ঢাকা ১২:৫৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৪

প্রতারক চক্রের খপ্পরে চাকরি প্রত্যাশীরা সাভারে সাইনবোর্ড সর্বস্ব অফিস ও দালালদের দৌরাত্ম্য

সময়ের কন্ঠ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : ০৯:৩৩:২৫ পূর্বাহ্ণ, রবিবার, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১
  • / ৩২৭ ৫০০০.০ বার পাঠক

সময়ের অনুসন্ধান রিপোর্ট।।

রাজধানীর অদূরে সাভার উপজেলা ইতিমধ্যেই শিল্প নগরী ও আবাসিক এলাকা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। সাভার ও আশুলিয়া এলাকায় শত শত শিল্পপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠার ফলে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মানুষ প্রতিনিয়তই চাকরির সন্ধানে সাভারে ছুটে আসেন।

Nogod

আর এ সুযোগে একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র তাদের প্রতারণার ফাঁদে ফেলছে। এ চক্রের খপ্পরে পড়ে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আগত চাকরি প্রত্যাশীরা প্রতারিত হচ্ছেন।

অনেক ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীদের অভিযোগের ভিত্তিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষকারী বাহিনীর সদস্যরা প্রতারক চক্রের সদস্যদের আটক করলেও বন্ধ হচ্ছে না প্রতারণা। নানা কৌশলে এ চক্রটি তাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে । চক্রের রয়েছে বিভিন্ন সাইনবোর্ড সর্বস্ব অফিস এবং কমিশনভুক্ত একাধিক দালাল। গ্রামাঞ্চল থেকে আসা চাকরি প্রত্যাশীদের সঙ্গে এ চক্রের দালালরা প্রথমে সখ্যতা গড়ে তুলে পরবর্তীতে বিভিন্ন আকর্ষণীয় বেতনে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে অফিসে ডেকে নেয়। এ ভাবে সহজ সরল মানুষ প্রতারকদের কথায় মুগ্ধ হয়ে তাদের ফাঁদে পড়েন।সাভার-আশুলিয়া অঞ্চলে এ ধরনের অনেক অফিস খুলে বসেছে প্রতারক চক্র। সম্প্রতি গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সাভারের স্ট্রং আরএম সিকিউরিটি সার্ভিসেস লিমিটেডের অফিসে অভিযান চালায় র‌্যাব-৪-এর সদস্যরা। প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষকে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ছিল। ভুয়া প্রতিষ্ঠানটিতে হানা দিয়ে র্যাব সদস্যরা প্রতারকদের আটক করে এবং ২৫ জন ভুক্তভোগীসহ ১৫০টি ভর্তি ফরম, ৩৫০টি আইডি কার্ড, টাকা জমার রশিদ, পাঁচটি নিয়োগপত্র, দুইটি ভর্তি ফরম, দুইটি হিসাব বই এবং ছয়টি মোবাইল ফোনসেট উদ্ধার করে।

সাভার পৌরসভাধীন আনন্দপুর মহল্লায় প্রজন্ম ফোর্স লিমিটেড নামে একই ধরনের একটি ভুয়া প্রতিষ্ঠান থেকে চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আশুলিয়ার টঙ্গাবাড়ি এলাকায় অবস্থিত জীম ফোর্স গার্ড লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে তিন নারীসহ ১৪ জনকে আটক ও প্রতারণার শিকার ২০ জনকে উদ্ধার করে র‌্যাব।এ সময় প্রতিষ্ঠানটিতে ব্যবহূত বিভিন্ন মালামাল জব্দ করা হয়। র‌্যাব জানায়, একটি প্রতারক চক্র প্রজন্ম ফোর্স নামের প্রতিষ্ঠান খুলে বিভিন্ন নিরীহ মানুষকে বেশি বেতনে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেওয়ার নামে দীর্ঘদিন ধরে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল। সম্প্রতি শাকিল আহমেদ নামের এক যুবককে চাকরি দেওয়ার কথা বলে কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নিলেও তিনি চাকরি না পেয়ে র‌্যাব-৪-এর দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেন। তার পরিপ্রেক্ষিতে তদন্তে মাঠে নামে র‌্যাব। এরপর ঐ প্রতিষ্ঠানে প্রতারণার শিকার আরো ১২ জন র‌্যাবের কাছে অভিযোগ দিলে র‌্যাব সদস্যরা ঐ অফিসে অভিযান চালায়।

এ সময় চার প্রতারককে আটক এবং যোগদান ফরম ভাউচার, অঙ্গীকারনামাসহ বিভিন্ন ধরনের কাগজপত্র জব্দ করে। র‌্যাব-৪ সিপিসি-২-এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর এ এইচ এম আদনান তফাদার বলেন, একাধিক প্রতারক চক্র সাভারের বিভিন্ন এলাকায় অফিস ভাড়া নিয়ে নামে-বেনামে ভূঁইফোঁড় প্রতিষ্ঠান খুলে প্রতারণা করে আসছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অল্প শিক্ষিত বেকার এবং আর্থিকভাবে অসচ্ছল যুবক-যুবতীদের আকর্ষণীয় ও উচ্চ বেতনে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে তাদের সঙ্গে প্রতারণা এবং হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। এসব প্রতারকদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

