ঢাকা ১২:৫২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫, ২ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে উপজেলা বালিবাহী ট্রাক্টর – মোটরসাইকেল  মুখোমুখি‌ Logo সিএমপি’র বন্দর থানার শ্বাসরুদ্ধকার অভিযানে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী শাকিল ও সহযোগী গ্রেফতার Logo কক্সবাজারে অবৈধ স্পা ও হোটেল অভিযানে নেতৃত্ব দিয়ে প্রশংসিত ডিআইজি আপেল মাহমুদ Logo পলাশে হাফিজিয়া মাদ্রাসা দখল ও ভাড়া আত্মসাতের অভিযোগ—শিক্ষক-শিক্ষার্থী উচ্ছেদ,শিক্ষাব্যবস্থা ভেঙে পড়ার শঙ্কা Logo ফিচার রিপোর্ট নামিদামি সুনামধন্য আড়ং-এর ডেইলি ফার্ম এর ডিলারশিপ নিয়ে অনায়াসে করছে জামানত বানিজ্য, টাকা দিলেও সিলিংয়ে ঝুলছে শাকিলের লাশ Logo হাসিনাসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে ৪র্থ দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে Logo ডা. নিতাই হত্যা: ৫ আসামির মৃত্যুদণ্ড, ৪ জনের আমৃত্যু কারাদণ্ড Logo ফরেন পলিসির বিশ্লেষণ ডিসেম্বরেই ফের যুদ্ধে জড়াতে পারে ইরান-ইসরায়েল Logo ৪৫ মিনিট খেলেই গোল-অ্যাসিস্ট, মিয়ামিকে জয়ে ফেরালেন মেসি Logo বিদেশের সব দূতাবাস থেকে রাষ্ট্রপতির ছবি সরানোর নির্দেশ

চাঁদ উদ্যানের ‘চোর বিদ্যুৎ দস্যু’: একজন মিটার রিডারের ভয়ঙ্কর গল্প!

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০১:০১:১০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫
  • ৩২ ১০.০০০ বার পড়া হয়েছে

ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি)-এর মিটার রিডার পদ যেন দুর্নীতির আঁতুড়ঘর। সরকারি এই প্রতিষ্ঠানের বহু কর্মকর্তা অবৈধ সংযোগ ও মিটার কারসাজির মাধ্যমে গড়ে তুলেছেন বিশাল অবৈধ সম্পদ। এমনই একজন আলোচিত নাম একেএম রফিকুল ইসলাম।

সূত্র জানায়, রফিকুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে মোহাম্মদপুর, আদাবর ও আশপাশের এলাকায় বাণিজ্যিক ও বস্তিতে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে আসছিলেন। এর বিনিময়ে প্রতি মাসে হাতিয়ে নেন মোটা অঙ্কের ঘুষ। পাশাপাশি, মিটার টেম্পারিং ও বিল কারসাজির মাধ্যমে আবাসিক গ্রাহকদের কাছ থেকেও আদায় করেন বিপুল অর্থ।

২০২৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা সোয়েব হোসেন দুর্নীতি দমন কমিশনে তাঁর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, রফিকুল ইসলাম রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় কোটি টাকার সম্পদ গড়েছেন, যার সাথে তাঁর চাকরির আয় মেলেনা।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রফিকুলের রয়েছে মোহাম্মদপুরের চাঁদ উদ্যানে দুটি বহুতল ভবন (বাজারমূল্য আনুমানিক সাড়ে তিন কোটি টাকা), কাটাসুর ও লালমাটিয়ায় দুটি ফ্ল্যাট, নিজ এলাকায় কয়েক একর জমি, দুটি মোটরবাইক, দুটি মাইক্রোবাস ও একটি বন্ধকী ফ্ল্যাট।

বাড়ির কেয়ারটেকার আইয়ুব আলী জানান, “এই বাড়ির মালিক রফিকুল ইসলাম। তবে কীভাবে এত সম্পদ করেছেন, আমি জানি না।”

জানা যায়, এর আগেও একাধিক সাংবাদিকের কাছে রফিকুল নিজের দুর্নীতির কথা স্বীকার করেছিলেন, আবার প্রতিবেদন প্রকাশ না করতে অনুরোধ করেন ও ঘুষের প্রস্তাব দেন। এমনকি এক সাংবাদিককে ডিজিএফআই দিয়ে তুলে নেওয়ার হুমকিও দিয়েছিলেন বলে একটি ২০২৩ সালের প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে।

তাঁর জাতীয় পরিচয়পত্রে দেওয়া স্থায়ী ঠিকানাও সন্দেহজনক। সহকর্মীদের দাবি, পাবনার সাথিয়া উপজেলার বোয়ালমারী গ্রামে রফিকুল নামে কেউ নেই। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি ভুয়া কাগজপত্র দিয়ে চাকরি নিয়েছেন।

