ঢাকা ০৩:১৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ২০ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo ফরিদপুরে চেয়ারম্যানের শেল্টারে চায়না দুয়ারি জালের কারখানার রমরমা ব্যবসা, প্রশাসনের অভিযানে নিয়ন্ত্রণহীন অবস্থা Logo রয়টার্সের প্রতিবেদন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সালিশের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে আদানি গ্রুপ Logo টানা কমছে দেশের রপ্তানি আয়, সামনে আরও কমার আশঙ্কা Logo বিএনপির ফাঁকা রাখা ৬৩ আসনে অগ্রাধিকার পাবেন যারা Logo আরপিও সংশোধন অধ্যাদেশ জারি জোট করলেও নিজ দলের প্রতীকেই ভোট করতে হবে Logo আশুলিয়া সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে ৬ দলিল লেখক বরখাস্ত Logo সাভারে ট্রলি ভ্যানের ব্রেক ফেল আয়ারল্যান্ডের ওপরে এসে গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ Logo তৌহিদুল ইসলাম এর বিরুদ্ধে ঘুষ বানিজ্যের অভিযোগ Logo ৪৮ তম বিসিএস পরীক্ষায় উওীর্ণদের নিয়োগ এর দাবি তে মানববন্ধন Logo বিএনপির প্রার্থী তালিকায় নেই রুমিন ফারহানার পদত্যাগ করেন

আমাকে তারা বুট দিয়ে লাথি মেরেছে, পিটাইছে: বুয়েট শিক্ষার্থী রাফিদ

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৪:৫০:৫৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ অগাস্ট ২০২৫
  • ৮১ ১০.০০০ বার পড়া হয়েছে

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। সে ছবিতে দেখা যায় এক শিক্ষার্থীর মুখ চেপে ধরেছেন একজন পুলিশ সদস্য। জানা গেছে ঐ শিক্ষার্থীর নাম রাফিদ জামান খান। তিনি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শেরে বাংলা হলের শিক্ষার্থী। পড়েন ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের তৃতীয় বর্ষে।

রাফিদ জামান খান বলেন, পেছন থেকে একজন পুলিশ তার মুখ চেপে ধরে মাটিয়ে ফেলে দেন। ঘটনার পরে ভিডিও দেখে তিনি নিশ্চিত হয়েছেন, যিনি ফেলে দিয়েছিলেন, তিনি ছিলেন ডিসি মাসুদ আলম।

রাফিদ আরও বলেন, ‘মাটিতে ফেলার পরে আমাকে আসলে খুবই আনপ্রফেশনালভাবে ট্রিটমেন্ট দেওয়া হয়েছে। আমাকে তারা বুট দিয়ে লাথি মেরেছে। পিটাইছে। এমনকি একজন সদস্য হেলমেট দিয়ে আমার মাথায় আঘাত করছেন।’

তার আগে, গত বুধবার (২৭ আগস্ট) প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখে পদযাত্রার সময় হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে আন্দোলনরত প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের ওপর সাউন্ড গ্রেনেড, কাঁদানে গ্যাসের শেল, জলকামান ছোড়ে পুলিশ। পরে লাঠিচার্জও করে। এ সময় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম একজন শিক্ষার্থীর মুখ চেপে ধরেছেন—এমন একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এই ছবি ও খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়।

তবে গতকাল ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে দাবি করা হয়, সম্প্রতি ডিএমপির রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. মাসুদ আলমকে নিয়ে এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি এক ছাত্রের মুখ চেপে ধরার একটি ছবি বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এটি ডিএমপির দৃষ্টিগোচর হয়েছে। কে বা কারা সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যমূলকভাবে উক্ত ছবিটি তৈরি করে জনমনে অহেতুক বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করেছে। ছবিটি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করলে বুঝা যায়, তা সম্পূর্ণ এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি এবং বাস্তবতা বিবর্জিত।

তবে তথ্য যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান রিউমর স্ক্যানার তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত খবরে বলছে, ডিসি মাসুদ আলমের আন্দোলনকারীর মুখ চেপে ধরার ছবিটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) দিয়ে তৈরি নয়। প্রকৃতপক্ষে আসল ছবিকেই এআই দিয়ে তৈরি বলে প্রচার করেছে ডিএমপি।

তথ্য যাচাইকারী বা ফ্যাক্ট চেক প্রতিষ্ঠান ডিসমিসল্যাব আজ তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলছে বুয়েট শিক্ষার্থীর মুখ চেপে ধরার ছবিটি এআই দিয়ে বানানো নয়।

রাফিদ দাবি করেন, ছবিটিতে যে শিক্ষার্থীকে দেখা যাচ্ছে সেটি তিনি। তিনি বলেন, ‘এটা কোনোভাবেই এআই জেনারেটেড না।’

ঘটনার দিন যখন হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়ে পৌঁছান, তখন আর সামনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বলে জানান রাফিদ। তিনি বলেন, ‘পুলিশের সঙ্গে কোনো ধরনের ধস্তাধস্তিতে জড়াব না। এ জন্য সড়কে বসে পড়ি। যেন পুলিশের কাছে মনে না হয় যে আমরা অ্যাটাকিং পজিশনে আছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘একপর্যায়ে পুলিশ টিয়ারশেল (কাঁদানে গ্যাসের শেল) নিক্ষেপ করে। আমি যেখানে ছিলাম তার কিছুটা পেছনে টিয়ারশেলটা পড়ে। এরপরে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেডও নিক্ষেপ করা শুরু করে। টিয়ারশেল পড়ার পর আন্দোলনকারী অনেকে পিছু হটে। আর সামনে থাকারা আটকে পড়ে যায়। তখন পুলিশ লাঠিপেটা শুরু করে।’

