★ রাজধানীর মিরপুরে  একাধিক ফ্ল্যাট ক্রয়।
★ নিজ এলাকা মৌলভীপাড়া সিরাজগঞ্জে বিলাসবহুল বাড়ি নির্মাণাধীন ও কোটি টাকার জমিজমা ক্রয়।
★ কোটি টাকা খরচ করে এক মেয়েকে ডাক্তারী ও অন্য মেয়েকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করেছেন। ছবি ।সময়ের কন্ঠ 
বিশেষ কোন পেশা নেই। নেই পারিবারিক তেমন কোন অর্থ সম্পদ। পরিচয় দেন কখনো সাংবাদিক, কখনো ম্যাজিষ্ট্রেট, কখনোবা ভিন্ন কিছু। এমনি একজন কুখ্যাত প্রতারক সাইফুল আলম ভূইয়া পারভেজ। তার প্রতারণার ফাঁদে পড়ে সর্বস্ব হারিয়েছেন অনেকেই। ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগের দোসর সাংবাদিক নেতা সাবান মাহমুদের ছত্রছায়ায় অসংখ্য মানুষের সাথে প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। তার প্রতারণার ছোবল থেকে রক্ষা পায়নি বিএনপি পন্থি সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদও। তিনি সাধারণত টাকা পয়সা আছে এমন ব্যক্তি টার্গেট করে সুকৌশলে তার সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন করতে থাকেন। গোলগাল ভদ্রবেশী চেহারা ও কৌশলী হওয়ায় কোনরূপ সন্দেহই করতে পারেননা পারভেজের টার্গেটকৃত ব্যক্তি। টার্গেটকৃত ব্যক্তিকে পারভেজ নামাজ-কালাম ও হাদিস-কুরআনের বয়ান দিয়ে তার হৃদয়ে জায়গা করে নেন। এভাবে টার্গেটকৃত ব্যক্তির সাথে পারভেজ প্রতিনিয়ত যোগাযোগের মাধ্যমে তার দূর্বলতা বুজে টোপ ফেলেন। টোপ গিল্লেই ছলে বলে কৌশলে তার কাছ থেকে হাতিয়ে নেন লাখ লাখ টাকা। সম্প্রতি বিএসএমএমইউ এর একজন ডাক্তার পারভেজের প্রতারণার শিকার হয়ে ২০,০০০০০/-(বিশ লাখ) টাকা খুঁইয়েছেন বলে অনুসন্ধানে উঠে এসেছে। ভুক্তভোগী ডাক্তারের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, তার ছোট বোন জামাই শহিদুজ্জামান ভূইয়া ওরফে বাবলু এর আপন চাচাতো ভাই পারভেজ। গত অনুমান ০২(দুই) বছর পূর্বে পারভেজ চিকিৎসা নিতে আসার কারণে আমার সাথে পরিচয় হয়। পরিচয়ের একপর্যায়ে পারভেজ নিজেকে একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকার সাংবাদিক পরিচয় দেয় এবং একটি কার্ড দেয়। আমার কর্মস্থলে সে চিকিৎসা নিতে আসা যাওয়া করার কারণে প্রায় সময় সে আমার চেম্বারে আসতো এবং সে খুবই ধার্মিক হিসেবে নিজেকে প্রকাশ করতো। একপর্যায়ে সে পূর্বাচলে রাজউকের ০৩(তিন)টি প্লট পেয়েছে বলে জানায়। তাদের সাংবাদিক সমিতির অনুমতি সাপেক্ষে তার ০৩(তিন)টি প্লট হতে আমাকে একটি প্লট দিবে বলে বিভিন্ন ধরনের প্রস্তাব দিতে থাকে। পারভেজ আমার ছোট বোন জামাইয়ের চাচাতো ভাই হওয়ায় এবং সে নিজে ধার্মিক ও সাংবাদিক হওয়ায় আমি তাকে বিশ্বাস করে তার নিকট হতে ০১(এক)টি প্লট কেনার জন্য রাজি হইলে পারভেজ ১৩/০৫/২০২৩ খ্রি. হতে ৩০/০৭/২০২৩ খ্রি. তারিখের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে প্লটের ক্রয়ের কিস্তি বাবদ, বিদ্যুৎ ও গ্যাস লাইন বাবদ এবং ধার হিসেবে সর্বমোট নগদ ২০,০০০০০/- (বিশ লাখ) টাকা নেয়। আমি তখন তাকে টাকা নেওয়ার পেপার চাইলে সে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্লটের কাগজপত্রসহ আমার নিকট হতে টাকা নেওয়ার সকল পেপার আমাকে বুঝিয়ে দিবে বলে অঙ্গীকার করে। একপর্যায়ে পারভেজ আমার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দিলে