এনআরবি ইসলামিক লাইফ ইন্স্যুরেন্স, জীবন বিমা, দেউলিয়া, বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ
- আপডেট টাইম : ১২:৩৬:১৭ অপরাহ্ণ, সোমবার, ১৯ আগস্ট ২০২৪
- / ৪৫ ৫০০০.০ বার পাঠক
অনিয়মে ডুবতে বসেছে এনআরবি ইসলামিক লাইফ ইন্স্যুরেন্স
এনআরবি ইসলামিক লাইফ ইন্স্যুরেন্স ভ্রমণ, সম্মেলন ও সেমিনারেও অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করেছে। ফলে বিমা প্রতিষ্ঠানটির আর্থিক অবস্থা এমন অবস্থায় পৌঁছেছে, যেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানো সহজ হবে না।
এনআরবি ইসলামিক লাইফ ইন্স্যুরেন্স প্রতিষ্ঠার মাত্র তিন বছরের মধ্যেই বিভিন্ন ধরনের অনিয়মে জড়িয়ে পড়েছে। ২০২১ সালে গঠিত বিমা প্রতিষ্ঠানটি ব্যবস্থাপনা ব্যয় বাবদ নির্ধারিত সীমার চেয়ে অতিরিক্ত অর্থ খরচ করেছে। তারা গাড়ি কেনার ক্ষেত্রে অপরিণামদর্শীতার পরিচয় দিয়েছে।
এনআরবি ইসলামিক লাইফ ইন্স্যুরেন্স ভ্রমণ, সম্মেলন ও সেমিনারেও অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করেছে। ফলে বিমা প্রতিষ্ঠানটির আর্থিক অবস্থা এমন অবস্থায় পৌঁছেছে, যেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানো সহজ হবে না।
এছাড়া ব্যবস্থাপনা ব্যয়ের অনুমোদিত সীমা নির্ধারণে অনিয়মের আশ্রয় নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
এনআরবি ইসলামিক লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান কিবরিয়া গোলাম মোহাম্মদ ইতালিতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ শাখার প্রতিষ্ঠাতা এবং অল ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠা সাংগঠনিক সম্পাদক।
বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২১ থেকে ২০২৩ সালে কোম্পানিটি ব্যবস্থাপনা ব্যয়ের অনুমোদিত অতিরিক্ত সীমার ২১ কোটি ১৭ লাখ টাকা অতিক্রম করেছে, যা নির্ধারিত সীমার চেয়ে ১ দশমিক ৪৮ গুণ বেশি।
আইডিআরএ-এর গত ৩ জুনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩ সাল শেষে জীবন বিমা কোম্পানিটি পলিসিহোল্ডারদের কাছ থেকে ৮১ কোটি ৫১ লাখ টাকা প্রিমিয়াম আদায় করছে। কিন্তু লাইফ ফান্ডে আছে মাত্র মাত্র ১ কোটি ২০ লাখ টাকা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘লাইফ ফান্ডে অর্থ বিনিয়োগ করেছে এমন কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেনি কোম্পানিটি।’
লাইফ ফান্ড হলো এমন একটি ফান্ড যেখানে জীবন বিমার জন্য বিমা কোম্পানিগুলো অর্থ জমা দেয় ও বিনিয়োগ করে। কোনো গ্রাহকের মৃত্যু হলে এই ফান্ড থেকে অর্থ প্রদান করা হয়।
নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘সার্বিকভাবে কোম্পানিটির আর্থিক অবস্থা চরম ঝুকিপূর্ণ এবং এটি দেউলিয়া পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।’
এ অবস্থা থেকে উত্তরণে কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদকে জরুরি ও বাধ্যতামূলকভাবে প্রায় ২৪ কোটি টাকা দিতে হবে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
এনআরবি ইসলামিক লাইফ ইন্স্যুরেন্সের পরিশোধিত মূলধন ১৮ কোটি টাকা। তবে পুনরায় পূরণ করা হবে এমন শর্তে সেখান থেকে ৭ কোটি টাকা তুলে নিয়েছে কোম্পানিটি। অবশ্য সম্প্রতি এনআরবি ইসলামিক লাইফ পরিশোধিত মূলধনে ৩ কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে পেরেছে বলে আইডিআরএ’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
