২৪ এর সেই উত্তাল জুলাই কিংবা আগষ্টের প্রথম ৫ দিন ফ্যাসিস্ট হাসিনার পরাজয় ঘন্টা বাজার আগে, একে একে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায় শেখ পরিবারের সব প্রভাবশালী এমপি-মন্ত্রী আর আওয়ামী নেতারা। যাদের মধ্যে অন্যতম ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, ফরিদপুরের সাবেক এমপি নিক্সন চৌধুরী, শেখ তন্ময় কিংবা শেখ ফজলুল করিম সেলিমের মত প্রভাবশালীরা। ফ্যাসিস্ট হাসিনা পালানোর আগেই তার পরিবারের ঘনিষ্টজন ও শেখ পরিবারের সদস্যদের পালানোর ব্যবস্থা করেন। এমনকি কিছু কিছু ক্ষেত্রে নিজে ফোন করেও তাদের ইমিগ্রেশনের ব্যবস্থা করে দেন। অথচ সেই হাসিনাই আবার দলের অন্য নেতা-কর্মীদের দেশ ছাড়তে মানা করেছিলেন সেই সময়।
একদিকে আত্মীয়দের পালাতে সহায়তা অন্যদিকে দলীয় এমপি-মন্ত্রীদেরও পালাতে নিষেধ করা এর নেপথ্যে লুকিয়ে রয়েছে ভয়াবহ কিছু সত্য। সম্প্রতি হাসিনা আর তাপসের ফাঁস হওয়া সেই কলরেকর্ডই বলে দেয় হাসিনার উদ্দেশ্যের গোপনীয় সব বিছানো অন্তর্জালের কথা। তাপস ২৪ এর ৩ আগষ্ট হাসিনা পালানোর ঠিক দুদিন আগে সিঙ্গাপুরে পালানোর সময় ইমিগ্রেশনে বাঁধাগ্রস্থ হলে হাসিনাকে ফোন করে সেই বাঁধার দেওয়াল টপকিয়ে দেশ ছেড়ে নির্লজ্জ বেহায়ার মত পালিয়ে যায়।
তাপসের এক কলরেকর্ড না হয় ফাঁস হয়েছে। কিন্তু, আড়ালের কতশত কলরেকর্ড কত কিছুই তো পরে রয়েছে। এখনো কি কেউ শুনেছেন শেখ পরিবারের কোন সাবেক সংসদ সদস্য কিংবা সাবেক মন্ত্রী কেউ আটক হয়েছেন? বা কারে হদিস মিলেছে দেশে? বাস্তবতা হলো দেশের টাকা হরিলুট করা শেখ পরিবারের এসব ফ্যাসিস্টরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পালিয়েছে ২৪ এর ৫ আগষ্টের আগেই। আর সেখানে প্রত্যক্ষভাবে সহায়তা করেছে ফ্যাসিস্ট হাসিনা।
বিপরীত চিত্র হাসিনার নিজ দলেরই অন্য সব এমপি মন্ত্রীদের বেলায়। যে তালিকায় রয়েছেন এক সময়ের হাসিনার উপদেষ্টা দরবেশ বাবা খ্যাত সালমান এফ রহমান, সাবেক আইন মন্ত্রী আনিসুল হক কিংবা ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের সময় ইন্টারনেট বন্ধ করে হাসিনার গণহত্যায় প্রত্যক্ষভাবে সহায়তাকারী সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলকও। যাদের হাসিনা পালাতে দেয়নি কিংবা পালানোর কথা বলেনও নি। তারা জানতোও না যে হাসিনা শেখ পরিবারের গুষ্টিসহ পালিয়ে যাবে নির্লজ্জ বেহায়ার মত। আর তাদেরকে ফেলে যাবে বিচারের কাঠগড়ায়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন ফ্যাসিস্ট হাসিনার এই দ্বৈতচারী আচরণের পিছনে রয়েছে নির্মমতা ও কঠিন বাস্তবতা। স্বজনপ্রীতি করা হাসিনা কোনভাবেই চায়নি তার পরিবারের আত্মীয় কেউ বিপদে পরুক। আর হাসিনার আগে থেকেই ছিলো বাঙ্গালীদের প্রতি অশেষ রাগ। তার বাবা শেখ মুজিবুর রহমান ৭৫ এর এক সফল সেনাঅভ্যুত্থানে নিহত হওয়ার পর নিজ দল আওয়ামী লীগের কেউ তার বাবার জানাজায় অংশ নেয়নি। সেই রাগ থেকেই হাসিনা দেশে ফেরেন প্রতিশোধ নিতে। তাইতো বরাবরই দেশের আমজনতার প্রতি তার কোন মায়া-মহব্বত কিংবা করুণা ছিলো না। এমনটিই মনে করেন, প্রবাসী সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন থেকে শুরু করে বিশেষজ্ঞমহল।
২৪ এর সেই গণঅভ্যুত্থানেই হাসিনা প্রায় দেড় হাজার ছাত্র-জনতাকে নৃশংসভাবে হত্যার আদেশ দেন। যা বাঙালীরা দেখেছে স্বচক্ষে। এরপরও গণহত্যাকারী খুনি বেহায়া হাসিনা কখনো জাতির কাছে ক্ষমা চায়নি। উল্টো বারবার হুংকার দিয়েছে ফিরে আসার আবারো ত্রাসের রাজনীতি কায়েম করার।
প্রিন্ট
																			
																নিজস্ব সংবাদ :								 




















