ঢাকা ১২:১৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫, ২ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে উপজেলা বালিবাহী ট্রাক্টর – মোটরসাইকেল  মুখোমুখি‌ Logo সিএমপি’র বন্দর থানার শ্বাসরুদ্ধকার অভিযানে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী শাকিল ও সহযোগী গ্রেফতার Logo কক্সবাজারে অবৈধ স্পা ও হোটেল অভিযানে নেতৃত্ব দিয়ে প্রশংসিত ডিআইজি আপেল মাহমুদ Logo পলাশে হাফিজিয়া মাদ্রাসা দখল ও ভাড়া আত্মসাতের অভিযোগ—শিক্ষক-শিক্ষার্থী উচ্ছেদ,শিক্ষাব্যবস্থা ভেঙে পড়ার শঙ্কা Logo ফিচার রিপোর্ট নামিদামি সুনামধন্য আড়ং-এর ডেইলি ফার্ম এর ডিলারশিপ নিয়ে অনায়াসে করছে জামানত বানিজ্য, টাকা দিলেও সিলিংয়ে ঝুলছে শাকিলের লাশ Logo হাসিনাসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে ৪র্থ দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে Logo ডা. নিতাই হত্যা: ৫ আসামির মৃত্যুদণ্ড, ৪ জনের আমৃত্যু কারাদণ্ড Logo ফরেন পলিসির বিশ্লেষণ ডিসেম্বরেই ফের যুদ্ধে জড়াতে পারে ইরান-ইসরায়েল Logo ৪৫ মিনিট খেলেই গোল-অ্যাসিস্ট, মিয়ামিকে জয়ে ফেরালেন মেসি Logo বিদেশের সব দূতাবাস থেকে রাষ্ট্রপতির ছবি সরানোর নির্দেশ

কবর দেওয়ার জায়গা নেই গাজায় পাশে নেই ইরান

টানা ২২ মাসেরও বেশি সময় ধরে অনিবার্য এক মৃত্যুর ছায়ায় বাস করছে ফিলিস্তিনিরা। যেখানে প্রতিদিনই বাড়ছে লাশের সংখ্যা।

হাসপাতালের করিডরে, স্কুলের বারান্দায়, ধ্বংসস্তূপের নিচে, রাস্তায় এমনকি বাড়ির উঠোনেও শুধু লাশ আর লাশ। অথচ কবর দেওয়ার জায়গা নেই। নিহতের সংখ্যা বাড়তে থাকায় কবরের সংকট আরও বেড়েই চলেছে উপত্যকাটিতে। এপি, আলজাজিরা।

সোমবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ৫৮ হাজার ছাড়িয়েছে। আহত হয়েছেন আরও এক লাখ ৩৯ হাজার জন। এছাড়া ধসে পড়া ভবনের নিচে এখনো ১০ হাজার মানুষ চাপা পড়ে আছেন বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।

তবে এর আগে ৬ জুলাই স্বাধীন গবেষণা সংস্থা প্যালেস্টাইন সেন্টার ফর পলিসি অ্যান্ড সার্ভে রিসার্চের বরাত দিয়ে মেড-আর্কাইভ জানিয়েছে, গাজা উপত্যকায় চলমান ইসরাইলি আগ্রাসনে ১৫ মাসে প্রায় ৮৪ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এই ভয়াবহ মৃত্যুর অর্ধেকের বেশি নারী, শিশু ও বৃদ্ধ।

জরিপ অনুযায়ী, নিহতদের মধ্যে প্রায় ৭৫ হাজার ২০০ জন সরাসরি সহিংসতার শিকার হয়েছেন। আর আট হাজার ৫৪০ জন প্রাণ হারিয়েছেন অনাহারে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সরকারি তথ্য নয়, বরং বাস্তব পরিস্থিতি ও জনগণের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে এই জরিপ পরিচালিত হয়েছে।

