ঢাকা ০৭:৪৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৫, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo পাবনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রধান নাজিরের বদলী নিয়ে চরম অসন্তোষ Logo মহম্মদপুরে বিএনপি’র নির্বাচনী পথ সভা অনুষ্ঠিত Logo পীরগঞ্জে বিএনপির উদ্যোগে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প অনুষ্ঠিত Logo দেশের ধন্যাঢ্য ব্যক্তিরাও প্রতারণার শিকার অনিক ও সোহেলের ভুয়া “প্রাচীন পিলার ও কয়েন” চক্র Logo দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই প্রায় অর্ধশত বদলি বানিজ্য পিএইচডি জালিয়াতি-বদলি বানিজ্য-ঠিকাদারি সিন্ডিকেটের মূলহোতা খালেকুজ্জামান চৌধুরী Logo কাচিঘাটা রেঞ্জে গাছকাটা সিন্ডিকেটের তাণ্ডব রাতে চার–পাঁচশ গাছ উজাড়—বন রক্ষাকারীরাই অভিযুক্ত!** স্থানীয়দের অভিযোগ: “৫ আগস্টের পর এলাকা একেবারে মগের মুল্লুক—বন কেটে লুটে খাচ্ছে সবাই Logo চীনে ট্রেন দুর্ঘটনায় ১১ জন নিহত Logo ১২ ঘণ্টায় দ্বিতীয়বার ভূমিকম্পে কাঁপল ইন্দোনেশিয়া Logo প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির মামলা জয় ও পুতুলের ৫ বছরের কারাদণ্ড Logo তিন মামলায় হাসিনার ২১ বছরের কারাদণ্ড

ফ্যাসিবাদ সরকারের গুমের শিকার সাভারের যুবদল নেতা সুরুজ্জামান

বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় গুমের শিকার হয়েছিলেন সাভারের যুবদল নেতা সুরুজ্জামান। ২০২৩ সালের আগস্ট মাসের ৫ তারিখ রাত ১০টার দিকে তাকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায় ডিবি পুলিশ পরিচয় দেয়া ৮-১০ জনের একটি সাদা পোশাকের দল। গুম হওয়ার ৬ দিন পর তাকে ফেরত দেওয়া হয়।

গুমের পর তার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে কয়েক দফা মোটা অংকের টাকা আদায় করে ডিবির কর্মকর্তারা। পরিবার থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পর ডিবি পুলিশ তাকে নাটকীয়ভাবে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে হাজির করে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী সুরুজ্জামানের।

যুবদল নেতা সুরুজ্জামান বলেন, ২০২৩ সালের আগস্ট মাসে-দেশজুড়ে তখন ফ্যাসিস্টবিরোধী আন্দোলনের উত্তাপ। বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের অনেক নেতাকর্মী গ্রেপ্তার এড়াতে ঢাকায় ভাড়া বাসায় অবস্থান করছিলেন। এ অবস্থায় আমাকে আদাবরের ভাড়া বাসা থেকে ২০২৩ সালের ৫ আগস্ট তুলে নিয়ে যায় ডিবির একটি টিম। আমাকে গাড়িতে তুলেই কালো কাপড়ের মুখোশ পরিয়ে বিভিন্ন অবান্তর প্রশ্ন করে এবং গাড়ির ভিতরেই আমাকে অত্যাচার করতে থাকে। এরপরে আমাকে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায় এবং আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক আমাকে দিয়ে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করে। তিনি আরো বলেন, গুমের পর অজ্ঞাত স্থানে আমাকে নিয়ে অমানবিক নির্যাতন চালানো হয়েছে, প্রথম তিন দিন কাটাতে হয়েছে রহস্যময় ‘আয়নাঘরে’ যেখানে সব সময় চোখ ও হাত বেঁধে রাখা হয়েছিল।

অন্ধকার ছোট একটি ঘরে শুধু ফ্যানের শব্দ শোনা যেত সেখানে দুনিয়ার কোন খবর বোঝা যেত না, দুনিয়ার কারো সাথে কোন যোগাযোগ করার ব্যবস্থা ছিল না, চারদিকে কালো অন্ধকার, মনে হচ্ছিল যেন একটা কবর। সেখানে যেমন শারীরিক নির্যাতন করতো তেমনি মানসিক নির্যাতন করতো, খাবার হিসেবে পেতাম শুধু পাউরুটি আর কলা। টয়লেটে যেতে হলে হাতে রশি বেঁধে নিয়ে যেত।

তিনি আরও বলেন, কতটা নির্মম নির্যাতন করা হয়েছে আমাকে ভাষায় প্রকাশ করার মত নয়, তাদের মারপিট অত্যাচারে আমি কয়েকবার জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। এভাবে যে কত সাধারন মানুষ এবং আমাদের নেতাকর্মীকে খুন করা হয়েছে ও আটকে রাখা হতো নির্যাতন করা হতো তার কোন হিসাব মিলানো কঠিন।

