ঢাকা ০৯:৩০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৫, ২৯ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo সোনালী ব্যাংকের একাউন্ট হোল্ডসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ ব্যাংক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে Logo রাজনৈতিক ঐক্য আরো সংহত করতে হবে সম্পাদকীয় Logo ক্রিকেটের উন্নতির চেয়ে ‘চেয়ার ধরে রাখায় ব্যস্ত ছিলেন’ ফারুক Logo কিশোরগঞ্জে জেলার ভৈরবে রেলওয়ে উচ্চ বিদ্যালয় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা Logo ছাড়া নির্বাচন হলে তা হবে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা: গোলাম পরওয়ার Logo আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানোর মামলা: চার্জ গঠন আদেশ ২১ আগস্ট Logo ২২ বছরে ১১ স্বামীকে খুন! Logo ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে : প্রধান উপদেষ্টা Logo আশুলিয়ায় একটি দোকানে দুর্ধর্ষ চুরি: পুলিশ নিরব ভূমিকায় Logo একটি ব্যাংকের মোট ঋণের ৯৫ শতাংশই খেলাপি: অর্থ উপদেষ্টা

একটি ব্যাংকের মোট ঋণের ৯৫ শতাংশই খেলাপি: অর্থ উপদেষ্টা

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০২:৩৯:১১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৫
  • ৫ ১০.০০০ বার পড়া হয়েছে

আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ব্যাংক ও ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলোতে ঋণের নামে ব্যাপক লুটপাট হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ওই টাকার বড় অংশ বিদেশে পাচার হয়েছে এবং আদায় না হওয়ায় এখন তা খেলাপি ঋণে পরিণত হচ্ছে।

মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সরকারের এক বছর পূর্তিতে দেশের সার্বিক অর্থনীতি পরিস্থিতির ওপর অর্থ মন্ত্রণালয়ের মাল্টিপারপাস হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরেন তিনি।

ড. সালেহউদ্দিন জানান, নতুন করে আরও ১০১ জন অর্থ পাচারকারী শনাক্ত হয়েছে। প্রত্যেকে সর্বোচ্চ ২০০ কোটি টাকা করে বিদেশে পাচার করেছে। এর আগে কয়েক হাজার কোটি টাকা পাচারের সঙ্গে জড়িত ১১ জনকে শনাক্ত করা হয়েছিল; যাদের বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তী সরকার মামলা করেছে। পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘শুধুমাত্র একটি ব্যাংকের মোট ঋণের ৯৫ শতাংশ খেলাপি। ওই ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও তার বন্ধুরা সব টাকা নিয়ে চলে গেছেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মাধ্যমে একটি কমিটি গঠন করে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সহায়তা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

গত এক বছরের অর্থনীতি পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, ‘আগস্ট থেকে অক্টোবর পর্যন্ত সব সূচক নেগেটিভ ছিল। এখন সব সূচকই পজিটিভ হয়েছে। সুশাসনের ঘাটতি, অর্থ পাচার ও দুর্নীতির কারণে আর্থিক খাত খাদের কিনারায় ছিল, সেখান থেকে কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে।’

মূল্যস্ফীতি প্রসঙ্গে তিনি জানান, জুনে তা ৬ শতাংশে নামবে বলে আশা করা হচ্ছে। বর্তমানে ৮ শতাংশের বেশি এবং জুলাইয়ে তা ১৪ শতাংশে ছিল।

ব্যাংক খাত সংস্কারের জন্য বরাদ্দ সম্পর্কে প্রশ্নে উপদেষ্টা জানান, পর্যাপ্ত বরাদ্দ নেই; তবে আইএমএফও অর্থ দেবে। ‘অমানতকারীদের অর্থ খেয়ানত হবে না, যা যা দরকার তা করা হবে।’

তিনি বলেন, ‘তথ্য প্রকাশ করলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিষয়টি করবে।’

টাকা ফেরত আনার বিষয়ে তিনি জানান, বড় ধরনের ১১টি মামলা হয়েছে এবং পাচারের স্থান শনাক্ত হয়েছে। ১২টি দেশের সঙ্গে মিউচ্যুয়াল লিগ্যাল অ্যাগ্রিমেন্ট (এমএলএ) করতে চিঠি পাঠানো হয়েছে এবং আইনজীবীর মাধ্যমে টাকাও ফেরত আনার চেষ্টা চলছে।