আইডিআরএ’র চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জয়নুল বারী সাংবাদিককে বলেন, পলিসিহোল্ডারদের কাছ থেকে যে প্রিমিয়াম আদায় করা হয়েছিল তা অবৈধভাবে ব্যয় করেছে এনআরবি ইসলামিক লাইফ ইন্স্যুরেন্স। পাশাপাশি লাইফ ফান্ডও গঠন করা হয়নি।
প্রতিবেদনে যেসব অনিয়ম উঠে এসেছে তার জবাব চাওয়া হয়েছে। জবাব পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে, বলেন তিনি।
যেভাবে অনিয়ম প্রকাশ্যে এলো
আইডিআরএ’র একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, এনআরবি ইসলামিক লাইফ ইন্স্যুরেন্স তার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার নিয়োগ নবায়নের প্রস্তাব পাঠানোর পর নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিট ও যথাযথ পরীক্ষা চালানোর সময় অনিয়মের তথ্য সামনে আসে।
নিয়ন্ত্রক সংস্থা এনআরবি ইসলামিক লাইফের পরিশোধিত মূলধন, প্রিমিয়াম আয়, সম্পদ, বিনিয়োগ এবং পলিসি তথ্যসহ কোম্পানির অতীত ব্যবসায়িক সাফল্য ও বিদ্যমান আর্থিক অবস্থা পর্যালোচনার জন্য বিভিন্ন তথ্য চেয়েছিল।
এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘কোম্পানির দেওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে আমরা বেশ কিছু অনিয়ম পেয়েছি। আমরা জানতে পেরেছি, কোম্পানিটি পলিসি হোল্ডারদের অর্থ যথেচ্ছভাবে ও আইন লঙ্ঘন করে ব্যয় করেছে।’
আইডিআরএ বলছে, সিঙ্গেল প্রিমিয়াম পলিসি নামক একটি স্কিমের দাবি নিষ্পত্তি করতে কোম্পানিটিকে ২০২৪-২৫ ও ২০২৮ সালে ৩৪ কোটি টাকা দিতে হবে। এই দাবি পরিশোধে এনআরবি লাইফ ইন্স্যুরেন্সকে ২৩ কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে হবে।
নিয়ন্ত্রক সংস্থা জানিয়েছে, এ ছাড়া ১০ বছর, ১২ ও ১৫ বছরের জন্য ‘ডাবল পেমেন্ট সিঙ্গেল প্রিমিয়াম প্ল্যান’ স্কিমের দাবি নিষ্পত্তির জন্য আরও বেশি অর্থ বিনিয়োগ করতে হবে।
আইডিআরএ বলছে, কোম্পানিটির ১৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকা ছাড়া অন্য কোনো বিনিয়োগ নেই। পরিশোধিত মূলধনের অর্থকে বিনিয়োগ হিসেবে ধরা হলে প্রিমিয়াম হিসেবে সংগ্রহ করা ৮২ কোটি টাকার মধ্যে কোনো বিনিয়োগ পাওয়া যাবে না। আর এ বিনিয়োগকে যদি লাইফ ফান্ডের প্রিমিয়াম আয়ের বিনিয়োগ হিসেবে বিবেচনা করা হয়, তাহলে পরিশোধিত মূলধন থেকে কোনো বিনিয়োগের অস্তিত্ব থাকে না।
আছে ‘নজিরবিহীন’ ৮৫ শাখা
২০২১ সালের ৬ মে একটি পূর্ণাঙ্গ ইসলামী জীবন বিমা কোম্পানি হিসেবে নিবন্ধিত হয় এনআরবি ইসলামিক লাইফ ইনস্যুরেন্স। তিন বছরে কোম্পানিটি ৮৫টি শাখা খুলেছে বলে নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
আইডিআরএ এই সম্প্রসারণকে ‘নজিরবিহীন’ বলে অভিহিত করেছে।
আইডিআরএ’র একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এর মধ্যে রোম ও নেপলসে দুটি শাখা রয়েছে। ফলে এনআরবি ইসলামিক লাইফ ইন্স্যুরেন্সই একমাত্র দেশীয় বিমা প্রতিষ্ঠান যাদের দেশের বাইরে শাখা রয়েছে।
আইডিআরএ’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘একটি নতুন কোম্পানির ৮৫টি শাখা থাকার ঘটনা নজিরবিহীন। এতে কোম্পানির পরিচালন ব্যয় বাড়বে।’
কোম্পানিটি আট ধরনের বিমা স্কিম বিক্রি করে।
যেভাবে বিপদগ্রস্ত হলো
