ঢাকা ০২:৫৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ২০ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo ফরিদপুরে চেয়ারম্যানের শেল্টারে চায়না দুয়ারি জালের কারখানার রমরমা ব্যবসা, প্রশাসনের অভিযানে নিয়ন্ত্রণহীন অবস্থা Logo রয়টার্সের প্রতিবেদন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সালিশের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে আদানি গ্রুপ Logo টানা কমছে দেশের রপ্তানি আয়, সামনে আরও কমার আশঙ্কা Logo বিএনপির ফাঁকা রাখা ৬৩ আসনে অগ্রাধিকার পাবেন যারা Logo আরপিও সংশোধন অধ্যাদেশ জারি জোট করলেও নিজ দলের প্রতীকেই ভোট করতে হবে Logo আশুলিয়া সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে ৬ দলিল লেখক বরখাস্ত Logo সাভারে ট্রলি ভ্যানের ব্রেক ফেল আয়ারল্যান্ডের ওপরে এসে গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ Logo তৌহিদুল ইসলাম এর বিরুদ্ধে ঘুষ বানিজ্যের অভিযোগ Logo ৪৮ তম বিসিএস পরীক্ষায় উওীর্ণদের নিয়োগ এর দাবি তে মানববন্ধন Logo বিএনপির প্রার্থী তালিকায় নেই রুমিন ফারহানার পদত্যাগ করেন

মামলার আসামী হয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন শিক্ষক মহম্মদপুরে বিদ্যা লয়ে অনুপস্থিত থেকেও বেতন পাচ্ছেন শিক্ষক

মাগুরার মহম্মদপুরের রাজাপুর ইউনিয়নের রাজপাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক মামলার আসামি হয়ে দিনেরপর দিন পালিয়ে বেড়ালেও প্রধান শিক্ষককে ম্যানেজ করে গোপনে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে উপস্থিত না হয়েও নিয়মিত বেতন তুলে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে একজন সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম মোঃ হেদায়েতুল্লাহ তালুকদার।
জানা যায়, স্থানীয় গ্রাম্য সংঘর্ষের জেরে প্রতিপক্ষের করা একটি ফৌজধারী মামলার গুরুত্বপূর্ণ আসামী হন সহকারী শিক্ষক মোঃ হেদায়েতুল্লাহ তালুকদার । দীর্ঘ ৪ মাস বিদ্যালয়ে উপস্থিত না হয়েও তিনি প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির ক্ষমতার জোরে নিয়মিত বেতন-ভাতা তুলে নিচ্ছেন ও হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে আসছেন । অভিযুক্ত ওই শিক্ষক বিদ্যালয়ে উপস্থিত না হলেও প্রধান শিক্ষক গোপনে হাজিরা খাতা পাঠিয়ে দিয়ে ওই খাতায় তার স্বাক্ষর করিয়ে নেন।
সরেজমিনে বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক মোঃ হেদায়েত উল্লাহ তালূকদার উপস্থিত নেই এমনকি বিদ্যালয়ে আসেইনি তবু ও হাজিরা খাতায় তার স্বাক্ষর করা রয়েছে। বিদ্যালয়ের উপস্থিত ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে কথা বললে তারা জানায়, দীর্ঘ ৪ মাস যাবৎ হেদায়েত স্যার বিদ্যালয়ে আসেন না। যার কারণে আমাদের লেখাপড়াও পিছিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের অনুপস্থিত থাকার কারনে প্রায়ই বিদ্যালয় নির্ধারিত সময়ের আগেই ছুটি দিয়ে দেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এমনটিই জানান বেশ কয়েকজন স্থানীয় লোকজন।
সহকারী প্রধান শিক্ষক অনিমেষ কুমার দাস বলেন, হেদায়েত স্যার মামলা পরবর্তী সময়ে কয়েকদিন গোপনে বিদ্যালয়ে এসেছেন। তবে কোনও ক্লাস নেননি। অভিযুক্ত শিক্ষক কখন বিদ্যালয়ে উপস্থিত হন? এমন প্রশ্নে উক্ত শিক্ষক বলেন, তার বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার কোনও নিয়ম নেই ইচ্ছাধীন আসা যাওয়া করেন তিনি। বিদ্যালয় চলাকালিন যে কোনও সময়ে তিনি উপস্থিত হয়ে খাতায় স্বাক্ষর করে হেড স্যারের সাথে কথা বলে আবার চলে যান। তবে তিনি কোনও ক্লাস নেননা।
বিদ্যালয়ে উপস্থিত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষক বলেন, হেড স্যার তাকে গোপনে ডেকে স্বাক্ষর করান এমনকি খাতা ওই শিক্ষকের বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েও স্বাক্ষর করান। জানামতে প্রধান শিক্ষক ও বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি দুজনেই তাকে এসব বিষয়ে সহযোগীতা করেন। তবে একজন প্রধান শিক্ষক হয়ে কিভাবে স্বাক্ষর করান সেটা আমার জানা নেই।
প্রধান শিক্ষক তুষার কান্তি বলেন, সহকারী শিক্ষক হেদায়েত তালুকদার বিদ্যালয়ে মাঝে মাঝে এসে হাজিরা দিয়ে যান। একটু সমস্য হইছে। এজন্য তাকে সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়ে থাকে। এছাড়া তিনি অসুস্থতার কথা বলে আবেদন করে ছুটি নেন। মামলার আসামীকে কতদিন ছুটি দিতে পারবেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, যতদিন ইচ্ছা ছুটি নিতেও পারে এবং আমি দিতেও পারবো।
অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক মো: হেদায়েত উল্লাহ তালুকদার পলাতক থাকার কারনে তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

