ঢাকা ০৯:৪৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫, ৪ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo জামায়াত বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির অসুস্থ, হাসপাতালে দেখতে গেলেন বিএনপি মহাসচিব Logo জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় নিয়ে উদ্বেগ, অন্তর্বর্তী সরকারের বার্তা Logo ২০১৬ নির্বাচনে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে ওবামার বিচার দাবি তুলসির Logo জামায়াতের জাতীয় সমাবেশ শুরু Logo তিল ধারণের ঠাঁই নেই সোহরাওয়ার্দীতে, সমাবেশস্থলে পৌঁছেছেন জামায়াত আমির Logo মানবিক ও ভালো মানুষ না হলে দেশের উন্নতি সম্ভব না: সেনাপ্রধান Logo পরিবর্তনের ডাক — চট্টগ্রাম-১১-তে জামায়াত প্রার্থীর গণসংযোগে জনতার ঢল” Logo প্রয়োজনে লাশ তুলে ময়নাতদন্ত, গোপালগঞ্জ ইস্যুতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা Logo কোতোয়ালী থানার জালে ধরা ৩ নারী মাদক কারবারি: ২৪০০ পিস ইয়াবাসহ গ্রেফতার Logo চট্টগ্রাম-১১ আসনে মনোনীত এমপি প্রার্থী শফিউল আলম বললেন, “জনগণের আস্থার প্রতীক জামায়াত”, কঠোর বার্তা দিলেন দায়িত্বশীলদের

জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় নিয়ে উদ্বেগ, অন্তর্বর্তী সরকারের বার্তা

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৩:০৫:৩৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫
  • ১ ১০.০০০ বার পড়া হয়েছে

বাংলাদেশে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের (ওএইচসিএইচআর) মিশন শুরু হয়েছে। এ লক্ষ্যে ৩ বছরের জন্য একটি সমঝোতা স্মারকও স্বাক্ষরিত হয়েছে। বিষয়টি প্রকাশিত হওয়ার পর সমাজের বিভিন্ন স্তর থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। এ বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকার জানিয়েছে, বাংলাদেশের প্রচলিত আইন, সামাজিক রীতিনীতি ও সাংস্কৃতিক কাঠামোর বাইরে যায় এমন কোনো এজেন্ডা এর মাধ্যমে বাস্তবায়িত হবে না।

প্রধান উপদেষ্টা প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ সরকার জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের (ওএইচসিএইচআর) সঙ্গে ৩ বছরের জন্য একটি সমঝোতা স্মারক সই করেছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশে একটি মিশন পরিচালিত হবে, যার লক্ষ্য হলো দেশে মানবাধিকার উন্নয়ন ও সুরক্ষায় সহায়তা দেওয়া।’

এতে বলা হয়, ‘এই মিশনের উদ্দেশ্য—সরকারি প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি সংগঠনগুলোকে প্রশিক্ষণ ও কারিগরি সহায়তা দেওয়া। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ যাতে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংক্রান্ত দায়বদ্ধতা পূরণ করতে পারে, সে লক্ষ্যে সক্ষমতা বৃদ্ধি, আইনি সহায়তা এবং প্রাতিষ্ঠানিক শক্তিশালীকরণ করা হবে।’

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ঘটে যাওয়া গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় সরকারের সংস্কার ও জবাবদিহির অঙ্গীকারের অংশ হিসেবেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’

অন্তর্বর্তী সরকার বলেছে, ‘আমরা স্বীকার করি, বাংলাদেশে কিছু গোষ্ঠী জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থাগুলোর আদর্শিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশ এমন একটি সমাজ, যেখানে শক্তিশালী সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধ বিদ্যমান। আমাদের অনেক নাগরিক জানিয়েছেন, যে কোনো আন্তর্জাতিক অংশীদারত্ব যেন এ দেশের মূল্যবোধকে সম্মান জানিয়ে পরিচালিত হয়। সেই বিবেচনায় ওএইচসিএইচআর মিশন কেবল গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা—যেমন পূর্ববর্তী সরকারের সময় সংঘটিত অপরাধ—প্রতিরোধ ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতেই কাজ করবে। এটি কোনো সামাজিক এজেন্ডা বাস্তবায়নের প্ল্যাটফর্ম হবে না, যা বাংলাদেশের প্রচলিত আইন, সামাজিক রীতিনীতি ও সাংস্কৃতিক কাঠামোর বাইরে যায়।’

সরকার জানিয়েছে, আমরা আশা করি, এই মিশন সম্পূর্ণ স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করবে এবং স্থানীয় অংশীজনদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতায় থাকবে। জাতিসংঘ প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তারা বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় বাস্তবতাকে পুরোপুরি সম্মান করে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করবে।

এ ছাড়া, সরকারের পূর্ণ সার্বভৌম অধিকার থাকবে এ চুক্তি থেকে সরে আসার, যদি মনে করে যে এই অংশীদারত্ব আর দেশের স্বার্থের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়—বলেও উল্লেখ করা হয় সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।

