ঢাকা ০৮:১৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ২০ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo হবিগঞ্জ-২ আসনে বিএনপির প্রার্থী ডা: শাখায়াত হাসান জীবন আজমিরীগঞ্জ বানিয়াচংয়ে উচ্ছ্বাস Logo পটুয়াখালী-২ আসনে এনসিপি-জামায়াতে উচ্ছ্বাস, বিএনপিতে বিষাদ Logo ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন মাগুরা-২ আসনে ধানের শীষের কান্ডারী এ্যাড. নিতাই রায় চৌধুরী Logo ফরিদপুরে চেয়ারম্যানের শেল্টারে চায়না দুয়ারি জালের কারখানার রমরমা ব্যবসা, প্রশাসনের অভিযানে নিয়ন্ত্রণহীন অবস্থা Logo রয়টার্সের প্রতিবেদন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সালিশের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে আদানি গ্রুপ Logo টানা কমছে দেশের রপ্তানি আয়, সামনে আরও কমার আশঙ্কা Logo বিএনপির ফাঁকা রাখা ৬৩ আসনে অগ্রাধিকার পাবেন যারা Logo আরপিও সংশোধন অধ্যাদেশ জারি জোট করলেও নিজ দলের প্রতীকেই ভোট করতে হবে Logo আশুলিয়া সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে ৬ দলিল লেখক বরখাস্ত Logo সাভারে ট্রলি ভ্যানের ব্রেক ফেল আয়ারল্যান্ডের ওপরে এসে গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ

পটিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তার সেজে নার্স নুরতাজের অভিনব প্রতারণা

চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গাইনী বিভাগে দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসকের অনুপস্থিতির সুযোগে নার্স নুরতাজ অভিনব প্রতারণার মাধ্যমে রোগী দেখে প্রেসক্রিপশন দিয়ে হাতিয়ে দিচ্ছেন মোটা অংকের টাকা।

এক ভুক্তভোগীর অভিযোগে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে । অভিযুক্ত নার্স নুরতাজ বেগম দীর্ঘদিন ধরে এভাবে রোগীদের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছেন।

ঘটনার শিকার এক রোগী শিরিন আক্তার অভিযোগ করে বলেন, “কয়েকদিন আগে গাইনী চিকিৎসার জন্য মেডিকেলে যাই। সেখানে এক নারী আমার সমস্যার কথা শুনে আমাকে ১১১ নম্বর কক্ষে নিয়ে যান। পরে নিজেই প্রেসক্রিপশন লিখে দেন এবং সেখানেই প্রস্রাবের টেস্ট করান। আমি জিজ্ঞেস করলে তিনি নিজেকে গাইনী ডাক্তার বলে পরিচয় দেন। এখন পর্যন্ত আমার কাছ থেকে ৩৪০০ টাকা নিয়েছেন। সর্বশেষ মঙ্গলবার ফের গেলে আরও টাকা চান।”

শুধু শিরিন আক্তার নন, আরও অনেক রোগী একই ধরনের অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছেন বলে জানা গেছে।

হাসপাতালের একাধিক নার্স নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, “নুরতাজ বেগম দীর্ঘদিন ধরে এই ধরনের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। কেউ কিছু বলতে গেলে তিনি তেড়ে আসেন বা হুমকি দেন। বিষয়টি আমরা সবাই জানি, কিন্তু ভয়ে কেউ মুখ খুলে না।”

স্বাস্থ্য বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন,“কোনো ব্যক্তি যদি এমবিবিএস ডিগ্রিধারী না হন এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে (যেমন গাইনী) অনুমোদিত না থাকেন, তাহলে তার দ্বারা চিকিৎসা প্রদান করা সম্পূর্ণ অবৈধ এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ।”