প্রতারক চক্রের খপ্পরে চাকরি প্রত্যাশীরা সাভারে সাইনবোর্ড সর্বস্ব অফিস ও দালালদের দৌরাত্ম্য

আপডেট টাইম : ০৯:৩৩:২৫ পূর্বাহ্ণ, রবিবার, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১

সময়ের অনুসন্ধান রিপোর্ট।।

রাজধানীর অদূরে সাভার উপজেলা ইতিমধ্যেই শিল্প নগরী ও আবাসিক এলাকা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। সাভার ও আশুলিয়া এলাকায় শত শত শিল্পপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠার ফলে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মানুষ প্রতিনিয়তই চাকরির সন্ধানে সাভারে ছুটে আসেন।

Nogod

আর এ সুযোগে একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র তাদের প্রতারণার ফাঁদে ফেলছে। এ চক্রের খপ্পরে পড়ে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আগত চাকরি প্রত্যাশীরা প্রতারিত হচ্ছেন।

অনেক ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীদের অভিযোগের ভিত্তিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষকারী বাহিনীর সদস্যরা প্রতারক চক্রের সদস্যদের আটক করলেও বন্ধ হচ্ছে না প্রতারণা। নানা কৌশলে এ চক্রটি তাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে । চক্রের রয়েছে বিভিন্ন সাইনবোর্ড সর্বস্ব অফিস এবং কমিশনভুক্ত একাধিক দালাল। গ্রামাঞ্চল থেকে আসা চাকরি প্রত্যাশীদের সঙ্গে এ চক্রের দালালরা প্রথমে সখ্যতা গড়ে তুলে পরবর্তীতে বিভিন্ন আকর্ষণীয় বেতনে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে অফিসে ডেকে নেয়। এ ভাবে সহজ সরল মানুষ প্রতারকদের কথায় মুগ্ধ হয়ে তাদের ফাঁদে পড়েন।সাভার-আশুলিয়া অঞ্চলে এ ধরনের অনেক অফিস খুলে বসেছে প্রতারক চক্র। সম্প্রতি গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সাভারের স্ট্রং আরএম সিকিউরিটি সার্ভিসেস লিমিটেডের অফিসে অভিযান চালায় র‌্যাব-৪-এর সদস্যরা। প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষকে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ছিল। ভুয়া প্রতিষ্ঠানটিতে হানা দিয়ে র্যাব সদস্যরা প্রতারকদের আটক করে এবং ২৫ জন ভুক্তভোগীসহ ১৫০টি ভর্তি ফরম, ৩৫০টি আইডি কার্ড, টাকা জমার রশিদ, পাঁচটি নিয়োগপত্র, দুইটি ভর্তি ফরম, দুইটি হিসাব বই এবং ছয়টি মোবাইল ফোনসেট উদ্ধার করে।

সাভার পৌরসভাধীন আনন্দপুর মহল্লায় প্রজন্ম ফোর্স লিমিটেড নামে একই ধরনের একটি ভুয়া প্রতিষ্ঠান থেকে চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আশুলিয়ার টঙ্গাবাড়ি এলাকায় অবস্থিত জীম ফোর্স গার্ড লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে তিন নারীসহ ১৪ জনকে আটক ও প্রতারণার শিকার ২০ জনকে উদ্ধার করে র‌্যাব।এ সময় প্রতিষ্ঠানটিতে ব্যবহূত বিভিন্ন মালামাল জব্দ করা হয়। র‌্যাব জানায়, একটি প্রতারক চক্র প্রজন্ম ফোর্স নামের প্রতিষ্ঠান খুলে বিভিন্ন নিরীহ মানুষকে বেশি বেতনে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেওয়ার নামে দীর্ঘদিন ধরে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল। সম্প্রতি শাকিল আহমেদ নামের এক যুবককে চাকরি দেওয়ার কথা বলে কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নিলেও তিনি চাকরি না পেয়ে র‌্যাব-৪-এর দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেন। তার পরিপ্রেক্ষিতে তদন্তে মাঠে নামে র‌্যাব। এরপর ঐ প্রতিষ্ঠানে প্রতারণার শিকার আরো ১২ জন র‌্যাবের কাছে অভিযোগ দিলে র‌্যাব সদস্যরা ঐ অফিসে অভিযান চালায়।

এ সময় চার প্রতারককে আটক এবং যোগদান ফরম ভাউচার, অঙ্গীকারনামাসহ বিভিন্ন ধরনের কাগজপত্র জব্দ করে। র‌্যাব-৪ সিপিসি-২-এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর এ এইচ এম আদনান তফাদার বলেন, একাধিক প্রতারক চক্র সাভারের বিভিন্ন এলাকায় অফিস ভাড়া নিয়ে নামে-বেনামে ভূঁইফোঁড় প্রতিষ্ঠান খুলে প্রতারণা করে আসছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অল্প শিক্ষিত বেকার এবং আর্থিকভাবে অসচ্ছল যুবক-যুবতীদের আকর্ষণীয় ও উচ্চ বেতনে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে তাদের সঙ্গে প্রতারণা এবং হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। এসব প্রতারকদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।