ঢাকা ০৫:৪৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ২৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo কালিয়াকৈরে জমির পাওয়ার অফ এ্যাটর্নি দলিল জাল জালিয়াতির অভিযোগ Logo ভৈরব জেলা বাস্তবায়নের দাবীতে মানব বন্ধন Logo আগামীর বাংলাদেশ হবে ইসলামের বাংলাদেশ-আল্লামা মামুনুল হক। Logo ভাঙ্গুড়ায় তারেক রহমানের সাক্ষাৎকার প্রদর্শনী, নেতাকর্মীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস Logo ইলিশ রক্ষায় ব্যার্থ মৎস অধিদপ্তর সাংবাদিক দেখে দৌড়ে পালালেন ইলিশ বোঝায় ট্রলার Logo সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের সাথে নাগরিক প্লাটফর্ম ও যুব ফোরামের পরামর্শ সভা Logo মিরপুরে গার্মেন্টস ও কেমিক্যাল গোডাউনে আগুন Logo মার্চ টু সচিবালয়’ এ অংশ নিতে শহীদ মিনারে শিক্ষকদের ঢল Logo রাজধানীতে জামায়াতসহ সাত দলের মানববন্ধন কর্মসূচি শুরু Logo আমরা কারাগারে নয়, ছিলাম এক কসাইখানায়

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে স্থায়ী সমাধান চান প্রধান বিচারপতি

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ১২:৪৮:১৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৫
  • ৫৪ ১০.০০০ বার পড়া হয়েছে

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে দিয়ে শুধু সাময়িক সমাধান নয়, এ বিষয়ে সুদূরপ্রসারী ও কার্যকর সমাধান চান আপিল বিভাগের বিচারপতিরা। প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, নির্বাচনকালীন সরকারব্যবস্থা এমনভাবে নির্ধারিত হতে হবে, যাতে তা বারবার সংকটে না পড়ে এবং দেশের গণতন্ত্রকে স্থায়ীভাবে শক্তিশালী করে।

বুধবার (২৭ আগস্ট) সকালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) শুনানির দ্বিতীয় দিনে প্রধান বিচারপতি এ মন্তব্য করেন। তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘যদি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরিয়ে দিই, এটি কবে থেকে কার্যকর হবে?’

প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে সুস্পষ্ট ও স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন, যাতে ভবিষ্যতে এটি নিয়ে সংকট সৃষ্টি না হয়। দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে এটি যাতে সুদূরপ্রসারী প্রভাব রাখে, সেটিই করা হবে।’

সকাল ৯টা ৩৫ মিনিট থেকে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চে এ শুনানি শুরু হয়। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করছেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল ও অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।

এর আগে মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) এই আবেদনের প্রথম দিনের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। গত ১১ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগ এই শুনানি মুলতবি করেছিল। সে সময় জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

রায়ের পটভূমি
সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী ১৯৯৬ সালে জাতীয় সংসদে গৃহীত হয়। এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৯৯৮ সালে অ্যাডভোকেট এম. সলিম উল্লাহসহ তিনজন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট করেন। প্রাথমিক শুনানির পর হাইকোর্ট রুল জারি করে এবং ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট চূড়ান্ত শুনানি শেষে রিট খারিজ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে বৈধ ঘোষণা করে।

এই রায়ের বিরুদ্ধে ২০০৫ সালে আপিল করা হয়। আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ ২০১১ সালের ১০ মে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনী পাস হয় এবং ৩ জুলাই গেজেট প্রকাশিত হয়।

পুনর্বিবেচনার আবেদন
২০১১ সালের এ রায়ের পুনর্বিবেচনার জন্য প্রথম আবেদন করেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচজন বিশিষ্ট ব্যক্তি—তোফায়েল আহমেদ, এম. হাফিজউদ্দিন খান, জোবাইরুল হক ভুঁইয়া ও জাহরা রহমান।

পরবর্তীতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ১৬ অক্টোবর এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার গত বছরের ২৩ অক্টোবর পৃথকভাবে পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন। এছাড়া নওগাঁর রানীনগরের বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জল হোসেনও গত বছর একই ধরনের আবেদন জানান।

বর্তমানে রাজনৈতিক দল ও ব্যক্তিগতভাবে মোট চারটি রিভিউ আবেদন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে।


প্রিন্ট
ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

কালিয়াকৈরে জমির পাওয়ার অফ এ্যাটর্নি দলিল জাল জালিয়াতির অভিযোগ

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে স্থায়ী সমাধান চান প্রধান বিচারপতি

আপডেট সময় ১২:৪৮:১৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৫

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে দিয়ে শুধু সাময়িক সমাধান নয়, এ বিষয়ে সুদূরপ্রসারী ও কার্যকর সমাধান চান আপিল বিভাগের বিচারপতিরা। প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, নির্বাচনকালীন সরকারব্যবস্থা এমনভাবে নির্ধারিত হতে হবে, যাতে তা বারবার সংকটে না পড়ে এবং দেশের গণতন্ত্রকে স্থায়ীভাবে শক্তিশালী করে।

বুধবার (২৭ আগস্ট) সকালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) শুনানির দ্বিতীয় দিনে প্রধান বিচারপতি এ মন্তব্য করেন। তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘যদি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরিয়ে দিই, এটি কবে থেকে কার্যকর হবে?’

প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে সুস্পষ্ট ও স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন, যাতে ভবিষ্যতে এটি নিয়ে সংকট সৃষ্টি না হয়। দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে এটি যাতে সুদূরপ্রসারী প্রভাব রাখে, সেটিই করা হবে।’

সকাল ৯টা ৩৫ মিনিট থেকে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চে এ শুনানি শুরু হয়। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করছেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল ও অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।

এর আগে মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) এই আবেদনের প্রথম দিনের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। গত ১১ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগ এই শুনানি মুলতবি করেছিল। সে সময় জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

রায়ের পটভূমি
সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী ১৯৯৬ সালে জাতীয় সংসদে গৃহীত হয়। এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৯৯৮ সালে অ্যাডভোকেট এম. সলিম উল্লাহসহ তিনজন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট করেন। প্রাথমিক শুনানির পর হাইকোর্ট রুল জারি করে এবং ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট চূড়ান্ত শুনানি শেষে রিট খারিজ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে বৈধ ঘোষণা করে।

এই রায়ের বিরুদ্ধে ২০০৫ সালে আপিল করা হয়। আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ ২০১১ সালের ১০ মে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনী পাস হয় এবং ৩ জুলাই গেজেট প্রকাশিত হয়।

পুনর্বিবেচনার আবেদন
২০১১ সালের এ রায়ের পুনর্বিবেচনার জন্য প্রথম আবেদন করেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচজন বিশিষ্ট ব্যক্তি—তোফায়েল আহমেদ, এম. হাফিজউদ্দিন খান, জোবাইরুল হক ভুঁইয়া ও জাহরা রহমান।

পরবর্তীতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ১৬ অক্টোবর এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার গত বছরের ২৩ অক্টোবর পৃথকভাবে পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন। এছাড়া নওগাঁর রানীনগরের বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জল হোসেনও গত বছর একই ধরনের আবেদন জানান।

বর্তমানে রাজনৈতিক দল ও ব্যক্তিগতভাবে মোট চারটি রিভিউ আবেদন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে।


প্রিন্ট