বিদ্যুৎ সংকটের দায় জ্বালানি উপদেষ্টা এড়াতে পারেন না বাংলাদেশ ন্যাপ
- আপডেট টাইম : ১১:০৩:১১ পূর্বাহ্ণ, বুধবার, ২৬ অক্টোবর ২০২২
- / ১৭৮ ৫০০০.০ বার পাঠক
বিদ্যুৎ সংকট নিয়ে সম্প্রতি বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টার ‘অসহায়ত্ব’ ও ‘দিনে বিদ্যুৎ বন্ধ রাখার’ বক্তব্যকে জনগণের সাথে তামাশা হিসাবে আখ্যায়িত করে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সংকটের দায় জ্বালানি উপদেষ্টা এড়াতে পারেন না। মনে রাখরেত হবে সরকারের লুটেরা, কমিশনভোগী ও গোষ্ঠী স্বার্থে নেওয়া ভুলনীতি ও দুর্নীতির কারণে আজ বিদ্যুৎখাতের বর্তমান বিপর্যয়। এই সকল ভুলনীতি গ্রহনে জ্বালানি উপদেষ্টাও অন্যতম উদ্যোক্তা।
বুধবার (২৬ অক্টোবর) গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে এই সব কথা বলেন।
তারা বলেন, এক দশকের বেশি সময় ধরে বিদ্যুৎ খাতে যে ভর্তুকির বন্যা বইয়ে দেওয়া হলো, তার পরিণতি কেন এমন হলো? এ প্রশ্ন উঠেছে যৌক্তিক কারণেই। এই ভর্তুকির পরিমাণ যেনতেন নয় যে তা সহজেই ভুলে যাওয়া যাবে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সংকটের অন্যতম দায়ী জ্বালানি উপদেষ্টা জনগনের সাথে রসিকতামূলক বক্তব্য দেয়াংর পরও কিভাবে উপদেষ্টা পদে বহাল রয়েছেন জনমনে সেই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
নেতৃদ্বয় বলেন, এক দশকের বেশি সময় ধরে উন্নয়নের যে কাহিনি শোনানো হয়েছে, প্রবৃদ্ধির পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, তার দৃশ্যমান স্তম্ভ হচ্ছে দুটি নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ–সরবরাহ এবং অবকাঠামো তৈরি। সরকারের উন্নয়নদর্শনের মোট কথা হচ্ছে দৃশ্যমান বিষয়ে মনোনিবেশ। এগুলোয় সাফল্য মানেই তাদের শাসন সফল। এখন বিদ্যুৎ–সংকটের সবটাই আন্তর্জাতিক বাজার এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কিন্ত গত বছরগুলোয় সরকারের জ্বালানিনীতির বিষয়ে আলোচনায় এই খাতে যে অভাবনীয় লুণ্ঠনের ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং এর পরিণতি যে ভালো হবে না, সেটা বারবার স্মরণ করিয়ে দেওয়া হলেও সরকার তাতে কর্ণপাত করেনি।
তারা বলেন, বিদ্যুৎ সংকট মোকাবেলায় লোডশেডিং সাময়িক সমাধান হলেও দীর্ঘমেয়াদে সুফল আনবে না। বরং জ্বালানি খাতের সংস্কার, স্বচ্ছতা ও গ্যাস-কয়লার মতো নিজস্ব সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিতের প্রতি জোর দিতে হবে।
নেতৃদ্বয় বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়েছে যে- বহু বেসরকারি ভাড়া বিদ্যুৎকেন্দ্র মিথ্যা সক্ষমতার বিপরীতে অলস থেকে রাষ্ট্রের বাজেট বরাদ্দ হাতিয়ে নিচ্ছে। এসব কেন্দ্রের অনেকগুলো উৎপাদনে যেতেই অক্ষম। মালিকরা সরকারের প্রভাবশালী মহলের সাথে আঁতাত করে দুর্বৃত্তপ্রক্রিয়ায় ভাড়াভিত্তিক ভুয়া বিদ্যুৎকেন্দ্রের সক্ষমতা দেখাচ্ছেন, যা দেশের স্বাভাবিক ও জরুরি প্রয়োজনে কোনোই কাজে আসছে না।
তারা বলেন, দেশে কিছু দিন ধরে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সঙ্কট এবং এর ফলে মানুষের দুর্ভোগ চলছে। সরকার এক ঘণ্টা করে ঘোষণা দিয়ে লোডশেডিং চাপিয়ে দিলেও সেটি ক্রমেই দুই ঘণ্টা এবং এখন পাঁচ-ছয় ঘণ্টায় পৌঁছে যাচ্ছে। শিল্পকারখানায় উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। শ্রমিক ছাঁটাই হতে শুরু করেছে। মানুষ চাকরি হারাচ্ছে। বৈদেশিক মুদ্রা আহরণের সবচেয়ে বড় খাত যে তৈরী পোশাক, এরও উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে লোডশেডিংয়ের কারণে। এমনই এক সময়ে মানুষ যখন সরকারের পক্ষ থেকে সমাধানের আশা করছে তখন সরকারের জ্বালানি উপদেষ্টা কি বার্তা দিলেন ?
নেতৃদ্বয় বলেন, জনমনে প্রশ্ন জ্বালানি উপদেষ্টার পরামর্শেই বিদ্যুৎ খাতের সমস্ত কর্মকাণ্ড চালানো হয়েছে। জ্বালানি তেলের জন্য যদি বিদ্যুৎ খাতে বিপর্যয় দেখা দিয়ে থাকে সেটিও তারই ব্যর্থতা। তিনি কেন এমন পরামর্শ দেননি যাতে সঙ্কট দেখা দেয়ার মতো পরিস্থিতির উদ্ভব হবে না। জ্বালানি উপদেষ্টাও যে বিন্দুমাত্র লজ্জিত বা অনুতপ্ত না হয়ে প্রকাশ্য সভামঞ্চে দাঁড়িয়ে বলতে পারেন, ‘দেশবাসীর ধৈর্য ধরার কোনো বিকল্প নেই’, এটি অবিশ্বাস্য। এটি শুধু অগ্রহণযোগ্য নয়, অমার্জনীয়ও।