ঢাকা ০২:২২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৩ জুন ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনে মোদিকে আমন্ত্রণ পাঠায়নি কানাডা নিজের গুম নিয়ে ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশনে অভিযোগ দিলেন সালাহউদ্দিন আহমেদ টাঙ্গাইলের মহাসড়কে ঝরলো বাবা ও দুই ছেলের প্রাণ স্বাধীনতার ৫৪ বছর পর আপেল মাহমুদকে প্রমাণ দিতে হলো তিনি মুক্তিযোদ্ধা নাসিরনগরে কৃষি প্রযুক্তি মেলার উদ্বোধন বিরলে কমিউনিটি ক্লিনিকের সি,এইচ,সি,পি (CHCP) রাজনৈতিক মামলার আসামি। ঘুমন্ত শিশুকে নদীতে ফেলে হত্যা: নাটক সাজিয়ে বিচার চাইলেন মা নগরভবন কবে খুলবে জানে না কেউ, ঈদে বর্জ্য অপসারণ বড় চ্যালেঞ্জ উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট অনুমোদন ২ লাখ ৭০ হাজার হজযাত্রীকে মক্কায় প্রবেশ করতে দেয়নি সৌদি

সরকারি ভ্যাকসিনে ২৫ গরু-ছাগলের মৃত্যু

খাগড়াছড়ি সংবাদদাতা
  • আপডেট টাইম : ০৬:২৭:০৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২ মে ২০২৫
  • / ৩০ ১৫০.০০০ বার পাঠক

বিনামূল্যের সরকারি ভ্যাকসিন দেওয়ার পর খাগড়াছড়ির রামগড়ে অন্তত ২৫টি গরু-ছাগল মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলা প্রাণি সম্পদ বিভাগের উদ্যোগে ওই এলাকায় এই বসন্ত রোগের টিকা দেওয়া হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় ইউপি পরিষদ কার্যালয়ে অসুস্থ পশু নিয়ে বিক্ষোভ করেছেন ভুক্তভোগীরা।

সবশেষ বৃহস্পতিবার (১ মে) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রাণিসম্পদ বিভাগের একটি মেডিকেল টিম লামকুপাড়া এলাকা সরজমিনে পরিদর্শন করেন এবং মৃত পশুর ময়নাতদন্ত ও রোগাক্রান্তগুলোর নমুনা সংগ্রহ করে। চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালকের পক্ষে এ টিমের নেতৃত্ব দেন চট্টগ্রাম জেলা ভেটেরিনারি কর্মকর্তা ডা. মো. সাহব উদ্দিন। এসময় চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি কর্মকর্তা ডা. জপু চক্রবর্তী ও ডা. তাহমিনা আক্তার, খাগড়াছড়ি জেলা ভারপ্রাপ্ত ভেটেরিনারি কর্মকর্তা ডা. মনিরুল ইসলাম, উপজেলা (ভারপ্রাপ্ত) প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা মো. মোস্তফা কামাল ও উপজেলা ভেটেরিনারি সার্জন ডা. মো: রুবায়েতুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে গত মঙ্গলবার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো তাদের অসুস্থ ছাগল-গরু নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ অফিস প্রাঙ্গনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করে। এসময় তারা দোষীদের শাস্তি ও ক্ষতিপূরণের দাবি জানায়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

প্রাণি সম্পদ বিভাগ ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, গত ১৫ এপ্রিল উপজেলা প্রাণি সম্পদ দপ্তর হতে রামগড় ইউনিয়নের লামকুপাড়া ও এর আশেপাশের এলাকায় ক্যাম্পিংয়ের মাধ্যমে বিনামূল্যে এক শতাধিক ছাগল ও ২০-২৫টি গরুকে গোট পক্স ভ্যাকসিন বা বসন্ত রোগের ভ্যাকসিন দেওয়া হয়। ভ্যাকসিন দেওয়ার পর গরু ছাগলগুলোর সমস্ত শরীরে ফোসকা উঠতে শুরু করে। একের পর এক পশু অসুস্থ হয়ে পড়ে। এর মধ্যে ২১টি ছাগল ও ৪টি গরু মারা যায়।

