ঢাকা ০৯:২৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৫, ২৯ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo সোনালী ব্যাংকের একাউন্ট হোল্ডসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ ব্যাংক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে Logo রাজনৈতিক ঐক্য আরো সংহত করতে হবে সম্পাদকীয় Logo ক্রিকেটের উন্নতির চেয়ে ‘চেয়ার ধরে রাখায় ব্যস্ত ছিলেন’ ফারুক Logo কিশোরগঞ্জে জেলার ভৈরবে রেলওয়ে উচ্চ বিদ্যালয় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা Logo ছাড়া নির্বাচন হলে তা হবে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা: গোলাম পরওয়ার Logo আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানোর মামলা: চার্জ গঠন আদেশ ২১ আগস্ট Logo ২২ বছরে ১১ স্বামীকে খুন! Logo ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে : প্রধান উপদেষ্টা Logo আশুলিয়ায় একটি দোকানে দুর্ধর্ষ চুরি: পুলিশ নিরব ভূমিকায় Logo একটি ব্যাংকের মোট ঋণের ৯৫ শতাংশই খেলাপি: অর্থ উপদেষ্টা

জুলাই সনদের আইনি ভিত্তির আলোচনায় যাবে বিএনপি সংশোধিত আরপিও’র খসড়া নিয়ে বড় ধরনের আপত্তি নেই দলটির

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০২:৩২:০৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৫
  • ৫ ১০.০০০ বার পড়া হয়েছে

জুলাই সনদের আইনি ভিত্তির আলোচনায় ডাকা হলে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করবে বিএনপি। কারণ দলটি জুলাই সনদের ব্যাপারে অত্যন্ত আন্তরিক। একই সঙ্গে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সনদ কার্যকরের পক্ষে। সোমবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এছাড়া সংশোধিত আরপিও’র খড়সা নিয়ে বড় ধরনের কোনো আপত্তি নেই বিএনপির। দলটি বলছে, খসড়ায় যেসব সংশোধনীর প্রস্তাব করা হয়েছে সেগুলোর অধিকাংশই তাদের দাবি ছিল। তাই প্রস্তাবিত আরপিওকে স্বাগত জানিয়ে শিগগিরই দলগতভাবে মতামত তুলে ধরবে বিএনপি। স্থায়ী কমিটির বৈঠক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে স্থায়ী কমিটির বৈঠক হয়। বৈঠকে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি কী হবে, তা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে শিগগিরই শেষ দফার আলোচনায় বসতে যাচ্ছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এ লক্ষ্যে ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ আরও এক মাস বাড়িয়ে আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। জানা গেছে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে ঐকমত্য কমিশনের সময় বাড়ানো এবং জুলাই সনদের বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কমিশনের সময় বাড়ানোয় স্থায়ী কমিটির কোনো আপত্তি নেই। জুলাই সনদের আইনি ভিত্তির আলোচনায় বিএনপিকে ডাকা হলে তারা সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করবে। বিএনপি সংস্কার চায় না, এই দায়ভার তারা নেবে না। সংস্কার প্রশ্নে তারা অত্যন্ত আন্তরিক। সে কারণে শুরু থেকেই ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছে বিএনপি। জুলাই সনদের বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে বিএনপির অবস্থান হচ্ছে, সংবিধান সংশোধনের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়-ঐকমত্য হওয়া এমন সংস্কার প্রস্তাবনাসমূহ সরকার আইনি প্রক্রিয়ায় অধ্যাদেশের মাধ্যমে যেকোনো সময় করতে পারে। শুধুমাত্র সংবিধান সংশোধনের সঙ্গে সম্পর্কিত সংস্কার প্রস্তাবনাগুলো নির্বাচিত সংসদ করবে।

স্থায়ী কমিটির বৈঠকে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) ১৯৭২ (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫ এর খসড়া নিয়েও আলোচনা হয়। সংশোধিত আরপিও’র খড়সা নিয়ে বড় ধরনের কোনো আপত্তি নেই বিএনপির।