উল্লেখ্য, যদি এই ধরনের একটি অফিস আগের সরকারগুলোর সময় থাকত, যখন বিচারবহির্ভূত হত্যা ও গণহত্যার মতো অপরাধ দায়মুক্তির সঙ্গে সংঘটিত হতো, তাহলে হয়তো অনেক অপরাধ তদন্ত, নথিভুক্ত ও বিচারপ্রাপ্ত হতো। আজকের মানবাধিকার রক্ষার প্রতিশ্রুতি কেবল আদর্শ নয়, বরং ন্যায়ের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত হওয়া উচিত।

সরকার এই অংশীদারত্বকে দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করা এবং নাগরিকদের সুরক্ষা বৃদ্ধির একটি সুযোগ হিসেবে দেখছে, যা আমাদের মূল্যবোধ, আইন এবং জনগণের প্রতি জবাবদিহির ভিত্তিতে পরিচালিত হবে বলেও জানানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।


প্রিন্ট
ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

জামায়াত বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির অসুস্থ, হাসপাতালে দেখতে গেলেন বিএনপি মহাসচিব

জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় নিয়ে উদ্বেগ, অন্তর্বর্তী সরকারের বার্তা

আপডেট সময় ০৩:০৫:৩৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫

বাংলাদেশে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের (ওএইচসিএইচআর) মিশন শুরু হয়েছে। এ লক্ষ্যে ৩ বছরের জন্য একটি সমঝোতা স্মারকও স্বাক্ষরিত হয়েছে। বিষয়টি প্রকাশিত হওয়ার পর সমাজের বিভিন্ন স্তর থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। এ বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকার জানিয়েছে, বাংলাদেশের প্রচলিত আইন, সামাজিক রীতিনীতি ও সাংস্কৃতিক কাঠামোর বাইরে যায় এমন কোনো এজেন্ডা এর মাধ্যমে বাস্তবায়িত হবে না।

প্রধান উপদেষ্টা প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ সরকার জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের (ওএইচসিএইচআর) সঙ্গে ৩ বছরের জন্য একটি সমঝোতা স্মারক সই করেছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশে একটি মিশন পরিচালিত হবে, যার লক্ষ্য হলো দেশে মানবাধিকার উন্নয়ন ও সুরক্ষায় সহায়তা দেওয়া।’

এতে বলা হয়, ‘এই মিশনের উদ্দেশ্য—সরকারি প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি সংগঠনগুলোকে প্রশিক্ষণ ও কারিগরি সহায়তা দেওয়া। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ যাতে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংক্রান্ত দায়বদ্ধতা পূরণ করতে পারে, সে লক্ষ্যে সক্ষমতা বৃদ্ধি, আইনি সহায়তা এবং প্রাতিষ্ঠানিক শক্তিশালীকরণ করা হবে।’

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ঘটে যাওয়া গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় সরকারের সংস্কার ও জবাবদিহির অঙ্গীকারের অংশ হিসেবেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’

অন্তর্বর্তী সরকার বলেছে, ‘আমরা স্বীকার করি, বাংলাদেশে কিছু গোষ্ঠী জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থাগুলোর আদর্শিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশ এমন একটি সমাজ, যেখানে শক্তিশালী সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধ বিদ্যমান। আমাদের অনেক নাগরিক জানিয়েছেন, যে কোনো আন্তর্জাতিক অংশীদারত্ব যেন এ দেশের মূল্যবোধকে সম্মান জানিয়ে পরিচালিত হয়। সেই বিবেচনায় ওএইচসিএইচআর মিশন কেবল গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা—যেমন পূর্ববর্তী সরকারের সময় সংঘটিত অপরাধ—প্রতিরোধ ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতেই কাজ করবে। এটি কোনো সামাজিক এজেন্ডা বাস্তবায়নের প্ল্যাটফর্ম হবে না, যা বাংলাদেশের প্রচলিত আইন, সামাজিক রীতিনীতি ও সাংস্কৃতিক কাঠামোর বাইরে যায়।’

সরকার জানিয়েছে, আমরা আশা করি, এই মিশন সম্পূর্ণ স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করবে এবং স্থানীয় অংশীজনদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতায় থাকবে। জাতিসংঘ প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তারা বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় বাস্তবতাকে পুরোপুরি সম্মান করে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করবে।

এ ছাড়া, সরকারের পূর্ণ সার্বভৌম অধিকার থাকবে এ চুক্তি থেকে সরে আসার, যদি মনে করে যে এই অংশীদারত্ব আর দেশের স্বার্থের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়—বলেও উল্লেখ করা হয় সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।

উল্লেখ্য, যদি এই ধরনের একটি অফিস আগের সরকারগুলোর সময় থাকত, যখন বিচারবহির্ভূত হত্যা ও গণহত্যার মতো অপরাধ দায়মুক্তির সঙ্গে সংঘটিত হতো, তাহলে হয়তো অনেক অপরাধ তদন্ত, নথিভুক্ত ও বিচারপ্রাপ্ত হতো। আজকের মানবাধিকার রক্ষার প্রতিশ্রুতি কেবল আদর্শ নয়, বরং ন্যায়ের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত হওয়া উচিত।

সরকার এই অংশীদারত্বকে দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করা এবং নাগরিকদের সুরক্ষা বৃদ্ধির একটি সুযোগ হিসেবে দেখছে, যা আমাদের মূল্যবোধ, আইন এবং জনগণের প্রতি জবাবদিহির ভিত্তিতে পরিচালিত হবে বলেও জানানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।


প্রিন্ট