কারণ সরকারি তথ্য কেবল সেই নিহতদের অন্তর্ভুক্ত করে, যাদের লাশ হাসপাতালে পৌঁছায়। অসংখ্য মানুষ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি। গাজা শহর, উত্তরের অঞ্চল ও রাফাহ-এই তিনটি গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল এই জরিপে অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব হয়নি। কারণ সেখানে তখনো ইসরাইলি হামলা ও বাধ্যতামূলক উৎখাত চলছিল। তবে ওই অঞ্চলগুলো থেকে পালিয়ে আসা অনেক শরণার্থী এই জরিপে অংশ নিয়েছিলেন। ছয় মাস আগেই জরিপটি সম্পন্ন হলেও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর ফলাফল এখনো অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।

গত কয়েক মাসে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। শুধু মার্চের মাঝামাঝি থেকে এখন পর্যন্ত সাত হাজার ৫০০-এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এমনকি মানবিক সহায়তা নিতে গিয়েও প্রাণ হারাচ্ছেন গাজার অসহায় বাসিন্দারা।

এখন পর্যন্ত ত্রাণসংক্রান্ত সহিংসতায় ৮৭৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘের মুখপাত্র থামিন আল-খেতান। মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

এছাড়া পানি বিতরণ কেন্দ্রেও নৃশংস হামলা চালিয়ে যাচ্ছে বর্বর সেনারা। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে পানি বিতরণ কেন্দ্রে হামলায় এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ৭০০ ছাড়িয়েছে বলে জানিয়েছে গাজার সরকারি তথ্য অফিস।

জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ জানিয়েছে, গাজার পরিস্থিতি ক্রমেই আরও বিপর্যয়কর হওয়ায় অপুষ্টিতে ভুগছে শিশুরা। প্রতি ১০ জনের একজন বর্তমানে অপুষ্টিতে ভুগছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

এরই মধ্যে গাজা উপত্যকার উত্তরের অন্তত ১৬টি এলাকার বাসিন্দাদের নতুন করে জোরপূর্বক উচ্ছেদের হুমকি দিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী। মঙ্গলবার সেনাবাহিনীর একজন মুখপাত্র বলেছেন, যারা এখনো গাজা শহর ও জাবালিয়ার নির্দিষ্ট পাড়া-মহল্লাগুলোতে অবস্থান করছেন তাদের অবিলম্বে দক্ষিণের আল-মাওয়াসির দিকে সরে যেতে হবে। এদিকে গাজা যুদ্ধ এবং অধিকৃত পশ্চিমতীরের অবৈধ দখলদারিত্বের অবসান ঘটাতে আইনি ও কূটনৈতিক পদক্ষেপ ঠিক করতে কলম্বিয়ার রাজধানী বোগোটায় ৩০টিরও বেশি দেশের কর্মকর্তারা দুদিনের বৈঠকে মিলিত হচ্ছেন। মঙ্গলবার আলজাজিরা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।


প্রিন্ট
ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে উপজেলা বালিবাহী ট্রাক্টর – মোটরসাইকেল  মুখোমুখি‌

কবর দেওয়ার জায়গা নেই গাজায় পাশে নেই ইরান

আপডেট সময় ১২:২২:৩২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫

টানা ২২ মাসেরও বেশি সময় ধরে অনিবার্য এক মৃত্যুর ছায়ায় বাস করছে ফিলিস্তিনিরা। যেখানে প্রতিদিনই বাড়ছে লাশের সংখ্যা।

হাসপাতালের করিডরে, স্কুলের বারান্দায়, ধ্বংসস্তূপের নিচে, রাস্তায় এমনকি বাড়ির উঠোনেও শুধু লাশ আর লাশ। অথচ কবর দেওয়ার জায়গা নেই। নিহতের সংখ্যা বাড়তে থাকায় কবরের সংকট আরও বেড়েই চলেছে উপত্যকাটিতে। এপি, আলজাজিরা।

সোমবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ৫৮ হাজার ছাড়িয়েছে। আহত হয়েছেন আরও এক লাখ ৩৯ হাজার জন। এছাড়া ধসে পড়া ভবনের নিচে এখনো ১০ হাজার মানুষ চাপা পড়ে আছেন বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।

