সরকারের কথার সঙ্গে কাজের কোনো মিল নেই’
- আপডেট টাইম : ০৮:৩৩:২৫ অপরাহ্ণ, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪
- / ১০৭ ৫০০০.০ বার পাঠক
‘চিকিৎসাধীন কাউকে এভাবে ধরে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি পরিষ্কারভাবে মধ্যযুগে ফিরে যাওয়ার মতো ঘটনা। জমিদারি আমলে জমিদারের লাঠিয়ালরা এসব করত। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা সেই যুগেই ফিরে গিয়েছি বলে মনে হচ্ছে।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তিন সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ, নাহিদ ইসলাম ও আবু বাকের মজুমদারকে শুক্রবার বিকেলে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থা থেকে তুলে নেওয়ার পর রাতে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পক্ষ থেকে জানানো হয় ‘নিরাপত্তাজনিত কারণে’ তাদের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে ডিবির অতিরিক্ত উপকমিশনার জুনায়েদ আলম সরকার বিভিন্ন গণমাধ্যমকে বলেন, নিরাপত্তার স্বার্থে তিন সমন্বয়ককে ডিবি হেফাজতে নিয়ে আসা হয়েছে। সেখানে তাদের গত দুইদিনে ঘটে যাওয়া ঘটনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলেও জানান তিনি।
এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন ওঠে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কাউকে ডিবি এভাবে তুলে নিয়ে যেতে পারে কি না? এ ব্যাপারে বাংলাদেশের সংবিধানেই বা কী বলা হয়েছে?
বিষয়টি নিয়ে ডেইলি টাইমস ভয়েস কথা বলেছে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শাহদীন মালিক, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং সংবিধান বিশেষজ্ঞ আরিফ খানের সঙ্গে।
এ ব্যাপারে শাহদীন মালিকের ভাষ্য, ‘যে শিক্ষার্থীদের তুলে নেওয়া হয়েছে তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে বলে কারও কাছে অভিযোগ করেছে কিংবা সাহায্য চেয়েছে—এ ধরনের কোনো খবর তো আমাদের কাছে নাই। অবশ্যই চিকিৎসাধীন কাউকে এভাবে ধরে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি পরিষ্কারভাবে মধ্যযুগে ফিরে যাওয়ার মতো ঘটনা। জমিদারি আমলে জমিদারের লাঠিয়ালরা এসব করত। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা সেই যুগেই ফিরে গিয়েছি বলে মনে হচ্ছে।’
পুলিশ পরিচয়ে তুলে নেওয়ার পর কোটা আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলামের ওপর নির্যাতন চালানো হয়।
পাশাপাশি আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দায়ের ও ঢালাও গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে এই জ্যেষ্ঠ আইনজীবী বলেন, ‘আমরা তো একটা অগণতান্ত্রিক ও কর্তৃত্ববাদী ব্যবস্থার ভেতর আছি। এখানে এটাই স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া।’
ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের আইন বিভাগের এ শিক্ষক আরও বলেন, ‘এ ধরনের ব্যবস্থায় যারা ক্ষমতায় থাকে তারা সবসময় মানুষকে দমন-পীড়নের মাধ্যমে দমিয়ে রাখতে চায়। তাই এটা এখানে নতুন কিছু না। অগণতান্ত্রিক কর্তৃত্ববাদী রাস্ট্রের চরিত্র এমনই। এমন অন্যান্য দেশেও সরকার সাধারণত এমনটাই করে থাকে এবং নিপীড়নের আশ্রয় নেয়। এর অংশ হিসেবেই তারা ইন্টারনেট ও সোশ্যাল মিডিয়া শাটডাউনের মতো ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।