আরপিও সংশোধন প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আচরণবিধি লংঘনের দায়ে শাস্তি- সেটা আমাদের প্রস্তাব ছিল, সেটা ভালো আছে। কোথাও কারচুপি হলে পুরো আসনের ভোট বাতিলের যে ক্ষমতাটা আগে ছিল, সেটা পুনর্বহাল হয়েছে, সেটা ভালো। তবে এর অপব্যবহার যাতে না হয়- সে দিকটায় খেয়াল রাখতে হবে। ‘না’ ভোটের বিধান-সেটা প্রথমবারের মতো করা হচ্ছে, এটা ভালো। তবে একবার একটি নির্বাচন হলে সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্য দিয়ে সেই অভিজ্ঞতার আলোকে দেখা যাবে, এটা কতটুকু উপযুক্ত হলো। বিএনপিসহ রাজনৈতিক দলগুলো এবং সারা জাতির দাবি ছিল যে, ইভিএম বাতিল করতে হবে। ইভিএম থাকছে না, এটা ভালো। এ ছাড়া আমাদের দাবি ছিল, ভোটে দায়িত্ব পালনকারী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংজ্ঞার মধ্যে সেনাবাহিনীসহ অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনীকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে, ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিতে হবে। এটা অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, এটা ইতিবাচক। আমরা সংস্কারের মধ্য দিয়েই যাচ্ছি। আমরা মনে করি, এগুলো সব পজিটিভ রিফর্ম। আমরা এটাকে স্বাগত জানাই।’

স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সংসদীয় আসন পুনর্বিন্যাস কার্যক্রম নিয়েও আলোচনা হয়েছে। ইসির নির্বাচনি এলাকার সীমানা নির্ধারণ কার্যক্রমের পরিপ্রেক্ষিতে পর্যালোচনা ও সমন্বয়ের জন্য বিএনপি গঠিত কমিটির প্রধান নজরুল ইসলাম খান বৈঠকে এ বিষয়ে একটি দীর্ঘ প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। বিএনপির স্থানীয় পর্যায়ের নেতা এবং সংক্ষুব্ধ ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে এই প্রতিবেদন তৈরি করেন তিনি। এর আগে দ্বাদশ সংসদের আড়াই শতাধিক আসনের সীমানা বহাল রেখে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে গত ৩০ জুলাই সীমানা পুনর্র্নির্ধারণের খসড়া প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। খসড়ায় বাকি ৩৯ আসনে ছোটখাটো পরিবর্তন আনার প্রস্তাব করে ১০ আগস্টের মধ্যে দাবি-আপত্তি জানানোর সুযোগ রাখা হয়েছিল। জানা গেছে, বিএনপির সংক্ষুব্ধ নেতারা কেন্দ্রের সঙ্গে সমন্বয় করে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই ইসিতে তাদের আপত্তি কিংবা মতামত জানিয়েছেন।


প্রিন্ট
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

সোনালী ব্যাংকের একাউন্ট হোল্ডসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ ব্যাংক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে

জুলাই সনদের আইনি ভিত্তির আলোচনায় যাবে বিএনপি সংশোধিত আরপিও’র খসড়া নিয়ে বড় ধরনের আপত্তি নেই দলটির

আপডেট সময় ০২:৩২:০৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৫

জুলাই সনদের আইনি ভিত্তির আলোচনায় ডাকা হলে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করবে বিএনপি। কারণ দলটি জুলাই সনদের ব্যাপারে অত্যন্ত আন্তরিক। একই সঙ্গে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সনদ কার্যকরের পক্ষে। সোমবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এছাড়া সংশোধিত আরপিও’র খড়সা নিয়ে বড় ধরনের কোনো আপত্তি নেই বিএনপির। দলটি বলছে, খসড়ায় যেসব সংশোধনীর প্রস্তাব করা হয়েছে সেগুলোর অধিকাংশই তাদের দাবি ছিল। তাই প্রস্তাবিত আরপিওকে স্বাগত জানিয়ে শিগগিরই দলগতভাবে মতামত তুলে ধরবে বিএনপি। স্থায়ী কমিটির বৈঠক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে স্থায়ী কমিটির বৈঠক হয়। বৈঠকে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি কী হবে, তা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে শিগগিরই শেষ দফার আলোচনায় বসতে যাচ্ছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এ লক্ষ্যে ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ আরও এক মাস বাড়িয়ে আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। জানা গেছে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে ঐকমত্য কমিশনের সময় বাড়ানো এবং জুলাই সনদের বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কমিশনের সময় বাড়ানোয় স্থায়ী কমিটির কোনো আপত্তি নেই। জুলাই সনদের আইনি ভিত্তির আলোচনায় বিএনপিকে ডাকা হলে তারা সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করবে। বিএনপি সংস্কার চায় না, এই দায়ভার তারা নেবে না। সংস্কার প্রশ্নে তারা অত্যন্ত আন্তরিক। সে কারণে শুরু থেকেই ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছে বিএনপি। জুলাই সনদের বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে বিএনপির অবস্থান হচ্ছে, সংবিধান সংশোধনের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়-ঐকমত্য হওয়া এমন সংস্কার প্রস্তাবনাসমূহ সরকার আইনি প্রক্রিয়ায় অধ্যাদেশের মাধ্যমে যেকোনো সময় করতে পারে। শুধুমাত্র সংবিধান সংশোধনের সঙ্গে সম্পর্কিত সংস্কার প্রস্তাবনাগুলো নির্বাচিত সংসদ করবে।