রাফিদ আরও বলেন, ‘ওই অবস্থায় আসলে আমি ওখানে আটকা পড়ে গিয়েছিলাম। আমি একটু ডিসওরিয়েন্টেড হয়ে পড়ছিলাম। তো তারপরে দেখি যে আমাকে একটানা মারা হচ্ছে। আমার পেছন থেকে মারতেছে।’

প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় গত বুধবার রাতে রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের কাছে গিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী। কমিটি গঠন করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।


প্রিন্ট
ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ফরিদপুরে চেয়ারম্যানের শেল্টারে চায়না দুয়ারি জালের কারখানার রমরমা ব্যবসা, প্রশাসনের অভিযানে নিয়ন্ত্রণহীন অবস্থা

আমাকে তারা বুট দিয়ে লাথি মেরেছে, পিটাইছে: বুয়েট শিক্ষার্থী রাফিদ

আপডেট সময় ০৪:৫০:৫৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ অগাস্ট ২০২৫

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। সে ছবিতে দেখা যায় এক শিক্ষার্থীর মুখ চেপে ধরেছেন একজন পুলিশ সদস্য। জানা গেছে ঐ শিক্ষার্থীর নাম রাফিদ জামান খান। তিনি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শেরে বাংলা হলের শিক্ষার্থী। পড়েন ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের তৃতীয় বর্ষে।

রাফিদ জামান খান বলেন, পেছন থেকে একজন পুলিশ তার মুখ চেপে ধরে মাটিয়ে ফেলে দেন। ঘটনার পরে ভিডিও দেখে তিনি নিশ্চিত হয়েছেন, যিনি ফেলে দিয়েছিলেন, তিনি ছিলেন ডিসি মাসুদ আলম।

রাফিদ আরও বলেন, ‘মাটিতে ফেলার পরে আমাকে আসলে খুবই আনপ্রফেশনালভাবে ট্রিটমেন্ট দেওয়া হয়েছে। আমাকে তারা বুট দিয়ে লাথি মেরেছে। পিটাইছে। এমনকি একজন সদস্য হেলমেট দিয়ে আমার মাথায় আঘাত করছেন।’

তার আগে, গত বুধবার (২৭ আগস্ট) প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখে পদযাত্রার সময় হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে আন্দোলনরত প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের ওপর সাউন্ড গ্রেনেড, কাঁদানে গ্যাসের শেল, জলকামান ছোড়ে পুলিশ। পরে লাঠিচার্জও করে। এ সময় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম একজন শিক্ষার্থীর মুখ চেপে ধরেছেন—এমন একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এই ছবি ও খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়।

তবে গতকাল ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে দাবি করা হয়, সম্প্রতি ডিএমপির রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. মাসুদ আলমকে নিয়ে এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি এক ছাত্রের মুখ চেপে ধরার একটি ছবি বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এটি ডিএমপির দৃষ্টিগোচর হয়েছে। কে বা কারা সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যমূলকভাবে উক্ত ছবিটি তৈরি করে জনমনে অহেতুক বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করেছে। ছবিটি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করলে বুঝা যায়, তা সম্পূর্ণ এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি এবং বাস্তবতা বিবর্জিত।

তবে তথ্য যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান রিউমর স্ক্যানার তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত খবরে বলছে, ডিসি মাসুদ আলমের আন্দোলনকারীর মুখ চেপে ধরার ছবিটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) দিয়ে তৈরি নয়। প্রকৃতপক্ষে আসল ছবিকেই এআই দিয়ে তৈরি বলে প্রচার করেছে ডিএমপি।

তথ্য যাচাইকারী বা ফ্যাক্ট চেক প্রতিষ্ঠান ডিসমিসল্যাব আজ তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলছে বুয়েট শিক্ষার্থীর মুখ চেপে ধরার ছবিটি এআই দিয়ে বানানো নয়।

রাফিদ দাবি করেন, ছবিটিতে যে শিক্ষার্থীকে দেখা যাচ্ছে সেটি তিনি। তিনি বলেন, ‘এটা কোনোভাবেই এআই জেনারেটেড না।’

ঘটনার দিন যখন হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়ে পৌঁছান, তখন আর সামনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বলে জানান রাফিদ। তিনি বলেন, ‘পুলিশের সঙ্গে কোনো ধরনের ধস্তাধস্তিতে জড়াব না। এ জন্য সড়কে বসে পড়ি। যেন পুলিশের কাছে মনে না হয় যে আমরা অ্যাটাকিং পজিশনে আছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘একপর্যায়ে পুলিশ টিয়ারশেল (কাঁদানে গ্যাসের শেল) নিক্ষেপ করে। আমি যেখানে ছিলাম তার কিছুটা পেছনে টিয়ারশেলটা পড়ে। এরপরে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেডও নিক্ষেপ করা শুরু করে। টিয়ারশেল পড়ার পর আন্দোলনকারী অনেকে পিছু হটে। আর সামনে থাকারা আটকে পড়ে যায়। তখন পুলিশ লাঠিপেটা শুরু করে।’

রাফিদ আরও বলেন, ‘ওই অবস্থায় আসলে আমি ওখানে আটকা পড়ে গিয়েছিলাম। আমি একটু ডিসওরিয়েন্টেড হয়ে পড়ছিলাম। তো তারপরে দেখি যে আমাকে একটানা মারা হচ্ছে। আমার পেছন থেকে মারতেছে।’

প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় গত বুধবার রাতে রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের কাছে গিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী। কমিটি গঠন করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।


প্রিন্ট