এডিসি হারুনের বিরুদ্ধে যত ‘পেটানোর অভিযোগ বিভিন্ন মিডিয়ায় তথ্যপ্রকাশ
- আপডেট টাইম : ০৬:৫৯:৩৩ পূর্বাহ্ণ, সোমবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩
- / ১৭০ ৫০০০.০ বার পাঠক
এডিসি হারুনের বিরুদ্ধে যত ‘পেটানোর অভিযোগ’ এডিসি হারুন অর রশীদ
রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় সংঘর্ষ থামাতে যাওয়া পুলিশ সদস্যদের একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়। সেখানে দেখা যায়, পুলিশের রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশিদ এক পুলিশ কনস্টেবলকে থাপ্পড় মারছেন। তখন তার এ ধরনের আচরণের নিন্দা জানিয়েছিলেন অনেকে।
ঘটনাটি ঘটে গত বছরের ১৮ এপ্রিল রাতে। নিউমার্কেট এলাকায় ঢাকা কলেজের ছাত্রদের লক্ষ্য করে পুলিশ সদস্যদের রাবার বুলেট ছোড়ার নির্দেশ দিচ্ছিলেন এডিসি হারুন। এসময় ‘গুলি শেষ হয়ে গেছে’ বলায় ওই পুলিশ কনস্টেবলকে থাপ্পড় মারেন তিনি। এ নিয়ে গণমাধ্যমেও খবর প্রকাশিত হয়েছিল। শুধু নিজের সহকর্মীকেই নন- এডিসি হারুন তার নেতৃত্বে শাহবাগে সমাবেশকারীদের পেটানোর ঘটনা, এমনকি তিনি নিজেই লাঠি দিয়ে বিক্ষোভকারীদের পেটাচ্ছেন- এমন ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে সমালোচনার জন্ম দিয়েছিল। তবে বারবার এসব ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হলেও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) বা পুলিশ সদরদপ্তর থেকে তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। উল্টো দীর্ঘদিন স্বপদে বহাল ছিলেন তিনি।
আরও পড়ুন: ছাত্রলীগের দুই নেতাকে তুলে নিয়ে পেটানোর অভিযোগ
তবে এবার শেষ রক্ষা হলো না এডিসি হারুনের। রাজধানীর শাহবাগ থানায় গত শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) দিনগত রাতে ছাত্রলীগের দুই কেন্দ্রীয় নেতাকে পুলিশ নির্মমভাবে পিটিয়ে আহত করে বলে অভিযোগ ওঠে। আহতরা হলেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও ফজলুল হক হলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন এবং ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞানবিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হলের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদ।
ছাত্রলীগের দুই কেন্দ্রীয় নেতাকে থানায় ধরে নিয়ে বেধড়ক পিটুনির ঘটনায় এডিসি হারুন অর রশিদকে প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, এডিসি হারুনকে রমনা বিভাগ থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ অর্ডার ম্যানেজমেন্টে (পিওএম) সংযুক্ত করা হয়েছে।
ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আল আমিন রহমান তার নিজের ভেরিফাইড ফেসবুকে স্ট্যাটাসে লিখেছেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বন্ধু আনোয়ার হোসেন নাঈমের পাশে আছি আমরা। সবাই তার সুস্থতার জন্য দোয়া করবেন। সাইকোপ্যাথ ছাড়া কেউ এমন ঘটনা ঘটাতে পারে না।
আরেক সহ-সভাপতি শরিফুল আলম লিখেছেন, ছাত্রলীগ আসলেই এতিমদের সংগঠন। কাল থেকে আমাদের হাতে চুরি পরে ঘরে বসে থাকা উচিত।
কেন্দ্রীয় কমিটির উপ-দপ্তর সম্পাদক মনির হোসেন লিখেছেন, এডিসি হারুন মানসিক বিকারগ্রস্ত, তাকে স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত করতে হবে।
আরও পড়ুন: পুলিশ এ ধরনের অন্যায় করলে সাজা হবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
আহত নাঈমের ছবি শেয়ার করে ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ইয়াজ আল রিয়াদ লিখেছেন, আমার ছাত্রলীগের ছোট ভাই, কেন এমন হলো, কী জন্য এমন হলো জানতে চাই। এটা কি মেনে নেওয়ার মত ঘটনা!
