সরকারি সাইনবোর্ড এর আড়ালে চলছে মোটা অঙ্কের লেনদেন অন্যদিকে টাকার বিনিময়ে সরকারি জমির পজিশন বিক্রি বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের
- আপডেট টাইম : ১২:২০:৫৩ অপরাহ্ণ, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪
- / ২ ৫০০০.০ বার পাঠক
বরগুনার পানি উন্নয়ন বোর্ডের জমিতে টানানো সাইনবোর্ডের আড়ালে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে জমি দখল দিয়ে ঘর তৈরির করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে বরগুনার পাথরঘাটা পানি উন্নয়ন বোর্ডের ওয়ার্ক এ্যাসিস্টান্ড মামুন মিয়া বিরুদ্ধে। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার দুপুরে পাথরঘাটা সদর ইউনিয়নের মাছের খাল এলাকায় গিয়ে এর সত্যতা পাওয়া যায়। এর আগেও পাথরঘাটা পৌর এলাকাসহ বিভিন্ন স্লুইসগেটের পাশের জমি টাকার বিনিময়ে কাগজ করে দেয়ার অভিযোগ রয়েছে বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিরুদ্ধে
অভিযোগের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অধিগ্রহণকৃত ভূমি অবৈধ ভাবে দখল ও স্থাপনা নির্মান সম্পূর্ণ নিষেধ করে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দিয়েছে বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ড। এতে আরো লেখা রয়েছে উপকূলীয় অবকাঠামো ক্ষতিসাধন ও অবৈধভাবে দখল করলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। কিন্তু এ সাইনবোর্ডের ২০ গজের মধ্যেই বেশকয়েকটি দোকান তৈরির কাজ চলছে। স্থানীয়রা জানান, “শুধু সাইনবোর্ডের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্দেশনা। ঘুষের বিনিময়ে কর্মকর্তারা পজিশন কাগজ তৈরি করে দিচ্ছে।”
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বছর খানেক আগে অধিগ্রহণকৃত করা জমিতে স্লুইসগেট নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ৫ আগষ্টের পটপরিবর্তনের পর অধিগ্রহণকৃত করা জমিতে রাতের আঁধারে অবৈধভাবে কিছু দখলদারা দখল করতে চেষ্টা করে। তখন স্থানীয়দের অভিযোগে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা এতে বাধা দিয়ে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দিয়ে চলে যায়। এঘটনার মাসখানেক পর পানি উন্নয়ন বোর্ডের কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে গোলাম কিবরিয়া খান নামে একজন ঘর তুলে জমি দখল করে নিয়েছে। স্থানীয় বাজার কমিটির সভাপতি মাওলানা মাহবুবুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে পাথরঘাটা পৌর এলাকার স্লুইসগেট,টেংরা, চরদুয়ানী, রুহিতা, কাঠালতলী, হোগলাপাশা সহ বিভিন্ন স্লুইসগেটের পাশের জমির পজিশন ঘুষের বিনিময়ে কাগজ করে দেয়ার অভিযোগ রয়েছে বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে।
মাছের খাল বাজার স্লুইসগেট ও সড়কের জমি দাতার ছেলে মাহবুবুর রহমান এবং তার ভাইয়ের ছেলে মাইনুদ্দিন কাওছার সময়ের কন্ঠকে জানান, ১৯৬২ থেকে ৬৫ সালের দিকে তার বাপ-দাদার কাছ থেকে সরকার জমি নিয়ে যাতায়াতের জন্য সড়ক এবং পানি নিস্কাশনের জন্য স্লুইসগেট তৈরি করেছেন। পরবর্তীতে সে জমি পানি উন্নয়ন বোর্ড একোয়য়ার করে। বর্তমানে এসব জমি পানি উন্নয়ন বোর্ডের অসাধু কর্মকর্তাদের ছত্রছায়ায় স্থানীয়রা দখল করে নিচ্ছেন। এ দখলের আগে পাথরঘাটায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ওয়ার্ক এ্যাসিস্টান্ড মামুন মিয়া আমাদের জমি ফিরিয়ে দেয়ার জন্য ১৫ লাখ টাকা দাবি করেছিলেন। এর একাধিক কল রেকর্ড আমাদের কাছে সংরক্ষিত আছে। এ টাকা দিলে তিনি দাড়িয়ে থেকে জমি দখল করে দিবেন। সেই টাকা না দেয়ায় অন্যদের কাছে পজিশন বিক্রি করে দিয়েছেন বলেও অভিযোগ করেন তারা।
পাউবোর জমি দখল করে কিসের ভিত্তিতে দোকান ঘর নির্মাণ করছেন এ বিষয়টি গোলাম কিবরিয়ার কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, এখানে আগেই আমার দালানের ঘর ছিল। স্লুইসগেট নির্মাণের সময় বাইপাস সড়কের জন্য ভেঙে দেয়া হয়েছিল। পরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অনুমতি নিয়ে ঘর তুলছি।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ওয়ার্ক এ্যাসিস্টান্ড মামুন মিয়ার নাম্বারে একাধিক বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী শওকত হোসেন মেহেরাজ বলেন, আমাদের জনবল না থাকায় ওইভাবে ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না। তবে মাছেরখালের পাউবোর জমি দখলের বিষয়টিতে আমরা ব্যবস্থা নেব।