খামারি লুৎফর রহমান বলেন, ভ্যাকসিন দেওয়ার দুই দিন পর আমার তিনটি ছাগল ও দুটি গরু মারা যায়। খামারে আরও অন্তত ১৫টি ছাগলকে ভ্যাকসিন দিয়েছি। ধীরে ধীরে সব ছাগল অসুস্থ হয়ে পড়ছে। তার গ্রামে যারা ভ্যাকসিন দিয়েছে সবার গরু-ছাগলের একই অবস্থা বলে জানান তিনি।

লামকুপাড়া গ্রামের গৃহিণী সায়েরা খাতুন বলেন, আমার দিনমজুর স্বামী বেশিরভাগ সময় অসুস্থ থাকেন। গরু-ছাগল লালন পালন করেই আমাকে সংসার চালাতে হয়। ভ্যাকসিন দেওয়ার পর আমার তিনটি ছাগল মারা গেছে। বাড়িতে আরও তিনটি অসুস্থ অবস্থায় রয়েছে।

একই অভিযোগ করেছেন লামকুপাড়ার ওবায়দুল হক, আবুল কাশেম, আবদুল করিম, শান্তনু দেবী এবং চিকনি ত্রিপুরা।

রামগড় প্রাণি সম্পদ দপ্তরের ভেটেরিনারি সার্জন ডা. মো. রুবায়েতুল ইসলাম বলেন, ভ্যাকসিন দেওয়ার পর গবাদি পশুগুলো রোগাক্রন্ত হওয়ার খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গেই এলাকায় গিয়ে অসুস্থ গরু, ছাগলের যথাযথ চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। ভ্যাকসিন নেওয়া সবগুলো গরু-ছাগলই অসুস্থ হয়ে পড়ে। ওই এলাকায় এক শতাধিক ছাগল ও ২০-২৫টি গরুকে বসন্ত রোগের ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছিল।

এদিকে, ভ্যাকসিন দেওয়ার পর ছাগল-গরু রোগাক্রান্ত ও মারা যাওয়ার ঘটনা খতিয়ে দেখতে বুধবার খাগড়াছড়ি জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মঈনুল ইসলাম রামগড়ের আক্রান্ত এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন।

সরেজমিনে পরিদর্শন শেষে তিনি বলেন, জেলার সব উপজেলায় ক্যাম্পিংয়ের মাধ্যমে গবাদি পশুর গোট পক্স ভ্যাকসিন দেওয়া হয়। কিন্তু রামগড় ছাড়া আর কোথাও এমন ঘটনা ঘটেনি। লাইভস্টক রিসার্চ ইনস্টিটিউটের তৈরি এ ভ্যাকসিনের মেয়াদ, ফ্রিজার্ভ সব কিছুই ঠিক আছে। তারপরও গবাদি পশুগুলো কেন রোগাক্রান্ত হল এবং মারা গেছে তার প্রকৃত কারণ বের করতে তদন্ত হচ্ছে।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

সরকারি ভ্যাকসিনে ২৫ গরু-ছাগলের মৃত্যু

আপডেট টাইম : ০৬:২৭:০৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২ মে ২০২৫

বিনামূল্যের সরকারি ভ্যাকসিন দেওয়ার পর খাগড়াছড়ির রামগড়ে অন্তত ২৫টি গরু-ছাগল মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলা প্রাণি সম্পদ বিভাগের উদ্যোগে ওই এলাকায় এই বসন্ত রোগের টিকা দেওয়া হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় ইউপি পরিষদ কার্যালয়ে অসুস্থ পশু নিয়ে বিক্ষোভ করেছেন ভুক্তভোগীরা।

সবশেষ বৃহস্পতিবার (১ মে) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রাণিসম্পদ বিভাগের একটি মেডিকেল টিম লামকুপাড়া এলাকা সরজমিনে পরিদর্শন করেন এবং মৃত পশুর ময়নাতদন্ত ও রোগাক্রান্তগুলোর নমুনা সংগ্রহ করে। চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালকের পক্ষে এ টিমের নেতৃত্ব দেন চট্টগ্রাম জেলা ভেটেরিনারি কর্মকর্তা ডা. মো. সাহব উদ্দিন। এসময় চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি কর্মকর্তা ডা. জপু চক্রবর্তী ও ডা. তাহমিনা আক্তার, খাগড়াছড়ি জেলা ভারপ্রাপ্ত ভেটেরিনারি কর্মকর্তা ডা. মনিরুল ইসলাম, উপজেলা (ভারপ্রাপ্ত) প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা মো. মোস্তফা কামাল ও উপজেলা ভেটেরিনারি সার্জন ডা. মো: রুবায়েতুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে গত মঙ্গলবার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো তাদের অসুস্থ ছাগল-গরু নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ অফিস প্রাঙ্গনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করে। এসময় তারা দোষীদের শাস্তি ও ক্ষতিপূরণের দাবি জানায়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

