জানে আলম অপুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গুলশানে সাবেক এমপির বাসায় ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির ঘটনায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।
শুক্রবার (১ আগস্ট) তাকে রাজধানীর ওয়ারী থেকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছেন ডিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান।
তিনি বলেন, গুলশানে ৫০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির ঘটনায় গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপুকে ওয়ারী থেকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি।
চাঁদাবাজির ঘটনায় এর আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক নেতা আবদুর রাজ্জাক বিন সোলাইমান ওরফে রিয়াদ, ইব্রাহিম হোসেন ওরফে মুন্না, সাকাদাউন সিয়াম, সাদমান সাদাব ও অপ্রাপ্তবয়স্ক একজনকে গ্রেপ্তার করে গুলশান থানা পুলিশ। প্রাপ্তবয়স্ক চার আসামির রিমান্ড চলছে।
গত বুধবার ডিএমপি ব্রিফিংয়ে ডিসি মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানান, গুলশানে সাবেক সংসদ সদস্যের বাসায় গিয়ে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির ঘটনায় গ্রেপ্তার আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর নাখালপাড়ায় রিয়াদের ভাড়া বাসা থেকে চারটি চেক উদ্ধার করা হয়। চেক চারটি মোট দুই কোটি ২৫ লাখ টাকার।
আবদুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান ওরফে রিয়াদ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। চাঁদাবাজির ঘটনায় সংগঠন থেকে তাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরে তার বাড্ডার ভাড়া বাসায় (মেস) অভিযান চালিয়ে দুই লাখ ৯৮ হাজার টাকা উদ্ধার করে গুলশান থানা পুলিশ।
গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাফিজুর রহমান বলেন, আবদুর রাজ্জাক ওরফে রিয়াদের আরেকটি ভাড়া বাসার সন্ধান পেয়েছি আমরা। বাসাটি বাড্ডায়। শাম্মী আহমেদের বাসা থেকে রাজ্জাকরা যে ১০ লাখ টাকা চাঁদা নিয়েছিল, তার মধ্যে দুই লাখ ৯৮ হাজার টাকা বাড্ডার বাসা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। বাকি টাকা উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
এর আগে, গত ২৬ জুলাই চাঁদাবাজির অভিযোগ আনা হয় জানে আলম অপুর বিরুদ্ধে। যদিও তিনি এক ফেসবুল পোস্টে বিষয়টি অস্বীকার করে।
পোস্টে তিনি বলেন, ‘প্রথমত আমি গ্রেপ্তার হইনি, দ্বিতীয়ত আমি কোথাও চাঁদাবাজিও করি নাই। আজকের গুলশানের ঘটনায় আমি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ কোনোভাবেই জড়িত ছিলাম না।’
এছাড়া চাঁদাবাজির ঘটনার ভিডিওর ব্যাখ্যা মিডিয়ার সামনে দেবে বলেও তিনি জানান।
এ ঘটনার পরে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের আলাদা দুটি জরুরি নোটিশে বলা হয়েছে, কতিপয় ব্যক্তি সমন্বয়ক পরিচয়ে চাঁদাবাজি করতে গেলে সেখানে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ, কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপু ও সদস্য আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমানের সরাসরি সম্পৃক্ততার প্রমাণ পায়।
ওই নোটিশে আরও বলা হয় ‘গঠনতন্ত্রের ধারা ৩.১ অনুযায়ী, সংগঠনের ভাবমূর্তি ও শৃঙ্খলার পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকা এবং চাঁদাবাজির সঙ্গে সরাসরি সংশ্লিষ্টতার সুনির্দিষ্ট প্রমাণ প্রাপ্তির পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় সংসদের আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার ও সদস্যসচিব জাহিদ আহসানের নির্দেশনায় দুইজনকে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের সব পর্যায়ের দায়িত্ব ও সদস্যপদ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হলো। একই সঙ্গে, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে বাংলাদেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ অনুরোধ জানায়।’
এদিকে এ ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৩ জনকে স্থায়ী বহিষ্কার করেছে সংগঠনটি।
প্রিন্ট