ঢাকা ১০:৫২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ২৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo ভাঙ্গুড়ায় তারেক রহমানের সাক্ষাৎকার প্রদর্শনী, নেতাকর্মীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস Logo ইলিশ রক্ষায় ব্যার্থ মৎস অধিদপ্তর সাংবাদিক দেখে দৌড়ে পালালেন ইলিশ বোঝায় ট্রলার Logo সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের সাথে নাগরিক প্লাটফর্ম ও যুব ফোরামের পরামর্শ সভা Logo মিরপুরে গার্মেন্টস ও কেমিক্যাল গোডাউনে আগুন Logo মার্চ টু সচিবালয়’ এ অংশ নিতে শহীদ মিনারে শিক্ষকদের ঢল Logo রাজধানীতে জামায়াতসহ সাত দলের মানববন্ধন কর্মসূচি শুরু Logo আমরা কারাগারে নয়, ছিলাম এক কসাইখানায় Logo হয়রানি নিরসনে চালু হচ্ছে অনলাইন জামিননামা: আইন উপদেষ্টা Logo আশুলিয়ায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হত্যা চেষ্টা মামলায় শ্রমিক নেতা গ্রেপ্তার Logo কালিয়াকৈরে প্রতারণা করে জমির মালিক হওয়ার চেষ্টা: প্রতারক থেকে জমি রক্ষা করতে ইউএনও’র নিকট লিখিত অভিযোগ দায়ের মালিকদের

দুর্গাপুরে ভুয়া এনএসআই পরিচয়ে আবারও বেপরোয়া রেন্টু

রাজশাহীর দুর্গাপুরে ভুয়া এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেড়ন্স) পরিচয়ে আবারও তৎপর হয়ে উঠেছে রেন্টু নামের এক প্রতারক।

রেন্টু চাঁদাবাজির অভিযোগে গ্রেপ্তারের পর জেল থেকে বেরিয়ে কিছু দিন আড়ালে থাকলেও সম্প্রতি আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। ভুয়া এনএসআই পরিচয়ের আড়ালে সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি দেখানো, চাঁদা দাবি এবং প্রভাব খাটিয়ে ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিল করা তার নিত্যকার কাজে পরিণত হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

অভিযোগ উঠেছে, দুর্গাপুর পৌর এলাকার দেবিপুর গ্রামের আজিজুল হকের ছেলে মো: রেন্টু ওরফে আসাদুল্লাহ (৩৫) নিজেকে (এনএসআই) সদস্য পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন সময় সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি দেখায়। অনেকে আর্থিক লেনদেন বা ব্যক্তিগত বিরোধের ক্ষেত্রে তার কাছে গেলে ভুয়া পরিচয়ের দাপটে বিষয়টি নিজের পক্ষে মীমাংসা করার চেষ্টা করে। কেউ প্রতিবাদ করলে উল্টো মামলা বা সরকারি ঝামেলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার ভয় দেখায়।

গত বছরের ডিসেম্বরে তার নিজ এলাকা দেবিপুরে শরিফুল নামে এক ব্যক্তি মুরগির খামার নির্মান করে। খামারটিতে মুরগির বাচ্চা উঠাতে গেলে রেন্টু বলে আমি এনএসআইয়ের লোক ১ লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে। খামার মালিক শরিফুল চাঁদা দিতে না চাইলে রেন্টু দলবল নিয়ে তার খামার ভাঙচুর করে প্রায় ৭ লক্ষ টাকার ক্ষতি করে। পরে এঘটনায় শরিফুল বাদী হয়ে দুর্গাপুর থানায় রেন্টুকে প্রধান আসামি করে মামলা দায়ের করেন। তদন্তে চাঁদা দাবি ও ভাঙচুরের প্রমান মিললে আদালতে চুড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন থানা পুলিশ । অভিযোগ রয়েছে, প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়া কাজে লাগিয়ে সে দীর্ঘদিন ধরে এ ধরনের প্রতারণা চালিয়ে যাচ্ছে।