ছাত্রলীগের সাবেক দপ্তর সম্পাদক ইন্দ্রনীল দেব শর্মা রনি লিখেছেন, আনোয়ার হোসেন নাঈম এবং শরীফ আহমেদ মুনিমের ওপর যে বর্বরতা চালানো হয়েছে তার কঠোর বিচার দ্রুত নিশ্চিত হোক। বাংলাদেশের ইতিহাস আর ঐতিহ্যের গর্বিত অংশীদার বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। ইতিহাসের ধারাবাহিকতা রক্ষা করার দায়িত্ব বর্তমান ছাত্রলীগের সবার।
গত ৭ আগস্ট ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ব্যথায় কাতরাচ্ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সামি আবদুল্লাহ। তখন তার মাথায় ১৪টি সেলাই। এই শিক্ষার্থী জানান, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে শাহবাগে একটি সমাবেশে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। সেদিন ‘শান্তিপূর্ণ’ প্রতিবাদ কর্মসূচিতে ব্যাপক লাঠিপেটা করে পুলিশ। এতে তিনিসহ অন্তত ১২ জন আহত হন।
সেদিনের ঘটনায় নেতৃত্বে দেন এডিসি হারুন অর রশীদ। এডিসি হারুন সম্পর্কে এ ধরনের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগীদের মন্তব্য হলো ‘তিনি (এডিসি হারুন) শুধু পেটান।’
প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ, রাজধানীর রমনা জোনের এডিসি হারুন অর রশীদের নেতৃত্বে শান্তিপূর্ণ এবং গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে ‘বিনা উসকানিতে’ বিক্ষোভকারীদের লাঠিপেটা করা হয়েছে। শুধু এটা নয়, এ রকম বেশ কয়েকটি ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগীরাও একই অভিযোগ করেছেন।
আরও পড়ুন: এডিসি হারুন দোষী হলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে: ডিবির হারুন
এডিসি হারুনের নেতৃত্বে শাহবাগে সমাবেশকারীদের পেটানোর ঘটনা, এমনকি তিনি নিজেই লাঠি দিয়ে বিক্ষোভকারীদের পেটাচ্ছেন- এমন ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে সমালোচনার জন্ম দিয়েছিল।
ভিডিওতে দেখা গেছে, বিক্ষোভকারীরা সমাবেশ শেষে মিছিল নিয়ে যাওয়ার আগ মুহূর্তে শাহবাগ মোড়ে দাঁড়িয়ে স্লোগান দিচ্ছিলেন। এমন সময় রমনা জোনের এডিসি হারুন অর রশীদের নির্দেশনায় তিনিসহ অন্য সহকর্মীরা বিক্ষোভকারীদের পেটাতে শুরু করেন।
পেটানোর আগে তার গায়ে জ্যাকেট এবং মাথায় হেলমেট পরিয়ে দেন তার সহকর্মীরা। হেলমেট পরানোর সঙ্গে সঙ্গেই তিনি মারমুখো হয়ে উঠেন। তিনি ও তার সহকর্মীরা বিক্ষোভকারীদের অমানুষিকভাবে লাঠিপেটা করেন।
রাজধানীর ডিএমপি রমনা জোনের আওতাধীন এলাকার মধ্যে শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিকেল কলেজ, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়সহ (বুয়েট) বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এছাড়াও হাইকোর্ট ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের মত প্রতিষ্ঠানে দেশের আলোচিত বিভিন্ন বিষয় ও ঘটনা নিয়ে নিয়মিত প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হয়।
