ঢাকা ০৭:১৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৫, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo পাবনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রধান নাজিরের বদলী নিয়ে চরম অসন্তোষ Logo মহম্মদপুরে বিএনপি’র নির্বাচনী পথ সভা অনুষ্ঠিত Logo পীরগঞ্জে বিএনপির উদ্যোগে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প অনুষ্ঠিত Logo দেশের ধন্যাঢ্য ব্যক্তিরাও প্রতারণার শিকার অনিক ও সোহেলের ভুয়া “প্রাচীন পিলার ও কয়েন” চক্র Logo দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই প্রায় অর্ধশত বদলি বানিজ্য পিএইচডি জালিয়াতি-বদলি বানিজ্য-ঠিকাদারি সিন্ডিকেটের মূলহোতা খালেকুজ্জামান চৌধুরী Logo কাচিঘাটা রেঞ্জে গাছকাটা সিন্ডিকেটের তাণ্ডব রাতে চার–পাঁচশ গাছ উজাড়—বন রক্ষাকারীরাই অভিযুক্ত!** স্থানীয়দের অভিযোগ: “৫ আগস্টের পর এলাকা একেবারে মগের মুল্লুক—বন কেটে লুটে খাচ্ছে সবাই Logo চীনে ট্রেন দুর্ঘটনায় ১১ জন নিহত Logo ১২ ঘণ্টায় দ্বিতীয়বার ভূমিকম্পে কাঁপল ইন্দোনেশিয়া Logo প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির মামলা জয় ও পুতুলের ৫ বছরের কারাদণ্ড Logo তিন মামলায় হাসিনার ২১ বছরের কারাদণ্ড

পাকিস্তানে টিটিপির হয়ে যুদ্ধ করতে গিয়ে বাংলাদেশি দুই তরুণ নিহত

ছবি: সংগৃহীত

তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানের (টিটিপি) হয়ে যুদ্ধ করতে গিয়ে পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে দেশটির যৌথ নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে দুই বাংলাদেশি তরুণ নিহত হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন রতন ঢালীর (২৯) বাড়ি গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলায়। তবে আরেকজন নিহত ফয়সাল হোসেনের (২২) ঠিকানা জানা যায়নি।

নিহতদের বিষয়টি পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স (সিটিটিসি) ইউনিট নিশ্চিত করেছে।

সিটিটিসি বিশেষ পুলিশ সুপার রওশন সাদিয়া আফরোজ জানান, আমরা শতভাগ নিশ্চিত- রতন ঢালী টিটিপির সঙ্গে যুক্ত হয়ে পাকিস্তানে যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন।

গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রতন ও ফয়সাল ২০২৪ সালের ২৭ মার্চ বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেন এবং সেখান থেকে অবৈধভাবে আফগানিস্তান হয়ে পাকিস্তানে পৌঁছে টিটিপিতে যোগ দেয়।

রতন ঢালী ঢাকার খিলগাঁওয়ের একটি মেডিকেল সেন্টারে কাজ করতেন। তার বাবা আনোয়ার ঢালী ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চালক, মা সেলিনা বেগম। পরিবারের সঙ্গে শেষবার রতন যোগাযোগ করেন ২০২৪ সালের ১০ এপ্রিল রোজার ঈদে। সে তখন জানিয়েছিলেন, ভারতে আছেন এবং শিগগিরই দুবাই যাবেন।

তার মা সেলিনার প্রশ্নের উত্তরে রতন জানিয়েছিলেন, কাজের স্থান থেকে টাকা ব্যবস্থা করা হয়েছে। এরপর আর তিনি পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি।

রতনের বাবা আনোয়ার ঢালী বলেন, রতন গ্রামের বাড়ি থেকে সমস্ত কাগজপত্র নিয়ে গিয়েছিল। দুবাই যাওয়ার জন্য এটি প্রয়োজন ছিল। আমরা দেখার চেষ্টা করেছি, কিন্তু সে বলেছিল এতে তার যাত্রায় সমস্যা হবে।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, রতন পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন, তারপর পড়াশোনা বন্ধ করে মোবাইল সার্ভিসিং শিখতে শুরু করেন।

সিটিটিসি ও গোয়েন্দা সূত্র জানায়, চলতি বছরের ২৭ এপ্রিল পাকিস্তানিরা ওয়াজিরিস্তানে টিটিপির ৫৪ যোদ্ধাকে হত্যা করার পর অনুসন্ধান শুরু করে। নিহতদের মধ্যে সাভারের আহমেদ জুবায়েরও ছিলেন। এরপরের তদন্তে রতন ও ফয়সালের নাম শনাক্ত করা হয়।

