ঢাকার ধামরাইয়ের ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ঢুলিভিটা বাসস্ট্যান্ডের উত্তর পাশে কয়েক লাখ টাকা ব্যয়ে বানানো হয়েছিল ট্রাফিক পুলিশ বক্স। এতে যানজট নিরসনে ভূমিকা রাখার কথা ছিল পুলিশের। কিন্তু সেই স্বপ্ন এখন দুঃস্বপ্ন। কিছুদিন পুলিশ থাকলেও প্রায় দুই বছর ধরে কোনো পুলিশ নেই এখানে। বক্সের সামনের জায়গা এখন অটোরিকশা, সিএনজি, ধামরাই-গুলিস্তান বাস ও হকারদের দখলে। শুধু তাই নয়, পুলিশ বক্স অবহেলা, অযত্নে পড়ে থাকায় অনেকেই বক্সের চারপাশে পায়খানা প্রস্রাব করে পরিবেশ নষ্ট করে। বর্তমানে যানজট নিরসনের কোনো ব্যবস্থাই নেই এখানে। তবে মাঝেমধ্যে নিরাপদ সড়ক চাই সংগঠনের সদস্যদের যানজট নিরসনে কাজ করতে দেখা যায়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দিনের বেশিরভাগ সময়েই ঢুলিভিটা বাসস্ট্যান্ডে যানজট লেগে থাকে, কারণ, কালিয়াকৈর-টাঙ্গাইলের গাড়ি ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে উঠতে গেলে ধামরাই পৌরসভার প্রবেশপথ দিয়ে যাওয়া লাগে এবং উপজেলায় সাধারণ জনগণ সেবা নিতে আসলেও এই পথ দিয়ে যেতে হয়। এ ছাড়াও রয়েছে স্কুল, কলেজসহ একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধামরাই বাজার এসব কিছুর প্রবেশ পথ। তাই ঢুলিভিটা বাসস্ট্যান্ডের এই পথটি খুব ব্যস্ত থাকে এবং সব সময় যানজট লেগেই থাকে। এ ছাড়াও, এই বাসস্ট্যান্ডের উত্তর পাশে রয়েছে স্নোটেক্স আউট ওয়ার লি : নামে একটি পোশাক কারখানা ও একমি ল্যাবরেটরিজ ঔষধ কোম্পানির কারখানা। এ দুটি কারখানায় প্রায় ২৫ হাজার লোক চাকরি করেন। বিশেষ করে সকাল ছয়টা থেকে আটটা পর্যন্ত আবার বিকেল পাঁচটা থেকে রাত প্রায় নয়টা পর্যন্ত যানজট লেগেই থাকে। ট্রাফিক পুলিশ না থাকায় চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয় সাধারণ জনগণকে।
পথচারী কামাল হোসেন বলেন, ‘লাখ টাকা খরচ করে ট্রাফিক পুলিশ বক্স নির্মাণ করেছে। ট্রাফিক পুলিশ সব সময় থাকবে এবং রাস্তার যানজট নিরসনে কাজ করবে কিন্তু ট্রাফিক পুলিশ বক্স পড়ে আছে, পুলিশ নাই। দিনের বেশিরভাগ সময় বিশেষ করে সকাল এবং বিকেলে যানজট লেগে থাকে। সঠিক সময়ে চাকুরিজীবী এবং শিক্ষার্থী তাদের সঠিক গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতে পারে না। তাই এখানে সব সময় ট্রাফিক পুলিশ থাকা জরুরি।’
এ বিষয়ে এম নাহিদ মিয়া বলেন, ‘রোড ক্র্যাশ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশেই দীর্ঘদিন ট্রাফিক বক্সটি রয়েছে, তবে নেই কোনো কার্যকর ভূমিকা। আমরা স্বেচ্ছায় প্রতিনিয়ত এই এলাকায় শৃঙ্খলা আনতে কাজ করে থাকি, কিন্তু এটি যথেষ্ট নয়। প্রয়োজন ট্রাফিক পুলিশ। এ সড়কে বিশৃঙ্খলা দূরীকরণে উল্টোপথে গাড়ি চলা বন্ধ নিশ্চিত করতে পারলে সড়কে যানজট কমে যাবে বলে বিশ্বাস করি। সুতরাং জনসাধারণের ভোগান্তি দূরীকরণের জন্য অতি শীঘ্রই ট্রাফিক পুলিশ নিয়োগের দাবি জানাচ্ছি।’
সাভার হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালেহ্ আহমেদ বলেন, ‘আমাদের জনবল কম থাকায় একদিকে অভিযান চালালে আরেক দিকে যেতে পারি না। আমি ট্রাফিক বিভাগের সঙ্গে কথা বলব যেন ধামরাই ঢুলিভিটা বাসস্ট্যান্ডে ট্রাফিক পুলিশ নিয়োগ দেন। এতে যানজট নিরসন হবে। যেহেতু স্থানটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’
ট্রাফিক পুলিশ পরিদর্শক (ট্রাফিক ইন্সপেক্টর) (ঢাকা উত্তর) সারোয়ার হোসেন বলেন, ‘পুলিশ বক্স করার পর কিছু দিন পুলিশ ছিল। কিন্তু জনবলের অভাবে এখন ধামরাইয়ের ঢুলিভিটা বাসস্ট্যান্ডে পুলিশ নেই। আমি ওখানে যাবো এবং নতুন করে ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েনের ব্যবস্থা করবো।’
প্রিন্ট
ধামরাই (ঢাকা) প্রতিনিধিঃ ওবাইদুল খান 



















