ঢাকা ০৮:৫৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম ::
২৫২ বছরের ইতিহাসে চট্টগ্রামে এই প্রথম নারী ডিসি ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের পদায়ন ফরিদা খানম গাজীপুর জেলা মহানগর কাশিমপুরে স্বাধীন মত প্রকাশের জেরে থানার ওসির নেতৃত্বে একাধিক সাংবাদিকের নামে মিথ্যা মামলা আজমিরীগঞ্জ পৌর এলাকার গন্জেরহাটি গ্রামের সরকারি রাস্তা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রনব বনিকের দখলের চেষ্টা নরসিংদীতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতা আন্দোলনে আহত সাংবাদিকদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান চট্টগ্রামে জনতা ব্যাংক সিবিএ নেতা আফসার আ.লীগের আমলে দাপট দেখিয়ে এখন বিএনপি নিয়োগ, বদলি, চাঁদাবাজি করে কামিয়েছেন টাকা মহারাষ্ট্রে ভূমিধস জয়ের পথে বিজেপি জোট, ঝাড়খণ্ডে ‘ইন্ডিয়া’ পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু জুলাই বিপ্লবে আহত বীর মুক্তিযোদ্ধা মুজিবুর রহমানের ছেলে মো. বাবুকে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হচ্ছে থাইল্যান্ড আজমিরীগঞ্জে  বিয়ের ছয় মাস পর গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা রায়পুরে দেশীয় শিল্প ও পণ্য মেলায় ভ্রাম্যমান আদালত, নগদ অর্থদণ্ড

আহতদের কথা বলতে গিয়ে কাঁদলেন ড. ইউনূস

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট টাইম : ১১:০১:০০ পূর্বাহ্ণ, রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / ৫৫ ৫০০০.০ বার পাঠক

ছবি: সংগৃহীত
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহতদের দেখতে বিভিন্ন হাসপাতালে যাচ্ছেন। হাসপাতালে তাদের দেখে এসে সেই অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিতে গিয়ে কাঁদলেন নোবেল বিজয়ী এই অর্থনীতিবিদ।

রোববার তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার সরকারি কার্যালয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন প্রধান উপদেষ্টা। সেখানে হতাহতদের বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন তিনি, কাঁদতেও দেখা যায় তাকে। বেলা ১১টায় শুরু হয়ে এ সভা চলে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত।

মতবিনিময় সভায় ড. ইউনূসসহ অন্যদের উপস্থিত আহত শিক্ষার্থীদের কাছে গিয়ে কথা বলতে এবং খোঁজখবর নিতে দেখা যায়।

মতবিনিময় সভায় ড. ইউনূস বলেন, আন্দোলনে আহতদের দেখতে যখন হাসপাতালে যাই, তাকাতে কষ্ট হয়। একটা ছেলে, একটা মেয়ে এই রকমভাবে কীভাবে ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। পা চলে গেছে, এদিকে…’, এ কথা বলতে বলতে কেঁদে ফেলেন ড. ইউনূস।

তিনি বলেন, কালকে একটা হাসপাতালে (নিউরোসায়েন্স হাসপাতাল) গেলাম, আবার সেই দৃশ্য, কচি কচি প্রাণ, মাথার খুলি উড়ে গেছে। মাথার অর্ধেক নেই, গুলি মাথার ভেতর রয়ে গেছে। রংপুরের হাসপাতালের দৃশ্য, এক্স-রে দেখা হচ্ছে ওখানে দাগ, ছোট ছোট ফুটো করা, আমি বুঝতে পারলাম না আমাকে কি দেখাচ্ছে, আমি জিজ্ঞেস করলাম, এগুলো কি, এতগুলো গুলি তার শরীরে রয়ে গেছে, সে বেঁচে আছে রাবার বুলেট নিয়ে, যতবার দেখি যতবার শুনি আবার নতুন করে প্রতিজ্ঞা করতে হয়, যে স্বপ্নের জন্য তারা প্রাণ দিয়েছে সেই স্বপ্নকে আমরা বাস্তবায়ন করব।

