ঢাকা ১২:২৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ৮ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo আশুগঞ্জে পুলিশের বড় সাফল্য সাড়ে ৩৪ কেজি গাঁজা ও কাভার্ড ভ্যানসহ আটক ২ মাদক কারবারি Logo চেইন চুরির সন্দেহে যুবককে পিটিয়ে হত্যা Logo ভোটের গাড়ির যাত্রা শুরুর উদ্বোধনে ভিডিও বার্তায় প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনে ভয় থাকবে না, থাকবে নির্ভীক মত প্রকাশ Logo যেকোনো মূল্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে হবে: প্রধান উপদেষ্টা Logo এবার এনসিপি নেতাকে প্রকাশ্যে গুলি Logo একের পর হামলা-হত্যাকাণ্ড, প্রশাসন ‘নির্লিপ্ত’ কেন? Logo নাহিদ হাসনাতসহ গানম্যান পেলেন যারা Logo বারকোনা একতা ক্রীড়া সংঘ এর উদ্যোগে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগীতা অনুষ্ঠিত Logo হাদিকে গুলি করে হত্যা: ফয়সালের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা Logo হাদি হত্যা: ফয়সালদের ব্যাংকে ১২৭ কোটি টাকা লেনদেন

ফ্যাসিবাদ সরকারের গুমের শিকার সাভারের যুবদল নেতা সুরুজ্জামান

বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় গুমের শিকার হয়েছিলেন সাভারের যুবদল নেতা সুরুজ্জামান। ২০২৩ সালের আগস্ট মাসের ৫ তারিখ রাত ১০টার দিকে তাকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায় ডিবি পুলিশ পরিচয় দেয়া ৮-১০ জনের একটি সাদা পোশাকের দল। গুম হওয়ার ৬ দিন পর তাকে ফেরত দেওয়া হয়।

গুমের পর তার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে কয়েক দফা মোটা অংকের টাকা আদায় করে ডিবির কর্মকর্তারা। পরিবার থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পর ডিবি পুলিশ তাকে নাটকীয়ভাবে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে হাজির করে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী সুরুজ্জামানের।

যুবদল নেতা সুরুজ্জামান বলেন, ২০২৩ সালের আগস্ট মাসে-দেশজুড়ে তখন ফ্যাসিস্টবিরোধী আন্দোলনের উত্তাপ। বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের অনেক নেতাকর্মী গ্রেপ্তার এড়াতে ঢাকায় ভাড়া বাসায় অবস্থান করছিলেন। এ অবস্থায় আমাকে আদাবরের ভাড়া বাসা থেকে ২০২৩ সালের ৫ আগস্ট তুলে নিয়ে যায় ডিবির একটি টিম। আমাকে গাড়িতে তুলেই কালো কাপড়ের মুখোশ পরিয়ে বিভিন্ন অবান্তর প্রশ্ন করে এবং গাড়ির ভিতরেই আমাকে অত্যাচার করতে থাকে। এরপরে আমাকে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায় এবং আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক আমাকে দিয়ে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করে। তিনি আরো বলেন, গুমের পর অজ্ঞাত স্থানে আমাকে নিয়ে অমানবিক নির্যাতন চালানো হয়েছে, প্রথম তিন দিন কাটাতে হয়েছে রহস্যময় ‘আয়নাঘরে’ যেখানে সব সময় চোখ ও হাত বেঁধে রাখা হয়েছিল।

অন্ধকার ছোট একটি ঘরে শুধু ফ্যানের শব্দ শোনা যেত সেখানে দুনিয়ার কোন খবর বোঝা যেত না, দুনিয়ার কারো সাথে কোন যোগাযোগ করার ব্যবস্থা ছিল না, চারদিকে কালো অন্ধকার, মনে হচ্ছিল যেন একটা কবর। সেখানে যেমন শারীরিক নির্যাতন করতো তেমনি মানসিক নির্যাতন করতো, খাবার হিসেবে পেতাম শুধু পাউরুটি আর কলা। টয়লেটে যেতে হলে হাতে রশি বেঁধে নিয়ে যেত।

তিনি আরও বলেন, কতটা নির্মম নির্যাতন করা হয়েছে আমাকে ভাষায় প্রকাশ করার মত নয়, তাদের মারপিট অত্যাচারে আমি কয়েকবার জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। এভাবে যে কত সাধারন মানুষ এবং আমাদের নেতাকর্মীকে খুন করা হয়েছে ও আটকে রাখা হতো নির্যাতন করা হতো তার কোন হিসাব মিলানো কঠিন।

