সময়ের কন্ঠ রিপোর্ট।।
হঠাৎ করেই বরগুনায় শুরু হয়েছে ডায়রিয়ার প্রকোপ। গত ২৪ ঘন্টায় অন্তত শতাধিক রোগী বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। প্রয়োজনীয় সংখ্যক বিছানাপত্র না থাকায় মেঝেতে ঠাঁই নিয়েছেন অনেকে। চিকিৎসক সংকটে রোগীদের সামলাতে রীতিমত হিমশিম খাচ্ছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের তথ্য মতে, গত ২৪ ঘন্টায় ১শ ২৪জন রোগী আক্রান্ত হয়ে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ডায়রিয়া বিভাগে ভর্তি হয়েছেন। সুস্থ হয়ে বাড়ি গেছেন ৪৩ জন।
জেনারেল হাসপাতালে সূত্র মতে আরো জানা যায়, মার্চের শুরু থেকে ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়তে থাকে। প্রথম সপ্তাহে গড়ে ২৫-৩০জনের মত রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে ভর্তি হয়। গত তিনদিনে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে গড়ে ১০০জনে পৌছায় এবং সবশেষ ২৪ ঘন্টায় তা আশংকাজনকভাবে বৃদ্ধি পায়। বর্তমানে ১২৪ জন ভর্তি রয়েছেন। এ পর্যন্ত ২০৭৪ জন রোগী ডায়রিয়ার চিকিৎসা নিয়েছেন।
বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের ডায়রিয়া বিভাগে মাত্র আটটি বেড রয়েছে। প্রয়োজনীয় সংখ্যক বেড না থাকায় রোগীরা হাসপাতালে মেঝেতে বিছানা পেতেছেন।
সিভিল সার্জন অফিসের তথ্যমতে জানুয়ারী থেকে আজকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত জেলায় ৪ হাজার ৫৯৩ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। সিভিল অফিসের সূত্রমতে মৃত্যুর সংখ্যা ২ হলেও আজ পর্যন্ত বে-সরকারী হিসাবে মৃত ৪। এরমধ্যে বেতাগীতেই মারা গেছে ৩ জন।
আজ মঙ্গলবার সকালে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে সরেজমিনে দেখা যায়, হাসপাতালের নিচতলার মেঝেতে অনেকেই বিছানা পেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এদের মধ্যে অধিকাংশই শিশু, নারী ও বৃদ্ধ। মেঝের নোংরা ও অপরচ্ছিন্ন পরিবেশে গাদাগাদি করে অবস্থান নিতে হয়েছে তাদের। এতে চরম রোগীরা চরম ভোগান্তিতে রয়েছেন তারা।
বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়ক (আবাসিক) সোহরাব উদ্দীন বলেন, এমনিতেই হাসপাতালে প্রয়োজনীয় সংখ্যক চিকিৎসক নেই, নেই বেড। এ অবস্থায় হঠাৎ বিপুল সংখ্যক রোগী ভর্তি হওয়ায় আমরা সামলাতে হিমশিম খাচ্ছি। এভাবে
রোগী বাড়তে থাকলে দু একদিনেই প্রয়োজনীয় ওষুধপথ্যের সংকট দেখা দেবে। আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি রোগীদের সু-চিকিৎসা নিশ্চিত করতে।
বরগুনার সাস্থ্য বিভাগের প্রধান সিভিল সার্জন ডা. মারিয়া হাসান জানান, গরমের মৌসুম শুরু হওয়ায় ডায়রিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। উপকূলের প্রত্যন্ত এলাকার বাসিন্দারা অতটা স্বাস্থ্য সচেতন নয়, অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে থাকার কারণে রোগ জীবানুর আক্রমনের শিকার হয়ে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদেও সেবা নিশ্চিতের লক্ষে আমরা সাধ্যমত চেষ্টা করছি।