুসলমান ক্ষেপে উঠবে এবং সাধারণ মুসলমানদের সে ক্ষোভকে জামাত বিএনপি সরকারবিরোধী আন্দোলনে পরিণত করে তাদের দুরভিসন্ধি বাস্তবায়ন করতে পারে। এ ফাঁদে পা না দেয়ার জন্য আমরা সরকারকে সতর্ক করছি।
বক্তারা বলেন, ইসলাম ও মুসলিমবিদ্বেষী নাস্তিক্যবাদ প্রচারে শীর্ষস্থানীয় সামহোয়্যার ইন ব্লগ, আমার ব্লগ, মুক্তমনা ব্লগ, নাগরিক ব্লগ, প্রথম আলো ব্লগ, ধর্মকারী ব্লগ, নবযুগ ব্লগ, সচলায়তন ব্লগ, অগ্নিসেতু ব্লগ ইত্যাদি নামের ব্লগগুলো অনবরত দেশী-বিদেশী এনজিওগুলোর মদদে সম্মানিত ও পবিত্র ধর্ম দ্বীন ইসলামের প্রতি বিদ্বেষ ছড়িয়ে দিয়ে ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর পায়তারায় লিপ্ত রয়েছে। এরা সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে বিরোধীদের উসকে দিচ্ছে। এদের অশুভ অপতৎপরতা রোধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন অক্ষুন্ন রাখতে হবে ও এদেরকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আওতায় আনতে হবে।সমাবেশে বক্তারা বলেন,দীর্ঘ ১ বছর বন্ধ রেখে পবিত্র রমাদ্বান শরীফে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্তকে এদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমান ইসলামবৈরী সিদ্ধান্ত হিসেবে দেখছে। রমজানের ভেতর ক্লাস চলা উচিত নয় বলে জানিয়েছে দেশের প্রায় ৮৭% মানুষ। গত বুধবার (৩ মার্চ) থেকে শুরু করে গত শনিবার (৬ মার্চ) পর্যন্ত চলা সময় অনলাইনের এক জরীপে এ তথ্য উঠে এসেছে।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, রোজায় সব নিয়মই লঘু করে দেয়া হয়। অফিস আদালতের সময় কমিয়ে দেয়া হয়। সেখানে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের উপর পুরো নিয়ম জারি করে দেয়া তাদের প্রতি বৈষম্য ও বাড়তি চাপ তৈরীর শামিল । এতে করে অনেকেই রোজা পালনে নিরুৎসাহিত হবে এবং যারা রোজা রাখবে তাদের অতি বেশি কষ্ট পোহাতে হবে। অথচ হাদীছ শরীফে রোজার সময় শ্রমকে কমিয়ে দেয়ার কথা বলা হয়েছে।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, পবিত্র কুরআন-সুন্নাহবিরোধী কোনো আইন পাশ হবেনা এ প্রতিশ্রুতি দিয়ে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসেছে। সুতরাং সরকার রোজায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখবে এটাই ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলমান আশা করে।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, রোজায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখলে ‘সরকার ইসলামবৈরী’-জামাত শিবির এ প্রচারের সুযোগ নিবে । পক্ষান্তরে রোজায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখলে ‘সরকার ইসলামবান্ধব’-এটা প্রচার করা সহজ হবে এবং আগামীতে অনেক বেশি ধর্মপ্রাণ মুসলমানের ভোট নৌকায় উঠবে। ইনশাআল্লাহ!

সমাবেশে বক্তারা বলেন, ইসলামের মূল কথা হচ্ছে, কালেমায়ে শাহাদাত লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। যিনি আখেরী রসূল ও নবী নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শানে পবিত্র কুরআন শরীফে মহান আল্লাহপাক তিনি ইরশাদ ফরমান, হে হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আমি আপনার জিকিরকে বুলন্দ করেছি। সুবহানাল্লাহ! আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অবর্ননীয় শান মানের অনন্য উদাহরণ হচ্ছে মহা সম্মানিত মহাপবিত্র শবে মিরাজ শরীফ।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি দুনিয়াবী হিসেবে ৫১তম বয়স মুবারক-এ পবিত্র ২৬ রজবুল হারাম ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) দিবাগত রাত্রে অর্থাৎ পবিত্র ২৭ রজবুল হারাম লাইলাতুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ বা সোমবার রাত্রে পবিত্র কা’বা শরীফ থেকে পবিত্র বাইতুল মুকাদ্দাস শরীফ, সেখান থেকে পবিত্র ছিদরাতুল মুনতাহা হয়ে পবিত্র আরশে মুয়াল্লায় মহান আল্লাহ পাক উনার আনুষ্ঠানিক পবিত্র সাক্ষাৎ মুবারক করে আবার যমীনে তাশরীফ মুবারক আনেন। সুবহানাল্লাহ! যা পঁয়তাল্লিশ জন বিশিষ্ট হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা বর্ণনা করেছেন। সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ!

