ঢাকা ০৬:০৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
টাঙ্গাইল সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সম্পাদকের হস্তক্ষেপে মামলা প্রত্যাহার হওয়া টাঙ্গাইলবাসী খুশি! সভাপতি/সম্পাদকের নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ অনিয়মের বিরুদ্ধে জনপ্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান সিইসির পুলিশ, র‌্যাব, আনসারের নতুন পোশাক চুড়ান্ত নাইজেরিয়ায় ট্যাংকার ট্রাক বিস্ফোরণে নিহত অন্তত ৮৬ অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করা প্রতিবেদন প্রত্যাহার ব্রিটিশ এমপিদের যুবদল নেতাকে পিটিয়ে আহত করেছে স্বেচ্ছাসেবকদলের নেতা বরগুনার, পাথরঘাটায় সাবেক ইউপি সদস্যকে হুমকি ও মারধর চার প্রদেশে দেশ ভাগ করার কথা ভাবছে সংস্কার কমিশন যুদ্ধবিরতি এখনই কার্যকর হচ্ছে না, জানালেন নেতানিয়াহু সাকিব আল হাসানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি

রমজানে এবং সব সময় যে ৭ এবাদত বেশি করতে হবে

হাফেজ মাওলানা মোঃ হারুনুর রশিদ(রুহানী)
  • আপডেট টাইম : ০৫:৫০:১৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ মার্চ ২০২৪
  • / ১৬০ ৫০০০.০ বার পাঠক

ইবাদতের সবচেয়ে বড় মৌসুম হলো রমজান। এ মাসে প্রতিটি আমলের প্রতিদান যেমন হাজার গুণ বেড়ে যায়, তেমনি একজন মুমিনের জন্য সব পাপ থেকে বেঁচে নিজেকে একজন মুত্তাকি হিসাবে গড়ে তোলারও সুবর্ণ সুযোগ হয়।

সারা বছর আমাদের থেকে যে ত্রুটি-বিচ্যুতি হয়, সেগুলোকে আল্লাহতায়ালার কাছ থেকে ক্ষমা করিয়ে নেওয়ার মোক্ষম একটা সুযোগ হলো রমজান। এ মহাসৌভাগ্য অর্জন করতে আমরা নিম্নোক্ত বিষয়গুলোর অনুসরণ করতে পারি।

তবে রোজা রাখা মানে শুধু এই নয়, সুবহে সাদেক থেকে নিয়ে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার ও স্ত্রী সঙ্গম থেকে বিরত থাকা বরং পূর্ণাঙ্গভাবে রোজা রাখতে হলে এ সবের পাশাপাশি সব পাপ কাজ থেকে বেঁচে থাকাও বাঞ্ছনীয়। যেমন, মিথ্যা কথা বলা, অপরের দোষ চর্চা করা, ঝগড়া বিবাদ করা, গালাগালি করা, দৃষ্টির হেফাজত করা, সুদ, ঘুস ইত্যাদি কাজ থেকে বিরত থাকা।

পক্ষান্তরে যারা এসব কাজ থেকে বিরত থাকে না, হাদিসে সতর্ক করে বলা হয়েছে, তাদের রোজা আল্লাহর কোনো প্রয়োজন নেই। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত; রাসূল (সা.) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি পাপ, মিথ্যা কথা, অন্যায় কাজ ও মূর্খতাসুলভ কাজ ত্যাগ করতে পারে না, তার পানাহার ত্যাগ করাতে আল্লহতায়ালার কোনো প্রয়োজন নেই। (সহিহ বুখারি : ১৯০৩)।

কুরআন তেলাওয়াত করুন

রমজানে বেশি বেশি পবিত্র কুরআন তেলাওয়াত করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি আমল। কেননা আল্লাহতায়ালা রমজানের পরিচয় দিতে গিয়ে বলেছেন, রমজান হলো এমন মাস, যে মাসে কুরআন নাজিল করা হয়েছে। তাছাড়া রমজানে প্রতিটি আমলকে ৭০ গুণ বাড়িয়ে দেওয়া হয়।

