ঢাকা ০৩:০৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ২০ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo ফরিদপুরে চেয়ারম্যানের শেল্টারে চায়না দুয়ারি জালের কারখানার রমরমা ব্যবসা, প্রশাসনের অভিযানে নিয়ন্ত্রণহীন অবস্থা Logo রয়টার্সের প্রতিবেদন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সালিশের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে আদানি গ্রুপ Logo টানা কমছে দেশের রপ্তানি আয়, সামনে আরও কমার আশঙ্কা Logo বিএনপির ফাঁকা রাখা ৬৩ আসনে অগ্রাধিকার পাবেন যারা Logo আরপিও সংশোধন অধ্যাদেশ জারি জোট করলেও নিজ দলের প্রতীকেই ভোট করতে হবে Logo আশুলিয়া সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে ৬ দলিল লেখক বরখাস্ত Logo সাভারে ট্রলি ভ্যানের ব্রেক ফেল আয়ারল্যান্ডের ওপরে এসে গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ Logo তৌহিদুল ইসলাম এর বিরুদ্ধে ঘুষ বানিজ্যের অভিযোগ Logo ৪৮ তম বিসিএস পরীক্ষায় উওীর্ণদের নিয়োগ এর দাবি তে মানববন্ধন Logo বিএনপির প্রার্থী তালিকায় নেই রুমিন ফারহানার পদত্যাগ করেন

যমুনার তিন কিলোমিটারে তীব্র ভাঙন, বিলীন চার শতাধিক ঘরবাড়ি

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ১০:৪৭:৫২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৫
  • ১৩ ১০.০০০ বার পড়া হয়েছে

যমুনার তিন কিলোমিটার এলাকায় তীব্র ভাঙন। ছবি:সময়ের কন্ঠ

যমুনা নদী ভাঙনে আতঙ্কে দিন কাটছে জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার বেলগাছা ইউনিয়নের মন্নিয়ার চর গ্রামের বাসিন্দাদের। গত কয়েক দিন থেকেই অসময়ে যমুনা তিন কিলোমিটারজুড়ে তীব্র ভাঙনে ইতোমধ্যে একটি মসজিদ, প্রায় শতাধিক একর জমি ও চার শতাধিক বসতঘরসহ অনেক স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

স্থানীয়রা জানান, প্রায় তিন কিলোমিটারজুড়ে তীব্র ভাঙনে ঝুঁকিতে রয়েছে ৮ কোটি টাকার সোলার প্যানেল, মন্নিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মন্নিয়া উচ্চ বিদ্যালয়, দক্ষিণ মন্নিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চারটি মাদ্রাসা, আটটি মসজিদ, ফসলি জমি, বসতঘরসহ সরকারি-বেসরকারি নানা স্থাপনা। দ্রুত ভাঙ্গন রোধে ব্যবস্থা নিতে না পারলে মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে মন্নিয়ার চর গ্রাম। যমুনার ভাঙনে এর আগেও ওই এলাকার বিভিন্ন গ্রাম বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙন ঠেকাতে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছেন তারা।

মন্নিয়া উচ্চ বিদ্যালযের প্রধান শিক্ষক আমজাদ হোসেন বলেন, বিদ্যালয় থেকে মাত্র কয়েক শত গজ দূরে নদী। যেভাবে ভাঙন শুরু হয়েছে জরুরি ভিত্তিতে কোনো ব্যবস্থা না নিলে কয়েক দিনের মধ্যেই বিলীন হয়ে যেতে পারে একমাত্র ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানটি। যেখানে প্রায় ২৫০ জন শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছে। আমাদের ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানটি রক্ষা না হলে এ অঞ্চলে শিক্ষার মান পিছিয়ে যাবে।

শিক্ষার্থী শাকিল আহম্মেদ জানায়, এক মাস পর আমাদের ফাইনাল পরীক্ষা। প্রতিষ্ঠান যদি ভেঙে যায় তাহলে আমাদের পড়ালেখার মারাত্মক ক্ষতি হবে। শাকিল আহম্মেদ মতো একই আশঙ্কার কথা জানিয়েছে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী দিশামনি ও শহীদ মিয়া।

দক্ষিণ মন্নিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক শামসুন্নাহার খানম বলেন, আমার স্কুল থেকে কয়েকশ গজ দূরে নদীর অবস্থান। এই স্কুলে শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। আমরা ভাঙন রোধে স্থায়ী সমাধান চাই।

বেলগাছা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক আকন্দ বলেন, অসময়ে নদীভাঙন আমাদের জন্য বড় ক্ষতির কারণ হয়ে গেছে। এখনই যদি ভাঙন ঠেকাতে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া না হয় তাহলে একাধিক সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনা, ফসলি জমি ও বসতঘর নদী গ্রাস করে নেবে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মমতাজ আকন্দ বলেন, আমার নিজের বাড়ি গত কয়েক মাস আগে যমুনা নদীতে ভেঙেছে। এখন কোনোমতে টিকে রয়েছি। যেভাবে ভাঙন শুরু হয়েছে, তাতে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং ফসলি জমিসহ অসংখ্য বসতঘর নদীতে বিলীন হয়ে যাবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তৌহিদুর রহমান জানান, ভাঙনের বিষয়টি ইতোমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানানো হয়েছে। ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নকিবুজ্জামান বলেন, মন্নিয়াসহ আশপাশের কয়েকটি চরে যমুনা নদীর ভাঙন রোধে পদক্ষেপ নিতে সমীক্ষা কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। সেই সমীক্ষার প্রতিবেদন আমরা খুব দ্রুত প্রেরণ করবো। এরপর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে টেকসই কার্যক্রম বা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।


