হাসনাত আবদুল্লাহর অভিযোগ প্রসঙ্গে যা বলছে দুদক

- আপডেট টাইম : ০৭:১০:১৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫
- / ১ ১৫০.০০০ বার পাঠক
ফাইল ছবি
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ গত মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে পেজে ‘স্বাধীন বাংলাদেশে দুদকের চা খাওয়ার বিল ১ লাখ টাকা’ শিরোনামে একটি পোস্ট করেন।
ওই পোস্টে তিনি দলের যুগ্ম মুখ্য সংগঠক ডা. মাহমুদা আলম মিতুর কাছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কর্মকর্তা ঘুস চেয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন।
তার এই পোস্টে মুহুর্তের ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক মাধ্যমে। সংবাদ হয় দেশের প্রায় সব কটি গণমাধ্যমে। যার ফলে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠে।
তবে হাসনাত আবদুল্লাহর এ বক্তব্যকে ‘যাচাই-বাছাইহীন’ ও মানহানিকর দাবি করে প্রতিবাদ জানিয়েছে দুদক।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) মো. আকতারুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ প্রতিবাদ জানানো হয়। এতে বলা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহর একটি পোস্ট কমিশনের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। পোস্টটিতে তিনি যাচাই-বাছাই ছাড়াই দুর্নীতি দমন কমিশনের মহাপরিচালকসহ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মানহানিকর বক্তব্য দেন।
প্রতারণার বিষয়ে সতর্কবার্তা দিয়ে দুদক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, এ বিষয়ে সবার অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে একটি প্রতারক চক্র দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান, মহাপরিচালক বা কর্মকর্তা পরিচয়ে মামলা থেকে অব্যাহতি প্রদানের কথা বলে প্রতারণা করে আসছে। যার সঙ্গে দুদকের কর্মকর্তাদের কোনো সম্পর্ক নেই। দুদক এরইমধ্যে এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নিয়েছে এবং প্রতারক চক্রের অনেককে গ্রেফতারও করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে দুদক আরও জানায়, এরইমধ্যে দুদক প্রতারণা রোধে সবাইকে সতর্ক করে আসছে। যা বিভিন্ন জাতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এরূপ প্রতারণার শিকার হয়ে অনেকে সমাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দুদককে দোষারোপ করে, যার ফলে দুদকের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়।
এ ধরনের প্রতারণার তথ্য দুদককে জানানোর অনুরোধ জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পুনশ্চ প্রতারণামূলক ফোনকল, বার্তা বা ব্যক্তিগত যোগাযোগের মাধ্যমে কারও কাছ থেকে টাকা চাওয়া হলে কিংবা কোনো প্রতারণা বা অনিয়মের তথ্য পাওয়া গেলে দুদকের টোল ফ্রি হটলাইন-১০৬ নম্বরে জানানোর অথবা নিকটস্থ দুদক কার্যালয় বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হলো।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া ওই পোস্টের সঙ্গে হাসনাত আবদুল্লাহ তিনটি ভিডিও ক্লিপ যুক্ত করেছেন।
‘স্বাধীন বাংলাদেশে দুদকের চা খাওয়ার বিল ১ লাখ টাকা’ শিরোনামে হাসনাত আবদুল্লাহ লেখেন, ‘আপনার নামে দুর্নীতির কোনো অভিযোগ না থাকলেও সেটার ক্লিয়ারেন্স নিতে আপনাকে এক লাখ টাকা দিতে হবে। সম্প্রতি মাহমুদা মিতুর কাছে থেকে এই টাকা চাওয়া হয়েছে দুদকের ডিজি আকতার আর তার ডিডি পরিচয়ে। মাহমুদা মিতুকে বলা হয় আপনি একজন ডাক্তার, আপনার তো টাকা-পয়সার অভাব থাকার কথা না। আপনি এক লাখ টাকা দিয়ে ক্লিয়ারেন্স নিয়ে যান।’
তিনি লেখেন, ‘দুদকের সর্বনিম্ন রেট নাকি এক লাখ টাকা। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে আকতার আবার ফোন দিয়ে জানতে চান টাকা দেবে কি না? টাকা না দিলে নাকি খবর করে ছেড়ে দেওয়া হবে। রেড ক্রিসেন্টে মাহমুদা মিতু যোগ দিয়েছেন ৫ আগস্টের পরে। দুদক এখন তদন্ত করছে আওয়ামী লীগের সময়ের দুর্নীতি নিয়ে।’
‘অথচ হাস্যকরভাবে আওয়ামী আমলের কর্মকর্তাদের নাম না দিয়ে তখনকার দায় চাপানোর চেষ্টা করা হচ্ছে এখনকার লোকজনের ওপর। এখানে বড় অংকের টাকার লেনদেনেরসমূহ সম্ভাবনা আছে। কিছু না করাদের কাছে থেকেই যদি এক লাখ করে নেয়, আওয়ামী লীগ আমলের কর্মকর্তাদের থেকে তাহলে কত করে নিয়েছে?