গুমের ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে এক পর্যায়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন যুবদল নেতা সুরুজ্জামান। এ সময় তিনি তার সাথে যে অমানবিক অন্যায় অত্যাচার হয়েছে তার বিচার দাবি করেন। তিনি আরো বলেন, এরকম জঘন্য অপরাধ, মানবতা বিরোধী কাজ এই বাংলাদেশের মাটিতে যেন আর না হয়, এই বাংলাদেশের মাটিতে দোষী ব্যক্তিদের শাস্তি হওয়া উচিত, বিচার হওয়া উচিত ভবিষ্যতে যেন এরকম দুঃসাহস কেউ না দেখাতে পারে।বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে ঘটে যাওয়া ওই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তসাপেক্ষে দোষীদের বিচারের দাবি জানিয়েছেন তিনি।


প্রিন্ট
ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

আশুগঞ্জে পুলিশের বড় সাফল্য সাড়ে ৩৪ কেজি গাঁজা ও কাভার্ড ভ্যানসহ আটক ২ মাদক কারবারি

ফ্যাসিবাদ সরকারের গুমের শিকার সাভারের যুবদল নেতা সুরুজ্জামান

আপডেট সময় ০১:২১:৩৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫

বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় গুমের শিকার হয়েছিলেন সাভারের যুবদল নেতা সুরুজ্জামান। ২০২৩ সালের আগস্ট মাসের ৫ তারিখ রাত ১০টার দিকে তাকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায় ডিবি পুলিশ পরিচয় দেয়া ৮-১০ জনের একটি সাদা পোশাকের দল। গুম হওয়ার ৬ দিন পর তাকে ফেরত দেওয়া হয়।

গুমের পর তার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে কয়েক দফা মোটা অংকের টাকা আদায় করে ডিবির কর্মকর্তারা। পরিবার থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পর ডিবি পুলিশ তাকে নাটকীয়ভাবে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে হাজির করে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী সুরুজ্জামানের।

যুবদল নেতা সুরুজ্জামান বলেন, ২০২৩ সালের আগস্ট মাসে-দেশজুড়ে তখন ফ্যাসিস্টবিরোধী আন্দোলনের উত্তাপ। বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের অনেক নেতাকর্মী গ্রেপ্তার এড়াতে ঢাকায় ভাড়া বাসায় অবস্থান করছিলেন। এ অবস্থায় আমাকে আদাবরের ভাড়া বাসা থেকে ২০২৩ সালের ৫ আগস্ট তুলে নিয়ে যায় ডিবির একটি টিম। আমাকে গাড়িতে তুলেই কালো কাপড়ের মুখোশ পরিয়ে বিভিন্ন অবান্তর প্রশ্ন করে এবং গাড়ির ভিতরেই আমাকে অত্যাচার করতে থাকে। এরপরে আমাকে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায় এবং আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক আমাকে দিয়ে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করে। তিনি আরো বলেন, গুমের পর অজ্ঞাত স্থানে আমাকে নিয়ে অমানবিক নির্যাতন চালানো হয়েছে, প্রথম তিন দিন কাটাতে হয়েছে রহস্যময় ‘আয়নাঘরে’ যেখানে সব সময় চোখ ও হাত বেঁধে রাখা হয়েছিল।

অন্ধকার ছোট একটি ঘরে শুধু ফ্যানের শব্দ শোনা যেত সেখানে দুনিয়ার কোন খবর বোঝা যেত না, দুনিয়ার কারো সাথে কোন যোগাযোগ করার ব্যবস্থা ছিল না, চারদিকে কালো অন্ধকার, মনে হচ্ছিল যেন একটা কবর। সেখানে যেমন শারীরিক নির্যাতন করতো তেমনি মানসিক নির্যাতন করতো, খাবার হিসেবে পেতাম শুধু পাউরুটি আর কলা। টয়লেটে যেতে হলে হাতে রশি বেঁধে নিয়ে যেত।

তিনি আরও বলেন, কতটা নির্মম নির্যাতন করা হয়েছে আমাকে ভাষায় প্রকাশ করার মত নয়, তাদের মারপিট অত্যাচারে আমি কয়েকবার জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। এভাবে যে কত সাধারন মানুষ এবং আমাদের নেতাকর্মীকে খুন করা হয়েছে ও আটকে রাখা হতো নির্যাতন করা হতো তার কোন হিসাব মিলানো কঠিন।

গুমের ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে এক পর্যায়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন যুবদল নেতা সুরুজ্জামান। এ সময় তিনি তার সাথে যে অমানবিক অন্যায় অত্যাচার হয়েছে তার বিচার দাবি করেন। তিনি আরো বলেন, এরকম জঘন্য অপরাধ, মানবতা বিরোধী কাজ এই বাংলাদেশের মাটিতে যেন আর না হয়, এই বাংলাদেশের মাটিতে দোষী ব্যক্তিদের শাস্তি হওয়া উচিত, বিচার হওয়া উচিত ভবিষ্যতে যেন এরকম দুঃসাহস কেউ না দেখাতে পারে।বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে ঘটে যাওয়া ওই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তসাপেক্ষে দোষীদের বিচারের দাবি জানিয়েছেন তিনি।


প্রিন্ট