স্থানীয়রা জানায়, এর আগেও রেন্টুর বিরুদ্ধে (এনএসআই) পরিচয়ে প্রতারণা, চাঁদাবাজি ও প্রভাব খাটানোর অভিযোগ উঠেছিল। কয়েকবার প্রশাসনের নজরে এলেও প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় থেকে যায় সে। ফলে তার দাপট আরও বেড়েছে। শুধু তাই নয় বিগত আওয়ামী লীগের শাসনামলে বিএনপি নেতাকর্মীদের টার্গেট করে গ্রেপ্তারের ভয় দেখিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এরই জেরধরে যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা তাকে দুর্গাপুর থানার মোড়ে গণধোলাই দেন ।

সজিব নামের এক ভুক্তভোগী বলেন, কিছুদিন আগে কিশমত গণকৈড় বিলে আমরা একটি পুকুর খনন করছিলাম এনএসআই পরিচয় দিয়ে ভয় দেখিয়ে রেন্টু আমার কাছ থেকে ১ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করে । সে আওয়ামী লীগের সময় আরও বেশি বেপরোয়া ছিল। আমি ভুয়া পরিচয় দানকারী প্রতারক রেন্টুর শাস্তি দাবি করছি।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে এক ভুক্তভোগী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “রেন্টুর ভয়ে অনেকেই মুখ খুলতে পারে না। সে ভুয়া এনএসআই পরিচয় দিয়ে এলাকায় এমন একটা আতঙ্ক তৈরি করেছে, যেন কেউ তার বিরুদ্ধে কিছু বলতে সাহস না পায়।

মুঠোফোনে জানতে চাইলে ভুয়া পরিচয়ধারী রেন্টু বলেন, আমার নামে ৮/৯ মাস আগে একটি মামলা হয়েছে। ডু অর ডাই বলে কথা আছে। দুনিয়ার সবাই আপনার বন্ধু না! কারো ব্যাপারে লাগলে সত্য যাচাই করার চেষ্টা করবেন বলে ফোন কেটে দেন।

এব্যাপারে দুর্গাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আতিকুল ইসলাম বলেন, আমি নতুন এসেছি। এবিষয়ে আমার কিছু জানা নাই। তবে এব্যাপারে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তবে দুর্গাপুরের সচেতন মহল মনে করছেন, দীর্ঘদিন ধরে এ ধরনের কর্মকাণ্ড চালিয়ে গেলেও রেন্টুর বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা না নেওয়ায় আজ সে আরও বেপরোয়া হয়েছে। তারা বলেন, “ভুয়া এনএসআই পরিচয় ব্যবহার করে যদি প্রতারণা ও চাঁদাবাজি চলে, তাহলে সমাজে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। এখনই প্রশাসনকে তার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।”

( ভুক্তভোগীর বক্তব্যসহ তথ্য সংরক্ষিত আছে…..)


প্রিন্ট
ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ভাঙ্গুড়ায় তারেক রহমানের সাক্ষাৎকার প্রদর্শনী, নেতাকর্মীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস

দুর্গাপুরে ভুয়া এনএসআই পরিচয়ে আবারও বেপরোয়া রেন্টু

আপডেট সময় ০৭:০৭:৪১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

রাজশাহীর দুর্গাপুরে ভুয়া এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেড়ন্স) পরিচয়ে আবারও তৎপর হয়ে উঠেছে রেন্টু নামের এক প্রতারক।

রেন্টু চাঁদাবাজির অভিযোগে গ্রেপ্তারের পর জেল থেকে বেরিয়ে কিছু দিন আড়ালে থাকলেও সম্প্রতি আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। ভুয়া এনএসআই পরিচয়ের আড়ালে সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি দেখানো, চাঁদা দাবি এবং প্রভাব খাটিয়ে ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিল করা তার নিত্যকার কাজে পরিণত হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

অভিযোগ উঠেছে, দুর্গাপুর পৌর এলাকার দেবিপুর গ্রামের আজিজুল হকের ছেলে মো: রেন্টু ওরফে আসাদুল্লাহ (৩৫) নিজেকে (এনএসআই) সদস্য পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন সময় সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি দেখায়। অনেকে আর্থিক লেনদেন বা ব্যক্তিগত বিরোধের ক্ষেত্রে তার কাছে গেলে ভুয়া পরিচয়ের দাপটে বিষয়টি নিজের পক্ষে মীমাংসা করার চেষ্টা করে। কেউ প্রতিবাদ করলে উল্টো মামলা বা সরকারি ঝামেলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার ভয় দেখায়।