আমি তার পত্রিকা অফিসসহ বিভিন্নভাবে খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারি সে একজন প্রতারক। সে সাংবাদিকতাসহ বিভিন্ন পরিচয় দিয়ে লোকজনের নিকট হতে প্রতারণামূলকভাবে টাকা পয়সা আত্মসাৎ করে বেড়ায়। আমি পারভেজকে মোবাইল ফোনে এবং আমার ছোট বোন জামাইয়ের মাধ্যমে আমার টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য বারবার অনুরোধ করলে সে বিভিন্ন ধরনের তালবাহানা করতে থাকে। গত ০৭/০২/২০২৫ খ্রি. তারিখ আনুমানিক ১১:৪৫ ঘটিকায় আমি পারভেজের ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারে ম্যাসেজ দিয়ে আমার টাকা ফেরত চাইলে সে আমাকে ফোন করে টাকা ফেরত দিবে না বলে বিভিন্ন ধরনের হুমকি প্রদান করেন। শেষ আমি শাহবাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করতে বাধ্য হয়েছি। এছাড়া পারভেজ ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরিদর্শক আরিফের নিকট থেকে ১৫,০০০০০/-(পনের লাখ), মুগদা এলাকার মনিরুজ্জামানের নিকট থেকে ৫,০০০০০/-(পাঁচ লাখ), রাজউকের দুইজন কর্মকর্তার নিকট থেকে যথাক্রমে ১২,০০০০০/-(বার লাখ) ও ৮৫,০০০০০/-(পঁচাশি লাখ) টাকা, এমনকি তার আপন চাচাতো ভাই শহিদুজ্জামানের নিকট থেকেও ২,০০০০০/-(দুই লাখ) টাকা বিভিন্ন কৌশলে প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছেন যা সরেজমিনে অনুসন্ধান করলে এসব তথ্য উঠে আসে। এছাড়া পারভেজ বেশ কয়েক বছর আগে মিরপুর পল্লবীতে ম্যাজিষ্ট্রেট পরিচয়ে প্রতারণা করতে গিয়ে পাবলিকের কাছে ধরা খেয়ে উত্তম-মাধ্যমের শিকার হন ও পরবর্তীতে তাকে থানায় সোপর্দ করা হয়। পারভেজের প্রতারণার বিষয়ে একাধিক ভুক্তভোগীর সাথে কথা বলে জানা যায়, পারভেজ কখনো রাজউকের প্লট বরাদ্দ, কখনো গাড়ীর শোরুমের মালিক সেজে প্রাইভেট কার বিক্রি, কখনোবা মানুষের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের কথা বলে এসব টাকা পয়সা হাতিয়ে নিয়েছেন। ভুক্তভোগীর কেউ কেউ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার প্রস্তুতি গ্রহণ করছেন। এছাড়া পারভেজ ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকার টিকিয়ে রাখতে ও গণআন্দোলন প্রতিহত করতে লাখ লাখ টাকা খরচ করেছেন। এমনকি তিনি নিজে আন্দোলন প্রতিহত করতে বিভিন্ন মিছিল মিটিংয়ে অংশগ্রহণ করেছেন যা অনুসন্ধানকালে একাধিক সূত্র দাবি করেছেন। এছাড়া পারভেজ প্রতারণার টাকায় রাজধানীর মিরপুরে একাধিক ফ্ল্যাট ক্রয় করেছেন, নিজ এলাকা মৌলভীপাড়া সিরাজগঞ্জে বিলাসবহুল বাড়ি নির্মাণাধীন ও কোটি টাকার জমিজমা ক্রয় করেছেন এবং তিনি কোটি টাকা খরচ করে এক মেয়েকে ডাক্তারী ও অন্য মেয়েকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করেছেন। প্রতারণার টাকায় পারভেজের অবৈধ সম্পদের ব্যাপারে সেগুনবাগিচায় দূদক কার্যালয়ে যোগাযোগ করলে দূদকের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বিভিন্ন অভিযোগের ব্যাপারে কথা বলতে পারভেজের মোবাইলে একাধিকবার ফোন করলে তিনি ফোন ধরেননি। এমনকি পরিচয় দিয়ে ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েও তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
প্রিন্ট
																			
																অনুসন্ধান রিপোর্টার								 




















