ঢাকা ০২:০৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩০ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo আশুলিয়ার বাইপাইলে যৌথ বাহিনীর অভিযানে গাঁজাসহ ক্রেতা বিক্রেতা ৪ জন আটক! Logo নাসিরনগরে খাবারে বিষ মিশিয়ে ৩৫০০ হাঁস মেরে ফেলার অভিযোগ Logo পিকেএসএফ ভবন-২ উদ্বোধন করলেন প্রধান উপদেষ্টা Logo লন্ডনে উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের ওপর হামলার চেষ্টা, সরকারের নিন্দা Logo প্রশাসনে সমন্বয়হীনতায় রাষ্ট্রীয় কার্যক্রমে স্থবিরতা রাজনৈতিক আনুগত্যের ছায়ায় প্রশাসনিক কার্যক্রম স্থবির, বঞ্চিত কর্মকর্তাদের মধ্যে অসন্তোষ-ক্ষোভ আওয়ামী-জামায়াত বিরোধীরা কোণঠাসা Logo আসুন আমরা হরিণ শিকারী এবং হরিণের মাংস ভক্ষক সকলকে একসাথে বয়কট করি Logo জাকসুর ভিপি জিতু, জিএস মাজহার Logo সাউথখালী ইউনিয়নের চালিতাবুনিয়া বাজারে সরকারি জায়গায় ইউঃ পরিষদের মাধ্যমে তৈরি করা পাকা টলসেট দখল করে দোকান ঘর বানাচ্ছে মর্মে স্থানীয় জনসাধারণ এর মাধ্যমে অভিযোগ Logo পিরোজপুর (৩) মঠবাড়ীয়া জামায়াতের মনোনীত প্রার্থী ঘোষণা করে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত Logo ব্রেস্ট ক্যান্সার সচেতনতা জোরদার করতে চট্টগ্রামে সমন্বিত প্রচারণা শুরু: ডা. শাহাদাত হোসেন

মিথ্যা বলেছিলেন টিউলিপ, তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে এনবিআর

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০১:৩৯:৪০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ১৬ ১০.০০০ বার পড়া হয়েছে

শেখ রেহানার মেয়ে ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিক বাংলাদেশের নাগরিক। তার ট্যাক্স ফাইল ও ব্যাংক একাউন্ট পাওয়া গেছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) তার বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে।

এনবিআর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

বাংলাদেশে ট্যাক্স ফাইল ও ব্যাংক হিসাব থাকার ফলে এখন ব্রিটিশ আইনেই টিউলিপের বিরুদ্ধে মামলা হবে। কারণ তিনি মিথ্যা ঘোষণা দিয়েছিলেন।

এনবিআরকে দেওয়া নথিতে টিউলিপ বাংলাদেশের অধিবাসী হিসেবে নিজেকে উল্লেখ করেছেন। এই ঘোষণা দিয়ে তিনি ট্যাক্স ফাইল খুলেছেন, রিটার্নও জমা দিয়েছেন। বাংলাদেশে এনবিআরকে দেওয়া নথি তিনি ব্রিটিশ ট্যাক্স ফাইলে দেখাননি।

টিউলিপের টিআইএন সার্টিফিকেট
এর আগে গত ১৩ আগস্ট দ্য ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে দুদকের আইনজীবী বলেছিলেন, যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট সদস্য (এমপি) টিউলিপ সিদ্দিকের বাংলাদেশি নাগরিকত্ব আছে। যদিও টিউলিপ বলে আসছেন, তার বাংলাদেশি নাগরিকত্ব নেই। যুক্তরাজ্যের সাবেক ‘সিটি মিনিস্টার’ টিউলিপ এখন বাংলাদেশে বিচারের মুখোমুখি।

বিধিবহির্ভূতভাবে সরকারি প্লট নেওয়ার অভিযোগে আগস্টের প্রথমার্ধে টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে করা মামলার শুনানির ফাঁকে দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মোহাম্মদ সুলতান মাহমুদ ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে বলেন, যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির এই এমপি একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি হিসেবে বাংলাদেশি পাসপোর্ট ও পরিচয়পত্র গ্রহণ করেছেন এবং ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত হয়েছেন।

সুলতান মাহমুদ আরও বলেন, টিউলিপ সিদ্দিকের ঠিকানা, একাধিক পাসপোর্ট এবং ভোটার তালিকায় তার নাম—সব পাওয়া গেছে। আমরা যথাসময়ে এগুলো দাখিল করব।

