ঢাকা ০৬:২৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৫, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo পাবনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রধান নাজিরের বদলী নিয়ে চরম অসন্তোষ Logo মহম্মদপুরে বিএনপি’র নির্বাচনী পথ সভা অনুষ্ঠিত Logo পীরগঞ্জে বিএনপির উদ্যোগে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প অনুষ্ঠিত Logo দেশের ধন্যাঢ্য ব্যক্তিরাও প্রতারণার শিকার অনিক ও সোহেলের ভুয়া “প্রাচীন পিলার ও কয়েন” চক্র Logo দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই প্রায় অর্ধশত বদলি বানিজ্য পিএইচডি জালিয়াতি-বদলি বানিজ্য-ঠিকাদারি সিন্ডিকেটের মূলহোতা খালেকুজ্জামান চৌধুরী Logo কাচিঘাটা রেঞ্জে গাছকাটা সিন্ডিকেটের তাণ্ডব রাতে চার–পাঁচশ গাছ উজাড়—বন রক্ষাকারীরাই অভিযুক্ত!** স্থানীয়দের অভিযোগ: “৫ আগস্টের পর এলাকা একেবারে মগের মুল্লুক—বন কেটে লুটে খাচ্ছে সবাই Logo চীনে ট্রেন দুর্ঘটনায় ১১ জন নিহত Logo ১২ ঘণ্টায় দ্বিতীয়বার ভূমিকম্পে কাঁপল ইন্দোনেশিয়া Logo প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির মামলা জয় ও পুতুলের ৫ বছরের কারাদণ্ড Logo তিন মামলায় হাসিনার ২১ বছরের কারাদণ্ড

খুলনায় ৮৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত, তলিয়ে গেছে রাস্তাঘাট

  • খুলনা অফিস
  • আপডেট সময় ১২:১১:৩৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ জুলাই ২০২৫
  • ১৬৭ ১৮৪৪.০০০ বার পড়া হয়েছে

খুলনায় গত ৩৬ ঘণ্টায় ৮৮ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। এতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে নিম্নাঞ্চলে। তলিয়ে গেছে শহরের রাস্তাঘাট। টানা বৃষ্টিতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বিপাকে পড়েছে নিম্নআয়ের খেটে খাওয়া মানুষ।

এদিকে টানা বৃষ্টিতে মঙ্গলবার (৮ জুলাই) ভোরে ধসে পড়েছে খুলনা সদর সাব-রেজিস্ট্রি ভবনের রেকর্ড রুমের ছাদ। এতে বৃষ্টির পানিতে রেকর্ড রুমে থাকা শতাধিক বই পানিতে ভিজে গেছে।

গত শুক্রবার থেকে টানা বৃষ্টিতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে অলিগলি সবখানেই পানি জমে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে কর্মজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষেরা।

টানা বৃষ্টিতে নগরীর রয়েলের মোড়, টুটপাড়া, মিস্ত্রিপাড়া, আহসান আহমেদ রোড, বয়রা, মুজগুন্নি মহাসড়ক, মুজগুন্নি আবাসিক এলাকা, সোনাডাঙ্গা, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মেইন রোড, খালিশপুর, দৌলতপুর, কুয়েট রোড, ফুলবাড়িগেটসহ নগরীর বিভিন্ন রাস্তা-ঘাটে পানি জমেছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে পথচারীসহ সাধারণ মানুষ। যানবাহন চলাচলেও চালকরা পড়েছেন দুর্ভোগে।

নগরীর মুজগুন্নি ১৩ নং রোডের বাসিন্দা মেরাজ আল সাদী বলেন, টানা বৃষ্টিতে মুজগুন্নি আবাসিক এলাকার রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে গেছে। এমনকি ১২ নং রোডের বাইতুন মামুর মসজিদেও পানি উঠেছে। বাস্তহারা এলাকার ঘরবাড়িতেও পানি প্রবেশ করেছে। জলাবদ্ধতার কারণে সড়কে চলাচল করা যাচ্ছে না।

তিনি বলেন, স্থানীয় গোয়ালখালী জামিয়া রশিদিয়া মাদরাসায় আমার ছেলে লেখাপড়া করে। তাকে দুপুরে খাওয়ানোর জন্য যেয়ে দেখি মাদ্রাসার মাঠ, রাস্তাসহ বিভিন্ন স্থান পানিতে থই থই করছে।

নগরীর ইজিবাইক চালক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, নগরীর রয়েল মোড়, টুটপাড়াসহ বিভিন্ন সড়কে পানি জমেছে। সড়কে তেমন যাত্রী নেই। যাত্রী পাওয়া কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। ফলে আয়ও কমেছে। যাত্রী না আসায় দিনশেষে সংসার চালাতে কষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

নগরীর শিববাড়ি গোবরচাকা এলাকার রিকশা চালক রনি বলেন, আমরা খেটে খাই। আমাদের রোদ-বৃষ্টিতে কিছু হয় না। সকাল থেকে বৃষ্টি হচ্ছে। যখন অনেক বৃষ্টি হয় তখন ছাতায়ও মানে না। কাজ ছাড়া মানুষ তেমন বের হয় না। যে দুই-চার জন বের হয়, বৃষ্টিতে ভিজে তাদেরকে গন্তব্যে পৌঁছে দিয়ে ১০ টাকা বেশি চাই। কেউ দেয়, কেউ দেয় না। জ্বর হলে ওষুধ খাই, পরের দিন সকালে আবার রিকশা নিয়ে কাজে যায়। এইভাবে দিন চলে যাচ্ছে।

