ঢাকা ১০:০৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম ::
গরু বহনকারী ভটভটির ধাক্কায় প্রাণ হারালো  দুই যুবক ইবিতে ভর্তি পরীক্ষার্থীদের জন্য থাকছে না কোন পরিবহন সেবা নবাবগঞ্জ প্রেসক্লাবের সকল সাংবাদিকের সঙ্গে ওসির সৌজন্য সাক্ষাৎ ও মতবিনিময় পাকুন্দিয়া উপজেলায় ৪ মামলার পরোয়ানাভূক্ত পলাতক আসামী গ্রেফতার রাণীশংকৈলে আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা কোনাবাড়ি পল্লী বিদ্যুৎ পাওয়ার সাবস্টেশনে আগুন তামাক হচ্ছে মাদকের মূল লক্ষ্য -ডাঃ মোঃ নজরুল ইসলাম কিরাটন ইউনিয়নের পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম আমাদের মাঝে আর নেই শিবগঞ্জে সানামসজিদ স্থলবন্দরে হিট স্ট্রোকে ট্রাফিক পরিদর্শকের মৃত্যু গাজীপুরবাসীর জন্য চরম “সৌভাগ্য’ বর্তমান ডিসি এডিসি রেভিনিউ চৌকস ও মেধাবী দুই কর্মকর্তার চিন্তা,চেতনায় কর্মে, সর্বোপরিভাবে সততাকে প্রাধাণ্য দিয়েই দায়িত্ব পালন করছেন

বাংলাদেশের অর্থনীতি আগের চেয়ে ভাল প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস বিশ্বব্যাংকের

অনলাইন রিপোর্টার ॥

প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের গণ টিকাদান শুরু হওয়ায় দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা আগামী এক বছরে আরও জোর পাবে বলে ধারণা করছে বিশ্বব্যাংক; আর এর ভিত্তিতে বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য আগের পূর্বাভাসের চেয়ে ভাল প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন করেছে আর্থিক খাতের এ বিশ্ব সংস্থা।

বিশ্বব্যাংক বলছে, ২০২১ অর্থবছরে বাংলাদেশ মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) ৩ দশমিক ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি পেতে পারে, আগের পূর্বাভাসে যা ২ শতাংশ দেখানো হয়েছিল।

আর অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের গতি ঠিক থাকলে আগামী অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ১ শতাংশ হতে পারে বলে প্রাক্কলন করা হয়েছে বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে।

ওয়াশিংটন থেকে সোমবার প্রকাশিত বিশ্ব ব্যাংকের দ্বিবার্ষিক আঞ্চলিক হালনাগাদ প্রতিবেদনে এই বিশ্লেষণ তুলে ধরা হয়েছে।

‘সাউথ এশিয়া ইকনোমিক ফোকাস সাউথ এশিয়া ভ্যাকসিনেট’- শীর্ষক এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মহামারীর অভিঘাতে ২০২০ অর্থবছরে দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনীতি প্রবৃদ্ধির ধারা থেকে নেমে ৫ দশমিক ৪ শতাংশ সঙ্কুচিত হয়। এতটা দুর্দশায় এ অঞ্চলের অর্থনীতি সাম্প্রতিক ইতিহাসে আর কখনও পড়েনি।

সেই অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করায় দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনীতি ২০২১ সালে ৭ দশমিক ২ শতাংশ হারে বাড়তে পারে। তবে পরের বছর এই হার হতে পারে ৪ দশমিক ৪ শতাংশ।

বিশ্বব্যাংক বলছে, বিদ্যুতের ব্যবহার ও তারল্য প্রবাহ বৃদ্ধির যে উপাত্ত ইতোমধ্যে আসছে, তাতে দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে গতি সঞ্চারের ইঙ্গিত স্পষ্ট। তবে সার্বিক অর্থনীতি এখন নাজুক অবস্থায় থাকায় প্রবৃদ্ধি হবে অসম; আগামী এক বছর অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড মহামারীর আগের পর্যায়ের চেয়ে নিচেই অবস্থান করবে।

এর কারণ হিসেবে অনানুষ্ঠানিক খাতের বহু মানুষের কর্মহীন হয়ে পড়া, আয় কমা এবং বৈষম্য বাড়ার প্রবণতার কথা বলা হয়েছে প্রতিবেদনে।

বিশ্বব্যাংকের প্রাক্কলন ঠিক হলে দক্ষিণ এশিয়া হয়ত ২০২২ সাল নাগাদ আবার মহামারী পূর্ববর্তী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ধারায় ফিরতে পারবে।

এ অঞ্চলের সবচেয়ে বড় অর্থনীতি ভারত ২০২১-২২ অর্থবছরে ১০ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি পেতে পারে, যা বিশ্ব ব্যাংকের জানুয়ারির প্রাক্কলনের চেয়ে ৪ দশমিক ৭ শতাংশ পয়েন্ট বেশি।