আরও পড়ুন: রমনা বিভাগ থেকে এডিসি হারুনকে বদলির আদেশ
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, এর আগে যারা রমনা জোনের দায়িত্বে ছিলেন তাদের কাউকে নিয়ে এ ধরনের কোনো সমালোচনা হয়নি। এডিসি হারুন ‘উগ্র আচরণ’ করেন বলে অভিযোগ তাদের। শিক্ষার্থীরা মনে করেন, এডিসি হারুনের মত অফিসার থাকলে পুলিশ বাহিনীর সুনাম ক্ষুণ্ন হবে।
গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছিলেন একদল চাকরিপ্রত্যাশী। অবরোধ প্রায় এক ঘণ্টা ধরে চলছিল। এরপর পুলিশ এসে তাদের সেখান থেকে সরিয়ে দেয়। সেখান থেকে সরে শাহবাগ থানামুখী রাস্তার দিকে এগোলে পুলিশ চাকরিপ্রত্যাশীদের কয়েকজনের ওপর লাঠিপেটা করে। এডিসি হারুনও লাঠিপেটা করে যুবকদের ধাওয়া দেন বলে জানান বিক্ষোভকারীরা। সেসময় ছবি তুলতে গেলে কয়েকজন সাংবাদিকদের সঙ্গে এডিসি হারুন দুর্ব্যবহার করেন বলেও অভিযোগ ওঠে।
সাংবাদিকরা তখন অভিযোগ করেছিলেন, বিক্ষোভকারীদের শাহবাগ মোড় থেকে বলপ্রয়োগ করে সরানোর সময় ছবি তুলতে গেলে সাংবাদিকদের সঙ্গে পুলিশ খারাপ ব্যবহার করে এবং কয়েকজন সাংবাদিককে ধাক্কা দেয়।
রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার ও গোয়েন্দা প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, ছাত্রলীগের দুই নেতাকে থানায় নিয়ে বেধড়ক মারধর করার বিষয়টি প্রমাণ হলে ডিএমপির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: রমনা বিভাগ থেকে এডিসি হারুন প্রত্যাহার
তিনি বলেন, ডিএমপি কমিশনারসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি জানেন। এটি তদন্ত করা হবে। তদন্তে এডিসি হারুন দোষী সাব্যস্ত হলে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
টিটি/এমকেআর/জিকেএস
ডিএমপি ছাত্রলীগ রাজধানী পুলিশ ছাত্র-রাজনীতি
বিজ্ঞাপন
পরবর্তী খবর
আরামবাগ-ফকিরাপুল
নিয়মিত বর্জ্য নেন না পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা, গলিতে গলিতে স্তূপ
নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৪:৩৩ পিএম, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩
নিয়মিত বর্জ্য নেন না পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা, গলিতে গলিতে স্তূপ
দরপত্রের মাধ্যমে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসাবাড়ি থেকে বর্জ্য সংগ্রহ করার দায়িত্ব পেয়েছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান বিল্লাল এন্টারপ্রাইজ। এর বিনিময়ে প্রতিটি বাসা থেকে ১০০ টাকা করে নেয় তারা। কিন্তু বাড়িওয়ালাদের অভিযোগ, প্রতি মাসে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা নিলেও বাসাবাড়ি থেকে নিয়মিত বর্জ্য সংগ্রহ করেন না তারা। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দারা।