বক্তারা বলেন, সুমহান মহাপবিত্র ২৭শে রজবুল হারাম শরীফ বা লাইলাতুল মি’রাজ শরীফ অর্থাৎ পবিত্র মি’রাজ শরীফ উনার সুমহান ও বরকতময় রাত। সুবহানাল্লাহ! যা আসতে আর মাত্র ২ দিন বাকি। পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের দ্বারা অকাট্যভাবে প্রমাণিত যে- মহাপবিত্র মি’রাজ শরীফ অবশ্যই সত্য। যা বিশ্বাস করা প্রত্যেক মুসলমানদের জন্য ফরয। আর অস্বীকার ও অবজ্ঞা করা কাট্টা কুফরীর অন্তর্ভুক্ত। কাজেই বাংলাদেশসহ প্রত্যেক মুসলিম ও অমুসলিম দেশের সরকারের উচিত- মহাপবিত্র মি’রাজ শরীফ উপলক্ষে ঐচ্ছিক নয়; বরং সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা এবং এ মুবারক রাত্রটি যথাযথ তা’যীম-তাকরীম উনার সাথে উদযাপনের জন্য সরকারিভাবে এখন থেকেই সর্বপ্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ করা। পাশাপাশি এ মুবারক বিষয়টি সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিটি সিলেবাসের অন্তর্ভূক্ত করা।

সমাবেশ ও মানববন্ধনে সমন্বয় করেন, বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগের সভাপতি- পীরজাদা, বর্ষীয়ান বিপ্লবী জননেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্জ মাওলানা মুহম্মদ আখতার হুসাইন বুখারী, (পীর সাহেব, টাঙ্গাইল)। বক্তব্য রাখেন- সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্জ কাজী মাওলানা মুহম্মদ আবুল হাসান শেখ শরীয়তপুরী, সম্মিলিত ইসলামী গবেষণা পরিষদের সভাপতি- আলহাজ্জ হাফেজ মাওলানা মুহম্মদ আব্দুস সাত্তার, কার্যকরী সভাপতি- বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগ। মাওলানা মুহম্মদ শওকত আলী শেখ ছিলিমপুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক- হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুল জলিল, মাওলানা মুহম্মদ আব্দুস সবুর মিয়া (রানীপুরা) সহ-দপ্তর সম্পাদক, বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগ, রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ। হাফেজ মাওলানা মুহম্মদ ওমর ফারুক গোপালগঞ্জী, হাফেজ ক্বারী মুহম্মদ শাহ আলম ফরাজী, হাফেজ মুহম্মদ আব্দুল বারী, কারী মাওলানা মুহম্মদ আসাদুজ্জামান আল কাদেরী, আলহাজ মুহম্মদ খোরশেদ আলম রেজভী, কাজী অধ্যাপক মাওলানা মুহম্মদ নোমান চৌধুরী, হাফেজ মাওলানা মুহম্মদ আল আমীন, মাওলানা মুফতী মুহম্মদ আব্দুল গফুর, হাফিজ মাওলানা খালিদ হাসান, আলহাজ্জ মাওলানা মুহম্মদ রফিকুল ইসলাম সিদ্দীকি আল কুরাইশি, আলহাজ্জ মাওলানা মুহম্মদ মুজিবুর রহমান আল মাদানী, মাওলানা মুহম্মদ মোকাম্মেল হুসাইন চৌধুরী, ক্বারী মুহম্মদ মনিরুজ্জামান, মুহম্মদ গরীব মাহবুব প্রমুখ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সম্মিলিত ইসলামী গবেষণা পরিষদ চেয়ারম্যান- আলহাজ্জ হাফেজ মাওলানা মুহম্মদ আব্দুস সাত্তার।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

পবিত্র মিরাজ শরীফ উপলক্ষ্যে সারাদেশে সাধারণ ছুটি মানববন্ধনপালিত

আপডেট টাইম : ০৭:৫৬:২৩ পূর্বাহ্ণ, মঙ্গলবার, ৯ মার্চ ২০২১
সময়ের কন্ঠ রিপোর্টার।।
আজ  ৯ মার্চ, সময়: সকাল ১০ ঘটিকা
পবিত্র মিরাজ শরীফ উপলক্ষ্যে সারাদেশে সাধারণ ছুটি দাবি এবং ইসলামবিদ্বেষী নাস্তিক ব্লগারদের ইসলামবিরোধী লেখা ও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতজনিত লেখা পুন:চালু না হওয়ার লক্ষ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন অক্ষুন্ন রাখার পক্ষে এবং পবিত্র রমাদ্বান মাসের ভাবমর্যাদা বজায় রাখার জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার দাবিতে-
