ঢাকা ১২:০৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫, ১ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo চট্টগ্রাম সিইপিজেডে আল হামিদ টেক্সটাইল ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড Logo পিআর নিয়ে গণভোটে অনড় জামায়াত, মানলেই জুলাই সনদে স্বাক্ষর Logo ৫ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও ইপিজেডের আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি, ভেঙে পড়ছে দেয়াল Logo ভাঙ্গুড়ায় আড়াই লক্ষ টাকার নিষিদ্ধ চায়না দুয়ারী জাল পুড়িয়ে ধ্বংস Logo বরগুনার তালতলীতে সুশীলনের উদ্যোগে নারীদের মাঝে কৃষি উপকরণ বিতরণ, Logo মহম্মদপুরে শহীদ আবীর হোসেন দিবস পালিত Logo কালিয়াকৈরে জমির দলিল জালিয়াতির অভিযোগ Logo অতিরিক্ত নম্বর দিয়ে সন্তুষ্টি নয়, ন্যায্য নম্বর দিয়ে সততাকে বেছে নিয়েছি Logo হাসিনার অর্থ জোগানদাতা কে এই দিলীপ, তার কারামুক্তির নেপথ্যে কারা? Logo HSC Result 2025 : কোন বোর্ডে পাশের হার কত শতাংশ? জিপিএ-৫ কত?

অভিযোগের পাহাড়ে বিদ্যুৎ শ্রমিক লীগ নেতা প্রবীর দাশ গ্রেপ্তার

চট্টগ্রাম: নানা অপরাধ আর দুর্নীতির অভিযোগের জালে অবশেষে পুলিশের হাতে ধরা পড়লেন জাতীয় শ্রমিক লীগ ইপিজেড থানা কমিটির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও বিদ্যুৎ শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রবীর দাশ (৪৮)।

শনিবার রাতে ইপিজেড থানার এসআই মোঃ শাহাদাত হোসেনের নেতৃত্বে বিশেষ অভিযানে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ জামির হোসেন জিয়া। অভিযানটি পরিচালিত হয় সিএমপি বন্দর বিভাগের উপ–পুলিশ কমিশনার (বন্দর) মোঃ আমিরুল ইসলামের সার্বিক নির্দেশনা, অতিরিক্ত উপ–কমিশনার সোহেল পারভেজ ও সহকারী কমিশনার মাহমুদুল হাসানের তত্ত্বাবধানে।

ইপিজেড থানার মামলা নং–২৪, তারিখ–২৮/০৪/২০২৫ খ্রিঃ, ধারা–সন্ত্রাস বিরোধী আইন ২০০৯ (সংশোধনী ২০১৩) এর বিভিন্ন ধারায় আসামি হিসেবে নাম থাকায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

প্রবীর দাশের বিরুদ্ধে ইপিজেড ও পতেঙ্গা থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। ২০২৪ সালে থানা ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মামলায় তিনি এজাহারভুক্ত আসামি। রাজনৈতিক তৎপরতা ও প্রভাব খাটিয়ে তিনি দীর্ঘদিন ধরেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাত এড়িয়ে চলছিলেন।

অন্যদিকে বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তা–কর্মচারীদের সঙ্গে আঁতাত করে গ্রাহকের টাকা আত্মসাৎ, ভুয়া বিল ভাউচার তৈরি, মিটার রেটিং চুরি এবং শত শত পরিবারকে প্রতারণার শিকার করার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

নিউমুরিং এলাকার বাসিন্দা মামুন জানান, প্রবীর দাশ তার কাছ থেকে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা নিলেও বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান করেননি, বরং সরাসরি প্রতারণা করেছেন।

বর্তমানে পতেঙ্গা স্টিল মিলস বিদ্যুৎকেন্দ্রে লাইনম্যান হিসেবে কর্মরত প্রবীর দাশের বিরুদ্ধে সেখানেও দুর্নীতি ও অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া গেছে। ঐ প্রতিষ্ঠানের একাউন্টস ম্যানেজার বলেন, “তার আর্থিক অনিয়ম ধরা পড়ায় কয়েক মাস ধরে বেতন বন্ধ রাখা হয়েছিল।”

বিদ্যুৎ বিভাগের সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন কর্মে অনুপস্থিত থাকার কারণে তাকে একাধিকবার নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি তা উপেক্ষা করেন। বরং বিদ্যুৎ শ্রমিক লীগের অফিসকে ব্যক্তিগত ও অনৈতিক কাজে ব্যবহার করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