আমরা যদি এক খতম কুরআন তেলাওয়াত করতে পারি, তাহলে ৭০ খতমের সওয়াব অনায়াসেই পেয়ে যাচ্ছি। তবে আমাদের এদিকে লক্ষ রাখতে হবে, অনেকে একাধিক খতম দেওয়ার জন্য খুব দ্রুত কুরআন তেলাওয়াত করেন। এটি একদমই সমীচীন নয়। বরং তেলাওয়াত ধীরে-সুস্থে কায়দাকানুন ঠিক রেখে করা উত্তম। তাই আমাদের উচিত, রমজানে সহিহ্-শুদ্ধভাবে বেশি বেশি কুরআন তেলাওয়াত করা এবং সময় থাকলে কুরআনের অর্থ বুঝে বুঝে তাফসিরসহ পড়াটা সর্বোত্তম কাজ।

নফল নামাজে মনোনিবেশ

রমজান সিয়ামের পাশাপাশি কিয়ামেরও মাস, অর্থাৎ নফল নামাজের মাস। রাসূল (সা.) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি রমজানে (রাতের বেলা নফল) নামাজে দাঁড়িয়ে থাকে, ইমানের সঙ্গে ও সওয়াবের আশায় তার পূর্বের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে। (সহিহ বুখারি : ৩৭)।

অন্য হাদিসে কিয়ামুল লাইল তথা রাতের নামাজের আদেশও দেওয়া হয়েছে। এর দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে তারাবির নামাজ আর এর চূড়ান্ত পর্যায় হলো তাহাজ্জুদের নামাজ। তাই আমাদের উচিত গুরুত্বের সঙ্গে রাতে তারাবির নামাজ আদায় করার পাশাপাশি তাহাজ্জুদের নামাজ এবং অন্যান্য নফল নামাজেও নিয়মিত হওয়া।

কায়মনে দোয়া করুন

রমজানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আমলগুলোর অন্যতম আমল হলো বেশি বেশি দোয়া করা। কেননা হাদিসে বর্ণিত আছে, রমজানে সবচেয়ে বেশি দোয়া কবুল করা হয়। বিশেষ করে ইফতারের পূর্ব মুহূর্তের দোয়া। তখন নিজের গুনাহগুলোর জন্য ক্ষমা চেয়ে দোয়া করা কাম্য।

এ মাসে আল্লাহতায়ালা ক্ষমার দরজা উন্মুক্ত করে দেন। আল্লাহতায়াল বলেন, যে কেউ আল্লাহকে ভয় করবে, তিনি তার গুনাহগুলোকে ক্ষমা করে দেবেন এবং তার পুরস্কার অনেক বাড়িয়ে দেবেন। (সূরা তালাক : ৫)।

অন্যকে ইফতার করান

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে পানাহার করিয়ে ইফতার করাবে, সে তার অনুরূপ সওয়াব লাভ করবে। (মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক : ৭৯০৬)।

অন্য রোজাদারকে ইফতার করানোর মাধ্যমে আমরা কিন্তু সহজেই একটি রোজার সওয়াব পেয়ে যাচ্ছি এবং আমরা যারা শহরে থাকি, আমাদের জন্য সুবর্ণ সুযোগ হলো, অনেক মানুষ ইফতারের সময় গাড়ি থেকে নেমে ভালোমন্দ ইফতার করতে পারেন না। আমরা যদি তাদের ইফতারে সহযোগিতা করতে পারি, তাহলেও আমরা মহাসৌভাগ্য অর্জন করতে পারব।