গুমের ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে এক পর্যায়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন যুবদল নেতা সুরুজ্জামান। এ সময় তিনি তার সাথে যে অমানবিক অন্যায় অত্যাচার হয়েছে তার বিচার দাবি করেন। তিনি আরো বলেন, এরকম জঘন্য অপরাধ, মানবতা বিরোধী কাজ এই বাংলাদেশের মাটিতে যেন আর না হয়, এই বাংলাদেশের মাটিতে দোষী ব্যক্তিদের শাস্তি হওয়া উচিত, বিচার হওয়া উচিত ভবিষ্যতে যেন এরকম দুঃসাহস কেউ না দেখাতে পারে।বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে ঘটে যাওয়া ওই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তসাপেক্ষে দোষীদের বিচারের দাবি জানিয়েছেন তিনি।


প্রিন্ট
ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

পাবনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রধান নাজিরের বদলী নিয়ে চরম অসন্তোষ

ফ্যাসিবাদ সরকারের গুমের শিকার সাভারের যুবদল নেতা সুরুজ্জামান

আপডেট সময় ০১:২১:৩৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫

বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় গুমের শিকার হয়েছিলেন সাভারের যুবদল নেতা সুরুজ্জামান। ২০২৩ সালের আগস্ট মাসের ৫ তারিখ রাত ১০টার দিকে তাকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায় ডিবি পুলিশ পরিচয় দেয়া ৮-১০ জনের একটি সাদা পোশাকের দল। গুম হওয়ার ৬ দিন পর তাকে ফেরত দেওয়া হয়।

গুমের পর তার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে কয়েক দফা মোটা অংকের টাকা আদায় করে ডিবির কর্মকর্তারা। পরিবার থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পর ডিবি পুলিশ তাকে নাটকীয়ভাবে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে হাজির করে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী সুরুজ্জামানের।

যুবদল নেতা সুরুজ্জামান বলেন, ২০২৩ সালের আগস্ট মাসে-দেশজুড়ে তখন ফ্যাসিস্টবিরোধী আন্দোলনের উত্তাপ। বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের অনেক নেতাকর্মী গ্রেপ্তার এড়াতে ঢাকায় ভাড়া বাসায় অবস্থান করছিলেন। এ অবস্থায় আমাকে আদাবরের ভাড়া বাসা থেকে ২০২৩ সালের ৫ আগস্ট তুলে নিয়ে যায় ডিবির একটি টিম। আমাকে গাড়িতে তুলেই কালো কাপড়ের মুখোশ পরিয়ে বিভিন্ন অবান্তর প্রশ্ন করে এবং গাড়ির ভিতরেই আমাকে অত্যাচার করতে থাকে। এরপরে আমাকে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায় এবং আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক আমাকে দিয়ে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করে। তিনি আরো বলেন, গুমের পর অজ্ঞাত স্থানে আমাকে নিয়ে অমানবিক নির্যাতন চালানো হয়েছে, প্রথম তিন দিন কাটাতে হয়েছে রহস্যময় ‘আয়নাঘরে’ যেখানে সব সময় চোখ ও হাত বেঁধে রাখা হয়েছিল।

অন্ধকার ছোট একটি ঘরে শুধু ফ্যানের শব্দ শোনা যেত সেখানে দুনিয়ার কোন খবর বোঝা যেত না, দুনিয়ার কারো সাথে কোন যোগাযোগ করার ব্যবস্থা ছিল না, চারদিকে কালো অন্ধকার, মনে হচ্ছিল যেন একটা কবর। সেখানে যেমন শারীরিক নির্যাতন করতো তেমনি মানসিক নির্যাতন করতো, খাবার হিসেবে পেতাম শুধু পাউরুটি আর কলা। টয়লেটে যেতে হলে হাতে রশি বেঁধে নিয়ে যেত।

তিনি আরও বলেন, কতটা নির্মম নির্যাতন করা হয়েছে আমাকে ভাষায় প্রকাশ করার মত নয়, তাদের মারপিট অত্যাচারে আমি কয়েকবার জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। এভাবে যে কত সাধারন মানুষ এবং আমাদের নেতাকর্মীকে খুন করা হয়েছে ও আটকে রাখা হতো নির্যাতন করা হতো তার কোন হিসাব মিলানো কঠিন।

গুমের ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে এক পর্যায়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন যুবদল নেতা সুরুজ্জামান। এ সময় তিনি তার সাথে যে অমানবিক অন্যায় অত্যাচার হয়েছে তার বিচার দাবি করেন। তিনি আরো বলেন, এরকম জঘন্য অপরাধ, মানবতা বিরোধী কাজ এই বাংলাদেশের মাটিতে যেন আর না হয়, এই বাংলাদেশের মাটিতে দোষী ব্যক্তিদের শাস্তি হওয়া উচিত, বিচার হওয়া উচিত ভবিষ্যতে যেন এরকম দুঃসাহস কেউ না দেখাতে পারে।বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে ঘটে যাওয়া ওই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তসাপেক্ষে দোষীদের বিচারের দাবি জানিয়েছেন তিনি।


প্রিন্ট