এনআরবি ইসলামিক লাইফ ২০২১ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে সর্বোচ্চ ছয়টি গাড়ি কিনতে পারবে বলে নিয়ন্ত্রক সংস্থার নির্দেশনা ছিল। কিন্তু কোম্পানিটি সেই নির্দেশনা উপেক্ষা করে ওই সময়ে ৩৬টি প্রোটন গাড়ি কিনেছিল।
নতুন কোনো কোম্পানির ক্ষেত্রে এ ধরনের বিনিয়োগ কোম্পানির উত্থানে মারাত্মক বাধা সৃষ্টি করে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
উপরন্তু এসব সিদ্ধান্তের ফলে কোম্পানির পরিচালন ব্যয় উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে।
একটি নতুন গাড়ি ১০ বছর অনায়াসে চালানো গেলেও কোম্পানিটি বছরে ২০ শতাংশ হারে সম্পদের অবমূল্যায়ন করছে। তাই আগামী ৫ বছরে গাড়িটির বুক ভ্যালু শূন্যের কোঠায় নেমে আসবে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে আইডিআরএ।
‘ফলে ২০২১ সালে কেনা গাড়ির অবমূল্যায়ন বাদ দিলে ২০২৫ বা ২০২৬ সালে গাড়ির বুক ভ্যালু শূন্য হয়ে যাবে এবং সেগুলো বাজারে বিক্রি করা যাবে।’
এর পাশাপাশি যাতায়াত, কনফারেন্স ও সেমিনারের জন্য অপ্রয়োজনীয় খরচ করেছে কোম্পানিটি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব খাতে মোট ব্যয় হয়েছে প্রায় ৫ কোটি ৪৩ লাখ টাকা।
আইডিআরএ’র প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘নতুন একটি কোম্পানি সেমিনারে তিন কোটি টাকা এবং ভ্রমণে ২ কোটি ৪৩ লাখ টাকা ব্যয় করেছে, যা পলিসিহোল্ডারদের টাকা ভোগ করা ছাড়া আর কিছুই নয়। এভাবে অর্থ আত্মসাতের ব্যাপক সুযোগ তৈরি করেছে।’
এখন পর্যন্ত যে ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থার
বিমা আইন ২০১০ অনুযায়ী, এনআরবি ইসলামিক লাইফ ইন্স্যুরেন্স ব্যবসায়িক উন্নয়নবিরোধী ও পলিসি হোল্ডারদের স্বার্থবিরোধী কাজ করায় আইডিআরএ চাইলে তাদের নিবন্ধন স্থগিত বা বাতিল করতে পারত।
এছাড়া নিয়ন্ত্রক সংস্থা যদি মনে করে, কোনো বিমা কোম্পানি পলিসিহোল্ডারদের স্বার্থের বিরুদ্ধে কাজ করছে বা সলভেন্সি মার্জিনের শর্ত পূরণে ব্যর্থ হচ্ছে, তাহলে আইডিআরএ ওই কোম্পানিকে শুনানির সুযোগ দেওয়ার পর পরিচালনা পর্ষদ সাময়িক বরখাস্ত করতে পারে। পাশাপাশি কোম্পানির কার্যক্রম পরিচালনার জন্য একজন প্রশাসক নিয়োগ দিতে পারে।
তবে এ ধরনের কোনো সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ না নিয়ে সম্প্রতি এনআরবি ইসলামিক লাইফের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হিসেবে শাহ জামাল হাওলাদারকে পুনঃনিয়োগের প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
আইডিআরএ থেকে কোম্পানিটির কাছে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, ‘কোম্পানির প্রস্তাবিত সিইও তার শেষ মেয়াদে কোম্পানি ও পলিসি হোল্ডারদের স্বার্থবিরোধী কাজ করেছেন।’
এছাড়া আইডিআরএকে ভুল তথ্য দিয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে বিভ্রান্ত করারও অভিযোগ করা হয়েছে শাহ জামাল হাওলাদারের বিরুদ্ধে।
এ বিষয়ে জানতে গত ৮ জুলাই অনলাইনে ই-মেইল ও ফোনকলের মাধ্যমে কিবরিয়া গোলাম মোহাম্মদ ও শাহ জামাল হাওলাদারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে। কিন্তু তাদের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
কে এই কিবরিয়া গোলাম মোহাম্মদ
এনআরবি ইসলামিক লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান কিবরিয়া গোলাম মোহাম্মদ। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনে ডিগ্রি লাভের পর ইতালির রোমে নয়টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন।
