গাজীপুরে যৌথবাহিনীর অভিযান, গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো ৫৬ স্থাপনা: ৮০কোটি টাকা মূল্যের বনভূমি উদ্ধার

- আপডেট টাইম : ০২:০২:৫৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫
- / ৩ ৫০০০.০ বার পাঠক
গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার তালতলী মুরগী বাজার, সাইটালিয়া ও উত্তর পেলাইদ এলাকায় অবৈধভাবে গড়ে উঠা ৫৬টি স্থাপনায় উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছে ঢাকা বন বিভাগ।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৮টায় শুরু হওয়া এ অভিযান চলে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। অভিযানে প্রায় ৮০ কোটি টাকা মূল্যের চার একর বনভূমি দখলমুক্ত করা হয়েছে জানান কর্তৃপক্ষ।
অভিযান পরিচালনা করেন শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ব্যারিস্টার সজীব আহমেদ। এতে সহযোগিতা করেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশ ও বন বিভাগের অন্যান্য ইউনিট।
বন বিভাগ ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শ্রীপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গত ৫ আগস্টের পর বনের অসাধু কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় বন বিভাগের জমি দখল করে হাজারো ঘরবাড়ি ও অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। এদের মধ্যে অনেকেই দোতলা ভবন, কেউ টিনশেড, আবার কেউ আধাপাকা ঘর নির্মাণ করেছেন।
স্থানীয় অসাধু ব্যক্তিরা অবৈধভাবে ঘর নির্মাণ করে ভাড়া দিয়েছেন। কয়েক মাস ধরেই বনের লোকজন মাইকিং করে এসব অবৈধ স্থাপনা ভেঙে সরিয়ে নেওয়ার জন্য অবহিত করেন দখলদারদের। তবে এ বিষয়ে কর্ণপাত করেননি তারা। অবশেষে শনিবার সকালে যৌথবাহিনীর সহযোগিতায় চারটি এক্সকেভেটর দিয়ে উপজেলার মুরগী বাজার, সাইটালিয়া ও উত্তর পেলাইদ এলাকায় ঘরবাড়ি ভেঙে গুরিয়ে দেয়া হয়।
বন বিভাগ সূত্র জানায়, যৌথবাহিনীর অভিযানে তিনটি স্পটে প্রায় ৮০ কোটি টাকা মূল্যের চার একর জমি দখলমুক্ত করা হয়েছে। এর আগে বনভূমি উদ্ধারের স্বার্থে স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার জন্য নোটিশ করা হয়েছিল তাদের।
উপজেলার মুরগী বাজার এলাকার বাসিন্দা সোহেল রানা বলেন, আমার তিনটা বসতঘর ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে একটি কক্ষ, গত ৫ আগস্টের আগে তৈরি করা হয়েছিল। আমি অনেক অনুরোধ করলাম, কিন্তু তারা আমার ঘর ভেঙেই দিল। এতে আমার ১০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি সাধন হয়েছে।
মুরগী বাজার এলাকার বাসিন্দা প্রতিবন্ধী শহিদ বলেন, আমি একজন প্রতিবন্ধী। এটা জানার পরও তারা আমার ঘরটা ভেঙে দিয়েছে। এখন আমি কীভাবে আবার ঘরটা করবো? এ ঘরটা মোছলেম চেয়ারম্যানের ছেলে তৈরি করে দিয়েছিল। আজ ভাইঙ্গা দিল।
তেলিহাটি ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মনিরুজ্জামান মানিক এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, আমি সত্যিই মর্মাহত। আজ আমার ওয়ার্ডে বন বিভাগের লোকজন এ অভিযান চালাচ্ছেন। আমি এখানকার মানুষের জন্য কোনো উপকার করতে পারছি না।
শ্রীপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. মোখলেসুর রহমান বলেন, বনের চার একর জমি উদ্ধারে সকাল থেকে অভিযান চলছে। অবৈধভাবে বনের জমি দখল করতে দেওয়া হবে না।
শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ব্যারিস্টার সজীব আহমেদ বলেন, আমাদের প্রতিটি পয়েন্টে ইউনিট তৈরি করা হয়েছে। সেখানে সেনাবাহিনী, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন, পুলিশ, বন বিভাগের সদস্যদের উপস্থিতিতে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।