ঢাকা ০২:৩৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ২৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo কালিয়াকৈরে জমির পাওয়ার অফ এ্যাটর্নি দলিল জাল জালিয়াতির অভিযোগ Logo ভৈরব জেলা বাস্তবায়নের দাবীতে মানব বন্ধন Logo আগামীর বাংলাদেশ হবে ইসলামের বাংলাদেশ-আল্লামা মামুনুল হক। Logo ভাঙ্গুড়ায় তারেক রহমানের সাক্ষাৎকার প্রদর্শনী, নেতাকর্মীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস Logo ইলিশ রক্ষায় ব্যার্থ মৎস অধিদপ্তর সাংবাদিক দেখে দৌড়ে পালালেন ইলিশ বোঝায় ট্রলার Logo সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের সাথে নাগরিক প্লাটফর্ম ও যুব ফোরামের পরামর্শ সভা Logo মিরপুরে গার্মেন্টস ও কেমিক্যাল গোডাউনে আগুন Logo মার্চ টু সচিবালয়’ এ অংশ নিতে শহীদ মিনারে শিক্ষকদের ঢল Logo রাজধানীতে জামায়াতসহ সাত দলের মানববন্ধন কর্মসূচি শুরু Logo আমরা কারাগারে নয়, ছিলাম এক কসাইখানায়

মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল ব্যবসার আড়ালে ডিজিটাল প্রতারণা, গোয়েন্দার জালে শরীফুল আটক

মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল ব্যবসার ছদ্মবেশে সরকারি কর্মকর্তাদের ছবি ব্যবহার করে ফাঁদে ফেলে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া ডিজিটাল প্রতারক চক্রের এক সদস্য নরসিংদী জেলার ঘোড়াদিয়া এলাকা থেকে গ্রেফতার করে জেলা গোয়েন্দা শাখার একটি বিশেষ টিম। এইসময় প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত জিনিসপত্র উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ জানায়, দীর্ঘদিন যাবত একটি সংঘবদ্ধচক্র অনলাইনে সাধারণ মানুষের হোয়াটস্ অ্যাপ হ্যাক করে সরকারি কর্মকর্তাদের ছবি ও পরিচয় ব্যবহার করে কৌশলে অনলাইন ব্যাংকিং এর মাধ্যমে বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। প্রতারক চক্রটি মসজিদে বা অফিসে এয়ার-কন্ডিশনার (এসি) লাগবে, উন্নয়নমূলক কাজ করবে, অসহায় ব্যক্তিদের সহায়তা করবে, এমন অজুহাতে মানুষের কাছ থেকে টাকা চেয়ে থাকে। অনেকেই সরল বিশ্বাসে প্রতারক চক্রকে অনলাইন ব্যাংকিং এর মাধ্যমে অর্থ প্রদান করে।

জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শিল্পাঞ্চল ও ডিবি) ও মিডিয়া উইং রাসেল, (পিপিএম-বার) জানান, বিষয়টি চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের নজরে আসলে জেলা পুলিশের ফেসবুক পেইজে সেজন্য সতর্কতামূলক নির্দেশনা প্রদান করা হয়। এর প্রেক্ষিতে কতিপয় ভুক্তভোগী পুলিশের কাছে উক্ত প্রতারক চক্রের মাধ্যমে প্রতারিত হওয়ার অভিযোগ দাখিল করেন।

তিনি আরো বলেন, বিষয়টি আমলে নিয়ে জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে জেলা গোয়েন্দা শাখা তাৎক্ষণিক অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু করে। এক পর্যায়ে এই প্রতারক চক্রকে দ্রুততার সাথে শনাক্ত করার পর অভিযান পরিচালনা করে বুধবার নরসিংদী জেলার সদর থানাধীন ঘোড়াদিয়া নামক স্থান থেকে প্রতারণার কাজে জড়িত শরীফুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয় তার পিতা-শাখাওয়াত হোসেন, মাতা-মমতাজ বেগম।