মুক্ত হস্তে দান করুন

আর রমজানে দানের গুরুত্ব অনেক বেশি। এ মাসকে দানের মাসও বলা হয়, কেননা এ মাসে একটি নফল ইবাদত করলে একটি ফরজের সমান সওয়াব। আর একটি ফরজ ইবাদত করলে ৭০টি ফরজের সওয়াব দেওয়া হয়। রমজানে নবি রাসূল, সাহাবায়ে কেরাম এবং সালফে সালেহিনরা প্রচুর পরিমাণে দান করতেন।

আয়েশা (রা.) বলেন, রাসূল (সা.)-এর দান রমজানে এমনভাবে বেড়ে যেত, তা মুক্ত বাতাসের মতো হয়ে যেত। মুক্ত বাতাস যেভাবে সবার কাছে পৌঁছে, ঠিক তেমনি যে চাইত তাকে তিনি দান করতেন, যে চাইত না তাকেও তিনি দান করতেন। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (সা.) ছিলেন মানুষের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দানশীল। আর রমজানে তাঁর বদান্যতা আরও বেড়ে যেত। (সহিহ মুসলিম, ৩২০৮)। তাই আমাদের উচিত দুস্থ-অভাবীদের সহযোগিতা করা।

বেশি বেশি জিকির করুন

রমজানে বেশি বেশি জিকির-আসকার করাও গুরুত্বপূর্ণ একটি আমল। অন্যান্য মাসের তুলনায় এ মাসে তূলনামূলক আমরা একটু অবসর থাকি বেশি। তাই অবসর সময়টুকু অপচয় না করে হাঁটতে-বসতে বেশি বেশি জিকির করা কাম্য।

রমজানে আমরা নিম্মোক্ত জিকিরগুলো আদায় করতে পারি। রাসূল (সা.) বলেন, সর্বোত্তম জিকির হলো ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ অর্থাৎ আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। তাই আমাদের উচিত, এটা বেশি বেশি পড়া।

ক্ষমা চেয়ে এ জিকিরটি বেশি বেশি পড়া, রাব্বিগফিরলি ওয়া তুব আলাইয়্যা ইন্নাকা আনতাত তাওয়াবুর রাহিম। অর্থাৎ : হে মহীয়ান রব! আমাকে ক্ষমা করে দিন, আমার তওবা কবুল করুন। নিশ্চয় আপনি অতিশয় তওবা কবুলকারী, দয়াবান অথবা সংক্ষেপে শুধু আস্তাগফিরুল্লাহও পড়তে পারেন।

এছাড়া ‘সুবহানাল্লাহ’, ‘আলহামদুলিল্লাহ’, ‘আল্লাহু আকবার’, ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’, ‘আল্লাহুম্মা সাল্লিম সাল্লিম’, ‘সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি সুবহানাল্লাহিল আজিম’ এ জিকিরগুলো আদায় করতে পারেন।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

রমজানে এবং সব সময় যে ৭ এবাদত বেশি করতে হবে

আপডেট টাইম : ০৫:৫০:১৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ মার্চ ২০২৪

ইবাদতের সবচেয়ে বড় মৌসুম হলো রমজান। এ মাসে প্রতিটি আমলের প্রতিদান যেমন হাজার গুণ বেড়ে যায়, তেমনি একজন মুমিনের জন্য সব পাপ থেকে বেঁচে নিজেকে একজন মুত্তাকি হিসাবে গড়ে তোলারও সুবর্ণ সুযোগ হয়।

সারা বছর আমাদের থেকে যে ত্রুটি-বিচ্যুতি হয়, সেগুলোকে আল্লাহতায়ালার কাছ থেকে ক্ষমা করিয়ে নেওয়ার মোক্ষম একটা সুযোগ হলো রমজান। এ মহাসৌভাগ্য অর্জন করতে আমরা নিম্নোক্ত বিষয়গুলোর অনুসরণ করতে পারি।

