ঢাকা ০৯:৩৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
ভৈরবে ট্রেন থেকে ছিনতাইকারী তিন নারী গ্রেপ্তার গাজীপুরের শ্রীপুরে বিপ্লব হত্যা মামলার আসামী প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে, অসহায় পুলিশ প্রশাসন জেনেও নীরব স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি আর ফ্যাসিবাদী সহযোগীর মিলনে গণতন্ত্র পরিপুষ্ট হবেনা ।।ঠাকুরগাঁওয়ে শামসুজ্জামান দুদু জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’র মোংলা উপজেলার ২নং বুড়িডাঙ্গা ইউনিয়নের ওর্য়াড কমিটির নির্বাচন সম্পন্ন টাঙ্গাইলে আলহাজ্ব মোজাম্মেল হককে ও জাতীয় পার্টির কার্যক্রমকে কঠোর হস্তে দমন করবে বিএনপি-জামায়াত নেতারা, আওয়ামী-জাপা দালাল সাংবাদিকদের চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেব রোজার আগে পণ্যের দাম নিয়ে যে বার্তা দিলেন হাসনাত আবদুল্লাহ মুসলিমপ্রধান দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে ফের নিষেধাজ্ঞা? বার্ষিক সাধারণ সভা ২০২৫ আয়োজিত ১৬ বছর পর কারামুক্ত বিডিআরের ১৬৮ সদস্য আইএমএফের শর্তে রাজস্ব আহরণে কতটা সফল, জানতে চায় অর্থ বিভাগ

কৌশলগত প্রতিরক্ষা চুক্তি সই পুতিনের উত্তর কোরিয়া সফর

বিবিসি রিপোর্ট
  • আপডেট টাইম : ০৫:২১:১২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ জুন ২০২৪
  • / ৮৫ ৫০০০.০ বার পাঠক

বুধবার পুতিন ও উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং-উনের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হয়। সেখানে এই চুক্তিতে সই করেন দুই নেতা
বুধবার পুতিন ও উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং-উনের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হয়। সেখানে এই চুক্তিতে সই করেন দুই নেতাছবি: রয়টার্স
রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে একটি সার্বিক কৌশলগত অংশীদারত্ব চুক্তি সই হয়েছে। চুক্তিতে কোনো পক্ষ আগ্রাসনের শিকার হলে পারস্পরিক সহযোগিতার কথা বলা হয়েছে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের পিয়ংইয়ং সফরকালে দৃশ্যত এ প্রতিরক্ষা চুক্তি সই হয়।

দুই দিনের সফরে গতকাল মঙ্গলবার স্থানীয় সময় দিবাগত রাত তিনটার দিকে পিয়ংইয়ং বিমানবন্দরে পৌঁছান পুতিন। বুধবার পুতিন ও উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং-উনের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হয়। সেখানে এই চুক্তিতে সই করেন দুই নেতা।

বৈঠক শেষে পুতিন বলেন, দুই দেশের মধ্যে সার্বিক অংশীদারত্ব চুক্তি সই হয়েছে। এতে আগ্রাসনের শিকার হলে পারস্পরিক সহযোগিতার কথা বলা হয়েছে। উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সামরিক কারিগরি সহযোগিতা গড়ে তোলার বিষয়টিও নাকচ করেননি তিনি।

এ সময় ইউক্রেনকে দূরপাল্লার অস্ত্র ও এফ-১৬ যুদ্ধবিমান সরবরাহ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও দেশটির নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোর অন্য সদস্যদের দেওয়া সাম্প্রতিক বক্তব্যের প্রসঙ্গও টানেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট।

এ সময় কিম জং-উন বলেন, তাঁর দেশ কিংবা রাশিয়া কোনো ধরনের ‘ঘটনা বা যুদ্ধের’ মুখে পড়লে কোনো দ্বিধা ছাড়াই এর জবাব দেবে উত্তর কোরিয়া। অবশ্য ‘ঘটনা’ বলতে কী বোঝাতে চেয়েছেন, তা স্পষ্ট করেননি কিম।

উত্তর কোরীয় নেতা আরও বলেন, উত্তর কোরিয়া ও রাশিয়ার মধ্যে সম্পর্ক ‘জোটগত নতুন উচ্চতায়’ উন্নীত হয়েছে। দুই দেশের মধ্যে সই হওয়া চুক্তিকে ‘সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ ও আত্মরক্ষামূলক’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