ডিপিডিসি সূত্র জানায়, রফিকুল সম্প্রতি বকশিবাজার কার্যালয়ে বদলি হয়েছেন। সেখানে গিয়েও তাঁর দুর্নীতি থেমে নেই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন সহকর্মী জানান, তিনি দুর্নীতিবাজ মিটার রিডারদের একটি চক্র নিয়ন্ত্রণ করেন এবং প্রভাবশালী মহলের সঙ্গে তার সখ্য রয়েছে।

ডিপিডিসির পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখনো কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। একাধিকবার তার বক্তব্য নেওয়ার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। মোবাইলেও সাড়া পাওয়া যায়নি।


প্রিন্ট
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে উপজেলা বালিবাহী ট্রাক্টর – মোটরসাইকেল  মুখোমুখি‌

চাঁদ উদ্যানের ‘চোর বিদ্যুৎ দস্যু’: একজন মিটার রিডারের ভয়ঙ্কর গল্প!

আপডেট সময় ০১:০১:১০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫

ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি)-এর মিটার রিডার পদ যেন দুর্নীতির আঁতুড়ঘর। সরকারি এই প্রতিষ্ঠানের বহু কর্মকর্তা অবৈধ সংযোগ ও মিটার কারসাজির মাধ্যমে গড়ে তুলেছেন বিশাল অবৈধ সম্পদ। এমনই একজন আলোচিত নাম একেএম রফিকুল ইসলাম।

সূত্র জানায়, রফিকুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে মোহাম্মদপুর, আদাবর ও আশপাশের এলাকায় বাণিজ্যিক ও বস্তিতে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে আসছিলেন। এর বিনিময়ে প্রতি মাসে হাতিয়ে নেন মোটা অঙ্কের ঘুষ। পাশাপাশি, মিটার টেম্পারিং ও বিল কারসাজির মাধ্যমে আবাসিক গ্রাহকদের কাছ থেকেও আদায় করেন বিপুল অর্থ।

২০২৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা সোয়েব হোসেন দুর্নীতি দমন কমিশনে তাঁর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, রফিকুল ইসলাম রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় কোটি টাকার সম্পদ গড়েছেন, যার সাথে তাঁর চাকরির আয় মেলেনা।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রফিকুলের রয়েছে মোহাম্মদপুরের চাঁদ উদ্যানে দুটি বহুতল ভবন (বাজারমূল্য আনুমানিক সাড়ে তিন কোটি টাকা), কাটাসুর ও লালমাটিয়ায় দুটি ফ্ল্যাট, নিজ এলাকায় কয়েক একর জমি, দুটি মোটরবাইক, দুটি মাইক্রোবাস ও একটি বন্ধকী ফ্ল্যাট।

বাড়ির কেয়ারটেকার আইয়ুব আলী জানান, “এই বাড়ির মালিক রফিকুল ইসলাম। তবে কীভাবে এত সম্পদ করেছেন, আমি জানি না।”

জানা যায়, এর আগেও একাধিক সাংবাদিকের কাছে রফিকুল নিজের দুর্নীতির কথা স্বীকার করেছিলেন, আবার প্রতিবেদন প্রকাশ না করতে অনুরোধ করেন ও ঘুষের প্রস্তাব দেন। এমনকি এক সাংবাদিককে ডিজিএফআই দিয়ে তুলে নেওয়ার হুমকিও দিয়েছিলেন বলে একটি ২০২৩ সালের প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে।

তাঁর জাতীয় পরিচয়পত্রে দেওয়া স্থায়ী ঠিকানাও সন্দেহজনক। সহকর্মীদের দাবি, পাবনার সাথিয়া উপজেলার বোয়ালমারী গ্রামে রফিকুল নামে কেউ নেই। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি ভুয়া কাগজপত্র দিয়ে চাকরি নিয়েছেন।

ডিপিডিসি সূত্র জানায়, রফিকুল সম্প্রতি বকশিবাজার কার্যালয়ে বদলি হয়েছেন। সেখানে গিয়েও তাঁর দুর্নীতি থেমে নেই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন সহকর্মী জানান, তিনি দুর্নীতিবাজ মিটার রিডারদের একটি চক্র নিয়ন্ত্রণ করেন এবং প্রভাবশালী মহলের সঙ্গে তার সখ্য রয়েছে।

ডিপিডিসির পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখনো কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। একাধিকবার তার বক্তব্য নেওয়ার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। মোবাইলেও সাড়া পাওয়া যায়নি।


প্রিন্ট