যদিও টিউলিপ এই বিচারকে ‘হয়রানি ও প্রহসন’ আখ্যায়িত করছেন। টিউলিপ অনেক আগে থেকে দাবি করে আসছেন, তিনি বাংলাদেশি নাগরিক নন। তিনি দাবি করেছেন, ‘টিউলিপের কখনো বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র বা ভোটার আইডি ছিল না এবং তিনি শিশু বয়স থেকে কোনো পাসপোর্ট নেননি।’

টিউলিপ সিদ্দিকের খালা শেখ হাসিনা গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র জনতার তীব্র গণঅভ্যুত্থানের মুখে বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে ভারতে গিয়ে আশ্রয় নেন। ওই সময় টিউলিপের মা শেখ রেহানাও তার সঙ্গে পালিয়ে যান।

খালা, মা ও দুই ভাই-বোনসহ টিউলিপের বিরুদ্ধে ঢাকার পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে বেআইনিভাবে সরকারি প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগ আনে দুর্নীতি দমন কমিশন। সংস্থাটির আইনজীবীরা দাবি করেন, প্লট পাওয়ার যোগ্যতার নিয়ম এড়াতে রাজনৈতিক প্রভাব ব্যবহার করেছেন টিউলিপ সিদ্দিক।

দুর্নীতি দমন কমিশনের কৌঁসুলি সুলতান মাহমুদ বলেন, টিউলিপের পাসপোর্ট, জাতীয় পরিচয়পত্র ও ভোটার তালিকায় থাকা ঠিকানায় একটি সমন পাঠানো হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘ভোটার আইডি কার্ডে থাকা ঠিকানাগুলো পরিদর্শন করা হয়েছিল। তার একটি জাতীয় পরিচয়পত্র ও একটি পাসপোর্ট আছে। আমাদের দুদক টিমগুলো, একাধিক টিম তদন্তের জন্য সেসব ঠিকানায় গিয়েছিল এবং যথাসময়ে নোটিশ দেওয়া হয়েছে।

টিউলিপ সিদ্দিক গত জানুয়ারিতে যুক্তরাজ্যের সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীন সিটি মিনিস্টারের (ইকোনমিক সেক্রেটারি) পদ থেকে পদত্যাগ করেন। এ পদে দেশটির আর্থিক খাতে দুর্নীতি রোধের দায়িত্বে ছিলেন তিনি।

খালা শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন দল আওয়ামী লীগ-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সম্পদ থেকে তিনি সুবিধা নিয়েছেন, ফিন্যান্সিয়াল টাইমস-এ প্রথমবারের মতো এমন প্রতিবেদন প্রকাশের পর রাজনৈতিক চাপের মুখে টিউলিপ পদত্যাগ করেন।

টিউলিপ কোনো ধরনের অনিয়ম করার কথা অস্বীকার করে আসছেন। তিনি বলছেন, সরকার ‘বিরোধীদের দমন’ করছে, তার শিকার তিনি।


প্রিন্ট
ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

আশুলিয়ার বাইপাইলে যৌথ বাহিনীর অভিযানে গাঁজাসহ ক্রেতা বিক্রেতা ৪ জন আটক!

মিথ্যা বলেছিলেন টিউলিপ, তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে এনবিআর

আপডেট সময় ০১:৩৯:৪০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

শেখ রেহানার মেয়ে ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিক বাংলাদেশের নাগরিক। তার ট্যাক্স ফাইল ও ব্যাংক একাউন্ট পাওয়া গেছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) তার বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে।

এনবিআর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

বাংলাদেশে ট্যাক্স ফাইল ও ব্যাংক হিসাব থাকার ফলে এখন ব্রিটিশ আইনেই টিউলিপের বিরুদ্ধে মামলা হবে। কারণ তিনি মিথ্যা ঘোষণা দিয়েছিলেন।

এনবিআরকে দেওয়া নথিতে টিউলিপ বাংলাদেশের অধিবাসী হিসেবে নিজেকে উল্লেখ করেছেন। এই ঘোষণা দিয়ে তিনি ট্যাক্স ফাইল খুলেছেন, রিটার্নও জমা দিয়েছেন। বাংলাদেশে এনবিআরকে দেওয়া নথি তিনি ব্রিটিশ ট্যাক্স ফাইলে দেখাননি।

