কার হাতে উঠছে ঢাকা ১৪ আসনের নৌকা প্রতীক?
- আপডেট টাইম : ০১:২৫:২৪ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ১১ মে ২০২১
- / ৩৫৭ ৫০০০.০ বার পাঠক
ইয়াসিন আহমেদ রিপোর্ট।।
জাতীয় সংসদ ১৮৭ ও ঢাকা ১৪ আসনের নির্বাচিত সাংসদ আলহাজ্ব আসলামুল হক
করোনায় হঠাৎ করে মৃত্যু বরণ করায় এ আসনটিকে ঘিরে চলছে নানান
জল্পনা-কল্পনা।
কার হাতে উঠছে নৌকা প্রতীক এই নিয়েই আলোচনা চলছে ঢাকা ১৪ আসনে। আসলামুল
হকের মূল প্রতিদ্বন্ধী ছিল যুব মহিলা লীগের ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি ও
সাবেক সংসদ সদস্য সাবিনা আক্তার তুহিন, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের
সাংগঠনিক সম্পাদক ও দারুস সালাম থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ বি এম
মাজহারুল আনাম। কিন্তু, বিভিন্ন বিকর্তিত কর্মকান্ডে জড়ানোর কারণে
দুইজনেরই এবার মনোনয়ন না পাওয়ার সম্ভবনা সব দিক থেকেই বেশী।
যুব মহিলা লীগের ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য সাবিনা
আক্তার তুহিনের সাথে আলোচিত নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত
সাধারণ সম্পাদক শামীমা নূর পাপিয়ার সখ্যতা থাকার বিষয়ে বিভিন্ন সংবাদ
মাধ্যমে আলোচনার খোড়াক যুগিয়েছে। ফলে আওয়ামীলীগের মতো একটি ঐতিহ্যবাহী
সংগঠনের থেকে তার এবার মনোনয়ন না পাওয়ার সম্ভবনাই বেশী।
অন্যদিকে দারুস সালাম থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ বি এম মাজহারুল আনাম
নারী কেলেঙ্কারীতে জড়িয়ে দীর্ঘদিন জেল খেটে জাবিনে মুক্তি পেয়েছে। এ বি
এম মাজহারুল আনামের স্ত্রীর করা মামলার পর তার সাথে বিভিন্ন নারীর
অন্তরঙ্গ ছবি বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে ফলাও করে প্রচার হয়েছে। বিতর্কিত এ
বি এম মাজহারুল আনাম এবার তাই মনোনয়ন না পাওয়া এক প্রকার নিশ্চিত।
এই দুই জনের বাইরে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এ
মান্নান কচিও ঢাকা ১৪ আসন থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী। কিন্তু, এস এ মান্নান
কচি বরাবরই ঢাকা ১৬ আসনের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। ফলে, স্থানীয় জন
সমর্থনের দিক থেকে এস এ মান্নান কচি পিছিয়ে রয়েছে।
এই আসনে এবার নৌকার মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভবনার দিক থেকে সবচেয়ে উজ্বল হাজী
মোঃ লুৎফর রহমান (সিআইপি)। স্বাধীনতার পর ১৯৭২-৭৪ সালে বৃহত্তর মিরপুর
থানা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালনকারী হাজী মোঃ লুৎফর রহমান জন
সমর্থনের দিক থেকে সবচেয়ে এগিয়ে।
হাজী লুৎফর রহমানের পিতা মরহুম নুরুল ইসলাম জমিদার মুক্তিযুদ্ধ পূর্ব
জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর আদর্শে সৈনিক হিসাবে আওয়ামী মুসলিম লীগের একজন
একনিষ্ঠ কর্মী। মহান মুক্তিযুদ্ধে জাতির জনকের আদর্শের সৈনিক হওয়ার কারনে
আলবদর-রাজাকাররা তার বাড়ীঘর পুড়িয়ে দেয়। শুধু পুড়িয়ে দিয়েই ক্ষান্ত না
হয়ে তার বড়ভাই নুরুল হক ও চাচাতো ভাই শামসুদ্দোহাকে নির্মমভাবে হত্যা করে
শহীদ করে। সেদিন লুৎফর রহমান নিজেকে একজন মুক্তির সৈনিক হিসাবে
মুক্তিযোদ্ধাদের আর্থিক সহায়তা দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের একজন সহযোদ্ধা হিসাবে
কাজ করেন।
মুক্তিযুদ্ধে দেশ স্বাধীনতার পর ১৯৭২-৭৪ সালে লুৎফর রহমান সরাসরি
রাজনীতির সাথে নিজেকে যুক্ত করেন। যোগ দেন আওয়ামীলীগের ছাত্র সংগঠন
ছাত্রলীগে। দায়িত্ব পালন করেন মিরপুরের ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি হিসাবে।
পরবর্তীতে ১৯৭৪ সালে বৃহত্তর মীরপুর আওয়ামী যুবলীগের যুব ও ক্রীড়া
সম্পাদক ছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় আওয়ামীলীগে। ৭৫এর ১৫ আগষ্ট কিছু
বিপথগামী সেনা সদস্য কর্তৃক জাতির জনক স্বপরিবারের হত্যার পর থেকে
বৃহত্তর মীরপুর আওয়ামীলীগকে পূর্নগঠনে দায়িত্বশীল ভুমিকা পালন করেছেন
হাজী লুৎফর রহমান।
দলগঠনের পাশাপাশি করেছেন সামাজিক উন্নয়ন, নিয়েছেন দারিদ্র বিমোচন বিভিন্ন
কর্মপরিকল্পনা। স্থানীয় মসজিদ মাদ্রাসার উন্নয়নসহ মাদক নিয়ন্ত্রনে সবসময়
তিনি অগ্রনী ভুমিকা পালন করছেন।
পেশায় একজন পুরোদস্তুর ব্যবসায়ী হাজী লুৎফর রহমান। বেশ কয়েকবার ঢাকা
জেলার শ্রেষ্ট করদাতা হিসাবে তার বেশ সুনাম রয়েছে সরকারী আয়কর বিভাগে।
জন্মসূত্রে বাগবাড়ি জমিদারগনের অধস্তন পুরুষ। মিরপুর বাগবাড়ি জমিদার
বাড়ির উর্দ্ধতন পুরুষ আমার পিতা- মরহুম নরুল ইসলাম জমিদার, পিতামহ-মরহুম
আব্দুল করিম বেপারী জমিদার।
করোনায় কয়েক হাজার মানুষকে ব্যক্তিগত তহবিল থেকে দান করা ছাড়াও, সাধারণ
মানুষের সাথে হাজী মোঃ লুৎফর রহমানের রয়েছে ঘনিষ্ট যোগাযোগ। আওয়ামীলীগের
হাইকমান্ডেরও তাই সু-দৃষ্টি হাজী মোঃ লুৎফর রহমানের দিকে।