ড. ইউনূস বলেন, এটার থেকে আমাদের বেরিয়ে যাওয়ার উপায় নেই। আমাদের যোগ্যতা না থাকতে পারে, ক্ষমতা না থাকতে পারে, কিন্তু আমাদের প্রতিজ্ঞা রইল, আমরা এটা করব। আমি খালি দেখি, এই যে দৃশ্য দেখলাম এটা তো সবাই দেখছে না, যারা হাসপাতালে আসছে তারা দেখছে, প্রতিদিনের ঘটনা, মানুষকে জানাতে হবে বোঝাতে হবে এর পেছনে কি ছিল…।

আপ্লুত কণ্ঠে তিনি বলেন, একজন তাজা তরুণ রংপুরে আমাকে বলল, ফুটফুটে একটা ছেলে, স্যার আমি সারাজীবন ক্রিকেট খেলতে চেয়েছিলাম। ক্রিকেটার হতে চেয়েছিলাম। এখন দেখেন আমার পা কেটে ফেলেছে…কেঁটে ফেলেছে ওই পা রাখার উপায় ছিল না। সে আমাকে জিজ্ঞেস করেছে স্যার ক্রিকেট খেলব কী করে। ক্রিকেট তার মাথা থেকে যাচ্ছে না।

পা নেই যতবার দেখি ততবার মনের সঙ্গে প্রশ্ন জাগে, এটিই আমরা বাংলাদেশ বানিয়েছি যে এতগুলো তাজাপ্রাণ, তাদেরকে ছেড়ে চলে যেতে হয়েছে, আমরা যারা আজকে এখানে বসে কথা বলছি, তাদের একমাত্র দায়িত্ব তাদের এই ত্যাগ, এই জীবনের বিনিময়ে তারা আমাদের এখানে বসার সুযোগ দিয়েছে, আমরা সরকারের মধ্যে বসেছি …কেউই এই ভূমিকায় আসতে পারতাম না।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘বাংলাদেশের জন্ম থেকে ৫৩ বছরে এ সুযোগ আর আসে নাই। যে সুযোগ তোমরা আমাদের দিয়েছ। এ সুযোগ যেন হাতছাড়া না হয়। এ সুযোগ হাতছাড়া হলে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ থাকবে না। এটা কোনো রাষ্ট্র আর থাকবে না। এটা যেন শুধু রাষ্ট্র নয়, পৃথিবীর সম্মানিত রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।

সভায় উপস্থিত ছিলেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, বন-পরিবেশ ও জলবায়ুবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ ফরিদা আখতার, তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম এবং যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

আহতদের কথা বলতে গিয়ে কাঁদলেন ড. ইউনূস

আপডেট টাইম : ১১:০১:০০ পূর্বাহ্ণ, রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ছবি: সংগৃহীত
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহতদের দেখতে বিভিন্ন হাসপাতালে যাচ্ছেন। হাসপাতালে তাদের দেখে এসে সেই অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিতে গিয়ে কাঁদলেন নোবেল বিজয়ী এই অর্থনীতিবিদ।

রোববার তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার সরকারি কার্যালয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন প্রধান উপদেষ্টা। সেখানে হতাহতদের বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন তিনি, কাঁদতেও দেখা যায় তাকে। বেলা ১১টায় শুরু হয়ে এ সভা চলে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত।

মতবিনিময় সভায় ড. ইউনূসসহ অন্যদের উপস্থিত আহত শিক্ষার্থীদের কাছে গিয়ে কথা বলতে এবং খোঁজখবর নিতে দেখা যায়।

