ঢাকা ০৬:৪৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ মে ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম ::
পটুয়াখালী আমখোলা ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্নীতি অভিযোগ রাজধানীর কালশীতে ট্রাফিক পুলিশের বক্সে আগুন দিয়েছে আন্দোলনরত অটোরিকশা চালকরা জামালপুরে পাট চাষে হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নতুন পরিবেশবান্ধব আসবাবপত্র তৈরি হচ্ছে পরিত্যক্ত সুপারির খোলসে পার্বতীপুরে সেচ মৌসুম গভীর নলকূপের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন, বিপাকে কৃষকরা মোংলায় ফ্যামিলি সাইকেল র‍্যালি নরসিংদীতে বজ্রপাতের পৃথক ঘটনায় মা-ছেলেসহ ৪ জনের মৃত্যু জামালপুরে ধানের বাজার মধ্যস্বত্বভোগীরদের দখলে রানীশংকৈলে জিপিএ—৫ পাওয়া ৪ শিক্ষার্থীর স্বপ্ন পূরণের বাধা অর্থিক সংকট কালিয়াকৈরে এক নারী মাদক ব্যবসায়ী হেরোইনসহ গ্রেফতার

অধিকার ও মানবাধিকার কর্মীদের উদ্বেগ মানবাধিকার পরিস্থিতিতে অগ্রগতি নেই বাংলাদেশের

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রকাশিত বার্ষিক মানবাধিকার প্রতিবেদন ২০২৩-এ বলা হয়েছে, মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতিতে কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করতে পারেনি বাংলাদেশ। ২০২২ সালের মতো গত বছরও বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম, নির্যাতনসহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের নানা ঘটনা ঘটেছে। মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের ব্যাপারে সরকারের দায়মুক্তির সংস্কৃতি বিরাজ করছে এখানে। দেশের অধিকার ও মানবাধিকার কর্মীরা এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছে।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর ওই প্রতিবেদনে বলেছে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মানবাধিকার লঙ্ঘনের ওইসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তা বা নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের শনাক্ত ও শাস্তি দিতে সরকার বিশ্বাসযোগ্য পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। উল্টো তাদেরকে ব্যাপকভাবে দায়মুক্তি দেওয়ার অসংখ্য খবর রয়েছে বলেও জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

এছাড়া বাংলাদেশের নাগরিকদের হাতে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে সরকার পরিবর্তনের ক্ষমতা নেই বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

‘২০২৩ কান্ট্রি রিপোর্টস অন হিউম্যান রাইটস প্র্যাক্টিসেস: বাংলাদেশ’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে বাংলাদেশের বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, স্বাধীন মতপ্রকাশে বাধা, গণমাধ্যমের উপর সেন্সরশিপসহ বিভিন্ন বিষয়ে পর্যবেক্ষণ তুলে ধরা হয়েছে।

সেখানে বলা হয়েছে যে, গত বছর গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলোর মধ্যে বিচারবহির্ভূত হত্যাসহ নির্বিচারে বেআইনি হত্যার ঘটনা, গুম, সরকারের নির্যাতন বা নিষ্ঠুরতা, নির্বিচারে গ্রেপ্তার-আটক, অমানবিক ও অসম্মানজনক আচরণ এবং কারাগারের কঠিন ও জীবনের জন্য হুমকির পরিবেশের বিষয়ে বিশ্বাসযোগ্য তথ্য যুক্তরাষ্ট্রের কাছে রয়েছে।

এছাড়া অন্য দেশে থাকা ব্যক্তিদের ওপর নিপীড়ন চালানোর তথ্যও তারা পেয়েছেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

বাংলাদেশে হাজার হাজার কথিত বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং জোরপূর্বক গুমের ঘটনা নথিভুক্ত করার জন্য পরিচিত মানবাধিকার সংস্থা অধিকার-এর একজন পরিচালক নাসিরুদ্দিন এলান প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, এই ধরণের প্রতিবেদনগুলো জনসচেতনতা বাড়ায়, জনগণকে বিদ্যমান সমস্যাগুলো সম্পর্কে আরও সচেতন করে তোলে, যা অপরিহার্য।

FILE – Activists with the rights group Odhikar demonstrate against enforced disappearances, in Khulna, Bangladesh, Dec. 10, 2021. Bangladesh made no significant progress in improving its human rights situation, a recent U.S. State Department report said. (Mohammad Nuruzzaman/VOA)
২০২২ সালে বাংলাদেশ সরকার অধিকারকে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রকাশ করে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ছড়ানোর জন্য অভিযুক্ত করেছিল। পরে সংস্থাটির লাইসেন্স প্রত্যাহার এবং সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা নাসিরুদ্দিন ও সম্পাদক আদিলুর রহমান খানের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করে। ওই মামলায় তাদের দুই বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে মন্তব্যের জন্য ভয়েস অফ আমেরিকার কল, ম্যাসেজ এবং ইমেইলের অনুরোধের জবাব দেয়নি বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

তবে মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রতিবেদন ‘ত্রুটিপূর্ণ’ বলে মন্তব্য করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারা।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বিবিসি বাংলাকে বলেন, এটি একটি মনগড়া রিপোর্ট এবং এখানে সত্যের হার খুবই কম। প্রতিবেদনে যেসব অভিযোগ তোলা হয়েছে, সেগুলোর ব্যাপারে মার্কিন সরকারের কাছে তথ্য-প্রমাণ চাওয়া হবে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রতিবেদনে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির যে চিত্র উঠে এসেছে, দীর্ঘমেয়াদে সেটি দেশটির উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

আরো খবর.......