স্থানীয়রা জানায়, রতন ঢালী ও ফয়সালের প্রাথমিক জীবন থেকে সাধারণ ছিল, কিন্তু শেষ কয়েক বছর ধরে তারা বিদেশে যাওয়ার কথা বলতেন।

গোয়েন্দা ও পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, রতন ও ফয়সাল টিটিপির সঙ্গে যুক্ত হয়ে বাংলাদেশি যুবকদের প্ররোচনা এবং বিদেশে যোগদানের পথ প্রশস্ত করার কাজেও জড়িত ছিল।

এ ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসন সতর্কতা জারি করেছে এবং পরিবারকে নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিতে পরামর্শ দিয়েছে। দেশের যুবকদের বিদেশে চরমপন্থী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হওয়া থেকে বিরত রাখতে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়ার প্রয়োজনীয়তার ওপর বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।


প্রিন্ট
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

পাবনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রধান নাজিরের বদলী নিয়ে চরম অসন্তোষ

পাকিস্তানে টিটিপির হয়ে যুদ্ধ করতে গিয়ে বাংলাদেশি দুই তরুণ নিহত

আপডেট সময় ১১:২৪:১১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫

ছবি: সংগৃহীত

তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানের (টিটিপি) হয়ে যুদ্ধ করতে গিয়ে পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে দেশটির যৌথ নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে দুই বাংলাদেশি তরুণ নিহত হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন রতন ঢালীর (২৯) বাড়ি গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলায়। তবে আরেকজন নিহত ফয়সাল হোসেনের (২২) ঠিকানা জানা যায়নি।

নিহতদের বিষয়টি পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স (সিটিটিসি) ইউনিট নিশ্চিত করেছে।

সিটিটিসি বিশেষ পুলিশ সুপার রওশন সাদিয়া আফরোজ জানান, আমরা শতভাগ নিশ্চিত- রতন ঢালী টিটিপির সঙ্গে যুক্ত হয়ে পাকিস্তানে যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন।

গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রতন ও ফয়সাল ২০২৪ সালের ২৭ মার্চ বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেন এবং সেখান থেকে অবৈধভাবে আফগানিস্তান হয়ে পাকিস্তানে পৌঁছে টিটিপিতে যোগ দেয়।

রতন ঢালী ঢাকার খিলগাঁওয়ের একটি মেডিকেল সেন্টারে কাজ করতেন। তার বাবা আনোয়ার ঢালী ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চালক, মা সেলিনা বেগম। পরিবারের সঙ্গে শেষবার রতন যোগাযোগ করেন ২০২৪ সালের ১০ এপ্রিল রোজার ঈদে। সে তখন জানিয়েছিলেন, ভারতে আছেন এবং শিগগিরই দুবাই যাবেন।

তার মা সেলিনার প্রশ্নের উত্তরে রতন জানিয়েছিলেন, কাজের স্থান থেকে টাকা ব্যবস্থা করা হয়েছে। এরপর আর তিনি পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি।

রতনের বাবা আনোয়ার ঢালী বলেন, রতন গ্রামের বাড়ি থেকে সমস্ত কাগজপত্র নিয়ে গিয়েছিল। দুবাই যাওয়ার জন্য এটি প্রয়োজন ছিল। আমরা দেখার চেষ্টা করেছি, কিন্তু সে বলেছিল এতে তার যাত্রায় সমস্যা হবে।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, রতন পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন, তারপর পড়াশোনা বন্ধ করে মোবাইল সার্ভিসিং শিখতে শুরু করেন।

সিটিটিসি ও গোয়েন্দা সূত্র জানায়, চলতি বছরের ২৭ এপ্রিল পাকিস্তানিরা ওয়াজিরিস্তানে টিটিপির ৫৪ যোদ্ধাকে হত্যা করার পর অনুসন্ধান শুরু করে। নিহতদের মধ্যে সাভারের আহমেদ জুবায়েরও ছিলেন। এরপরের তদন্তে রতন ও ফয়সালের নাম শনাক্ত করা হয়।

স্থানীয়রা জানায়, রতন ঢালী ও ফয়সালের প্রাথমিক জীবন থেকে সাধারণ ছিল, কিন্তু শেষ কয়েক বছর ধরে তারা বিদেশে যাওয়ার কথা বলতেন।

গোয়েন্দা ও পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, রতন ও ফয়সাল টিটিপির সঙ্গে যুক্ত হয়ে বাংলাদেশি যুবকদের প্ররোচনা এবং বিদেশে যোগদানের পথ প্রশস্ত করার কাজেও জড়িত ছিল।

এ ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসন সতর্কতা জারি করেছে এবং পরিবারকে নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিতে পরামর্শ দিয়েছে। দেশের যুবকদের বিদেশে চরমপন্থী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হওয়া থেকে বিরত রাখতে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়ার প্রয়োজনীয়তার ওপর বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।


প্রিন্ট