মতবিনিময় সভায় ড. ইউনূস বলেন, আন্দোলনে আহতদের দেখতে যখন হাসপাতালে যাই, তাকাতে কষ্ট হয়। একটা ছেলে, একটা মেয়ে এই রকমভাবে কীভাবে ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। পা চলে গেছে, এদিকে…’, এ কথা বলতে বলতে কেঁদে ফেলেন ড. ইউনূস।

তিনি বলেন, কালকে একটা হাসপাতালে (নিউরোসায়েন্স হাসপাতাল) গেলাম, আবার সেই দৃশ্য, কচি কচি প্রাণ, মাথার খুলি উড়ে গেছে। মাথার অর্ধেক নেই, গুলি মাথার ভেতর রয়ে গেছে। রংপুরের হাসপাতালের দৃশ্য, এক্স-রে দেখা হচ্ছে ওখানে দাগ, ছোট ছোট ফুটো করা, আমি বুঝতে পারলাম না আমাকে কি দেখাচ্ছে, আমি জিজ্ঞেস করলাম, এগুলো কি, এতগুলো গুলি তার শরীরে রয়ে গেছে, সে বেঁচে আছে রাবার বুলেট নিয়ে, যতবার দেখি যতবার শুনি আবার নতুন করে প্রতিজ্ঞা করতে হয়, যে স্বপ্নের জন্য তারা প্রাণ দিয়েছে সেই স্বপ্নকে আমরা বাস্তবায়ন করব।

ড. ইউনূস বলেন, এটার থেকে আমাদের বেরিয়ে যাওয়ার উপায় নেই। আমাদের যোগ্যতা না থাকতে পারে, ক্ষমতা না থাকতে পারে, কিন্তু আমাদের প্রতিজ্ঞা রইল, আমরা এটা করব। আমি খালি দেখি, এই যে দৃশ্য দেখলাম এটা তো সবাই দেখছে না, যারা হাসপাতালে আসছে তারা দেখছে, প্রতিদিনের ঘটনা, মানুষকে জানাতে হবে বোঝাতে হবে এর পেছনে কি ছিল…।

আপ্লুত কণ্ঠে তিনি বলেন, একজন তাজা তরুণ রংপুরে আমাকে বলল, ফুটফুটে একটা ছেলে, স্যার আমি সারাজীবন ক্রিকেট খেলতে চেয়েছিলাম। ক্রিকেটার হতে চেয়েছিলাম। এখন দেখেন আমার পা কেটে ফেলেছে…কেঁটে ফেলেছে ওই পা রাখার উপায় ছিল না। সে আমাকে জিজ্ঞেস করেছে স্যার ক্রিকেট খেলব কী করে। ক্রিকেট তার মাথা থেকে যাচ্ছে না।

পা নেই যতবার দেখি ততবার মনের সঙ্গে প্রশ্ন জাগে, এটিই আমরা বাংলাদেশ বানিয়েছি যে এতগুলো তাজাপ্রাণ, তাদেরকে ছেড়ে চলে যেতে হয়েছে, আমরা যারা আজকে এখানে বসে কথা বলছি, তাদের একমাত্র দায়িত্ব তাদের এই ত্যাগ, এই জীবনের বিনিময়ে তারা আমাদের এখানে বসার সুযোগ দিয়েছে, আমরা সরকারের মধ্যে বসেছি …কেউই এই ভূমিকায় আসতে পারতাম না।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘বাংলাদেশের জন্ম থেকে ৫৩ বছরে এ সুযোগ আর আসে নাই। যে সুযোগ তোমরা আমাদের দিয়েছ। এ সুযোগ যেন হাতছাড়া না হয়। এ সুযোগ হাতছাড়া হলে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ থাকবে না। এটা কোনো রাষ্ট্র আর থাকবে না। এটা যেন শুধু রাষ্ট্র নয়, পৃথিবীর সম্মানিত রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।

সভায় উপস্থিত ছিলেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, বন-পরিবেশ ও জলবায়ুবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ ফরিদা আখতার, তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম এবং যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া।