টিউলিপের টিআইএন সার্টিফিকেট
এর আগে গত ১৩ আগস্ট দ্য ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে দুদকের আইনজীবী বলেছিলেন, যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট সদস্য (এমপি) টিউলিপ সিদ্দিকের বাংলাদেশি নাগরিকত্ব আছে। যদিও টিউলিপ বলে আসছেন, তার বাংলাদেশি নাগরিকত্ব নেই। যুক্তরাজ্যের সাবেক ‘সিটি মিনিস্টার’ টিউলিপ এখন বাংলাদেশে বিচারের মুখোমুখি।

বিধিবহির্ভূতভাবে সরকারি প্লট নেওয়ার অভিযোগে আগস্টের প্রথমার্ধে টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে করা মামলার শুনানির ফাঁকে দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মোহাম্মদ সুলতান মাহমুদ ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে বলেন, যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির এই এমপি একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি হিসেবে বাংলাদেশি পাসপোর্ট ও পরিচয়পত্র গ্রহণ করেছেন এবং ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত হয়েছেন।

সুলতান মাহমুদ আরও বলেন, টিউলিপ সিদ্দিকের ঠিকানা, একাধিক পাসপোর্ট এবং ভোটার তালিকায় তার নাম—সব পাওয়া গেছে। আমরা যথাসময়ে এগুলো দাখিল করব।

যদিও টিউলিপ এই বিচারকে ‘হয়রানি ও প্রহসন’ আখ্যায়িত করছেন। টিউলিপ অনেক আগে থেকে দাবি করে আসছেন, তিনি বাংলাদেশি নাগরিক নন। তিনি দাবি করেছেন, ‘টিউলিপের কখনো বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র বা ভোটার আইডি ছিল না এবং তিনি শিশু বয়স থেকে কোনো পাসপোর্ট নেননি।’

টিউলিপ সিদ্দিকের খালা শেখ হাসিনা গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র জনতার তীব্র গণঅভ্যুত্থানের মুখে বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে ভারতে গিয়ে আশ্রয় নেন। ওই সময় টিউলিপের মা শেখ রেহানাও তার সঙ্গে পালিয়ে যান।

খালা, মা ও দুই ভাই-বোনসহ টিউলিপের বিরুদ্ধে ঢাকার পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে বেআইনিভাবে সরকারি প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগ আনে দুর্নীতি দমন কমিশন। সংস্থাটির আইনজীবীরা দাবি করেন, প্লট পাওয়ার যোগ্যতার নিয়ম এড়াতে রাজনৈতিক প্রভাব ব্যবহার করেছেন টিউলিপ সিদ্দিক।

দুর্নীতি দমন কমিশনের কৌঁসুলি সুলতান মাহমুদ বলেন, টিউলিপের পাসপোর্ট, জাতীয় পরিচয়পত্র ও ভোটার তালিকায় থাকা ঠিকানায় একটি সমন পাঠানো হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘ভোটার আইডি কার্ডে থাকা ঠিকানাগুলো পরিদর্শন করা হয়েছিল। তার একটি জাতীয় পরিচয়পত্র ও একটি পাসপোর্ট আছে। আমাদের দুদক টিমগুলো, একাধিক টিম তদন্তের জন্য সেসব ঠিকানায় গিয়েছিল এবং যথাসময়ে নোটিশ দেওয়া হয়েছে।

টিউলিপ সিদ্দিক গত জানুয়ারিতে যুক্তরাজ্যের সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীন সিটি মিনিস্টারের (ইকোনমিক সেক্রেটারি) পদ থেকে পদত্যাগ করেন। এ পদে দেশটির আর্থিক খাতে দুর্নীতি রোধের দায়িত্বে ছিলেন তিনি।

খালা শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন দল আওয়ামী লীগ-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সম্পদ থেকে তিনি সুবিধা নিয়েছেন, ফিন্যান্সিয়াল টাইমস-এ প্রথমবারের মতো এমন প্রতিবেদন প্রকাশের পর রাজনৈতিক চাপের মুখে টিউলিপ পদত্যাগ করেন।

টিউলিপ কোনো ধরনের অনিয়ম করার কথা অস্বীকার করে আসছেন। তিনি বলছেন, সরকার ‘বিরোধীদের দমন’ করছে, তার শিকার তিনি।


প্রিন্ট