উপদেষ্টা বলেন, ‘কর আহরণ আশাতীত নয়। ব্যবসা-বাণিজ্যের অবস্থার ওপর কর আদায় নির্ভর করে। তবুও ৪ বিলিয়ন ডলার ঋণ পরিশোধ করা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো ব্যাংক খাত সংস্কার কার্যক্রম উল্টে দিলে আমানতকারীরা মুখ ফিরিয়ে নেবে। ‘সরকারি প্রতিষ্ঠানের দুর্বলতা ও মানবসম্পদ ঠিক করা আগামী নির্বাচিত সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হবে।’


প্রিন্ট
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

সোনালী ব্যাংকের একাউন্ট হোল্ডসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ ব্যাংক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে

একটি ব্যাংকের মোট ঋণের ৯৫ শতাংশই খেলাপি: অর্থ উপদেষ্টা

আপডেট সময় ০২:৩৯:১১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৫

আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ব্যাংক ও ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলোতে ঋণের নামে ব্যাপক লুটপাট হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ওই টাকার বড় অংশ বিদেশে পাচার হয়েছে এবং আদায় না হওয়ায় এখন তা খেলাপি ঋণে পরিণত হচ্ছে।

মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সরকারের এক বছর পূর্তিতে দেশের সার্বিক অর্থনীতি পরিস্থিতির ওপর অর্থ মন্ত্রণালয়ের মাল্টিপারপাস হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরেন তিনি।

ড. সালেহউদ্দিন জানান, নতুন করে আরও ১০১ জন অর্থ পাচারকারী শনাক্ত হয়েছে। প্রত্যেকে সর্বোচ্চ ২০০ কোটি টাকা করে বিদেশে পাচার করেছে। এর আগে কয়েক হাজার কোটি টাকা পাচারের সঙ্গে জড়িত ১১ জনকে শনাক্ত করা হয়েছিল; যাদের বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তী সরকার মামলা করেছে। পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘শুধুমাত্র একটি ব্যাংকের মোট ঋণের ৯৫ শতাংশ খেলাপি। ওই ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও তার বন্ধুরা সব টাকা নিয়ে চলে গেছেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মাধ্যমে একটি কমিটি গঠন করে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সহায়তা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

গত এক বছরের অর্থনীতি পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, ‘আগস্ট থেকে অক্টোবর পর্যন্ত সব সূচক নেগেটিভ ছিল। এখন সব সূচকই পজিটিভ হয়েছে। সুশাসনের ঘাটতি, অর্থ পাচার ও দুর্নীতির কারণে আর্থিক খাত খাদের কিনারায় ছিল, সেখান থেকে কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে।’

মূল্যস্ফীতি প্রসঙ্গে তিনি জানান, জুনে তা ৬ শতাংশে নামবে বলে আশা করা হচ্ছে। বর্তমানে ৮ শতাংশের বেশি এবং জুলাইয়ে তা ১৪ শতাংশে ছিল।

ব্যাংক খাত সংস্কারের জন্য বরাদ্দ সম্পর্কে প্রশ্নে উপদেষ্টা জানান, পর্যাপ্ত বরাদ্দ নেই; তবে আইএমএফও অর্থ দেবে। ‘অমানতকারীদের অর্থ খেয়ানত হবে না, যা যা দরকার তা করা হবে।’

তিনি বলেন, ‘তথ্য প্রকাশ করলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিষয়টি করবে।’

টাকা ফেরত আনার বিষয়ে তিনি জানান, বড় ধরনের ১১টি মামলা হয়েছে এবং পাচারের স্থান শনাক্ত হয়েছে। ১২টি দেশের সঙ্গে মিউচ্যুয়াল লিগ্যাল অ্যাগ্রিমেন্ট (এমএলএ) করতে চিঠি পাঠানো হয়েছে এবং আইনজীবীর মাধ্যমে টাকাও ফেরত আনার চেষ্টা চলছে।

উপদেষ্টা বলেন, ‘কর আহরণ আশাতীত নয়। ব্যবসা-বাণিজ্যের অবস্থার ওপর কর আদায় নির্ভর করে। তবুও ৪ বিলিয়ন ডলার ঋণ পরিশোধ করা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো ব্যাংক খাত সংস্কার কার্যক্রম উল্টে দিলে আমানতকারীরা মুখ ফিরিয়ে নেবে। ‘সরকারি প্রতিষ্ঠানের দুর্বলতা ও মানবসম্পদ ঠিক করা আগামী নির্বাচিত সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হবে।’


প্রিন্ট