ঢাকার রাস্তাঘাটের দুর্দশা
- আপডেট টাইম : ১০:১৬:৫৩ পূর্বাহ্ণ, মঙ্গলবার, ২১ নভেম্বর ২০১৭
- / ৫৩৬ ৫০০০.০ বার পাঠক
রাজধানী ঢাকার রাস্তাঘাটের শোচনীয় অবস্থা নতুন কিছু নয়। নতুন খবর হলো ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) তার আওতাধীন ভাঙাচোরা ও খানাখন্দময় সড়কগুলো মেরামত করার জন্য সরকারের কাছে ২৬৯ কোটি ১৩ লাখ টাকা চেয়েছে। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) অন্তর্ভুক্ত রাস্তাঘাটের দুর্দশাও একই রকমের। তবে সেগুলো ইতিমধ্যে বিভিন্ন প্রকল্পের অধীনে মেরামত হচ্ছে বা হবে বলে তারা এই বাবদ সরকারের কাছে টাকা চায়নি।
ডিএসসিসি সরকারের কাছে টাকা চেয়েছে ১৫৮ কিলোমিটার সড়ক মেরামত করার জন্য। সংস্থাটির দাবি হলো এই সড়কগুলো বৃষ্টি ও জলাবদ্ধতায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বৃষ্টি ও জলাবদ্ধতায় সড়কের ক্ষতি হয়েছে এ কথা সত্য, কিন্তু পুরো সত্য নয়। সড়কগুলো যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের অভাবেও আগেভাগেই ভেঙেচুরে গেছে। অনেক সড়ক মেরামতের সময় অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে সেগুলো টেকসই হয়নি। এ ছাড়া বিভিন্ন সেবা সংস্থার খোঁড়াখুঁড়ির ফলেও অনেক ভালো সড়কের ক্ষতি হয়েছে। নগরের অনেক এলাকার বাসিন্দাদের একটা সাধারণ অভিযোগ, ‘এই ভালো রাস্তাটা খুঁড়ে নষ্ট করা হয়েছে।’
সুতরাং শুধু বৃষ্টি আর জলাবদ্ধতার কারণ দেখিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক মেরামতের জন্য সরকারের কাছে অর্থ চাওয়া হলেও এমন নিশ্চয়তা মিলবে না যে সরকারের দেওয়া অর্থের সদ্ব্যবহার হবে। প্রথমে নিশ্চিত করতে হবে সড়ক মেরামতের কাজে অনিয়ম-দুর্নীতি হবে না; মেরামতকাজের গুণগত মান নিশ্চিত করা হবে যেন তা টেকসই হয় এবং অল্প দিনের মধ্যেই নষ্ট হয়ে না যায়। যেসব সড়ক মেরামতের জন্য সরকারের কাছে টাকা চাওয়া হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে এমন অনেক সড়কও আছে যেগুলো এক বা দুই বছর আগেই মেরামত করা হয়েছে।
সুতরাং এটা নিশ্চিত করতে হবে যে সড়কগুলোর মেরামতি ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজে কোনো গাফিলতি, অনিয়ম, দুর্নীতির সুযোগ থাকবে না। কোনো সড়ক তার স্বাভাবিক মেয়াদের আগেই নষ্ট হলে সেটি নির্মাণ বা মেরামতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের জবাবদিহি ও শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। প্রয়োজনীয় পাথর-বালুর পরিবর্তে শুধু আলকাতরার প্রলেপ বুলিয়ে সড়ক মেরামতের অভিযোগ বিস্তর পাওয়া যায়, কিন্তু এ ধরনের অপরাধের জন্য কখনো কারও শাস্তি হয় না।
ডিএসসিসি সরকারের কাছে আরও প্রায় ২৫৭ কোটি টাকা চেয়েছে ৮০ কিলোমিটার ফুটপাত, ১৬৬ কিলোমিটার নর্দমা এবং সোয়া ৫ কিলোমিটার সড়ক বিভাজক মেরামত ও নতুন করে নির্মাণ ও উন্নয়নকাজের জন্য। এ বিষয়েও একই কথা প্রযোজ্য: সরকারের অর্থের সদ্ব্যবহার করতে হবে।