তবে এর আগে ৬ জুলাই স্বাধীন গবেষণা সংস্থা প্যালেস্টাইন সেন্টার ফর পলিসি অ্যান্ড সার্ভে রিসার্চের বরাত দিয়ে মেড-আর্কাইভ জানিয়েছে, গাজা উপত্যকায় চলমান ইসরাইলি আগ্রাসনে ১৫ মাসে প্রায় ৮৪ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এই ভয়াবহ মৃত্যুর অর্ধেকের বেশি নারী, শিশু ও বৃদ্ধ।

জরিপ অনুযায়ী, নিহতদের মধ্যে প্রায় ৭৫ হাজার ২০০ জন সরাসরি সহিংসতার শিকার হয়েছেন। আর আট হাজার ৫৪০ জন প্রাণ হারিয়েছেন অনাহারে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সরকারি তথ্য নয়, বরং বাস্তব পরিস্থিতি ও জনগণের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে এই জরিপ পরিচালিত হয়েছে।

কারণ সরকারি তথ্য কেবল সেই নিহতদের অন্তর্ভুক্ত করে, যাদের লাশ হাসপাতালে পৌঁছায়। অসংখ্য মানুষ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি। গাজা শহর, উত্তরের অঞ্চল ও রাফাহ-এই তিনটি গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল এই জরিপে অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব হয়নি। কারণ সেখানে তখনো ইসরাইলি হামলা ও বাধ্যতামূলক উৎখাত চলছিল। তবে ওই অঞ্চলগুলো থেকে পালিয়ে আসা অনেক শরণার্থী এই জরিপে অংশ নিয়েছিলেন। ছয় মাস আগেই জরিপটি সম্পন্ন হলেও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর ফলাফল এখনো অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।

গত কয়েক মাসে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। শুধু মার্চের মাঝামাঝি থেকে এখন পর্যন্ত সাত হাজার ৫০০-এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এমনকি মানবিক সহায়তা নিতে গিয়েও প্রাণ হারাচ্ছেন গাজার অসহায় বাসিন্দারা।

এখন পর্যন্ত ত্রাণসংক্রান্ত সহিংসতায় ৮৭৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘের মুখপাত্র থামিন আল-খেতান। মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

এছাড়া পানি বিতরণ কেন্দ্রেও নৃশংস হামলা চালিয়ে যাচ্ছে বর্বর সেনারা। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে পানি বিতরণ কেন্দ্রে হামলায় এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ৭০০ ছাড়িয়েছে বলে জানিয়েছে গাজার সরকারি তথ্য অফিস।

জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ জানিয়েছে, গাজার পরিস্থিতি ক্রমেই আরও বিপর্যয়কর হওয়ায় অপুষ্টিতে ভুগছে শিশুরা। প্রতি ১০ জনের একজন বর্তমানে অপুষ্টিতে ভুগছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

এরই মধ্যে গাজা উপত্যকার উত্তরের অন্তত ১৬টি এলাকার বাসিন্দাদের নতুন করে জোরপূর্বক উচ্ছেদের হুমকি দিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী। মঙ্গলবার সেনাবাহিনীর একজন মুখপাত্র বলেছেন, যারা এখনো গাজা শহর ও জাবালিয়ার নির্দিষ্ট পাড়া-মহল্লাগুলোতে অবস্থান করছেন তাদের অবিলম্বে দক্ষিণের আল-মাওয়াসির দিকে সরে যেতে হবে। এদিকে গাজা যুদ্ধ এবং অধিকৃত পশ্চিমতীরের অবৈধ দখলদারিত্বের অবসান ঘটাতে আইনি ও কূটনৈতিক পদক্ষেপ ঠিক করতে কলম্বিয়ার রাজধানী বোগোটায় ৩০টিরও বেশি দেশের কর্মকর্তারা দুদিনের বৈঠকে মিলিত হচ্ছেন। মঙ্গলবার আলজাজিরা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।


প্রিন্ট