প্রবীর দাশের গ্রেপ্তারের খবরে এলাকাবাসী স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। স্থানীয় বাসিন্দা রহিম উদ্দিন বলেন, “বিদ্যুতের নামে মানুষকে হয়রানি করে তিনি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। অবশেষে তার গ্রেপ্তারে ভুক্তভোগীরা ন্যায়বিচারের কিছুটা আশা দেখতে পাচ্ছে।”


প্রিন্ট
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

চট্টগ্রাম সিইপিজেডে আল হামিদ টেক্সটাইল ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড

অভিযোগের পাহাড়ে বিদ্যুৎ শ্রমিক লীগ নেতা প্রবীর দাশ গ্রেপ্তার

আপডেট সময় ০৬:৫৭:১৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩১ অগাস্ট ২০২৫

চট্টগ্রাম: নানা অপরাধ আর দুর্নীতির অভিযোগের জালে অবশেষে পুলিশের হাতে ধরা পড়লেন জাতীয় শ্রমিক লীগ ইপিজেড থানা কমিটির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও বিদ্যুৎ শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রবীর দাশ (৪৮)।

শনিবার রাতে ইপিজেড থানার এসআই মোঃ শাহাদাত হোসেনের নেতৃত্বে বিশেষ অভিযানে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ জামির হোসেন জিয়া। অভিযানটি পরিচালিত হয় সিএমপি বন্দর বিভাগের উপ–পুলিশ কমিশনার (বন্দর) মোঃ আমিরুল ইসলামের সার্বিক নির্দেশনা, অতিরিক্ত উপ–কমিশনার সোহেল পারভেজ ও সহকারী কমিশনার মাহমুদুল হাসানের তত্ত্বাবধানে।

ইপিজেড থানার মামলা নং–২৪, তারিখ–২৮/০৪/২০২৫ খ্রিঃ, ধারা–সন্ত্রাস বিরোধী আইন ২০০৯ (সংশোধনী ২০১৩) এর বিভিন্ন ধারায় আসামি হিসেবে নাম থাকায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

প্রবীর দাশের বিরুদ্ধে ইপিজেড ও পতেঙ্গা থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। ২০২৪ সালে থানা ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মামলায় তিনি এজাহারভুক্ত আসামি। রাজনৈতিক তৎপরতা ও প্রভাব খাটিয়ে তিনি দীর্ঘদিন ধরেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাত এড়িয়ে চলছিলেন।

অন্যদিকে বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তা–কর্মচারীদের সঙ্গে আঁতাত করে গ্রাহকের টাকা আত্মসাৎ, ভুয়া বিল ভাউচার তৈরি, মিটার রেটিং চুরি এবং শত শত পরিবারকে প্রতারণার শিকার করার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

নিউমুরিং এলাকার বাসিন্দা মামুন জানান, প্রবীর দাশ তার কাছ থেকে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা নিলেও বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান করেননি, বরং সরাসরি প্রতারণা করেছেন।

বর্তমানে পতেঙ্গা স্টিল মিলস বিদ্যুৎকেন্দ্রে লাইনম্যান হিসেবে কর্মরত প্রবীর দাশের বিরুদ্ধে সেখানেও দুর্নীতি ও অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া গেছে। ঐ প্রতিষ্ঠানের একাউন্টস ম্যানেজার বলেন, “তার আর্থিক অনিয়ম ধরা পড়ায় কয়েক মাস ধরে বেতন বন্ধ রাখা হয়েছিল।”

বিদ্যুৎ বিভাগের সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন কর্মে অনুপস্থিত থাকার কারণে তাকে একাধিকবার নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি তা উপেক্ষা করেন। বরং বিদ্যুৎ শ্রমিক লীগের অফিসকে ব্যক্তিগত ও অনৈতিক কাজে ব্যবহার করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

প্রবীর দাশের গ্রেপ্তারের খবরে এলাকাবাসী স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। স্থানীয় বাসিন্দা রহিম উদ্দিন বলেন, “বিদ্যুতের নামে মানুষকে হয়রানি করে তিনি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। অবশেষে তার গ্রেপ্তারে ভুক্তভোগীরা ন্যায়বিচারের কিছুটা আশা দেখতে পাচ্ছে।”


প্রিন্ট