রাজধানীর খিলগাঁও থানাধীন মেরাদিয়া এলাকায় এক গৃহবধূ ও তার পরিবারের উপর ভয়াবহ হামলা, শ্লীলতাহানি ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে গত ২৮ মার্চ রাত আনুমানিক ৯টার দিকে। নির্যাতনের শিকার সানিয়া আফরিন (৩২) নামের ওই গৃহবধূ বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় তিনি খিলগাঁও থানায় লিখিত এজাহার দায়ের করেছেন।

এজাহার সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী সানিয়া আফরিনের স্বামী মো. সোহেল (৩৮), পিতা: মো. শফিকুল ইসলাম, বিগত ১৫ বছর আগে ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক তাকে বিবাহ করেন। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকসহ নানান কারণে তাদের মধ্যে দাম্পত্য কলহ ও নির্যাতন চলতে থাকে। সানিয়া অভিযোগ করেন, স্বামী সোহেল কোনো ভরণ-পোষণ না দিয়ে প্রায়শই মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করতেন। এমনকি গোপনে দ্বিতীয় বিয়েও করেছেন বলে তিনি জানান।

সানিয়া আরও জানান, ঘটনার দিন তিনি খোঁজ নিতে স্বামীর মেরাদিয়ার বাসায় গেলে সোহেল তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং অতর্কিত আক্রমণ চালায়। এসময় সোহেলের নির্দেশে অভিযুক্ত মো. আলিফ ওরফে বাবু (২৭), ময়না বেগম (৪৮) সহ আরও ৫/৬ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। তারা এলোপাতাড়ি মারধর করে সানিয়ার মাথা ফাটিয়ে দেয় এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর জখম করে।

সানিয়ার দাবি, তার বোন পলি বেগম (২১) ঘটনাস্থলে এসে বাধা দিতে গেলে তাকেও নির্মমভাবে মারধর করা হয় এবং শ্লীলতাহানির শিকার হতে হয়। এমনকি পলির সঙ্গে থাকা দুই শিশু মো. আরাবি (৬) ও মো. আয়াত (৭) এর উপরও হামলা চালানো হয়।

এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, হামলাকারীরা সানিয়ার গলা থেকে প্রায় ১০ আনা ওজনের স্বর্ণের চেইন (মূল্য আনুমানিক ৮০ হাজার টাকা), একটি স্যামসাং স্মার্টফোন (মূল্য ৩৫ হাজার টাকা) এবং নগদ ১৮ হাজার ৭৮৬ টাকা লুট করে নিয়ে যায়।

হামলার পর এলাকাবাসীর সহায়তায় আহতদের উদ্ধার করে মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়, যেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করেন। পরে সানিয়া আফরিন থানায় উপস্থিত হয়ে এজাহার দায়ের করেন।

ভুক্তভোগী সানিয়া প্রশাসনের কাছে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।

খিলগাঁও থানার একজন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানিয়েছেন, অভিযোগ পেয়েছেন এবং বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি আশ্বাস দেন।অনুসন্ধান চলছে