তিনি ১৯৯৮ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত সর্বোচ্চ করদাতাদের একজন হওয়ায় ইতালি সরকারের কাছ থেকে সম্মানসূচক সনদও পেয়েছিলেন। ব্যবসা ছাড়াও বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইতালির প্রতিষ্ঠাতা কিবরিয়া গোলাম মোহাম্মদ।
পুরো বিষয়ে মন্তব্য জানতে দ্য ডেইলি স্টার বারবার কিবরিয়া গোলাম মোহাম্মদ ও শাহ জামাল হাওলাদারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছে। তাদের ফোনে কল করা হয়েছে ও ক্ষুদে বার্তা পাঠানো হয়েছে। কিন্তু তারা কোনো জবাব দেননি।
এমনকি তাদের ই-মেইল পাঠানো হয়েছে, কিন্তু তারা কোনো উত্তর পাঠাননি।
আইডিআরএ’র মুখপাত্র জাহাঙ্গীর আলম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থা সার্বিক বিষয়ে জানতে কোম্পানির বিশ্লেষণাত্মক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করছে। তিনি আরও বলেন, কোম্পানির পর্ষদ থেকে এসব অনিয়মের ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে, সে কারণেই গত ৪ জুলাই তাদের অনিয়মের প্রসঙ্গ তুলে ধরে একটি চিঠি পাঠানো হয়।
এনআরবি ইসলামিক লাইফ ইন্স্যুরেন্সের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বিমা কোম্পানিটি চিঠির জবাব দিতে নিয়ন্ত্রকের কাছে আরও সময় চেয়েছে। চলতি মাসের শেষের দিকে জবাব পাঠানো যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
পলিসি বন্ধের হার বাড়ছে
এনআরবি ইসলামিক লাইফ ইন্স্যুরেন্সের পলিসি বন্ধের সংখ্যাও বাড়ছে। আইডিআরএ’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২২ সালে প্রতিষ্ঠানটির মোট পলিসির ৪১ শতাংশ বন্ধ হয়ে যায় এবং ২০২৩ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৩ শতাংশে।
২০২৪ সালের এপ্রিল শেষে কোম্পানিটির পলিসিহোল্ডারের সংখ্যা ছিল ২৭ হাজার ৩৮৭ জন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. মাঈন উদ্দিন বলেন, প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এনআরবি ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের মালিকানা কাঠামোর অংশ হওয়ায় এত বড় অনিয়ম করতে পেরেছেন।
তিনি বলেন, যে বিমা কোম্পানিটি এমন ভয়াবহ আর্থিক সংকটে রয়েছে, তাদের দেশের বাইরে শাখাগুলো ভালোভাবে মনিটর করা উচিত।
তার ভাষ্য, ‘বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের উচিত কোম্পানিটি অর্থপাচারের সঙ্গে জড়িত কিনা তা খতিয়ে দেখা। তাদের দেশের বাইরে থাকা শাখা দুটি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে।’
‘মাত্র তিন বছর পর যদি কোনো কোম্পানি এমন পরিস্থিতিতে পড়ে, তাহলে নিয়ন্ত্রক সংস্থা কী ধরনের ভূমিকা পালন করছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে,’ যোগ করেন তিনি।
অধ্যাপক মো. মাঈন উদ্দিন মন্তব্য করেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থা যদি মনে করে কোনো কোম্পানি টেকসই নয়, তাহলে তাদের উচিত সেটি বন্ধ করে দেওয়া। যদিও বাংলাদেশে সচরাচর এ ধরনের উদ্যোগ নিতে দেখা যায় না।
‘তবে সরকার যদি তা করতে না পারে, তাহলে কোম্পানিটিকে দ্রুত এ অবস্থা থেকে বের করে আনতে তাদের কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত,’ বলেন তিনি।
উল্লেখ্য, বর্তমানে দেশে ৩৬টি লাইফ ও ৪৬টি নন-লাইফ বিমা কোম্পানি রয়েছে।
(এই প্রতিবেদনটি ইংরেজি থেকে ভাষান্তর করেছেন