তবে রোজা রাখা মানে শুধু এই নয়, সুবহে সাদেক থেকে নিয়ে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার ও স্ত্রী সঙ্গম থেকে বিরত থাকা বরং পূর্ণাঙ্গভাবে রোজা রাখতে হলে এ সবের পাশাপাশি সব পাপ কাজ থেকে বেঁচে থাকাও বাঞ্ছনীয়। যেমন, মিথ্যা কথা বলা, অপরের দোষ চর্চা করা, ঝগড়া বিবাদ করা, গালাগালি করা, দৃষ্টির হেফাজত করা, সুদ, ঘুস ইত্যাদি কাজ থেকে বিরত থাকা।

পক্ষান্তরে যারা এসব কাজ থেকে বিরত থাকে না, হাদিসে সতর্ক করে বলা হয়েছে, তাদের রোজা আল্লাহর কোনো প্রয়োজন নেই। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত; রাসূল (সা.) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি পাপ, মিথ্যা কথা, অন্যায় কাজ ও মূর্খতাসুলভ কাজ ত্যাগ করতে পারে না, তার পানাহার ত্যাগ করাতে আল্লহতায়ালার কোনো প্রয়োজন নেই। (সহিহ বুখারি : ১৯০৩)।

কুরআন তেলাওয়াত করুন

রমজানে বেশি বেশি পবিত্র কুরআন তেলাওয়াত করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি আমল। কেননা আল্লাহতায়ালা রমজানের পরিচয় দিতে গিয়ে বলেছেন, রমজান হলো এমন মাস, যে মাসে কুরআন নাজিল করা হয়েছে। তাছাড়া রমজানে প্রতিটি আমলকে ৭০ গুণ বাড়িয়ে দেওয়া হয়।

আমরা যদি এক খতম কুরআন তেলাওয়াত করতে পারি, তাহলে ৭০ খতমের সওয়াব অনায়াসেই পেয়ে যাচ্ছি। তবে আমাদের এদিকে লক্ষ রাখতে হবে, অনেকে একাধিক খতম দেওয়ার জন্য খুব দ্রুত কুরআন তেলাওয়াত করেন। এটি একদমই সমীচীন নয়। বরং তেলাওয়াত ধীরে-সুস্থে কায়দাকানুন ঠিক রেখে করা উত্তম। তাই আমাদের উচিত, রমজানে সহিহ্-শুদ্ধভাবে বেশি বেশি কুরআন তেলাওয়াত করা এবং সময় থাকলে কুরআনের অর্থ বুঝে বুঝে তাফসিরসহ পড়াটা সর্বোত্তম কাজ।

নফল নামাজে মনোনিবেশ

রমজান সিয়ামের পাশাপাশি কিয়ামেরও মাস, অর্থাৎ নফল নামাজের মাস। রাসূল (সা.) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি রমজানে (রাতের বেলা নফল) নামাজে দাঁড়িয়ে থাকে, ইমানের সঙ্গে ও সওয়াবের আশায় তার পূর্বের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে। (সহিহ বুখারি : ৩৭)।

অন্য হাদিসে কিয়ামুল লাইল তথা রাতের নামাজের আদেশও দেওয়া হয়েছে। এর দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে তারাবির নামাজ আর এর চূড়ান্ত পর্যায় হলো তাহাজ্জুদের নামাজ। তাই আমাদের উচিত গুরুত্বের সঙ্গে রাতে তারাবির নামাজ আদায় করার পাশাপাশি তাহাজ্জুদের নামাজ এবং অন্যান্য নফল নামাজেও নিয়মিত হওয়া।

কায়মনে দোয়া করুন

রমজানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আমলগুলোর অন্যতম আমল হলো বেশি বেশি দোয়া করা। কেননা হাদিসে বর্ণিত আছে, রমজানে সবচেয়ে বেশি দোয়া কবুল করা হয়। বিশেষ করে ইফতারের পূর্ব মুহূর্তের দোয়া। তখন নিজের গুনাহগুলোর জন্য ক্ষমা চেয়ে দোয়া করা কাম্য।

এ মাসে আল্লাহতায়ালা ক্ষমার দরজা উন্মুক্ত করে দেন। আল্লাহতায়াল বলেন, যে কেউ আল্লাহকে ভয় করবে, তিনি তার গুনাহগুলোকে ক্ষমা করে দেবেন এবং তার পুরস্কার অনেক বাড়িয়ে দেবেন। (সূরা তালাক : ৫)।

অন্যকে ইফতার করান

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে পানাহার করিয়ে ইফতার করাবে, সে তার অনুরূপ সওয়াব লাভ করবে। (মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক : ৭৯০৬)।

অন্য রোজাদারকে ইফতার করানোর মাধ্যমে আমরা কিন্তু সহজেই একটি রোজার সওয়াব পেয়ে যাচ্ছি এবং আমরা যারা শহরে থাকি, আমাদের জন্য সুবর্ণ সুযোগ হলো, অনেক মানুষ ইফতারের সময় গাড়ি থেকে নেমে ভালোমন্দ ইফতার করতে পারেন না। আমরা যদি তাদের ইফতারে সহযোগিতা করতে পারি, তাহলেও আমরা মহাসৌভাগ্য অর্জন করতে পারব।

মুক্ত হস্তে দান করুন

আর রমজানে দানের গুরুত্ব অনেক বেশি। এ মাসকে দানের মাসও বলা হয়, কেননা এ মাসে একটি নফল ইবাদত করলে একটি ফরজের সমান সওয়াব। আর একটি ফরজ ইবাদত করলে ৭০টি ফরজের সওয়াব দেওয়া হয়। রমজানে নবি রাসূল, সাহাবায়ে কেরাম এবং সালফে সালেহিনরা প্রচুর পরিমাণে দান করতেন।

আয়েশা (রা.) বলেন, রাসূল (সা.)-এর দান রমজানে এমনভাবে বেড়ে যেত, তা মুক্ত বাতাসের মতো হয়ে যেত। মুক্ত বাতাস যেভাবে সবার কাছে পৌঁছে, ঠিক তেমনি যে চাইত তাকে তিনি দান করতেন, যে চাইত না তাকেও তিনি দান করতেন। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (সা.) ছিলেন মানুষের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দানশীল। আর রমজানে তাঁর বদান্যতা আরও বেড়ে যেত। (সহিহ মুসলিম, ৩২০৮)। তাই আমাদের উচিত দুস্থ-অভাবীদের সহযোগিতা করা।

বেশি বেশি জিকির করুন

রমজানে বেশি বেশি জিকির-আসকার করাও গুরুত্বপূর্ণ একটি আমল। অন্যান্য মাসের তুলনায় এ মাসে তূলনামূলক আমরা একটু অবসর থাকি বেশি। তাই অবসর সময়টুকু অপচয় না করে হাঁটতে-বসতে বেশি বেশি জিকির করা কাম্য।

রমজানে আমরা নিম্মোক্ত জিকিরগুলো আদায় করতে পারি। রাসূল (সা.) বলেন, সর্বোত্তম জিকির হলো ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ অর্থাৎ আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। তাই আমাদের উচিত, এটা বেশি বেশি পড়া।

ক্ষমা চেয়ে এ জিকিরটি বেশি বেশি পড়া, রাব্বিগফিরলি ওয়া তুব আলাইয়্যা ইন্নাকা আনতাত তাওয়াবুর রাহিম। অর্থাৎ : হে মহীয়ান রব! আমাকে ক্ষমা করে দিন, আমার তওবা কবুল করুন। নিশ্চয় আপনি অতিশয় তওবা কবুলকারী, দয়াবান অথবা সংক্ষেপে শুধু আস্তাগফিরুল্লাহও পড়তে পারেন।

এছাড়া ‘সুবহানাল্লাহ’, ‘আলহামদুলিল্লাহ’, ‘আল্লাহু আকবার’, ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’, ‘আল্লাহুম্মা সাল্লিম সাল্লিম’, ‘সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি সুবহানাল্লাহিল আজিম’ এ জিকিরগুলো আদায় করতে পারেন।