বাংলাদেশ, নেপাল ও পাকিস্তানের অর্থনীতির ক্ষেত্রেও আগের পূর্বাভাসের চেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন দেখানো হয়েছে এই প্রতিবেদনে। বাংলাদেশের দেশজ উৎপাদনের প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে রেমিটেন্স বড় ভূমিকা রাখবে বলে বিশ্বব্যাংক মনে করছে।

২০২১ সালে নেপাল ও পাকিস্তানের প্রবৃদ্ধির হার যথাক্রমে ২ দশমিক ৭ ও ১ দশমিক ৩ শতাংশ হতে পারে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে প্রতিবেদনে। নেপালের অর্থনীতির পুনরুদ্ধারের গতি বলছে ২০২৩ সাল নাগাদ দেশটি ৫ দশমিক ১ শতাংশ প্রবৃদ্ধির হারে পৌঁছাতে পারে।

বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস-প্রেসিডেন্ট হার্টিগ শ্যাফার বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর স্পষ্ট ইঙ্গিত দেখে আমরা উৎসাহিত বোধ করছি। তবে মহামারী এখনও নিয়ন্ত্রণে না আসায় এবং অর্থনীতির এই পুনরুদ্ধার নাজুক অবস্থায় থাকায় আমরা সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। এগিয়ে চলার ধারা অব্যাহত রাখতে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোকে তাদের টিকাদান কর্মসূচি জোরদার করতে হবে এবং তাদের সম্পদ বুঝেশুনে বিনিয়োগ করতে হবে যাতে আরও সমন্বিত ও সহিষ্ণু ভবিষ্যতের ভিত গড়ে তোলা সম্ভব হয়।

বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে, অনানুষ্ঠানিক খাতের কর্মীদের সুরক্ষায় সার্বজনীন বীমার ব্যবস্থা, আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়ানো, ও খাদ্যে মূল্যস্ফীতি এড়াতে গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য সামগ্রীর ওপর শুল্ক বাধা দূর করার সুপারিশ করা হয়েছে।

এছাড়া মানব সম্পদ উন্নয়নে বিনিয়োগ করার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে. যাতে ভবিষ্যত প্রজন্ম সুস্থভাবে বেড়ে উঠতে পারে এবং কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীতে পরিণত হয়।

দক্ষিণ এশিয়ার স্বাস্থ্যসেবা খাতে বিনিয়োগ যে বিশ্বে সর্বনিম্ন, সে কথা উল্লেখ করে প্রতিবেদনে রোগ প্রতিরোধ, স্বাস্থ্য বিষয়ক গবেষণা, এবং দ্রুত ও গণহারে টিকা উৎপাদনের সক্ষমতা বাড়ানোসহ স্বাস্থ্যসেবা অবকাঠামোতে আরও বিনিয়োগের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে এ অঞ্চলের দেশগুলোকে।

আরো খবর.......

জনপ্রিয় সংবাদ

গরু বহনকারী ভটভটির ধাক্কায় প্রাণ হারালো  দুই যুবক

বাংলাদেশের অর্থনীতি আগের চেয়ে ভাল প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস বিশ্বব্যাংকের

আপডেট টাইম : ১০:৪৮:০৪ পূর্বাহ্ণ, বুধবার, ৩১ মার্চ ২০২১

অনলাইন রিপোর্টার ॥

প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের গণ টিকাদান শুরু হওয়ায় দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা আগামী এক বছরে আরও জোর পাবে বলে ধারণা করছে বিশ্বব্যাংক; আর এর ভিত্তিতে বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য আগের পূর্বাভাসের চেয়ে ভাল প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন করেছে আর্থিক খাতের এ বিশ্ব সংস্থা।

বিশ্বব্যাংক বলছে, ২০২১ অর্থবছরে বাংলাদেশ মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) ৩ দশমিক ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি পেতে পারে, আগের পূর্বাভাসে যা ২ শতাংশ দেখানো হয়েছিল।

আর অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের গতি ঠিক থাকলে আগামী অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ১ শতাংশ হতে পারে বলে প্রাক্কলন করা হয়েছে বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে।

ওয়াশিংটন থেকে সোমবার প্রকাশিত বিশ্ব ব্যাংকের দ্বিবার্ষিক আঞ্চলিক হালনাগাদ প্রতিবেদনে এই বিশ্লেষণ তুলে ধরা হয়েছে।