মস্কোকে হুঁশিয়ারি দক্ষিণ কোরিয়ার

এদিকে, উত্তর কোরিয়া ও রাশিয়ার মধ্যে সামরিক সহযোগিতা নিয়ে নতুন চুক্তির বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই মস্কোর প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে দক্ষিণ কোরিয়া। এ অবস্থায় ‘নির্দিষ্ট সীমা অতিক্রম না করতে’ রাশিয়াকে সতর্ক করেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা চ্যাং হো-জিন।

একসময় মস্কোয় দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত হিসেবে কাজ করা চ্যাং বলেন, ‘ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ হলে উত্তর কোরিয়া ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে ভবিষ্যতে নিজেদের জন্য কোনটি বেশি গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা দেবে, তা রাশিয়াকে বিবেচনায় নিতে হবে।’

উল্লেখ্য, সামরিক সহায়তার জন্য দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে ধরনা দিয়েছিল ইউক্রেন। কিন্তু দক্ষিণ কোরিয়া তাতে সম্মত হয়নি। তাই এখন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা পাঠানোর বিষয়ে দক্ষিণ কোরিয়া নিজেদের অবস্থান পরিবর্তনের কথা চিন্তা করবে কি না।

পুতিন শেষ উত্তর কোরিয়া সফরে এসেছিলেন ২৪ বছর আগে ২০০০ সালের জুলাইয়ে। গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে রাশিয়া সফরে গিয়েছিলেন উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং-উন। তখন তিনি পুতিনকে পিয়ংইয়ংয়ে আমন্ত্রণ জানান। সেই আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে দেশটি সফরে এসেছেন পুতিন।

জমকালো আয়োজনে পুতিনকে স্বাগত জানিয়েছে উত্তর কোরিয়া। পিয়ংইয়ংজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে উৎসবের আমেজ। দুই দেশের পতাকা, লাল গোলাপ, বেলুন এবং পুতিন ও কিমের বিশাল বিশাল ছবি দিয়ে পুরো রাজধানী সাজিয়ে ফেলা হয়।

বিমানবন্দরে পুতিনকে দেওয়া হয় লালগালিচা সংবর্ধনা। লাল গোলাপ দিয়ে তাঁকে বরণ করা হয়। স্থানীয় সময় গতকাল সকালে কিম ইল সাং স্কয়ারে পুতিনকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়।

কিম ইল সাং স্কয়ারে গার্ড অব অনার শেষে কিম ও পুতিন কুমসুসান প্যালেসে যান। সেখানে দুই নেতা বৈঠক করেন। সেখানে দুই দেশের মধ্যে সার্বিক কৌশলগত অংশীদারত্ব চুক্তি সই হয় বলে জানায় রুশ সংবাদমাধ্যম আরআইএ।

এবার পুতিন এমন এক সময়ে উত্তর কোরিয়া সফরে এসেছেন, যখন উভয় দেশই আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকে অনেকটা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। দুই দেশকে মোকাবিলা করতে হচ্ছে নানা পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

কৌশলগত প্রতিরক্ষা চুক্তি সই পুতিনের উত্তর কোরিয়া সফর

আপডেট টাইম : ০৫:২১:১২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ জুন ২০২৪

বুধবার পুতিন ও উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং-উনের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হয়। সেখানে এই চুক্তিতে সই করেন দুই নেতা
বুধবার পুতিন ও উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং-উনের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হয়। সেখানে এই চুক্তিতে সই করেন দুই নেতাছবি: রয়টার্স
রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে একটি সার্বিক কৌশলগত অংশীদারত্ব চুক্তি সই হয়েছে। চুক্তিতে কোনো পক্ষ আগ্রাসনের শিকার হলে পারস্পরিক সহযোগিতার কথা বলা হয়েছে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের পিয়ংইয়ং সফরকালে দৃশ্যত এ প্রতিরক্ষা চুক্তি সই হয়।

দুই দিনের সফরে গতকাল মঙ্গলবার স্থানীয় সময় দিবাগত রাত তিনটার দিকে পিয়ংইয়ং বিমানবন্দরে পৌঁছান পুতিন। বুধবার পুতিন ও উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং-উনের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হয়। সেখানে এই চুক্তিতে সই করেন দুই নেতা।