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

পটুয়াখালী আমখোলা ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্নীতি অভিযোগ

অধিকার ও মানবাধিকার কর্মীদের উদ্বেগ মানবাধিকার পরিস্থিতিতে অগ্রগতি নেই বাংলাদেশের

আপডেট টাইম : ০৯:৩৬:২৫ পূর্বাহ্ণ, মঙ্গলবার, ৭ মে ২০২৪

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রকাশিত বার্ষিক মানবাধিকার প্রতিবেদন ২০২৩-এ বলা হয়েছে, মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতিতে কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করতে পারেনি বাংলাদেশ। ২০২২ সালের মতো গত বছরও বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম, নির্যাতনসহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের নানা ঘটনা ঘটেছে। মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের ব্যাপারে সরকারের দায়মুক্তির সংস্কৃতি বিরাজ করছে এখানে। দেশের অধিকার ও মানবাধিকার কর্মীরা এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছে।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর ওই প্রতিবেদনে বলেছে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মানবাধিকার লঙ্ঘনের ওইসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তা বা নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের শনাক্ত ও শাস্তি দিতে সরকার বিশ্বাসযোগ্য পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। উল্টো তাদেরকে ব্যাপকভাবে দায়মুক্তি দেওয়ার অসংখ্য খবর রয়েছে বলেও জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

এছাড়া বাংলাদেশের নাগরিকদের হাতে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে সরকার পরিবর্তনের ক্ষমতা নেই বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

‘২০২৩ কান্ট্রি রিপোর্টস অন হিউম্যান রাইটস প্র্যাক্টিসেস: বাংলাদেশ’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে বাংলাদেশের বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, স্বাধীন মতপ্রকাশে বাধা, গণমাধ্যমের উপর সেন্সরশিপসহ বিভিন্ন বিষয়ে পর্যবেক্ষণ তুলে ধরা হয়েছে।

সেখানে বলা হয়েছে যে, গত বছর গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলোর মধ্যে বিচারবহির্ভূত হত্যাসহ নির্বিচারে বেআইনি হত্যার ঘটনা, গুম, সরকারের নির্যাতন বা নিষ্ঠুরতা, নির্বিচারে গ্রেপ্তার-আটক, অমানবিক ও অসম্মানজনক আচরণ এবং কারাগারের কঠিন ও জীবনের জন্য হুমকির পরিবেশের বিষয়ে বিশ্বাসযোগ্য তথ্য যুক্তরাষ্ট্রের কাছে রয়েছে।

এছাড়া অন্য দেশে থাকা ব্যক্তিদের ওপর নিপীড়ন চালানোর তথ্যও তারা পেয়েছেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

বাংলাদেশে হাজার হাজার কথিত বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং জোরপূর্বক গুমের ঘটনা নথিভুক্ত করার জন্য পরিচিত মানবাধিকার সংস্থা অধিকার-এর একজন পরিচালক নাসিরুদ্দিন এলান প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, এই ধরণের প্রতিবেদনগুলো জনসচেতনতা বাড়ায়, জনগণকে বিদ্যমান সমস্যাগুলো সম্পর্কে আরও সচেতন করে তোলে, যা অপরিহার্য।

FILE – Activists with the rights group Odhikar demonstrate against enforced disappearances, in Khulna, Bangladesh, Dec. 10, 2021. Bangladesh made no significant progress in improving its human rights situation, a recent U.S. State Department report said. (Mohammad Nuruzzaman/VOA)
২০২২ সালে বাংলাদেশ সরকার অধিকারকে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রকাশ করে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ছড়ানোর জন্য অভিযুক্ত করেছিল। পরে সংস্থাটির লাইসেন্স প্রত্যাহার এবং সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা নাসিরুদ্দিন ও সম্পাদক আদিলুর রহমান খানের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করে। ওই মামলায় তাদের দুই বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে মন্তব্যের জন্য ভয়েস অফ আমেরিকার কল, ম্যাসেজ এবং ইমেইলের অনুরোধের জবাব দেয়নি বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

তবে মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রতিবেদন ‘ত্রুটিপূর্ণ’ বলে মন্তব্য করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারা।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বিবিসি বাংলাকে বলেন, এটি একটি মনগড়া রিপোর্ট এবং এখানে সত্যের হার খুবই কম। প্রতিবেদনে যেসব অভিযোগ তোলা হয়েছে, সেগুলোর ব্যাপারে মার্কিন সরকারের কাছে তথ্য-প্রমাণ চাওয়া হবে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রতিবেদনে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির যে চিত্র উঠে এসেছে, দীর্ঘমেয়াদে সেটি দেশটির উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।