তল্লাশী করে তার নিজ বাসা থেকে নগদ ৪ লক্ষ টাকা, পাসপোর্ট, নকল ট্রেড লাইসেন্স, সীল, ক্রেডিট ও ডেবিট কার্ড, প্রতারনার কাজে ব্যবহৃত ৮টি মোবাইল ফোন, বিভিন্ন অপারেটরের সীম, বিভিন্ন ব্যাংকের চেক ও জমা বই, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কর্তৃক প্রদত্ত নাগরিক সনদ, বিভিন্ন ব্যাক্তিদের এনআইডির কপি এবং অর্থ লেনদেন সংক্রান্ত কাগজপত্র উদ্ধার করা হয়।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাসেল আরো বলেন, তার নিকট থেকে উদ্ধারকৃত মোবাইলের হোয়াটসএ্যাপ কথোপকথন ও অন্যান্য ডকুমেন্টস পর্যালোচনা করে দেখা যায়, প্রতারক চক্রের সহযোগিতায় তিনি এবং তার ভাই দীর্ঘদিন যাবত মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল ব্যবসার আড়ালে হুন্ডির ব্যবসা, অনলাইন জুয়া ও প্রতারণার মাধ্যমে সংগৃহীত অর্থ বিকাশ/নগদ/রকেট/উপায়সহ বিভিন্ন মোবাইল অ্যাপস্ এবং বিভিন্ন ব্যংকের মাধ্যমে অবৈধভাবে লেনদেন করে আসছিল।

প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদে শরিফুল ইসলাম, দীর্ঘদিন যাবত তার বড় ভাই আরিফুর রহমান ও তার বন্ধুসহ তাদের পরিবারের কিছু সদস্য মালয়েশিয়া, আরব আমিরাত এবং সৌদিআরব থেকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে অন্য ব্যক্তিদের সহায়তায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের হোয়াটস্ অ্যাপস একাউন্ট কৌশলে হ্যাক করে নিজেদের পরিচিতদের নামে নিবন্ধিত সিম ও বিকাশ/নগদ/রকেট হিসাব খুলে মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে টাকা সংগ্রহ করেন। অপরদিকে তারা ব্র্যাক ব্যাংক, ডাচ বাংলা ব্যাংক, আইএফআইসি ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, সিটি ব্যাংকে নামে বেনামে ভুয়া ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের চলতি হিসাব খুলে কোটি কোটি টাকা অবৈধভাবে লেনদেন করে আসছে।

চট্টগ্রাম সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে কোনো অজানা ব্যক্তি যদি সরকারি। কর্মকর্তা বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে টাকা দাবি করে, তাহলে তাৎক্ষণিকভাবে নিকটস্থ থানায় যোগাযোগ করার পরামর্শ দিয়েছেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।


প্রিন্ট
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

কালিয়াকৈরে জমির পাওয়ার অফ এ্যাটর্নি দলিল জাল জালিয়াতির অভিযোগ

মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল ব্যবসার আড়ালে ডিজিটাল প্রতারণা, গোয়েন্দার জালে শরীফুল আটক

আপডেট সময় ০৮:১৬:৫৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫

মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল ব্যবসার ছদ্মবেশে সরকারি কর্মকর্তাদের ছবি ব্যবহার করে ফাঁদে ফেলে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া ডিজিটাল প্রতারক চক্রের এক সদস্য নরসিংদী জেলার ঘোড়াদিয়া এলাকা থেকে গ্রেফতার করে জেলা গোয়েন্দা শাখার একটি বিশেষ টিম। এইসময় প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত জিনিসপত্র উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ জানায়, দীর্ঘদিন যাবত একটি সংঘবদ্ধচক্র অনলাইনে সাধারণ মানুষের হোয়াটস্ অ্যাপ হ্যাক করে সরকারি কর্মকর্তাদের ছবি ও পরিচয় ব্যবহার করে কৌশলে অনলাইন ব্যাংকিং এর মাধ্যমে বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। প্রতারক চক্রটি মসজিদে বা অফিসে এয়ার-কন্ডিশনার (এসি) লাগবে, উন্নয়নমূলক কাজ করবে, অসহায় ব্যক্তিদের সহায়তা করবে, এমন অজুহাতে মানুষের কাছ থেকে টাকা চেয়ে থাকে। অনেকেই সরল বিশ্বাসে প্রতারক চক্রকে অনলাইন ব্যাংকিং এর মাধ্যমে অর্থ প্রদান করে।

জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শিল্পাঞ্চল ও ডিবি) ও মিডিয়া উইং রাসেল, (পিপিএম-বার) জানান, বিষয়টি চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের নজরে আসলে জেলা পুলিশের ফেসবুক পেইজে সেজন্য সতর্কতামূলক নির্দেশনা প্রদান করা হয়। এর প্রেক্ষিতে কতিপয় ভুক্তভোগী পুলিশের কাছে উক্ত প্রতারক চক্রের মাধ্যমে প্রতারিত হওয়ার অভিযোগ দাখিল করেন।

তিনি আরো বলেন, বিষয়টি আমলে নিয়ে জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে জেলা গোয়েন্দা শাখা তাৎক্ষণিক অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু করে। এক পর্যায়ে এই প্রতারক চক্রকে দ্রুততার সাথে শনাক্ত করার পর অভিযান পরিচালনা করে বুধবার নরসিংদী জেলার সদর থানাধীন ঘোড়াদিয়া নামক স্থান থেকে প্রতারণার কাজে জড়িত শরীফুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয় তার পিতা-শাখাওয়াত হোসেন, মাতা-মমতাজ বেগম।

তল্লাশী করে তার নিজ বাসা থেকে নগদ ৪ লক্ষ টাকা, পাসপোর্ট, নকল ট্রেড লাইসেন্স, সীল, ক্রেডিট ও ডেবিট কার্ড, প্রতারনার কাজে ব্যবহৃত ৮টি মোবাইল ফোন, বিভিন্ন অপারেটরের সীম, বিভিন্ন ব্যাংকের চেক ও জমা বই, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কর্তৃক প্রদত্ত নাগরিক সনদ, বিভিন্ন ব্যাক্তিদের এনআইডির কপি এবং অর্থ লেনদেন সংক্রান্ত কাগজপত্র উদ্ধার করা হয়।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাসেল আরো বলেন, তার নিকট থেকে উদ্ধারকৃত মোবাইলের হোয়াটসএ্যাপ কথোপকথন ও অন্যান্য ডকুমেন্টস পর্যালোচনা করে দেখা যায়, প্রতারক চক্রের সহযোগিতায় তিনি এবং তার ভাই দীর্ঘদিন যাবত মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল ব্যবসার আড়ালে হুন্ডির ব্যবসা, অনলাইন জুয়া ও প্রতারণার মাধ্যমে সংগৃহীত অর্থ বিকাশ/নগদ/রকেট/উপায়সহ বিভিন্ন মোবাইল অ্যাপস্ এবং বিভিন্ন ব্যংকের মাধ্যমে অবৈধভাবে লেনদেন করে আসছিল।

প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদে শরিফুল ইসলাম, দীর্ঘদিন যাবত তার বড় ভাই আরিফুর রহমান ও তার বন্ধুসহ তাদের পরিবারের কিছু সদস্য মালয়েশিয়া, আরব আমিরাত এবং সৌদিআরব থেকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে অন্য ব্যক্তিদের সহায়তায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের হোয়াটস্ অ্যাপস একাউন্ট কৌশলে হ্যাক করে নিজেদের পরিচিতদের নামে নিবন্ধিত সিম ও বিকাশ/নগদ/রকেট হিসাব খুলে মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে টাকা সংগ্রহ করেন। অপরদিকে তারা ব্র্যাক ব্যাংক, ডাচ বাংলা ব্যাংক, আইএফআইসি ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, সিটি ব্যাংকে নামে বেনামে ভুয়া ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের চলতি হিসাব খুলে কোটি কোটি টাকা অবৈধভাবে লেনদেন করে আসছে।

চট্টগ্রাম সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে কোনো অজানা ব্যক্তি যদি সরকারি। কর্মকর্তা বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে টাকা দাবি করে, তাহলে তাৎক্ষণিকভাবে নিকটস্থ থানায় যোগাযোগ করার পরামর্শ দিয়েছেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।


প্রিন্ট