ঢাকা ০৩:১৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৫, ৪ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo স্পট ফিক্সিং বিতর্ক নিয়ে শাকিব খানের ঢাকা ক্যাপিটালসের বিশেষ বিবৃতি Logo ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন, পেছানোর কোনো সুযোগ নেই: আসিফ নজরুল Logo আশুলিয়ার বাইপাইলে ভোরবেলা পথচারীর সর্বস্ব ছিনতাইকরার সময় তিন ছিনতাইকারীকে আটক করে টহলরত সেনাবাহিনী Logo দেশি-প্রবাসী কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের ভিউ ব্যবসা সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভ্রান্তি Logo লিভার পরিষ্কার করার জন্য হারবাল পণ্য কি আসলেই কাজ করে? Logo একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা তারেক রহমান-বাবরের খালাসের বিরুদ্ধে আপিল শুনানি চলছে Logo পাবনায় ‘ময়েজ বাহিনীর’ অস্ত্র তৈরির কারখানার সন্ধান Logo গাজায় অব্যাহত ইসরাইলি হামলা, নিহত ছাড়াল ৬২ হাজার Logo প্লাস্টিকের হাঁড়ি-পাতিলের আড়ালে প্রতারণার সাম্রাজ্য ফাঁস — ধুমপাড়ায় ভুয়া কবিরাজ বাবুল শেখের ভয়ঙ্কর খেলা Logo নাসিরনগরে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহের উদ্বোধন

প্লাস্টিকের হাঁড়ি-পাতিলের আড়ালে প্রতারণার সাম্রাজ্য ফাঁস — ধুমপাড়ায় ভুয়া কবিরাজ বাবুল শেখের ভয়ঙ্কর খেলা

  • বিশেষ প্রতিবেদকঃ
  • আপডেট সময় ১১:০৭:২০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৫
  • ৪ ১০.০০০ বার পড়া হয়েছে

চট্টগ্রামের ধুমপাড়া এলাকার সাগরপাড় রোডের পাশে একটি ছোট প্লাস্টিকের হাঁড়ি-পাতিলের দোকান—যেটি সাধারণ মানুষের চোখে একেবারেই নিরীহ ব্যবসা। কিন্তু দোকানের আড়ালে, অন্ধকার স্থানে, সাইনবোর্ডবিহীন একটি ‘গোপন চেম্বার’-এ চলছিল দীর্ঘ সাত বছরের এক ভয়ঙ্কর প্রতারণার ব্যবসা। এখানেই ভুয়া কবিরাজ বাবুল শেখ অসংখ্য অসহায় ও কুসংস্কারপ্রবণ মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছেন।

গোপন অনুসন্ধানী অভিযানে ধরা পড়ে বাবুল শেখ। ক্যামেরায় ধরা পড়ে—রোগীর সামনে রহস্যময় গুঁড়া, পুরনো কাপড়, কোরআন শরীফের স্ট্যান্ড, মন্ত্র লেখা কাগজ, তাবিজ-কবচ ও নানা প্রপস সাজিয়ে বসে আছেন তিনি। পাশে এক অসুস্থ রোগী, যিনি আধুনিক চিকিৎসা না নিয়ে এই ভুয়া কবিরাজের অন্ধ বিশ্বাসে ফেঁসে গিয়েছেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, বাবুল শেখের কোনো সরকারি অনুমোদন বা লাইসেন্স নেই। তবুও তিনি নিজেকে ক্ষমতাধর ‘কবিরাজ’ দাবি করে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। আশ্চর্যের বিষয়, শুধু কবিরাজগিরি নয়—দোকানে প্লাস্টিকের পণ্য বিক্রির আড়ালে তিনি ‘ওজালি’ (ধর্মীয় চিকিৎসা) সেবাও দিচ্ছেন। যখনই কেউ তার লাইসেন্স বা অনুমোদনের বিষয়ে প্রশ্ন তোলে, তিনি প্রকাশ্যে হুমকি দেন এবং দাবি করেন—“আমার পকেটে সেনাবাহিনী, র‌্যাব, পুলিশ—সবাই আছে, কেউ আমাকে কিছু করতে পারবে না।”

গত সাত থেকে দশ বছরে অসংখ্য মানুষ তার ফাঁদে পড়েছেন। সংসারের অশান্তি, সন্তান না হওয়া, জন্ডিস, লিভার রোগ—এমনকি মানসিক সমস্যা সমাধানের নামে প্রতিবার হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি। অনেকের অবস্থা চিকিৎসাহীনতায় আরও খারাপ হয়েছে, কেউ কেউ সর্বস্বান্ত হয়ে পথে বসেছেন।

ভুক্তভোগীদের অনেকেই সামাজিক লজ্জা ও ভয়ের কারণে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে চান না। তবে অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের হাতে থাকা ভিডিও, ছবি ও সাক্ষাৎকার প্রকাশ পেলে এলাকায় ব্যাপক তোলপাড় হবে বলে স্থানীয়দের ধারণা।

সাংবাদিক সমাজের ভাষায়—“এই ধরনের ভুয়া কবিরাজরা শুধু মানুষের টাকা নয়, জীবন, মানসিক শান্তি ও সামাজিক মর্যাদাও ধ্বংস করছে।”