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আজ সকাল ১০ টায় এক বিশাল মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগসহ সরকারের পক্ষে ১৩টি সমমনা ইসলামি দল।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, পবিত্র সাইয়্যিদুল আইয়াদ শরীফ (পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উপলক্ষ্যে সরকার যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতীয় পতাকা উত্তোলনের যে নির্দেশ দিয়েছে তাতে ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলমান গভীরভাবে আবেগে আপ্লুত হয়েছে এবং সরকারকে অন্তরের অন্তস্থল থেকে অনবদ্য অভিনন্দন ও দোয়া জানাচ্ছে।সমাবেশে বক্তারা বলেন, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংবিধানের ২(ক) ধারায় বর্ণিত হয়েছে, রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম। আর দ্বীন ইসলামের মূল ভিত্তি নামাজ। নামাজ মুসলমান আর অমুসলমানদের মধ্যে পার্থক্যকারী আমল। নামাজ বেহেশতের চাবী। আর মুসলমান পবিত্র নামাজের হাদিয়া লাভ করেছেন পবিত্র শবে মিরাজের উছীলায়। তাই পবিত্র শবে মিরাজ মুসলমানদের কাছে অশেষ ফযীলতপূর্ণ ও ব্যাপক তাৎপর্যপূর্ণ। কাজেই রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের এদেশে শবে মিরাজকে অবশ্যই মহা গুরুত্ব দেয়া উচিত এবং যথাযোগ্য রাষ্ট্রীয় ভাবমর্যাদায় পালনসহ এদিনে সাধারণ সরকারি ছুটি ঘোষণা করা উচিত। যা এদেশের ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠী গভীরভাবে প্রত্যাশা করে। এ দাবি পুরণ করলে ধর্মপ্রাণ মুসলমান সরকারকে আরো ইসলামবান্ধব বলে মনে করবে।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, যারা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের পরিবর্তন চায় তারা ইসলাম, মুসলমান ও দেশবান্ধব নয়। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রেক্ষাপট ছিলো নাস্তিক ব্লগারদের মুক্তমনা, বিজ্ঞানমনস্ক লেখক নামে ইসলামবিদ্বেষী লেখা এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতকারী লেখা বন্ধ করা। ইসলামবিদ্বেষী ও ইসলামের উপর মিথ্যারোপকারী নাস্তিকদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া। কিন্তু এখন আবার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন তুলে দিলে নাস্তিক ব্লগাররা মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে। যা এদেশের ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠী ধর্মপ্রাণ মুসলমান বরদাশত করবেনা। তাই ধর্মপ্রাণ দেশবাসী মুসলমান ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন রক্ষার পক্ষে। যা সরকারকে একান্তভাবে মনে রাখতে হবে।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, জামাত শিবির ও তাদের সহযোগী ইসলামের নাম ফেরীকারী ধর্মব্যবসায়ী রাজনীতিকরা চাচ্ছে যাতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন উঠে যায়। আর এ সুযোগে ইসলামবিদ্বেষী লেখা পুন:ব্যাপক প্রচারণা পায়। আর তাতে ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠী ধর্মপ্রাণ মুসলমান ক্ষেপে উঠবে এবং সাধারণ মুসলমানদের সে ক্ষোভকে জামাত বিএনপি সরকারবিরোধী আন্দোলনে পরিণত করে তাদের দুরভিসন্ধি বাস্তবায়ন করতে পারে। এ ফাঁদে পা না দেয়ার জন্য আমরা সরকারকে সতর্ক করছি।
