ঢাকা ০৪:৫৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ২৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo ভাঙ্গুড়ায় তারেক রহমানের সাক্ষাৎকার প্রদর্শনী, নেতাকর্মীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস Logo ইলিশ রক্ষায় ব্যার্থ মৎস অধিদপ্তর সাংবাদিক দেখে দৌড়ে পালালেন ইলিশ বোঝায় ট্রলার Logo সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের সাথে নাগরিক প্লাটফর্ম ও যুব ফোরামের পরামর্শ সভা Logo মিরপুরে গার্মেন্টস ও কেমিক্যাল গোডাউনে আগুন Logo মার্চ টু সচিবালয়’ এ অংশ নিতে শহীদ মিনারে শিক্ষকদের ঢল Logo রাজধানীতে জামায়াতসহ সাত দলের মানববন্ধন কর্মসূচি শুরু Logo আমরা কারাগারে নয়, ছিলাম এক কসাইখানায় Logo হয়রানি নিরসনে চালু হচ্ছে অনলাইন জামিননামা: আইন উপদেষ্টা Logo আশুলিয়ায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হত্যা চেষ্টা মামলায় শ্রমিক নেতা গ্রেপ্তার Logo কালিয়াকৈরে প্রতারণা করে জমির মালিক হওয়ার চেষ্টা: প্রতারক থেকে জমি রক্ষা করতে ইউএনও’র নিকট লিখিত অভিযোগ দায়ের মালিকদের

প্রায় দেড় যুগ পর ঠাকুরগাঁওয়ে মন্দিরের ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার// ব্যস্ত কুমোরটলির প্রতিমাশিল্পীরা, চলছে পূজার আয়োজন

প্রায় দেড় যুগ পর ঠাকুরগাঁওয়ের ঐতিহাসিক রসিক রায় জিউ মন্দির থেকে ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করা হয়েছে। দীর্ঘ সময়ের পর এই অচলাবস্থা ভেঙে এ বছর প্রশাসনের উদ্যোগে দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা করা হয়। এরপর স্থানীয় প্রশাসন ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করে মন্দির প্রাঙ্গণে দুর্গাপূজা আয়োজনের অনুমতি দিয়েছে। বর্তমানে এই মন্দির এলাকায় মূর্তি তৈরি ও মন্ডপ সাজসজ্জার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা শিল্পীরা।

জানা যায়, ২০০৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর সদর উপজেলার আউলিয়াপুরে শ্রীশ্রী রসিক রায় জিউ মন্দিরে দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে সনাতনী ও ইসকনপন্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে মন্দিরের সেবায়েত ফুলবাবু নির্মমভাবে নিহত হন। তখন থেকেই দুর্গাপূজার সময় মন্দির এলাকায় জারি ছিল প্রশাসনের ১৪৪ ধারা। এ বছর প্রশাসনের উদ্যোগে দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হয়। স্থানীয় প্রশাসন ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করে অনুমতি দিয়েছে মন্দির প্রাঙ্গণে দুর্গাপূজা আয়োজনের। দীর্ঘ প্রায় দেড় যুগ পর এই মন্দিরে আবারও দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হওয়ায় ভক্ত ও স্থানীয়রা ভীষণ আনন্দিত।

স্থানীয় বাসিন্দা মৃগেণ চন্দ্র বলেন, “ প্রায় দেড় যুগ বা ১৬টা বছর আমরা অন্যের মন্দিরে পূজা করেছি। নিজেদের মন্দিরে পূজা করতে না পারাটা আমাদের জন্য অনেক বড় কষ্টের ছিল। অবশেষে আমরা আমাদের মন্দিরে পূজা আয়োজনের সুযোগ পেয়েছি।”

বিকাশ রায় নামের স্থানীয় এক যুবক বলেন, “আমার বয়স এখন প্রায় ২১ বছর। এ মন্দিরে সর্বশেষ যখন পূজা হয়, তখন আমি খুব ছোটো। সে পূজার কথা আমার মনে নেই। বুঝতে শেখার পর থেকে এখানে তালা ঝুলতে দেখেছি আর বাবার কাছে শুনেছি এখানে অনেক বড় পূজার আয়োজন হতো। এসব শুনে আমার সে পূজো দেখতে খুব ইচ্ছে করতো। এবার আমার সে ইচ্ছে পূরণ হবে।

ঠাকুরগাঁও রসিক রায় জিউ মন্দিরের সেবায়েত অপু সরকার বলেন, ২০০৯ সালের সেই ঘটনাই আমাদের হৃদয়ে গভীর ক্ষত সৃষ্টি করেছিল। ফুলবাবুর মৃত্যুতে মন্দিরে এক দুঃসহ পরিস্থিতি তৈরি হয়। তখন থেকে পূজা বন্ধ ছিল। দীর্ঘ প্রায় দেড় যুগের কাছাকাছি সময় পর আমরা আবারো এখানে পূজা করতে পারছি তাই আমরা আয়োজনে কোনো কমতি রাখছি না। অনেক বড় ও জমকালো আয়োজন হবে আশা করছি।”

পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলাম জানান, “দীর্ঘ ১৬ বছরের প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে রসিক রায় জিউ মন্দিরে এবারের দুর্গোৎসব হয়ে উঠেছে আনন্দ উচ্ছ্বাসে ভরা এক মহোৎসব। প্রশাসনের সহযোগিতা ও দুই পক্ষের সমঝোতায় যে উৎসবের দ্বার খুলেছে, তা শান্তি ও সম্প্রীতির বন্ধনকে আরো সুদৃঢ় করে তুলবে বলে আমি বিশ্বাস করি।


প্রিন্ট
ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ভাঙ্গুড়ায় তারেক রহমানের সাক্ষাৎকার প্রদর্শনী, নেতাকর্মীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস

প্রায় দেড় যুগ পর ঠাকুরগাঁওয়ে মন্দিরের ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার// ব্যস্ত কুমোরটলির প্রতিমাশিল্পীরা, চলছে পূজার আয়োজন

আপডেট সময় ০৫:৩২:৩৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

প্রায় দেড় যুগ পর ঠাকুরগাঁওয়ের ঐতিহাসিক রসিক রায় জিউ মন্দির থেকে ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করা হয়েছে। দীর্ঘ সময়ের পর এই অচলাবস্থা ভেঙে এ বছর প্রশাসনের উদ্যোগে দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা করা হয়। এরপর স্থানীয় প্রশাসন ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করে মন্দির প্রাঙ্গণে দুর্গাপূজা আয়োজনের অনুমতি দিয়েছে। বর্তমানে এই মন্দির এলাকায় মূর্তি তৈরি ও মন্ডপ সাজসজ্জার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা শিল্পীরা।

জানা যায়, ২০০৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর সদর উপজেলার আউলিয়াপুরে শ্রীশ্রী রসিক রায় জিউ মন্দিরে দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে সনাতনী ও ইসকনপন্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে মন্দিরের সেবায়েত ফুলবাবু নির্মমভাবে নিহত হন। তখন থেকেই দুর্গাপূজার সময় মন্দির এলাকায় জারি ছিল প্রশাসনের ১৪৪ ধারা। এ বছর প্রশাসনের উদ্যোগে দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হয়। স্থানীয় প্রশাসন ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করে অনুমতি দিয়েছে মন্দির প্রাঙ্গণে দুর্গাপূজা আয়োজনের। দীর্ঘ প্রায় দেড় যুগ পর এই মন্দিরে আবারও দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হওয়ায় ভক্ত ও স্থানীয়রা ভীষণ আনন্দিত।

স্থানীয় বাসিন্দা মৃগেণ চন্দ্র বলেন, “ প্রায় দেড় যুগ বা ১৬টা বছর আমরা অন্যের মন্দিরে পূজা করেছি। নিজেদের মন্দিরে পূজা করতে না পারাটা আমাদের জন্য অনেক বড় কষ্টের ছিল। অবশেষে আমরা আমাদের মন্দিরে পূজা আয়োজনের সুযোগ পেয়েছি।”

বিকাশ রায় নামের স্থানীয় এক যুবক বলেন, “আমার বয়স এখন প্রায় ২১ বছর। এ মন্দিরে সর্বশেষ যখন পূজা হয়, তখন আমি খুব ছোটো। সে পূজার কথা আমার মনে নেই। বুঝতে শেখার পর থেকে এখানে তালা ঝুলতে দেখেছি আর বাবার কাছে শুনেছি এখানে অনেক বড় পূজার আয়োজন হতো। এসব শুনে আমার সে পূজো দেখতে খুব ইচ্ছে করতো। এবার আমার সে ইচ্ছে পূরণ হবে।

ঠাকুরগাঁও রসিক রায় জিউ মন্দিরের সেবায়েত অপু সরকার বলেন, ২০০৯ সালের সেই ঘটনাই আমাদের হৃদয়ে গভীর ক্ষত সৃষ্টি করেছিল। ফুলবাবুর মৃত্যুতে মন্দিরে এক দুঃসহ পরিস্থিতি তৈরি হয়। তখন থেকে পূজা বন্ধ ছিল। দীর্ঘ প্রায় দেড় যুগের কাছাকাছি সময় পর আমরা আবারো এখানে পূজা করতে পারছি তাই আমরা আয়োজনে কোনো কমতি রাখছি না। অনেক বড় ও জমকালো আয়োজন হবে আশা করছি।”

পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলাম জানান, “দীর্ঘ ১৬ বছরের প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে রসিক রায় জিউ মন্দিরে এবারের দুর্গোৎসব হয়ে উঠেছে আনন্দ উচ্ছ্বাসে ভরা এক মহোৎসব। প্রশাসনের সহযোগিতা ও দুই পক্ষের সমঝোতায় যে উৎসবের দ্বার খুলেছে, তা শান্তি ও সম্প্রীতির বন্ধনকে আরো সুদৃঢ় করে তুলবে বলে আমি বিশ্বাস করি।


প্রিন্ট