আরামবাগ, ফকিরাপুল, ফকিরাপুল বাজার এলাকা, মতিঝিল সি/এ, দিলকুশা সি/এ, বঙ্গভবন এলাকা নিয়ে ডিএসসিসির ৯ নম্বর ওয়ার্ড। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, সপ্তাহে গড়ে দু-তিন দিন গৃহস্থালির বর্জ্য সংগ্রহ করেন ডিএসসিসির অনুমোদিত ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের লোকজন। বাকি দিনগুলোতে বর্জ্য বাসায় স্তূপ করে রাখতে হয়। অনেকে দুর্গন্ধে টিকতে না পেরে বর্জ্য গলি, রাস্তায় ফেলছেন তারা। এতে এলাকার পরিবেশ নোংরা হচ্ছে।
ডিএসসিসির ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যে আরামবাগ, ফকিরাপুল ও ফকিরাপুল বাজার এলাকা আবাসিক। আর মতিঝিল সি/এ ও দিলকুশা এলাকা বাণিজ্যিক। শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে দেখা যায়, মতিঝিল ও দিলকুশা এলাকার রাস্তাঘাট ও ফুটপাত অনেকটাই অপরিষ্কার। স্বচ্ছন্দ্যে চলাচল করতে পারছেন পথচারী ও যাত্রীরা। কিন্তু আরামবাগ, ফকিরাপুল এলাকা ঘনবসতিপূর্ণ আবাসিক এলাকা। এই এলাকার গলিগুলো খুবই সরু। প্রতিটি গলিতেই গৃহস্থালির বর্জ্য ছড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। তবে কোথাও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের লোকজনকে বাসাবাড়ির বর্জ্য সংগ্রহ করতে দেখা যায়নি।
আরও পড়ুন: ভাঙা রাস্তায় হাঁটু পানি, দুর্ভোগে চালক-যাত্রী
বিজ্ঞাপন
এরমধ্যে আরামবাগ মগা গলির অবস্থা সবচেয়ে বেশি নোংরা। এই গলির বিভিন্ন স্থানে গৃহস্থালির বর্জ্য ছড়িয়ে আছে। এরমধ্যে ৬৯ নম্বর হোল্ডিংয়ের এক কোণে ময়লা স্তূপ হয়ে আছে। যদিও যেখানে ময়লার স্তূপ, সেখানেই লেখা রয়েছে ‘এখানে ময়লা ফেলা নিষেধ।’
Arambag-inner.jpg
বিজ্ঞাপন
মগা গলির ৭৯/এ হোল্ডিয়ের বাসিন্দা ফারুক আলম। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, আগে সিটি করপোরেশনের লোকজন নিয়মিত বর্জ্য নিয়ে যেত। কিন্তু এখন যারা বর্জ্য সংগ্রহের দায়িত্ব পেয়েছেন, তারা নিয়মিত ময়লা সংগ্রহ করেন না। তাদের লোকজন একদিন এলে তিন দিন খবর থাকে না। যেমন, গত মাসে গড়ে ১০ দিন বর্জ্য নিয়েছে, ২০ দিন নেয়নি। চলতি মাসে এখন পর্যন্ত দুদিন বর্জ্য নিছে। অথচ মাস শেষ হওয়ার আগেই প্রতিটি ফ্ল্যাট থেকে ১০০ টাকা করে নিচ্ছে তারা।
মগারগলির মো. রবীন বলেন, আমরা আসলেই বর্জ্য নিয়ে অনেক কষ্টে আছি। মাসে মাসে টাকা দেই ঠিকই কিন্তু বাসার ময়লা নিয়মিত নেয় না। দুর্গন্ধে বাসায় থাকা যায় না। তিন-চারদিনের বাসার ময়লা সবাই রাস্তায় ফেলে যায়। বর্জ্যের দুর্গন্ধে রাস্তা দিয়ে হাঁটা যায় না।
ফকিরাপুল বাজার গলির অবস্থা আরও করুণ। এ গলির বিভিন্ন স্থান ও বাজারের বিভিন্ন স্থানে বর্জ্য ছড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। স্থানীয় বাসিন্দা হায়দার আলী বলেন, যে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান বর্জ্য সংগ্রহের দায়িত্ব পেয়েছে, তারা নিয়মিত বর্জ্য নেয় না। বিষয়টি স্থানীয় কাউন্সিলরকে একাধিকবার জানালেও তিনি কোনো ব্যবস্থা নেননি।
তিনি বলেন, যখন ঠিকাদার বর্জ্য না নেয়, সে বর্জ্য থেকে একদিন পরই দুর্গন্ধ ছড়াতে থাকে। অনেকে বাধ্য হয়ে সে বর্জ্য রাস্তায় ফেলে দেন। এতে সড়কে চলাচল করার সময় বাতাসে দুর্গন্ধ আসে।
