ইউনিয়ন পরিষদে তালা,জনভোগান্তী চরমে, প্রশাসক নিয়োগের দাবি
- আপডেট টাইম : ০৩:০১:৩৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ অগাস্ট ২০২৪
- / ৫৭ ৫০০০.০ বার পাঠক
ছাত্র জনতার গণ অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে পালানোর পরেই পালিয়েছেন চরফ্যাশন উপজেলার ২১টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যরা। চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যদের অনুপস্থিতির অজুহাতে সচিবসহ সংশ্লিষ্টরা ইচ্ছেমতো পরিষদের কার্যক্রম পরিচালনা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। যার ফলে উপজেলার প্রায় ৫লক্ষাধীক বাসিন্দা সরকারী সেবা গ্রহনের জন্য ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়ছেন।
বুধ ও বৃহস্পতিবার বেলা সরেজমিনে উপজেলার একাধিক ইউনিয়ন পরিষদ ঘুরে তালাবদ্ধ অবস্থায় পাওয়া গেছে। তবে কয়েকটি ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোক্তারা উপস্থিত থাকলেও তারা জানান, চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যদের স্বাক্ষরের জন্য সেবা নিতে আসা লোকজনকে সেবা দিতে পারছেন না তারা। পরিষদলগুলোর সুবিধাভোগী বাসিন্দারা বলছেন উপজেলার বেশিরভাগ চেয়ারম্যান ও সদস্যারা আওয়ামীপন্থী হওয়ায় বিগত সরকারের আমলে অনিয়ম দুর্নীতি লুটপাট ও স্বেচ্ছাচারিতায় জড়িয়ে পড়ায় দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে আত্মগোপনে চলে গিয়েছে। যার ফলে সাধারণ মানুষ এই পরিষদগুলো থেকে নুন্যতম সেবা না পাওয়ায় চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
আরও জানাগেছে, উপজেলার আহাম্মদপুর,ওমরপুুর,জিন্নাগর,আবদুল্লাহপুর,এওয়াজপুর,আসলামপুর,
জাহানপুর,আবুবকরপুর,নুরাবাদ,ঢালচর,কলমী,নজরুল নগর, মাদ্রাজ ইউনিয়নসহ আরও একাধিক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান-ইউপি সদস্যরা রাজনৈতিক কারণে আত্মগোপনে রয়েছেন। আবু কালাম,রহিম শিকদার,হাফেজ মনির,করিম বকশি,ময়ফুল বেগম ও রাশেদা বেগমসহ একাধিক বাসিন্দা বলেন, নাগরিক সনদ,জন্মনিবন্ধন,ট্রেড লাইসেন্স,এবং ভিজিডি কার্ডের চালের সেবা কার্যক্রম পাচ্ছেনা সেবাপ্রার্থীরা। আবু বকরপুরের বাসিন্দা হাসান মাহমুদ ও রতন খলিফা বলেন, আমাদের ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সিরাজ জমাদারকে পুলিশ একটি মামলায় গ্রেফতার করার পর ইউপি সদস্যারাসহ আরও অন্যান্য ইউপি চেয়ারম্যান সদস্যরা ও পালিয়েছে। উপজেলার রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন,আওয়ামী সরকারের আমলে চরফ্যাশন উপজেলার ২১টি ইউনিয়নের মধ্যে বেশিরভাগ ইউনিয়নেই বিনা ভোটে চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যরা মনোনিত হয়েছে। এছাড়াও কয়েকটি ইউনিয়নে নামমাত্র নির্বাচন হলেও নৌকা প্রতিক নিয়ে তারা ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে সাধারণ ভোটারদের জোরজবরদস্তি করে অবৈধভাবে নির্বাচিত হয়েছে। ফলে এসব অবৈধ জনপ্রতিনিধিরা অনিয়ম দুর্নীতি লুটপাট ও প্রান্তিক পর্যায়েও নৈরাজ্য সৃষ্টি করায় সরকার পরিবর্তনে এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। সাধারণ ভোটারদের কাছে তাদের কোনো জবাবদিহি না থাকায় মানুষ তাদের কাছ থেকে নুন্যতম সেবাও পায়নি। ভোগান্তিতে থাকা স্থানীয় সাধারণ মানুষ দাবি করছেন, এসব ইউনিয়ন পরিষদে প্রশাসক নিয়োগ করে সাধারণ মানুষকে সেবা দেয়ার জন্য আহবান জানাই।
উপজেলার একাধিক ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য ফোন দিলেও চেয়ারম্যানরা ফোন রিসিভ না করায় এবং অনেকের ফোন বন্ধ পাওয়ায় তাদের বক্তব্য জানাযায়নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নওরীন হক জনসাধারণের সাময়িক অসুবিধার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, উপজেলার ২১টি ইউনিয়নের মধ্যে নীলকমল ইউপি চেয়ারম্যান উপস্থিত রয়েছেন। বাকী সব ইউপি চেয়ারম্যানদের অনুপস্থিতির বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিত আকারে জানানো হয়েছে।