মহম্মদপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কাজী শফিউল আলম (অঃ দাঃ) বলেন, যদি অভিযোগ সঠিক হয় তাহলে প্রধান শিক্ষক এসকল কাজ বিধি মোতাবেক করছেন না। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হলে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট লিখিত আকারে উপস্থাপন করা হবে। এছাড়া বিদ্যালয়ের নিয়মকানুন না মানলে অবশ্যই তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।


প্রিন্ট
ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ফরিদপুরে চেয়ারম্যানের শেল্টারে চায়না দুয়ারি জালের কারখানার রমরমা ব্যবসা, প্রশাসনের অভিযানে নিয়ন্ত্রণহীন অবস্থা

মামলার আসামী হয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন শিক্ষক মহম্মদপুরে বিদ্যা লয়ে অনুপস্থিত থেকেও বেতন পাচ্ছেন শিক্ষক

আপডেট সময় ০৫:৪৪:৪৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ অক্টোবর ২০২৫

মাগুরার মহম্মদপুরের রাজাপুর ইউনিয়নের রাজপাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক মামলার আসামি হয়ে দিনেরপর দিন পালিয়ে বেড়ালেও প্রধান শিক্ষককে ম্যানেজ করে গোপনে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে উপস্থিত না হয়েও নিয়মিত বেতন তুলে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে একজন সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম মোঃ হেদায়েতুল্লাহ তালুকদার।
জানা যায়, স্থানীয় গ্রাম্য সংঘর্ষের জেরে প্রতিপক্ষের করা একটি ফৌজধারী মামলার গুরুত্বপূর্ণ আসামী হন সহকারী শিক্ষক মোঃ হেদায়েতুল্লাহ তালুকদার । দীর্ঘ ৪ মাস বিদ্যালয়ে উপস্থিত না হয়েও তিনি প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির ক্ষমতার জোরে নিয়মিত বেতন-ভাতা তুলে নিচ্ছেন ও হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে আসছেন । অভিযুক্ত ওই শিক্ষক বিদ্যালয়ে উপস্থিত না হলেও প্রধান শিক্ষক গোপনে হাজিরা খাতা পাঠিয়ে দিয়ে ওই খাতায় তার স্বাক্ষর করিয়ে নেন।
সরেজমিনে বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক মোঃ হেদায়েত উল্লাহ তালূকদার উপস্থিত নেই এমনকি বিদ্যালয়ে আসেইনি তবু ও হাজিরা খাতায় তার স্বাক্ষর করা রয়েছে। বিদ্যালয়ের উপস্থিত ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে কথা বললে তারা জানায়, দীর্ঘ ৪ মাস যাবৎ হেদায়েত স্যার বিদ্যালয়ে আসেন না। যার কারণে আমাদের লেখাপড়াও পিছিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের অনুপস্থিত থাকার কারনে প্রায়ই বিদ্যালয় নির্ধারিত সময়ের আগেই ছুটি দিয়ে দেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এমনটিই জানান বেশ কয়েকজন স্থানীয় লোকজন।
সহকারী প্রধান শিক্ষক অনিমেষ কুমার দাস বলেন, হেদায়েত স্যার মামলা পরবর্তী সময়ে কয়েকদিন গোপনে বিদ্যালয়ে এসেছেন। তবে কোনও ক্লাস নেননি। অভিযুক্ত শিক্ষক কখন বিদ্যালয়ে উপস্থিত হন? এমন প্রশ্নে উক্ত শিক্ষক বলেন, তার বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার কোনও নিয়ম নেই ইচ্ছাধীন আসা যাওয়া করেন তিনি। বিদ্যালয় চলাকালিন যে কোনও সময়ে তিনি উপস্থিত হয়ে খাতায় স্বাক্ষর করে হেড স্যারের সাথে কথা বলে আবার চলে যান। তবে তিনি কোনও ক্লাস নেননা।
বিদ্যালয়ে উপস্থিত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষক বলেন, হেড স্যার তাকে গোপনে ডেকে স্বাক্ষর করান এমনকি খাতা ওই শিক্ষকের বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েও স্বাক্ষর করান। জানামতে প্রধান শিক্ষক ও বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি দুজনেই তাকে এসব বিষয়ে সহযোগীতা করেন। তবে একজন প্রধান শিক্ষক হয়ে কিভাবে স্বাক্ষর করান সেটা আমার জানা নেই।
প্রধান শিক্ষক তুষার কান্তি বলেন, সহকারী শিক্ষক হেদায়েত তালুকদার বিদ্যালয়ে মাঝে মাঝে এসে হাজিরা দিয়ে যান। একটু সমস্য হইছে। এজন্য তাকে সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়ে থাকে। এছাড়া তিনি অসুস্থতার কথা বলে আবেদন করে ছুটি নেন। মামলার আসামীকে কতদিন ছুটি দিতে পারবেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, যতদিন ইচ্ছা ছুটি নিতেও পারে এবং আমি দিতেও পারবো।
অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক মো: হেদায়েত উল্লাহ তালুকদার পলাতক থাকার কারনে তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

মহম্মদপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কাজী শফিউল আলম (অঃ দাঃ) বলেন, যদি অভিযোগ সঠিক হয় তাহলে প্রধান শিক্ষক এসকল কাজ বিধি মোতাবেক করছেন না। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হলে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট লিখিত আকারে উপস্থাপন করা হবে। এছাড়া বিদ্যালয়ের নিয়মকানুন না মানলে অবশ্যই তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।


প্রিন্ট