খুলনা জেলা রেজিস্ট্রার মিজানুর রহমান বলেন, ভবনটি শত বছরের পুরোনো। এর আগেও এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেছে। ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আমরা ভবন থেকে অন্যত্র যাওয়ার চেষ্টা করছি। বড় ভবন খুঁজছি, পেলে আমরা সেখানে শিফট করব।

খুলনা আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ মো. মিজানুর রহমান বলেন, বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের কারণে ভারী বর্ষণ হচ্ছে। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গত ৩৬ ঘণ্টায় খুলনায় ৮৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। গতকাল সকাল ৬টা থেকে আজ সকাল ৬টা পর্যন্ত ৭০ মিলিমিটার এবং সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ১৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।


প্রিন্ট
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

পাবনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রধান নাজিরের বদলী নিয়ে চরম অসন্তোষ

খুলনায় ৮৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত, তলিয়ে গেছে রাস্তাঘাট

আপডেট সময় ১২:১১:৩৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ জুলাই ২০২৫

খুলনায় গত ৩৬ ঘণ্টায় ৮৮ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। এতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে নিম্নাঞ্চলে। তলিয়ে গেছে শহরের রাস্তাঘাট। টানা বৃষ্টিতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বিপাকে পড়েছে নিম্নআয়ের খেটে খাওয়া মানুষ।

এদিকে টানা বৃষ্টিতে মঙ্গলবার (৮ জুলাই) ভোরে ধসে পড়েছে খুলনা সদর সাব-রেজিস্ট্রি ভবনের রেকর্ড রুমের ছাদ। এতে বৃষ্টির পানিতে রেকর্ড রুমে থাকা শতাধিক বই পানিতে ভিজে গেছে।

গত শুক্রবার থেকে টানা বৃষ্টিতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে অলিগলি সবখানেই পানি জমে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে কর্মজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষেরা।

টানা বৃষ্টিতে নগরীর রয়েলের মোড়, টুটপাড়া, মিস্ত্রিপাড়া, আহসান আহমেদ রোড, বয়রা, মুজগুন্নি মহাসড়ক, মুজগুন্নি আবাসিক এলাকা, সোনাডাঙ্গা, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মেইন রোড, খালিশপুর, দৌলতপুর, কুয়েট রোড, ফুলবাড়িগেটসহ নগরীর বিভিন্ন রাস্তা-ঘাটে পানি জমেছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে পথচারীসহ সাধারণ মানুষ। যানবাহন চলাচলেও চালকরা পড়েছেন দুর্ভোগে।

নগরীর মুজগুন্নি ১৩ নং রোডের বাসিন্দা মেরাজ আল সাদী বলেন, টানা বৃষ্টিতে মুজগুন্নি আবাসিক এলাকার রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে গেছে। এমনকি ১২ নং রোডের বাইতুন মামুর মসজিদেও পানি উঠেছে। বাস্তহারা এলাকার ঘরবাড়িতেও পানি প্রবেশ করেছে। জলাবদ্ধতার কারণে সড়কে চলাচল করা যাচ্ছে না।

তিনি বলেন, স্থানীয় গোয়ালখালী জামিয়া রশিদিয়া মাদরাসায় আমার ছেলে লেখাপড়া করে। তাকে দুপুরে খাওয়ানোর জন্য যেয়ে দেখি মাদ্রাসার মাঠ, রাস্তাসহ বিভিন্ন স্থান পানিতে থই থই করছে।

নগরীর ইজিবাইক চালক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, নগরীর রয়েল মোড়, টুটপাড়াসহ বিভিন্ন সড়কে পানি জমেছে। সড়কে তেমন যাত্রী নেই। যাত্রী পাওয়া কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। ফলে আয়ও কমেছে। যাত্রী না আসায় দিনশেষে সংসার চালাতে কষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

নগরীর শিববাড়ি গোবরচাকা এলাকার রিকশা চালক রনি বলেন, আমরা খেটে খাই। আমাদের রোদ-বৃষ্টিতে কিছু হয় না। সকাল থেকে বৃষ্টি হচ্ছে। যখন অনেক বৃষ্টি হয় তখন ছাতায়ও মানে না। কাজ ছাড়া মানুষ তেমন বের হয় না। যে দুই-চার জন বের হয়, বৃষ্টিতে ভিজে তাদেরকে গন্তব্যে পৌঁছে দিয়ে ১০ টাকা বেশি চাই। কেউ দেয়, কেউ দেয় না। জ্বর হলে ওষুধ খাই, পরের দিন সকালে আবার রিকশা নিয়ে কাজে যায়। এইভাবে দিন চলে যাচ্ছে।

খুলনা জেলা রেজিস্ট্রার মিজানুর রহমান বলেন, ভবনটি শত বছরের পুরোনো। এর আগেও এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেছে। ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আমরা ভবন থেকে অন্যত্র যাওয়ার চেষ্টা করছি। বড় ভবন খুঁজছি, পেলে আমরা সেখানে শিফট করব।

খুলনা আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ মো. মিজানুর রহমান বলেন, বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের কারণে ভারী বর্ষণ হচ্ছে। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গত ৩৬ ঘণ্টায় খুলনায় ৮৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। গতকাল সকাল ৬টা থেকে আজ সকাল ৬টা পর্যন্ত ৭০ মিলিমিটার এবং সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ১৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।


প্রিন্ট