প্রাণি সম্পদ বিভাগ ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, গত ১৫ এপ্রিল উপজেলা প্রাণি সম্পদ দপ্তর হতে রামগড় ইউনিয়নের লামকুপাড়া ও এর আশেপাশের এলাকায় ক্যাম্পিংয়ের মাধ্যমে বিনামূল্যে এক শতাধিক ছাগল ও ২০-২৫টি গরুকে গোট পক্স ভ্যাকসিন বা বসন্ত রোগের ভ্যাকসিন দেওয়া হয়। ভ্যাকসিন দেওয়ার পর গরু ছাগলগুলোর সমস্ত শরীরে ফোসকা উঠতে শুরু করে। একের পর এক পশু অসুস্থ হয়ে পড়ে। এর মধ্যে ২১টি ছাগল ও ৪টি গরু মারা যায়।

খামারি লুৎফর রহমান বলেন, ভ্যাকসিন দেওয়ার দুই দিন পর আমার তিনটি ছাগল ও দুটি গরু মারা যায়। খামারে আরও অন্তত ১৫টি ছাগলকে ভ্যাকসিন দিয়েছি। ধীরে ধীরে সব ছাগল অসুস্থ হয়ে পড়ছে। তার গ্রামে যারা ভ্যাকসিন দিয়েছে সবার গরু-ছাগলের একই অবস্থা বলে জানান তিনি।

লামকুপাড়া গ্রামের গৃহিণী সায়েরা খাতুন বলেন, আমার দিনমজুর স্বামী বেশিরভাগ সময় অসুস্থ থাকেন। গরু-ছাগল লালন পালন করেই আমাকে সংসার চালাতে হয়। ভ্যাকসিন দেওয়ার পর আমার তিনটি ছাগল মারা গেছে। বাড়িতে আরও তিনটি অসুস্থ অবস্থায় রয়েছে।

একই অভিযোগ করেছেন লামকুপাড়ার ওবায়দুল হক, আবুল কাশেম, আবদুল করিম, শান্তনু দেবী এবং চিকনি ত্রিপুরা।

রামগড় প্রাণি সম্পদ দপ্তরের ভেটেরিনারি সার্জন ডা. মো. রুবায়েতুল ইসলাম বলেন, ভ্যাকসিন দেওয়ার পর গবাদি পশুগুলো রোগাক্রন্ত হওয়ার খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গেই এলাকায় গিয়ে অসুস্থ গরু, ছাগলের যথাযথ চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। ভ্যাকসিন নেওয়া সবগুলো গরু-ছাগলই অসুস্থ হয়ে পড়ে। ওই এলাকায় এক শতাধিক ছাগল ও ২০-২৫টি গরুকে বসন্ত রোগের ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছিল।

এদিকে, ভ্যাকসিন দেওয়ার পর ছাগল-গরু রোগাক্রান্ত ও মারা যাওয়ার ঘটনা খতিয়ে দেখতে বুধবার খাগড়াছড়ি জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মঈনুল ইসলাম রামগড়ের আক্রান্ত এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন।

সরেজমিনে পরিদর্শন শেষে তিনি বলেন, জেলার সব উপজেলায় ক্যাম্পিংয়ের মাধ্যমে গবাদি পশুর গোট পক্স ভ্যাকসিন দেওয়া হয়। কিন্তু রামগড় ছাড়া আর কোথাও এমন ঘটনা ঘটেনি। লাইভস্টক রিসার্চ ইনস্টিটিউটের তৈরি এ ভ্যাকসিনের মেয়াদ, ফ্রিজার্ভ সব কিছুই ঠিক আছে। তারপরও গবাদি পশুগুলো কেন রোগাক্রান্ত হল এবং মারা গেছে তার প্রকৃত কারণ বের করতে তদন্ত হচ্ছে।