ঢাকা ০৪:০৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৫, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo পাবনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রধান নাজিরের বদলী নিয়ে চরম অসন্তোষ Logo মহম্মদপুরে বিএনপি’র নির্বাচনী পথ সভা অনুষ্ঠিত Logo পীরগঞ্জে বিএনপির উদ্যোগে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প অনুষ্ঠিত Logo দেশের ধন্যাঢ্য ব্যক্তিরাও প্রতারণার শিকার অনিক ও সোহেলের ভুয়া “প্রাচীন পিলার ও কয়েন” চক্র Logo দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই প্রায় অর্ধশত বদলি বানিজ্য পিএইচডি জালিয়াতি-বদলি বানিজ্য-ঠিকাদারি সিন্ডিকেটের মূলহোতা খালেকুজ্জামান চৌধুরী Logo কাচিঘাটা রেঞ্জে গাছকাটা সিন্ডিকেটের তাণ্ডব রাতে চার–পাঁচশ গাছ উজাড়—বন রক্ষাকারীরাই অভিযুক্ত!** স্থানীয়দের অভিযোগ: “৫ আগস্টের পর এলাকা একেবারে মগের মুল্লুক—বন কেটে লুটে খাচ্ছে সবাই Logo চীনে ট্রেন দুর্ঘটনায় ১১ জন নিহত Logo ১২ ঘণ্টায় দ্বিতীয়বার ভূমিকম্পে কাঁপল ইন্দোনেশিয়া Logo প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির মামলা জয় ও পুতুলের ৫ বছরের কারাদণ্ড Logo তিন মামলায় হাসিনার ২১ বছরের কারাদণ্ড

ফরিদপুরে চেয়ারম্যানের শেল্টারে চায়না দুয়ারি জালের কারখানার রমরমা ব্যবসা, প্রশাসনের অভিযানে নিয়ন্ত্রণহীন অবস্থা

পাবনার ফরিদপুর উপজেলায় সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অবৈধ চায়না দুয়ারি জালের উৎপাদন ও ব্যবসা চলছে দেদারসে। উপজেলা প্রশাসনের অভিযানে ডেমরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জুয়েল রানার বাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ নিষিদ্ধ জাল জব্দ হওয়ায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গত ২২ অক্টোবর ফরিদপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সানাউল মোর্শেদের নেতৃত্বে চেয়ারম্যান জুয়েল রানার বাড়িতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চালানো হয়। অভিযানে প্রায় ৬ থেকে ৭ লাখ টাকার নিষিদ্ধ চায়না দুয়ারি জাল উদ্ধার করা হয়। পরে জব্দ করা জাল আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়।

অভিযানকালে অবৈধভাবে জাল মজুত রাখার দায়ে চেয়ারম্যানের স্ত্রী মোছা. মনিজা খাতুনকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

এর আগেও একই বাড়িতে প্রশাসন অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ জাল জব্দ করেছিল বলে জানা গেছে। সে সময় চেয়ারম্যানকে অবৈধ ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত না থাকার বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছিল।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তারা জানান, চায়না দুয়ারি জাল সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। এই জাল দিয়ে মাছ ধরলে নদী ও খালের পোনা ও ডিম ধ্বংস হয়, যা জলজ জীববৈচিত্র্যের জন্য মারাত্মক হুমকি সৃষ্টি করছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ফরিদপুর উপজেলায় বর্তমানে তিন শতাধিক চায়না দুয়ারি জালের কারখানা চালু রয়েছে। এর মধ্যে ডেমরা ইউনিয়নে রয়েছে অন্তত ১০০ থেকে ১৫০টি কারখানা। এসব কারখানার পেছনে চেয়ারম্যান জুয়েল রানার প্রত্যক্ষ আশ্রয় ও প্রশ্রয় রয়েছে বলে অভিযোগ করেন এলাকাবাসী।

ডেমরার এক বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, চেয়ারম্যানের ছত্রছায়াতেই এসব কারখানা বহুদিন ধরে চলছে। কেউ প্রতিবাদ করলে ভয়ভীতি দেখানো হয়।