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু তৈয়ব বলেন, “আমাদের হাসপাতালে সপ্তাহে ছয় দিন গাইনী চিকিৎসক উপস্থিত থাকেন। তারপরও কেউ যদি অনৈতিকভাবে রোগী দেখে থাকে, তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এই বিষয়ে জানতে নুরতাজ বেগমকে ফোন দিলে, তিনি জানান, ডাক্তারের অনুপস্থিতিতেই এই চিকিৎসা দেন তিনি।

এদিকে, স্থানীয় সচেতন মহল বিষয়টি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তাদের দাবি, “সরকারি হাসপাতালে গাইনী চিকিৎসার নামে প্রতারণা বরদাশত করা যায় না। দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে কেউ আর এমন সাহস না পায়।


প্রিন্ট
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

হবিগঞ্জ-২ আসনে বিএনপির প্রার্থী ডা: শাখায়াত হাসান জীবন আজমিরীগঞ্জ বানিয়াচংয়ে উচ্ছ্বাস

পটিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তার সেজে নার্স নুরতাজের অভিনব প্রতারণা

আপডেট সময় ১২:০৬:৫১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৬ জুলাই ২০২৫

চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গাইনী বিভাগে দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসকের অনুপস্থিতির সুযোগে নার্স নুরতাজ অভিনব প্রতারণার মাধ্যমে রোগী দেখে প্রেসক্রিপশন দিয়ে হাতিয়ে দিচ্ছেন মোটা অংকের টাকা।

এক ভুক্তভোগীর অভিযোগে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে । অভিযুক্ত নার্স নুরতাজ বেগম দীর্ঘদিন ধরে এভাবে রোগীদের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছেন।

ঘটনার শিকার এক রোগী শিরিন আক্তার অভিযোগ করে বলেন, “কয়েকদিন আগে গাইনী চিকিৎসার জন্য মেডিকেলে যাই। সেখানে এক নারী আমার সমস্যার কথা শুনে আমাকে ১১১ নম্বর কক্ষে নিয়ে যান। পরে নিজেই প্রেসক্রিপশন লিখে দেন এবং সেখানেই প্রস্রাবের টেস্ট করান। আমি জিজ্ঞেস করলে তিনি নিজেকে গাইনী ডাক্তার বলে পরিচয় দেন। এখন পর্যন্ত আমার কাছ থেকে ৩৪০০ টাকা নিয়েছেন। সর্বশেষ মঙ্গলবার ফের গেলে আরও টাকা চান।”

শুধু শিরিন আক্তার নন, আরও অনেক রোগী একই ধরনের অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছেন বলে জানা গেছে।

হাসপাতালের একাধিক নার্স নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, “নুরতাজ বেগম দীর্ঘদিন ধরে এই ধরনের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। কেউ কিছু বলতে গেলে তিনি তেড়ে আসেন বা হুমকি দেন। বিষয়টি আমরা সবাই জানি, কিন্তু ভয়ে কেউ মুখ খুলে না।”

স্বাস্থ্য বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন,“কোনো ব্যক্তি যদি এমবিবিএস ডিগ্রিধারী না হন এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে (যেমন গাইনী) অনুমোদিত না থাকেন, তাহলে তার দ্বারা চিকিৎসা প্রদান করা সম্পূর্ণ অবৈধ এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ।”

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু তৈয়ব বলেন, “আমাদের হাসপাতালে সপ্তাহে ছয় দিন গাইনী চিকিৎসক উপস্থিত থাকেন। তারপরও কেউ যদি অনৈতিকভাবে রোগী দেখে থাকে, তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এই বিষয়ে জানতে নুরতাজ বেগমকে ফোন দিলে, তিনি জানান, ডাক্তারের অনুপস্থিতিতেই এই চিকিৎসা দেন তিনি।

এদিকে, স্থানীয় সচেতন মহল বিষয়টি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তাদের দাবি, “সরকারি হাসপাতালে গাইনী চিকিৎসার নামে প্রতারণা বরদাশত করা যায় না। দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে কেউ আর এমন সাহস না পায়।


প্রিন্ট