আরও পড়ুন: কেউ না এলেও একাই ভাঙা রাস্তা সারছেন ভ্যানচালক
হায়দার আলীর সঙ্গে যখন কথা হচ্ছিল, তখন পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন একই এলাকার বাসিন্দা তারিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, আরামবাগ-ফকিরাপুলের গলি, রাস্তা নোংরা হলেও মতিঝিল-দিলকুশা এলাকার চিত্র ভিন্ন। বাণিজ্যিক এ দুটি এলাকার বহুতল ভবন থেকে ঠিকই নিয়মিত বর্জ্য সংগ্রহ করে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের লোকজন। সেখানের প্রতিটি অফিস থেকে মাসে ৫০০ থেকে এক হাজার টাকা পর্যন্ত নেয় তারা। তাই বাণিজ্যিক এই এলাকা দুটিতেই তারা বেশি গুরুত্ব দেয়।
ডিএসসিসির ৯ নম্বর ওয়ার্ড কার্যালয় সূত্র জানায়, গত আগস্টে ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বর্জ্য সংগ্রহে দরপত্র আহ্বান করে ডিএসসিসি। দরপত্রে সর্বোচ্চ দরদাতা (১২ লাখ টাকা) হয় বিল্লাল এন্টারপ্রাইজ। এর আগের বছরও তারা সর্বোচ্চ দর দিয়ে এ ওয়ার্ডের বর্জ্য সংগ্রহের দায়িত্ব পেয়েছিল।
তবে বর্জ্য সংগ্রহে নাগরিকদের এই অভিযোগের বিষয়ে বিল্লাল এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী বিল্লাল হোসাইন জাগো নিউজকে বলেন, অনিয়মিত বর্জ্য সংগ্রহের যে অভিযোগ করা হচ্ছে, তা ঠিক নয়। তারা সব বাসা থেকেই নিয়মিত বর্জ্য সংগ্রহ করেন। গলি বা রাস্তার কোথাও কোনো বর্জ্য স্তূপ হয়ে থাকে না।
তিনি বলেন, সিটি করপোরেশন থেকে বাড়ির বাসিন্দাদের ময়লা নিচে রাখার জন্য নির্দেশনা দেওয়া আছে। কিন্তু বাসিন্দারা বাড়ির নিচে নির্দিষ্ট স্থানে ময়লা রাখে না। পাঁচ-সাত তলা উঠে ময়লা আনতে হয়। এরমধ্যে মেসগুলোর ময়লা সংগ্রহে সবচেয়ে সমস্যা হয়। দেখা যায়, আমরা যখন ময়লা আনতে যাই, মেসের লোকজন রুমে থাকে না। তাই প্রত্যেকে বাসার নিচে নির্দিষ্ট স্থানে ময়লা রাখলে ভালো হয়।
জানতে চাইলে ডিএসসিসির ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. মোজাম্মেল হক জাগো নিউজকে বলেন, আমার ওয়ার্ডের মানুষের অভিযোগের শেষ নেই। কিন্তু তারা যদি রাতে তরকারি কাটেন, সেই ময়লা আমরা কীভাবে নেবো? আমার ওয়ার্ডের মানুষই সচেতন না। তারপরও কোথাও থেকে যদি সিটি করপোরেশনের লোকজন ময়লা না নেয়, সেটি আমাকে জানাতে বলছি। তারা সেটা করে না।
তিনি বলেন, আমার ওয়ার্ডের বাসাবাড়ি থেকে বর্জ্য সংগ্রহ করতে একটি প্রতিষ্ঠান সিটি করপোরেশন থেকে দরপত্রের মাধ্যমে অনুমোদন পেয়েছে। এখন তারা নির্দিষ্ট টাকার বিনিময়ে বাসাবাড়ির বর্জ্য সংগ্রহ করেন। কিন্তু অনেকেই তাদের টাকা দিতে চায় না। তাই হয়তো কিছু বাসার বর্জ্য তারা সংগ্রহ করেন না। আমি আহ্বান জানাবো, নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা দেওয়ার পরও যদি ঠিকাদার বর্জ্য না নেয়, বাসিন্দারা যাতে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে।সময়ের অনুসন্ধান চলছে