স্থানীয়রা মনে করেন, প্রশাসনের নিয়মিত অভিযান চালু থাকলে নদী ও জলাশয়ের জীববৈচিত্র্য রক্ষা পাবে এবং দেশীয় প্রজাতির মাছের প্রজনন বৃদ্ধি পাবে।

এ বিষয়ে চেয়ারম্যান মো. জুয়েল রানা বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমি কোনো ব্যবসায়ীকে সেল্টার দিই না। আমার ছোট ভাই ব্যবসা করত, তার জাল আমার বাসায় রাখা ছিল।

ফরিদপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সানাউল মোর্শেদ বলেন, সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কেউ অবৈধ জাল মজুত বা বিক্রি করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই অভিযান চলমান থাকবে।


প্রিন্ট
ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

পাবনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রধান নাজিরের বদলী নিয়ে চরম অসন্তোষ

ফরিদপুরে চেয়ারম্যানের শেল্টারে চায়না দুয়ারি জালের কারখানার রমরমা ব্যবসা, প্রশাসনের অভিযানে নিয়ন্ত্রণহীন অবস্থা

আপডেট সময় ০২:৪২:০৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ নভেম্বর ২০২৫

পাবনার ফরিদপুর উপজেলায় সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অবৈধ চায়না দুয়ারি জালের উৎপাদন ও ব্যবসা চলছে দেদারসে। উপজেলা প্রশাসনের অভিযানে ডেমরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জুয়েল রানার বাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ নিষিদ্ধ জাল জব্দ হওয়ায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গত ২২ অক্টোবর ফরিদপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সানাউল মোর্শেদের নেতৃত্বে চেয়ারম্যান জুয়েল রানার বাড়িতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চালানো হয়। অভিযানে প্রায় ৬ থেকে ৭ লাখ টাকার নিষিদ্ধ চায়না দুয়ারি জাল উদ্ধার করা হয়। পরে জব্দ করা জাল আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়।

অভিযানকালে অবৈধভাবে জাল মজুত রাখার দায়ে চেয়ারম্যানের স্ত্রী মোছা. মনিজা খাতুনকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

এর আগেও একই বাড়িতে প্রশাসন অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ জাল জব্দ করেছিল বলে জানা গেছে। সে সময় চেয়ারম্যানকে অবৈধ ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত না থাকার বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছিল।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তারা জানান, চায়না দুয়ারি জাল সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। এই জাল দিয়ে মাছ ধরলে নদী ও খালের পোনা ও ডিম ধ্বংস হয়, যা জলজ জীববৈচিত্র্যের জন্য মারাত্মক হুমকি সৃষ্টি করছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ফরিদপুর উপজেলায় বর্তমানে তিন শতাধিক চায়না দুয়ারি জালের কারখানা চালু রয়েছে। এর মধ্যে ডেমরা ইউনিয়নে রয়েছে অন্তত ১০০ থেকে ১৫০টি কারখানা। এসব কারখানার পেছনে চেয়ারম্যান জুয়েল রানার প্রত্যক্ষ আশ্রয় ও প্রশ্রয় রয়েছে বলে অভিযোগ করেন এলাকাবাসী।

ডেমরার এক বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, চেয়ারম্যানের ছত্রছায়াতেই এসব কারখানা বহুদিন ধরে চলছে। কেউ প্রতিবাদ করলে ভয়ভীতি দেখানো হয়।

স্থানীয়রা মনে করেন, প্রশাসনের নিয়মিত অভিযান চালু থাকলে নদী ও জলাশয়ের জীববৈচিত্র্য রক্ষা পাবে এবং দেশীয় প্রজাতির মাছের প্রজনন বৃদ্ধি পাবে।

এ বিষয়ে চেয়ারম্যান মো. জুয়েল রানা বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমি কোনো ব্যবসায়ীকে সেল্টার দিই না। আমার ছোট ভাই ব্যবসা করত, তার জাল আমার বাসায় রাখা ছিল।

ফরিদপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সানাউল মোর্শেদ বলেন, সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কেউ অবৈধ জাল মজুত বা বিক্রি করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই অভিযান চলমান থাকবে।


প্রিন্ট