স্থায়ী কমিটির বৈঠকে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) ১৯৭২ (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫ এর খসড়া নিয়েও আলোচনা হয়। সংশোধিত আরপিও’র খড়সা নিয়ে বড় ধরনের কোনো আপত্তি নেই বিএনপির।

আরপিও সংশোধন প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আচরণবিধি লংঘনের দায়ে শাস্তি- সেটা আমাদের প্রস্তাব ছিল, সেটা ভালো আছে। কোথাও কারচুপি হলে পুরো আসনের ভোট বাতিলের যে ক্ষমতাটা আগে ছিল, সেটা পুনর্বহাল হয়েছে, সেটা ভালো। তবে এর অপব্যবহার যাতে না হয়- সে দিকটায় খেয়াল রাখতে হবে। ‘না’ ভোটের বিধান-সেটা প্রথমবারের মতো করা হচ্ছে, এটা ভালো। তবে একবার একটি নির্বাচন হলে সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্য দিয়ে সেই অভিজ্ঞতার আলোকে দেখা যাবে, এটা কতটুকু উপযুক্ত হলো। বিএনপিসহ রাজনৈতিক দলগুলো এবং সারা জাতির দাবি ছিল যে, ইভিএম বাতিল করতে হবে। ইভিএম থাকছে না, এটা ভালো। এ ছাড়া আমাদের দাবি ছিল, ভোটে দায়িত্ব পালনকারী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংজ্ঞার মধ্যে সেনাবাহিনীসহ অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনীকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে, ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিতে হবে। এটা অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, এটা ইতিবাচক। আমরা সংস্কারের মধ্য দিয়েই যাচ্ছি। আমরা মনে করি, এগুলো সব পজিটিভ রিফর্ম। আমরা এটাকে স্বাগত জানাই।’

স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সংসদীয় আসন পুনর্বিন্যাস কার্যক্রম নিয়েও আলোচনা হয়েছে। ইসির নির্বাচনি এলাকার সীমানা নির্ধারণ কার্যক্রমের পরিপ্রেক্ষিতে পর্যালোচনা ও সমন্বয়ের জন্য বিএনপি গঠিত কমিটির প্রধান নজরুল ইসলাম খান বৈঠকে এ বিষয়ে একটি দীর্ঘ প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। বিএনপির স্থানীয় পর্যায়ের নেতা এবং সংক্ষুব্ধ ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে এই প্রতিবেদন তৈরি করেন তিনি। এর আগে দ্বাদশ সংসদের আড়াই শতাধিক আসনের সীমানা বহাল রেখে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে গত ৩০ জুলাই সীমানা পুনর্র্নির্ধারণের খসড়া প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। খসড়ায় বাকি ৩৯ আসনে ছোটখাটো পরিবর্তন আনার প্রস্তাব করে ১০ আগস্টের মধ্যে দাবি-আপত্তি জানানোর সুযোগ রাখা হয়েছিল। জানা গেছে, বিএনপির সংক্ষুব্ধ নেতারা কেন্দ্রের সঙ্গে সমন্বয় করে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই ইসিতে তাদের আপত্তি কিংবা মতামত জানিয়েছেন।


প্রিন্ট