জনসচেতনতার আহ্বানঃ
কখনো ভুয়া কবিরাজ, ওঝা বা তাবিজ-কবচ ব্যবসায়ীর ফাঁদে পা দেবেন না। রোগের সঠিক চিকিৎসার জন্য নিবন্ধিত ডাক্তার ও আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি বেছে নিন। কুসংস্কারের নামে আপনার অর্থ ও জীবন দুটোই যেন ধ্বংস না হয়।

প্রশাসনের প্রতি নিরীহ মানুষের দাবি:
অবিলম্বে বাবুল শেখ ও তার মতো প্রতারকদের গ্রেপ্তার করে কঠোর শাস্তির আওতায় আনুন, যাতে অন্য প্রতারকেরা ভয় পায় এবং এ ধরনের কালোবাজারি স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়।


প্রিন্ট
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

স্পট ফিক্সিং বিতর্ক নিয়ে শাকিব খানের ঢাকা ক্যাপিটালসের বিশেষ বিবৃতি

প্লাস্টিকের হাঁড়ি-পাতিলের আড়ালে প্রতারণার সাম্রাজ্য ফাঁস — ধুমপাড়ায় ভুয়া কবিরাজ বাবুল শেখের ভয়ঙ্কর খেলা

আপডেট সময় ১১:০৭:২০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৫

চট্টগ্রামের ধুমপাড়া এলাকার সাগরপাড় রোডের পাশে একটি ছোট প্লাস্টিকের হাঁড়ি-পাতিলের দোকান—যেটি সাধারণ মানুষের চোখে একেবারেই নিরীহ ব্যবসা। কিন্তু দোকানের আড়ালে, অন্ধকার স্থানে, সাইনবোর্ডবিহীন একটি ‘গোপন চেম্বার’-এ চলছিল দীর্ঘ সাত বছরের এক ভয়ঙ্কর প্রতারণার ব্যবসা। এখানেই ভুয়া কবিরাজ বাবুল শেখ অসংখ্য অসহায় ও কুসংস্কারপ্রবণ মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছেন।

গোপন অনুসন্ধানী অভিযানে ধরা পড়ে বাবুল শেখ। ক্যামেরায় ধরা পড়ে—রোগীর সামনে রহস্যময় গুঁড়া, পুরনো কাপড়, কোরআন শরীফের স্ট্যান্ড, মন্ত্র লেখা কাগজ, তাবিজ-কবচ ও নানা প্রপস সাজিয়ে বসে আছেন তিনি। পাশে এক অসুস্থ রোগী, যিনি আধুনিক চিকিৎসা না নিয়ে এই ভুয়া কবিরাজের অন্ধ বিশ্বাসে ফেঁসে গিয়েছেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, বাবুল শেখের কোনো সরকারি অনুমোদন বা লাইসেন্স নেই। তবুও তিনি নিজেকে ক্ষমতাধর ‘কবিরাজ’ দাবি করে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। আশ্চর্যের বিষয়, শুধু কবিরাজগিরি নয়—দোকানে প্লাস্টিকের পণ্য বিক্রির আড়ালে তিনি ‘ওজালি’ (ধর্মীয় চিকিৎসা) সেবাও দিচ্ছেন। যখনই কেউ তার লাইসেন্স বা অনুমোদনের বিষয়ে প্রশ্ন তোলে, তিনি প্রকাশ্যে হুমকি দেন এবং দাবি করেন—“আমার পকেটে সেনাবাহিনী, র‌্যাব, পুলিশ—সবাই আছে, কেউ আমাকে কিছু করতে পারবে না।”

গত সাত থেকে দশ বছরে অসংখ্য মানুষ তার ফাঁদে পড়েছেন। সংসারের অশান্তি, সন্তান না হওয়া, জন্ডিস, লিভার রোগ—এমনকি মানসিক সমস্যা সমাধানের নামে প্রতিবার হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি। অনেকের অবস্থা চিকিৎসাহীনতায় আরও খারাপ হয়েছে, কেউ কেউ সর্বস্বান্ত হয়ে পথে বসেছেন।

ভুক্তভোগীদের অনেকেই সামাজিক লজ্জা ও ভয়ের কারণে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে চান না। তবে অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের হাতে থাকা ভিডিও, ছবি ও সাক্ষাৎকার প্রকাশ পেলে এলাকায় ব্যাপক তোলপাড় হবে বলে স্থানীয়দের ধারণা।

সাংবাদিক সমাজের ভাষায়—“এই ধরনের ভুয়া কবিরাজরা শুধু মানুষের টাকা নয়, জীবন, মানসিক শান্তি ও সামাজিক মর্যাদাও ধ্বংস করছে।”

জনসচেতনতার আহ্বানঃ
কখনো ভুয়া কবিরাজ, ওঝা বা তাবিজ-কবচ ব্যবসায়ীর ফাঁদে পা দেবেন না। রোগের সঠিক চিকিৎসার জন্য নিবন্ধিত ডাক্তার ও আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি বেছে নিন। কুসংস্কারের নামে আপনার অর্থ ও জীবন দুটোই যেন ধ্বংস না হয়।

প্রশাসনের প্রতি নিরীহ মানুষের দাবি:
অবিলম্বে বাবুল শেখ ও তার মতো প্রতারকদের গ্রেপ্তার করে কঠোর শাস্তির আওতায় আনুন, যাতে অন্য প্রতারকেরা ভয় পায় এবং এ ধরনের কালোবাজারি স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়।


প্রিন্ট