বক্তারা বলেন, ইসলাম ও মুসলিমবিদ্বেষী নাস্তিক্যবাদ প্রচারে শীর্ষস্থানীয় সামহোয়্যার ইন ব্লগ, আমার ব্লগ, মুক্তমনা ব্লগ, নাগরিক ব্লগ, প্রথম আলো ব্লগ, ধর্মকারী ব্লগ, নবযুগ ব্লগ, সচলায়তন ব্লগ, অগ্নিসেতু ব্লগ ইত্যাদি নামের ব্লগগুলো অনবরত দেশী-বিদেশী এনজিওগুলোর মদদে সম্মানিত ও পবিত্র ধর্ম দ্বীন ইসলামের প্রতি বিদ্বেষ ছড়িয়ে দিয়ে ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর পায়তারায় লিপ্ত রয়েছে। এরা সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে বিরোধীদের উসকে দিচ্ছে। এদের অশুভ অপতৎপরতা রোধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন অক্ষুন্ন রাখতে হবে ও এদেরকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আওতায় আনতে হবে।সমাবেশে বক্তারা বলেন,দীর্ঘ ১ বছর বন্ধ রেখে পবিত্র রমাদ্বান শরীফে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্তকে এদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমান ইসলামবৈরী সিদ্ধান্ত হিসেবে দেখছে। রমজানের ভেতর ক্লাস চলা উচিত নয় বলে জানিয়েছে দেশের প্রায় ৮৭% মানুষ। গত বুধবার (৩ মার্চ) থেকে শুরু করে গত শনিবার (৬ মার্চ) পর্যন্ত চলা সময় অনলাইনের এক জরীপে এ তথ্য উঠে এসেছে।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, রোজায় সব নিয়মই লঘু করে দেয়া হয়। অফিস আদালতের সময় কমিয়ে দেয়া হয়। সেখানে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের উপর পুরো নিয়ম জারি করে দেয়া তাদের প্রতি বৈষম্য ও বাড়তি চাপ তৈরীর শামিল । এতে করে অনেকেই রোজা পালনে নিরুৎসাহিত হবে এবং যারা রোজা রাখবে তাদের অতি বেশি কষ্ট পোহাতে হবে। অথচ হাদীছ শরীফে রোজার সময় শ্রমকে কমিয়ে দেয়ার কথা বলা হয়েছে।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, পবিত্র কুরআন-সুন্নাহবিরোধী কোনো আইন পাশ হবেনা এ প্রতিশ্রুতি দিয়ে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসেছে। সুতরাং সরকার রোজায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখবে এটাই ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলমান আশা করে।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, রোজায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখলে ‘সরকার ইসলামবৈরী’-জামাত শিবির এ প্রচারের সুযোগ নিবে । পক্ষান্তরে রোজায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখলে ‘সরকার ইসলামবান্ধব’-এটা প্রচার করা সহজ হবে এবং আগামীতে অনেক বেশি ধর্মপ্রাণ মুসলমানের ভোট নৌকায় উঠবে। ইনশাআল্লাহ!

সমাবেশে বক্তারা বলেন, ইসলামের মূল কথা হচ্ছে, কালেমায়ে শাহাদাত লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। যিনি আখেরী রসূল ও নবী নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শানে পবিত্র কুরআন শরীফে মহান আল্লাহপাক তিনি ইরশাদ ফরমান, হে হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আমি আপনার জিকিরকে বুলন্দ করেছি। সুবহানাল্লাহ! আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অবর্ননীয় শান মানের অনন্য উদাহরণ হচ্ছে মহা সম্মানিত মহাপবিত্র শবে মিরাজ শরীফ।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি দুনিয়াবী হিসেবে ৫১তম বয়স মুবারক-এ পবিত্র ২৬ রজবুল হারাম ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) দিবাগত রাত্রে অর্থাৎ পবিত্র ২৭ রজবুল হারাম লাইলাতুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ বা সোমবার রাত্রে পবিত্র কা’বা শরীফ থেকে পবিত্র বাইতুল মুকাদ্দাস শরীফ, সেখান থেকে পবিত্র ছিদরাতুল মুনতাহা হয়ে পবিত্র আরশে মুয়াল্লায় মহান আল্লাহ পাক উনার আনুষ্ঠানিক পবিত্র সাক্ষাৎ মুবারক করে আবার যমীনে তাশরীফ মুবারক আনেন। সুবহানাল্লাহ! যা পঁয়তাল্লিশ জন বিশিষ্ট হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা বর্ণনা করেছেন। সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ!