বৈঠক শেষে পুতিন বলেন, দুই দেশের মধ্যে সার্বিক অংশীদারত্ব চুক্তি সই হয়েছে। এতে আগ্রাসনের শিকার হলে পারস্পরিক সহযোগিতার কথা বলা হয়েছে। উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সামরিক কারিগরি সহযোগিতা গড়ে তোলার বিষয়টিও নাকচ করেননি তিনি।

এ সময় ইউক্রেনকে দূরপাল্লার অস্ত্র ও এফ-১৬ যুদ্ধবিমান সরবরাহ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও দেশটির নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোর অন্য সদস্যদের দেওয়া সাম্প্রতিক বক্তব্যের প্রসঙ্গও টানেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট।

এ সময় কিম জং-উন বলেন, তাঁর দেশ কিংবা রাশিয়া কোনো ধরনের ‘ঘটনা বা যুদ্ধের’ মুখে পড়লে কোনো দ্বিধা ছাড়াই এর জবাব দেবে উত্তর কোরিয়া। অবশ্য ‘ঘটনা’ বলতে কী বোঝাতে চেয়েছেন, তা স্পষ্ট করেননি কিম।

উত্তর কোরীয় নেতা আরও বলেন, উত্তর কোরিয়া ও রাশিয়ার মধ্যে সম্পর্ক ‘জোটগত নতুন উচ্চতায়’ উন্নীত হয়েছে। দুই দেশের মধ্যে সই হওয়া চুক্তিকে ‘সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ ও আত্মরক্ষামূলক’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

মস্কোকে হুঁশিয়ারি দক্ষিণ কোরিয়ার

এদিকে, উত্তর কোরিয়া ও রাশিয়ার মধ্যে সামরিক সহযোগিতা নিয়ে নতুন চুক্তির বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই মস্কোর প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে দক্ষিণ কোরিয়া। এ অবস্থায় ‘নির্দিষ্ট সীমা অতিক্রম না করতে’ রাশিয়াকে সতর্ক করেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা চ্যাং হো-জিন।

একসময় মস্কোয় দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত হিসেবে কাজ করা চ্যাং বলেন, ‘ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ হলে উত্তর কোরিয়া ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে ভবিষ্যতে নিজেদের জন্য কোনটি বেশি গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা দেবে, তা রাশিয়াকে বিবেচনায় নিতে হবে।’

উল্লেখ্য, সামরিক সহায়তার জন্য দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে ধরনা দিয়েছিল ইউক্রেন। কিন্তু দক্ষিণ কোরিয়া তাতে সম্মত হয়নি। তাই এখন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা পাঠানোর বিষয়ে দক্ষিণ কোরিয়া নিজেদের অবস্থান পরিবর্তনের কথা চিন্তা করবে কি না।

পুতিন শেষ উত্তর কোরিয়া সফরে এসেছিলেন ২৪ বছর আগে ২০০০ সালের জুলাইয়ে। গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে রাশিয়া সফরে গিয়েছিলেন উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং-উন। তখন তিনি পুতিনকে পিয়ংইয়ংয়ে আমন্ত্রণ জানান। সেই আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে দেশটি সফরে এসেছেন পুতিন।

জমকালো আয়োজনে পুতিনকে স্বাগত জানিয়েছে উত্তর কোরিয়া। পিয়ংইয়ংজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে উৎসবের আমেজ। দুই দেশের পতাকা, লাল গোলাপ, বেলুন এবং পুতিন ও কিমের বিশাল বিশাল ছবি দিয়ে পুরো রাজধানী সাজিয়ে ফেলা হয়।

বিমানবন্দরে পুতিনকে দেওয়া হয় লালগালিচা সংবর্ধনা। লাল গোলাপ দিয়ে তাঁকে বরণ করা হয়। স্থানীয় সময় গতকাল সকালে কিম ইল সাং স্কয়ারে পুতিনকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়।

কিম ইল সাং স্কয়ারে গার্ড অব অনার শেষে কিম ও পুতিন কুমসুসান প্যালেসে যান। সেখানে দুই নেতা বৈঠক করেন। সেখানে দুই দেশের মধ্যে সার্বিক কৌশলগত অংশীদারত্ব চুক্তি সই হয় বলে জানায় রুশ সংবাদমাধ্যম আরআইএ।

এবার পুতিন এমন এক সময়ে উত্তর কোরিয়া সফরে এসেছেন, যখন উভয় দেশই আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকে অনেকটা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। দুই দেশকে মোকাবিলা করতে হচ্ছে নানা পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা।