ঢাকা ০৬:০২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
পাসপোর্টে ফিরল ‘এক্সসেপ্ট ইসরাইল’, যা বললেন সাবেক রাষ্ট্রদূত রোববার সারা দেশে মহাসমাবেশের ডাক কারিগরি শিক্ষার্থীদের আগামী জাতীয় নির্বাচন হবে দেশের ইতিহাসের সর্বোত্তম নির্বাচন: প্রধান উপদেষ্টা কমিশনের অধিকাংশ প্রস্তাবে একমত এনসিপি, আমূল পরিবর্তনের আহ্বান কুমিল্লা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের  সাবেক চেয়ারম্যান জামাল নাসের সচিবের বিরুদ্ধে অনিয়মে জনবল নিয়োগ,জ্ঞাত আয় বহিভূত সম্পদ অর্জন,, বোর্ডে অনিয়ম নিয়ম বহিরভূত  অবৈধ উপায়ে ১২ জন ঠিকা ভিত্তিক কর্মচারী নিয়োগে বয়স জালিয়াতির অভিযোগ ট্রাম্প-মোদি-শি এসে কিছু করে দিয়ে যাবে না: মির্জা ফখরুল কোস্ট গার্ডের অভিযানে অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ করিম শরীফ বাহিনীর দুই সহযোগী আটক নব নির্বাচিত হরিরামপুর প্রেসক্লাবের মাসিক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত ভৈরবে ভবানী পুর সালিশ বৈঠকে ২ বংশের মাঝে সংঘর্ষে ১জন নিহত ২০ জন হাহত হয় খামেনিকে বাদশাহ সালমানের চিঠি পৌঁছে দিলেন সৌদির প্রতিরক্ষামন্ত্রী

কমিশনের অধিকাংশ প্রস্তাবে একমত এনসিপি, আমূল পরিবর্তনের আহ্বান

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট টাইম : ০৯:১১:০৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫
  • / ১ ৫০০০.০ বার পাঠক

ঐকমত্য কমিশনের কাছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আহ্বান জানিয়েছে, যে সংস্কার করলে রাষ্ট্র কাঠামোর গুণগত আমূল পরিবর্তন সম্ভব হবে, সেই পথ তৈরি করুন।

শনিবার জাতীয় সংসদের এলডি হলে এসিপির সঙ্গে সংলাপের শুরুতে এ প্রত্যাশা করেন নতুন দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।

গণঅভ্যুত্থানের ধারাবাহিকতায় একটি নতুন রাজনৈতিক দল হিসেবে এনসিপির আত্মপ্রকাশ হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এই গণঅভ্যুত্থান কেবল কোনো ব্যক্তির পরিবর্তন নয়, ক্ষমতা থেকে একটি দলকে সরিয়ে আরেকটি দলকে বসানোর পরিকল্পনা ছিল না। বরং কীভাবে রাষ্ট্র কাঠামোর মৌলিক ও গুণগত পরিবর্তনের মাধ্যমে জনগণের অধিকার রক্ষা করবে, সেরকম একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আকাঙ্ক্ষা ছিল।’

রাষ্ট্র সংস্কারের লক্ষ্যে গঠিত সংস্কার কমিশনগুলোর একীভূত সুপারিশ চূড়ান্ত করার পাশাপাশি এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য তৈরির জন্য কাজ করছে ঐকমত্য কমিশন।

পাঁচটি সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনের গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশের ওপর ৩৯টি রাজনৈতিক দলের মতামত জানতে চেয়েছিল ঐকমত্য কমিশন। এরপর সেই মতামত ধরে সংশ্লিষ্ট দলের সঙ্গে সংলাপ করছে কমিশন।

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় ও ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজের সভাপতিত্বে শনিবার এই বৈঠক শুরু হয়।

এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের নেতৃত্বে দলটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, জ্যেষ্ঠ সদস্য সচিব নাহিদা সারোয়ার নিভা, মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ, মুখ্য সমন্বয়কারী নাসিরুদ্দিন পাটওয়ারি, যুগ্ম-আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার, যুগ্ম-আহ্বায়ক জাবেদ রাসিন বৈঠকে অংশ নিয়েছেন।

দলের পক্ষে সূচনা বক্তব্যে নাহিদ বলেন, ‘এনসিপি সংস্কার বলতে মৌলিক সংস্কার বোঝে, যে সংস্কার করলে রাষ্ট্র কাঠামোর গুণগত আমূল পরিবর্তন সম্ভব হবে। কারণ আমরা দেখেছি, বিগত সময়ে আমাদের সংবিধান থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর দলীয়করণ ঘটেছিল। আমাদের সংবিধানে একব্যক্তি কেন্দ্রীক একটি কাঠামোর বীজ বপন ছিল। ফলে সেই রাষ্ট্রকাঠামোকে অক্ষুন্ন রেখে যেই ক্ষমতায় যাক তার ভিতরেও ফ্যাসিবাদী প্রবণতা থাকবে, স্বৈরতান্ত্রিক হয়ে উঠার প্রবণতা থাকবে।’

‘সেই জায়গায় রাষ্ট্রের সংস্কার, সংবিধান, প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা, বিচার ব্যবস্থা, নির্বাচন ব্যবস্থা ইত্যাদি বিষয়ে আমরা এনসিপি বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছি।’

ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে যেসব সুপারিশ পাঠানো হয়েছিল, সেগুলোর অধিকাংশের সঙ্গেই এনসিপি একমত হয়েছে বলেও জানান তিনি।

আন্দোলনের নেতাদের পাশাপাশি জনগণের চাওয়ায় রাষ্ট্র সংস্কারে জন্য একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত মূর্ত হয়ে উঠেছে বলে মনে করছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ।

সংলাপের সূচনা বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে যে শাসন আমাদের বুকের ওপর জগদ্দল পাথরের মত বসে ছিল, তাকে আপনারা দৃঢ়তা, সাহসিকতা দিয়ে, নির্ভীক, অবিচল প্রচেষ্টা দিয়ে লক্ষ লক্ষ মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছন, যারা প্রাণবাজি রেখে লড়াই করেছে, প্রাণ দিয়েছে এবং শেষ পর্যন্ত ফ্যাসিবাদী শাসকের বিরুদ্ধে বিজয় হয়েছে।’

‘সে বিজয়ের পাশাপাশি আপনারা সুস্পষ্টভাবে বলছেন একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত চান এবং আপনাদের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে দীর্ঘদিন ধরে যে আকাঙ্খা মানুষের মধ্যে ছিল সেটা মূর্ত হয়ে উঠেছে রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য।’

আলী রীয়াজ বলেন, ‘এখন আমাদের কাজ সকলে মিলে যেন একটি নতুন বাংলাদেশ গড়তে পারি। যেন বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদের শাসন ফেরত না আসে। বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো স্থায়ী রূপ নেয়। যেন মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়। গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যা এবং সমস্ত রকম নিপীড়ন মোকাবিলা করতে পারি। আমরা চাই জাতির আকাঙ্ক্ষার জায়গায় জাতীয় সনদ তৈরি করতে।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গত ১৫ ফেব্রুয়ারি কাজ শুরু করে। এতে সহসভাপতি হিসেবে রয়েছেন সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক আলী রীয়াজ।

কমিশনের সদস্য হিসেবে রয়েছেন- জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন প্রধান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী, পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান সফর রাজ হোসেন, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের সদস্য বিচারপতি এমদাদুল হক এবং দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রধান ইফতেখারুজ্জামান।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

কমিশনের অধিকাংশ প্রস্তাবে একমত এনসিপি, আমূল পরিবর্তনের আহ্বান

আপডেট টাইম : ০৯:১১:০৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫

ঐকমত্য কমিশনের কাছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আহ্বান জানিয়েছে, যে সংস্কার করলে রাষ্ট্র কাঠামোর গুণগত আমূল পরিবর্তন সম্ভব হবে, সেই পথ তৈরি করুন।

শনিবার জাতীয় সংসদের এলডি হলে এসিপির সঙ্গে সংলাপের শুরুতে এ প্রত্যাশা করেন নতুন দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।

গণঅভ্যুত্থানের ধারাবাহিকতায় একটি নতুন রাজনৈতিক দল হিসেবে এনসিপির আত্মপ্রকাশ হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এই গণঅভ্যুত্থান কেবল কোনো ব্যক্তির পরিবর্তন নয়, ক্ষমতা থেকে একটি দলকে সরিয়ে আরেকটি দলকে বসানোর পরিকল্পনা ছিল না। বরং কীভাবে রাষ্ট্র কাঠামোর মৌলিক ও গুণগত পরিবর্তনের মাধ্যমে জনগণের অধিকার রক্ষা করবে, সেরকম একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আকাঙ্ক্ষা ছিল।’

রাষ্ট্র সংস্কারের লক্ষ্যে গঠিত সংস্কার কমিশনগুলোর একীভূত সুপারিশ চূড়ান্ত করার পাশাপাশি এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য তৈরির জন্য কাজ করছে ঐকমত্য কমিশন।

পাঁচটি সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনের গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশের ওপর ৩৯টি রাজনৈতিক দলের মতামত জানতে চেয়েছিল ঐকমত্য কমিশন। এরপর সেই মতামত ধরে সংশ্লিষ্ট দলের সঙ্গে সংলাপ করছে কমিশন।

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় ও ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজের সভাপতিত্বে শনিবার এই বৈঠক শুরু হয়।

এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের নেতৃত্বে দলটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, জ্যেষ্ঠ সদস্য সচিব নাহিদা সারোয়ার নিভা, মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ, মুখ্য সমন্বয়কারী নাসিরুদ্দিন পাটওয়ারি, যুগ্ম-আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার, যুগ্ম-আহ্বায়ক জাবেদ রাসিন বৈঠকে অংশ নিয়েছেন।

দলের পক্ষে সূচনা বক্তব্যে নাহিদ বলেন, ‘এনসিপি সংস্কার বলতে মৌলিক সংস্কার বোঝে, যে সংস্কার করলে রাষ্ট্র কাঠামোর গুণগত আমূল পরিবর্তন সম্ভব হবে। কারণ আমরা দেখেছি, বিগত সময়ে আমাদের সংবিধান থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর দলীয়করণ ঘটেছিল। আমাদের সংবিধানে একব্যক্তি কেন্দ্রীক একটি কাঠামোর বীজ বপন ছিল। ফলে সেই রাষ্ট্রকাঠামোকে অক্ষুন্ন রেখে যেই ক্ষমতায় যাক তার ভিতরেও ফ্যাসিবাদী প্রবণতা থাকবে, স্বৈরতান্ত্রিক হয়ে উঠার প্রবণতা থাকবে।’

‘সেই জায়গায় রাষ্ট্রের সংস্কার, সংবিধান, প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা, বিচার ব্যবস্থা, নির্বাচন ব্যবস্থা ইত্যাদি বিষয়ে আমরা এনসিপি বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছি।’

ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে যেসব সুপারিশ পাঠানো হয়েছিল, সেগুলোর অধিকাংশের সঙ্গেই এনসিপি একমত হয়েছে বলেও জানান তিনি।

আন্দোলনের নেতাদের পাশাপাশি জনগণের চাওয়ায় রাষ্ট্র সংস্কারে জন্য একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত মূর্ত হয়ে উঠেছে বলে মনে করছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ।

সংলাপের সূচনা বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে যে শাসন আমাদের বুকের ওপর জগদ্দল পাথরের মত বসে ছিল, তাকে আপনারা দৃঢ়তা, সাহসিকতা দিয়ে, নির্ভীক, অবিচল প্রচেষ্টা দিয়ে লক্ষ লক্ষ মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছন, যারা প্রাণবাজি রেখে লড়াই করেছে, প্রাণ দিয়েছে এবং শেষ পর্যন্ত ফ্যাসিবাদী শাসকের বিরুদ্ধে বিজয় হয়েছে।’

‘সে বিজয়ের পাশাপাশি আপনারা সুস্পষ্টভাবে বলছেন একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত চান এবং আপনাদের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে দীর্ঘদিন ধরে যে আকাঙ্খা মানুষের মধ্যে ছিল সেটা মূর্ত হয়ে উঠেছে রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য।’

আলী রীয়াজ বলেন, ‘এখন আমাদের কাজ সকলে মিলে যেন একটি নতুন বাংলাদেশ গড়তে পারি। যেন বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদের শাসন ফেরত না আসে। বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো স্থায়ী রূপ নেয়। যেন মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়। গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যা এবং সমস্ত রকম নিপীড়ন মোকাবিলা করতে পারি। আমরা চাই জাতির আকাঙ্ক্ষার জায়গায় জাতীয় সনদ তৈরি করতে।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গত ১৫ ফেব্রুয়ারি কাজ শুরু করে। এতে সহসভাপতি হিসেবে রয়েছেন সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক আলী রীয়াজ।

কমিশনের সদস্য হিসেবে রয়েছেন- জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন প্রধান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী, পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান সফর রাজ হোসেন, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের সদস্য বিচারপতি এমদাদুল হক এবং দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রধান ইফতেখারুজ্জামান।