বক্তারা বলেন, সুমহান মহাপবিত্র ২৭শে রজবুল হারাম শরীফ বা লাইলাতুল মি’রাজ শরীফ অর্থাৎ পবিত্র মি’রাজ শরীফ উনার সুমহান ও বরকতময় রাত। সুবহানাল্লাহ! যা আসতে আর মাত্র ২ দিন বাকি। পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের দ্বারা অকাট্যভাবে প্রমাণিত যে- মহাপবিত্র মি’রাজ শরীফ অবশ্যই সত্য। যা বিশ্বাস করা প্রত্যেক মুসলমানদের জন্য ফরয। আর অস্বীকার ও অবজ্ঞা করা কাট্টা কুফরীর অন্তর্ভুক্ত। কাজেই বাংলাদেশসহ প্রত্যেক মুসলিম ও অমুসলিম দেশের সরকারের উচিত- মহাপবিত্র মি’রাজ শরীফ উপলক্ষে ঐচ্ছিক নয়; বরং সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা এবং এ মুবারক রাত্রটি যথাযথ তা’যীম-তাকরীম উনার সাথে উদযাপনের জন্য সরকারিভাবে এখন থেকেই সর্বপ্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ করা। পাশাপাশি এ মুবারক বিষয়টি সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিটি সিলেবাসের অন্তর্ভূক্ত করা।

সমাবেশ ও মানববন্ধনে সমন্বয় করেন, বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগের সভাপতি- পীরজাদা, বর্ষীয়ান বিপ্লবী জননেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্জ মাওলানা মুহম্মদ আখতার হুসাইন বুখারী, (পীর সাহেব, টাঙ্গাইল)। বক্তব্য রাখেন- সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্জ কাজী মাওলানা মুহম্মদ আবুল হাসান শেখ শরীয়তপুরী, সম্মিলিত ইসলামী গবেষণা পরিষদের সভাপতি- আলহাজ্জ হাফেজ মাওলানা মুহম্মদ আব্দুস সাত্তার, কার্যকরী সভাপতি- বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগ। মাওলানা মুহম্মদ শওকত আলী শেখ ছিলিমপুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক- হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুল জলিল, মাওলানা মুহম্মদ আব্দুস সবুর মিয়া (রানীপুরা) সহ-দপ্তর সম্পাদক, বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগ, রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ। হাফেজ মাওলানা মুহম্মদ ওমর ফারুক গোপালগঞ্জী, হাফেজ ক্বারী মুহম্মদ শাহ আলম ফরাজী, হাফেজ মুহম্মদ আব্দুল বারী, কারী মাওলানা মুহম্মদ আসাদুজ্জামান আল কাদেরী, আলহাজ মুহম্মদ খোরশেদ আলম রেজভী, কাজী অধ্যাপক মাওলানা মুহম্মদ নোমান চৌধুরী, হাফেজ মাওলানা মুহম্মদ আল আমীন, মাওলানা মুফতী মুহম্মদ আব্দুল গফুর, হাফিজ মাওলানা খালিদ হাসান, আলহাজ্জ মাওলানা মুহম্মদ রফিকুল ইসলাম সিদ্দীকি আল কুরাইশি, আলহাজ্জ মাওলানা মুহম্মদ মুজিবুর রহমান আল মাদানী, মাওলানা মুহম্মদ মোকাম্মেল হুসাইন চৌধুরী, ক্বারী মুহম্মদ মনিরুজ্জামান, মুহম্মদ গরীব মাহবুব প্রমুখ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সম্মিলিত ইসলামী গবেষণা পরিষদ চেয়ারম্যান- আলহাজ্জ হাফেজ মাওলানা মুহম্মদ আব্দুস সাত্তার।