প্রিন্ট
ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ফরিদপুরে চেয়ারম্যানের শেল্টারে চায়না দুয়ারি জালের কারখানার রমরমা ব্যবসা, প্রশাসনের অভিযানে নিয়ন্ত্রণহীন অবস্থা

যমুনার তিন কিলোমিটারে তীব্র ভাঙন, বিলীন চার শতাধিক ঘরবাড়ি

আপডেট সময় ১০:৪৭:৫২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৫

যমুনার তিন কিলোমিটার এলাকায় তীব্র ভাঙন। ছবি:সময়ের কন্ঠ

যমুনা নদী ভাঙনে আতঙ্কে দিন কাটছে জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার বেলগাছা ইউনিয়নের মন্নিয়ার চর গ্রামের বাসিন্দাদের। গত কয়েক দিন থেকেই অসময়ে যমুনা তিন কিলোমিটারজুড়ে তীব্র ভাঙনে ইতোমধ্যে একটি মসজিদ, প্রায় শতাধিক একর জমি ও চার শতাধিক বসতঘরসহ অনেক স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

স্থানীয়রা জানান, প্রায় তিন কিলোমিটারজুড়ে তীব্র ভাঙনে ঝুঁকিতে রয়েছে ৮ কোটি টাকার সোলার প্যানেল, মন্নিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মন্নিয়া উচ্চ বিদ্যালয়, দক্ষিণ মন্নিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চারটি মাদ্রাসা, আটটি মসজিদ, ফসলি জমি, বসতঘরসহ সরকারি-বেসরকারি নানা স্থাপনা। দ্রুত ভাঙ্গন রোধে ব্যবস্থা নিতে না পারলে মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে মন্নিয়ার চর গ্রাম। যমুনার ভাঙনে এর আগেও ওই এলাকার বিভিন্ন গ্রাম বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙন ঠেকাতে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছেন তারা।

মন্নিয়া উচ্চ বিদ্যালযের প্রধান শিক্ষক আমজাদ হোসেন বলেন, বিদ্যালয় থেকে মাত্র কয়েক শত গজ দূরে নদী। যেভাবে ভাঙন শুরু হয়েছে জরুরি ভিত্তিতে কোনো ব্যবস্থা না নিলে কয়েক দিনের মধ্যেই বিলীন হয়ে যেতে পারে একমাত্র ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানটি। যেখানে প্রায় ২৫০ জন শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছে। আমাদের ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানটি রক্ষা না হলে এ অঞ্চলে শিক্ষার মান পিছিয়ে যাবে।

শিক্ষার্থী শাকিল আহম্মেদ জানায়, এক মাস পর আমাদের ফাইনাল পরীক্ষা। প্রতিষ্ঠান যদি ভেঙে যায় তাহলে আমাদের পড়ালেখার মারাত্মক ক্ষতি হবে। শাকিল আহম্মেদ মতো একই আশঙ্কার কথা জানিয়েছে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী দিশামনি ও শহীদ মিয়া।

দক্ষিণ মন্নিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক শামসুন্নাহার খানম বলেন, আমার স্কুল থেকে কয়েকশ গজ দূরে নদীর অবস্থান। এই স্কুলে শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। আমরা ভাঙন রোধে স্থায়ী সমাধান চাই।

বেলগাছা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক আকন্দ বলেন, অসময়ে নদীভাঙন আমাদের জন্য বড় ক্ষতির কারণ হয়ে গেছে। এখনই যদি ভাঙন ঠেকাতে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া না হয় তাহলে একাধিক সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনা, ফসলি জমি ও বসতঘর নদী গ্রাস করে নেবে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মমতাজ আকন্দ বলেন, আমার নিজের বাড়ি গত কয়েক মাস আগে যমুনা নদীতে ভেঙেছে। এখন কোনোমতে টিকে রয়েছি। যেভাবে ভাঙন শুরু হয়েছে, তাতে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং ফসলি জমিসহ অসংখ্য বসতঘর নদীতে বিলীন হয়ে যাবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তৌহিদুর রহমান জানান, ভাঙনের বিষয়টি ইতোমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানানো হয়েছে। ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নকিবুজ্জামান বলেন, মন্নিয়াসহ আশপাশের কয়েকটি চরে যমুনা নদীর ভাঙন রোধে পদক্ষেপ নিতে সমীক্ষা কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। সেই সমীক্ষার প্রতিবেদন আমরা খুব দ্রুত প্রেরণ করবো। এরপর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে টেকসই কার্যক্রম বা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।


প্রিন্ট