ঢাকা ০২:৫৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ২০ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo ফরিদপুরে চেয়ারম্যানের শেল্টারে চায়না দুয়ারি জালের কারখানার রমরমা ব্যবসা, প্রশাসনের অভিযানে নিয়ন্ত্রণহীন অবস্থা Logo রয়টার্সের প্রতিবেদন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সালিশের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে আদানি গ্রুপ Logo টানা কমছে দেশের রপ্তানি আয়, সামনে আরও কমার আশঙ্কা Logo বিএনপির ফাঁকা রাখা ৬৩ আসনে অগ্রাধিকার পাবেন যারা Logo আরপিও সংশোধন অধ্যাদেশ জারি জোট করলেও নিজ দলের প্রতীকেই ভোট করতে হবে Logo আশুলিয়া সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে ৬ দলিল লেখক বরখাস্ত Logo সাভারে ট্রলি ভ্যানের ব্রেক ফেল আয়ারল্যান্ডের ওপরে এসে গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ Logo তৌহিদুল ইসলাম এর বিরুদ্ধে ঘুষ বানিজ্যের অভিযোগ Logo ৪৮ তম বিসিএস পরীক্ষায় উওীর্ণদের নিয়োগ এর দাবি তে মানববন্ধন Logo বিএনপির প্রার্থী তালিকায় নেই রুমিন ফারহানার পদত্যাগ করেন

প্রায় দেড় যুগ পর ঠাকুরগাঁওয়ে মন্দিরের ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার// ব্যস্ত কুমোরটলির প্রতিমাশিল্পীরা, চলছে পূজার আয়োজন

প্রায় দেড় যুগ পর ঠাকুরগাঁওয়ের ঐতিহাসিক রসিক রায় জিউ মন্দির থেকে ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করা হয়েছে। দীর্ঘ সময়ের পর এই অচলাবস্থা ভেঙে এ বছর প্রশাসনের উদ্যোগে দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা করা হয়। এরপর স্থানীয় প্রশাসন ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করে মন্দির প্রাঙ্গণে দুর্গাপূজা আয়োজনের অনুমতি দিয়েছে। বর্তমানে এই মন্দির এলাকায় মূর্তি তৈরি ও মন্ডপ সাজসজ্জার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা শিল্পীরা।

জানা যায়, ২০০৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর সদর উপজেলার আউলিয়াপুরে শ্রীশ্রী রসিক রায় জিউ মন্দিরে দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে সনাতনী ও ইসকনপন্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে মন্দিরের সেবায়েত ফুলবাবু নির্মমভাবে নিহত হন। তখন থেকেই দুর্গাপূজার সময় মন্দির এলাকায় জারি ছিল প্রশাসনের ১৪৪ ধারা। এ বছর প্রশাসনের উদ্যোগে দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হয়। স্থানীয় প্রশাসন ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করে অনুমতি দিয়েছে মন্দির প্রাঙ্গণে দুর্গাপূজা আয়োজনের। দীর্ঘ প্রায় দেড় যুগ পর এই মন্দিরে আবারও দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হওয়ায় ভক্ত ও স্থানীয়রা ভীষণ আনন্দিত।

স্থানীয় বাসিন্দা মৃগেণ চন্দ্র বলেন, “ প্রায় দেড় যুগ বা ১৬টা বছর আমরা অন্যের মন্দিরে পূজা করেছি। নিজেদের মন্দিরে পূজা করতে না পারাটা আমাদের জন্য অনেক বড় কষ্টের ছিল। অবশেষে আমরা আমাদের মন্দিরে পূজা আয়োজনের সুযোগ পেয়েছি।”

বিকাশ রায় নামের স্থানীয় এক যুবক বলেন, “আমার বয়স এখন প্রায় ২১ বছর। এ মন্দিরে সর্বশেষ যখন পূজা হয়, তখন আমি খুব ছোটো। সে পূজার কথা আমার মনে নেই। বুঝতে শেখার পর থেকে এখানে তালা ঝুলতে দেখেছি আর বাবার কাছে শুনেছি এখানে অনেক বড় পূজার আয়োজন হতো। এসব শুনে আমার সে পূজো দেখতে খুব ইচ্ছে করতো। এবার আমার সে ইচ্ছে পূরণ হবে।

ঠাকুরগাঁও রসিক রায় জিউ মন্দিরের সেবায়েত অপু সরকার বলেন, ২০০৯ সালের সেই ঘটনাই আমাদের হৃদয়ে গভীর ক্ষত সৃষ্টি করেছিল। ফুলবাবুর মৃত্যুতে মন্দিরে এক দুঃসহ পরিস্থিতি তৈরি হয়। তখন থেকে পূজা বন্ধ ছিল। দীর্ঘ প্রায় দেড় যুগের কাছাকাছি সময় পর আমরা আবারো এখানে পূজা করতে পারছি তাই আমরা আয়োজনে কোনো কমতি রাখছি না। অনেক বড় ও জমকালো আয়োজন হবে আশা করছি।”

পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলাম জানান, “দীর্ঘ ১৬ বছরের প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে রসিক রায় জিউ মন্দিরে এবারের দুর্গোৎসব হয়ে উঠেছে আনন্দ উচ্ছ্বাসে ভরা এক মহোৎসব। প্রশাসনের সহযোগিতা ও দুই পক্ষের সমঝোতায় যে উৎসবের দ্বার খুলেছে, তা শান্তি ও সম্প্রীতির বন্ধনকে আরো সুদৃঢ় করে তুলবে বলে আমি বিশ্বাস করি।


প্রিন্ট
ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ফরিদপুরে চেয়ারম্যানের শেল্টারে চায়না দুয়ারি জালের কারখানার রমরমা ব্যবসা, প্রশাসনের অভিযানে নিয়ন্ত্রণহীন অবস্থা

প্রায় দেড় যুগ পর ঠাকুরগাঁওয়ে মন্দিরের ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার// ব্যস্ত কুমোরটলির প্রতিমাশিল্পীরা, চলছে পূজার আয়োজন

আপডেট সময় ০৫:৩২:৩৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

প্রায় দেড় যুগ পর ঠাকুরগাঁওয়ের ঐতিহাসিক রসিক রায় জিউ মন্দির থেকে ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করা হয়েছে। দীর্ঘ সময়ের পর এই অচলাবস্থা ভেঙে এ বছর প্রশাসনের উদ্যোগে দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা করা হয়। এরপর স্থানীয় প্রশাসন ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করে মন্দির প্রাঙ্গণে দুর্গাপূজা আয়োজনের অনুমতি দিয়েছে। বর্তমানে এই মন্দির এলাকায় মূর্তি তৈরি ও মন্ডপ সাজসজ্জার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা শিল্পীরা।

জানা যায়, ২০০৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর সদর উপজেলার আউলিয়াপুরে শ্রীশ্রী রসিক রায় জিউ মন্দিরে দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে সনাতনী ও ইসকনপন্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে মন্দিরের সেবায়েত ফুলবাবু নির্মমভাবে নিহত হন। তখন থেকেই দুর্গাপূজার সময় মন্দির এলাকায় জারি ছিল প্রশাসনের ১৪৪ ধারা। এ বছর প্রশাসনের উদ্যোগে দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হয়। স্থানীয় প্রশাসন ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করে অনুমতি দিয়েছে মন্দির প্রাঙ্গণে দুর্গাপূজা আয়োজনের। দীর্ঘ প্রায় দেড় যুগ পর এই মন্দিরে আবারও দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হওয়ায় ভক্ত ও স্থানীয়রা ভীষণ আনন্দিত।

স্থানীয় বাসিন্দা মৃগেণ চন্দ্র বলেন, “ প্রায় দেড় যুগ বা ১৬টা বছর আমরা অন্যের মন্দিরে পূজা করেছি। নিজেদের মন্দিরে পূজা করতে না পারাটা আমাদের জন্য অনেক বড় কষ্টের ছিল। অবশেষে আমরা আমাদের মন্দিরে পূজা আয়োজনের সুযোগ পেয়েছি।”

বিকাশ রায় নামের স্থানীয় এক যুবক বলেন, “আমার বয়স এখন প্রায় ২১ বছর। এ মন্দিরে সর্বশেষ যখন পূজা হয়, তখন আমি খুব ছোটো। সে পূজার কথা আমার মনে নেই। বুঝতে শেখার পর থেকে এখানে তালা ঝুলতে দেখেছি আর বাবার কাছে শুনেছি এখানে অনেক বড় পূজার আয়োজন হতো। এসব শুনে আমার সে পূজো দেখতে খুব ইচ্ছে করতো। এবার আমার সে ইচ্ছে পূরণ হবে।

ঠাকুরগাঁও রসিক রায় জিউ মন্দিরের সেবায়েত অপু সরকার বলেন, ২০০৯ সালের সেই ঘটনাই আমাদের হৃদয়ে গভীর ক্ষত সৃষ্টি করেছিল। ফুলবাবুর মৃত্যুতে মন্দিরে এক দুঃসহ পরিস্থিতি তৈরি হয়। তখন থেকে পূজা বন্ধ ছিল। দীর্ঘ প্রায় দেড় যুগের কাছাকাছি সময় পর আমরা আবারো এখানে পূজা করতে পারছি তাই আমরা আয়োজনে কোনো কমতি রাখছি না। অনেক বড় ও জমকালো আয়োজন হবে আশা করছি।”

পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলাম জানান, “দীর্ঘ ১৬ বছরের প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে রসিক রায় জিউ মন্দিরে এবারের দুর্গোৎসব হয়ে উঠেছে আনন্দ উচ্ছ্বাসে ভরা এক মহোৎসব। প্রশাসনের সহযোগিতা ও দুই পক্ষের সমঝোতায় যে উৎসবের দ্বার খুলেছে, তা শান্তি ও সম্প্রীতির বন্ধনকে আরো সুদৃঢ় করে তুলবে বলে আমি বিশ্বাস করি।


প্রিন্ট