‘সাউথ এশিয়া ইকনোমিক ফোকাস সাউথ এশিয়া ভ্যাকসিনেট’- শীর্ষক এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মহামারীর অভিঘাতে ২০২০ অর্থবছরে দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনীতি প্রবৃদ্ধির ধারা থেকে নেমে ৫ দশমিক ৪ শতাংশ সঙ্কুচিত হয়। এতটা দুর্দশায় এ অঞ্চলের অর্থনীতি সাম্প্রতিক ইতিহাসে আর কখনও পড়েনি।

সেই অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করায় দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনীতি ২০২১ সালে ৭ দশমিক ২ শতাংশ হারে বাড়তে পারে। তবে পরের বছর এই হার হতে পারে ৪ দশমিক ৪ শতাংশ।

বিশ্বব্যাংক বলছে, বিদ্যুতের ব্যবহার ও তারল্য প্রবাহ বৃদ্ধির যে উপাত্ত ইতোমধ্যে আসছে, তাতে দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে গতি সঞ্চারের ইঙ্গিত স্পষ্ট। তবে সার্বিক অর্থনীতি এখন নাজুক অবস্থায় থাকায় প্রবৃদ্ধি হবে অসম; আগামী এক বছর অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড মহামারীর আগের পর্যায়ের চেয়ে নিচেই অবস্থান করবে।

এর কারণ হিসেবে অনানুষ্ঠানিক খাতের বহু মানুষের কর্মহীন হয়ে পড়া, আয় কমা এবং বৈষম্য বাড়ার প্রবণতার কথা বলা হয়েছে প্রতিবেদনে।

বিশ্বব্যাংকের প্রাক্কলন ঠিক হলে দক্ষিণ এশিয়া হয়ত ২০২২ সাল নাগাদ আবার মহামারী পূর্ববর্তী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ধারায় ফিরতে পারবে।

এ অঞ্চলের সবচেয়ে বড় অর্থনীতি ভারত ২০২১-২২ অর্থবছরে ১০ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি পেতে পারে, যা বিশ্ব ব্যাংকের জানুয়ারির প্রাক্কলনের চেয়ে ৪ দশমিক ৭ শতাংশ পয়েন্ট বেশি।

বাংলাদেশ, নেপাল ও পাকিস্তানের অর্থনীতির ক্ষেত্রেও আগের পূর্বাভাসের চেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন দেখানো হয়েছে এই প্রতিবেদনে। বাংলাদেশের দেশজ উৎপাদনের প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে রেমিটেন্স বড় ভূমিকা রাখবে বলে বিশ্বব্যাংক মনে করছে।

২০২১ সালে নেপাল ও পাকিস্তানের প্রবৃদ্ধির হার যথাক্রমে ২ দশমিক ৭ ও ১ দশমিক ৩ শতাংশ হতে পারে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে প্রতিবেদনে। নেপালের অর্থনীতির পুনরুদ্ধারের গতি বলছে ২০২৩ সাল নাগাদ দেশটি ৫ দশমিক ১ শতাংশ প্রবৃদ্ধির হারে পৌঁছাতে পারে।

বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস-প্রেসিডেন্ট হার্টিগ শ্যাফার বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর স্পষ্ট ইঙ্গিত দেখে আমরা উৎসাহিত বোধ করছি। তবে মহামারী এখনও নিয়ন্ত্রণে না আসায় এবং অর্থনীতির এই পুনরুদ্ধার নাজুক অবস্থায় থাকায় আমরা সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। এগিয়ে চলার ধারা অব্যাহত রাখতে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোকে তাদের টিকাদান কর্মসূচি জোরদার করতে হবে এবং তাদের সম্পদ বুঝেশুনে বিনিয়োগ করতে হবে যাতে আরও সমন্বিত ও সহিষ্ণু ভবিষ্যতের ভিত গড়ে তোলা সম্ভব হয়।

বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে, অনানুষ্ঠানিক খাতের কর্মীদের সুরক্ষায় সার্বজনীন বীমার ব্যবস্থা, আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়ানো, ও খাদ্যে মূল্যস্ফীতি এড়াতে গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য সামগ্রীর ওপর শুল্ক বাধা দূর করার সুপারিশ করা হয়েছে।

এছাড়া মানব সম্পদ উন্নয়নে বিনিয়োগ করার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে. যাতে ভবিষ্যত প্রজন্ম সুস্থভাবে বেড়ে উঠতে পারে এবং কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীতে পরিণত হয়।

দক্ষিণ এশিয়ার স্বাস্থ্যসেবা খাতে বিনিয়োগ যে বিশ্বে সর্বনিম্ন, সে কথা উল্লেখ করে প্রতিবেদনে রোগ প্রতিরোধ, স্বাস্থ্য বিষয়ক গবেষণা, এবং দ্রুত ও গণহারে টিকা উৎপাদনের সক্ষমতা বাড়ানোসহ স্বাস্থ্যসেবা অবকাঠামোতে আরও বিনিয়োগের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে এ অঞ্চলের দেশগুলোকে।