গত বছরের ডিসেম্বরে তার নিজ এলাকা দেবিপুরে শরিফুল নামে এক ব্যক্তি মুরগির খামার নির্মান করে। খামারটিতে মুরগির বাচ্চা উঠাতে গেলে রেন্টু বলে আমি এনএসআইয়ের লোক ১ লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে। খামার মালিক শরিফুল চাঁদা দিতে না চাইলে রেন্টু দলবল নিয়ে তার খামার ভাঙচুর করে প্রায় ৭ লক্ষ টাকার ক্ষতি করে। পরে এঘটনায় শরিফুল বাদী হয়ে দুর্গাপুর থানায় রেন্টুকে প্রধান আসামি করে মামলা দায়ের করেন। তদন্তে চাঁদা দাবি ও ভাঙচুরের প্রমান মিললে আদালতে চুড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন থানা পুলিশ । অভিযোগ রয়েছে, প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়া কাজে লাগিয়ে সে দীর্ঘদিন ধরে এ ধরনের প্রতারণা চালিয়ে যাচ্ছে।

স্থানীয়রা জানায়, এর আগেও রেন্টুর বিরুদ্ধে (এনএসআই) পরিচয়ে প্রতারণা, চাঁদাবাজি ও প্রভাব খাটানোর অভিযোগ উঠেছিল। কয়েকবার প্রশাসনের নজরে এলেও প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় থেকে যায় সে। ফলে তার দাপট আরও বেড়েছে। শুধু তাই নয় বিগত আওয়ামী লীগের শাসনামলে বিএনপি নেতাকর্মীদের টার্গেট করে গ্রেপ্তারের ভয় দেখিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এরই জেরধরে যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা তাকে দুর্গাপুর থানার মোড়ে গণধোলাই দেন ।

সজিব নামের এক ভুক্তভোগী বলেন, কিছুদিন আগে কিশমত গণকৈড় বিলে আমরা একটি পুকুর খনন করছিলাম এনএসআই পরিচয় দিয়ে ভয় দেখিয়ে রেন্টু আমার কাছ থেকে ১ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করে । সে আওয়ামী লীগের সময় আরও বেশি বেপরোয়া ছিল। আমি ভুয়া পরিচয় দানকারী প্রতারক রেন্টুর শাস্তি দাবি করছি।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে এক ভুক্তভোগী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “রেন্টুর ভয়ে অনেকেই মুখ খুলতে পারে না। সে ভুয়া এনএসআই পরিচয় দিয়ে এলাকায় এমন একটা আতঙ্ক তৈরি করেছে, যেন কেউ তার বিরুদ্ধে কিছু বলতে সাহস না পায়।

মুঠোফোনে জানতে চাইলে ভুয়া পরিচয়ধারী রেন্টু বলেন, আমার নামে ৮/৯ মাস আগে একটি মামলা হয়েছে। ডু অর ডাই বলে কথা আছে। দুনিয়ার সবাই আপনার বন্ধু না! কারো ব্যাপারে লাগলে সত্য যাচাই করার চেষ্টা করবেন বলে ফোন কেটে দেন।

এব্যাপারে দুর্গাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আতিকুল ইসলাম বলেন, আমি নতুন এসেছি। এবিষয়ে আমার কিছু জানা নাই। তবে এব্যাপারে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তবে দুর্গাপুরের সচেতন মহল মনে করছেন, দীর্ঘদিন ধরে এ ধরনের কর্মকাণ্ড চালিয়ে গেলেও রেন্টুর বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা না নেওয়ায় আজ সে আরও বেপরোয়া হয়েছে। তারা বলেন, “ভুয়া এনএসআই পরিচয় ব্যবহার করে যদি প্রতারণা ও চাঁদাবাজি চলে, তাহলে সমাজে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। এখনই প্রশাসনকে তার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।”

( ভুক্তভোগীর বক্তব্যসহ তথ্য সংরক্ষিত আছে…..)


প্রিন্ট