সিএমপির চান্দগাঁও থানা পুলিশের বিশেষ অভিযানে প্রতারণার মাধ্যমে স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা আত্মসাৎকারী চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এসময় তাদের হেফাজত থেকে ৯ ভরি ১৫ আনা ওজনের স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়।
বাদী জাফরিন হাসান (৩২), পিতা—মৃত মো. ফেরদৌস, মাতা—সামশুন নাহার বেগম, সাং—দিঘীর উত্তর পাড়, জাফরাবাদ, হামজা বাড়ি, থানা—চন্দনাইশ, জেলা—চট্টগ্রাম; বর্তমানে চান্দগাঁও থানাধীন চন্দ্রিমা আবাসিক এলাকা, রোড নং-০২, লতিফ সুফিয়া টাওয়ার, ৫ম তলায় বসবাস করেন এবং ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, জুবলী রোড শাখায় কর্মরত। তার স্ত্রী নাওজিয়া সিহাম নোহা (২৫) বর্তমানে আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা। ঘটনার দিন ২৮ আগস্ট ২০২৫ ইং তারিখ দুপুর অনুমান ১২:৫০ ঘটিকার সময় বাদীর মা সামশুন নাহার বেগম (৬০) বাসা থেকে সবজি কেনার উদ্দেশ্যে বাইরে যান। আনুমানিক ০১:১০ ঘটিকার সময় তিনি চন্দ্রিমা আবাসিক এলাকা, রোড নং-০২, লতিফ সুফিয়া টাওয়ারের সামনে পৌঁছালে অজ্ঞাতনামা দুই ব্যক্তি তার সঙ্গে কথা বলেন। তারা নিজেদের মালেক শাহ দরবার শরীফ থেকে আগত বলে পরিচয় দিয়ে বাদীর চাকরি ও স্ত্রীর অসুস্থতা সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস প্রদান করে। তাদের কথায় সরল বিশ্বাসে বাদীর মা বাসায় ফিরে আলমারিতে থাকা স্বর্ণালংকার ও নগদ অর্থ সংগ্রহ করে নিয়ে আসেন এবং তা প্রতারকদের হাতে তুলে দেন। তিনি ৪টি স্বর্ণের চেইন (ওজন ২ ভরি), ৮টি আংটি (১ ভরি ৮ আনা), ৪ জোড়া কানের দুল (২ ভরি), ২ জোড়া বালা (২ ভরি ৮ আনা), ১টি গলার হার (২ ভরি) এবং ২টি লকেট (৮ আনা)—মোট ১০ ভরি ৮ আনা স্বর্ণালংকার (মূল্য আনুমানিক ১৭,৮৫,০০০ টাকা) ও নগদ ৫,০০,০০০ টাকা একটি শপিং ব্যাগে ভরে প্রতারকদের দেন। তারা ব্যাগটি নিয়ে রিকশাযোগে দ্রুত সরে যায়। পরে বাদী বাসায় ফিরে ঘটনাটি জানতে পেরে চান্দগাঁও থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
এই ঘটনায় চান্দগাঁও থানায় মামলা নং-০১, তারিখ ০১/০৯/২০২৫ ইং, ধারা ৪০৬/৪২০ পেনাল কোড রুজু হয়।
এপ্রেক্ষিতে অফিসার ইনচার্জ, চান্দগাঁও থানার নেতৃত্বে তদন্তকারী কর্মকর্তার সমন্বয়ে গঠিত একটি চৌকস আভিযানিক টিম তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় গাজীপুর জেলার সদর থানাধীন লক্ষীপুরা কলাবাগান, নুর জাহানের বাড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে ০৮ নভেম্বর ২০২৫ ইং তারিখ রাত ৪:০০ ঘটিকায় ১নং আসামী মো. আব্দুল মালেক (৭৫), পিতা—মৃত রাজা মিয়া, মাতা—মৃত মোমেনা খাতুন, সাং—আদুনগর, রাজা মিয়ার বাড়ি, থানা—লোহাগাড়া, জেলা—চট্টগ্রাম (বর্তমানে গাজীপুরে অবস্থানরত) কে গ্রেফতার করে।
১নং আসামীর স্বীকারোক্তি অনুযায়ী পরবর্তীতে আরও অভিযান চালিয়ে গাজীপুর জেলার কোনাবাড়ী থানাধীন নীলনগর এলাকার বনলতা জুয়েলার্স থেকে ২নং আসামী সুকুমার রঞ্জন ঘোষ (৪৫), পিতা—মৃত অনিল ঘোষ, মাতা—মায়ারানী ঘোষ, সাং—কোনাবাড়ী, থানা—কোনাবাড়ী, জেলা—গাজীপুরকে গ্রেফতার করা হয়। পপরবর্তীতে ০৮ নভেম্বর ২০২৫ ইং সকাল ১০:২০ ঘটিকার সময় বনলতা জুয়েলার্সে অভিযান চালিয়ে ১নং আসামীর দেখানো ও ২নং আসামীর নিজ হাতে বের করে দেওয়া মতে ক) কানের দুল ৩২টি, খ) লকেট ৪টি, গ) গলার চেইন ১২টি, ঘ) আংটি ৩৪টি সহ মোট ওজন ৯ ভরি ১৫ আনা স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে আসামী মো. আব্দুল মালেক (৭৫) স্বীকার করে যে, তিনি গত ৪০ বছর যাবৎ “শয়তানের নিঃশ্বাস (Devil’s Breath)” নামক এক ধরনের কৌশল ব্যবহার করে বিভিন্ন এলাকায় প্রতারণার মাধ্যমে স্বর্ণালংকার ও নগদ অর্থ আত্মসাৎ করে আসছেন। সিডিএমএস পর্যালোচনায় আসামী মো. আব্দুল মালেক (৭৫) বিরুদ্ধে একাধিক মামলা তথ্য পাওয়া যায় ।
প্রিন্ট
চট্টগ্রাম সিটি প্রতিনিধি 




















